কুমিল্লার “সিপি বাংলাদেশ” হ্যাচারীর কার্যব্যবস্থাপনা
পোলট্রি
২২নভেম্বর, ২০২১ তারিখে ওয়ান হেলথ্ পোল্ট্রি হাব, বাংলাদেশ এর একদল গবেষক চট্টগ্রামের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অবস্থিত সিপি বাংলাদেশ এর একটি হ্যাচারী পরিদর্শনকালে মহিলা কর্মীদের কর্মরত দেখতে পান।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামারকে শিল্পে পরিণত করার পিছনে অন্যতম ভূমিকা পালন করছে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহ। এই সকল প্রতিষ্ঠানে প্রদত্ত সেবাসমূহ সম্পর্কে জনগণকে অবহিতকরণ এবং গবেষণার বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ওয়ান হেলথ্ পোল্ট্রি হাব, বাংলাদেশের একদল গবেষক নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এই দলে ছিলেন ওয়ান হেলথ্ পোল্ট্রি হাব, বাংলাদেশ এর জাতীয় সমন্বায়ক অধ্যাপক মোঃ আহসানুল হক, গবেষণা সহকারী-সমাজবিজ্ঞান নুসরাত আইরিন এবং মাস্টার্স শিক্ষার্থী ডা. মেহেরজান ইসলাম। হ্যাচারীর যাবতীয় কার্যক্রম অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এই গবেষকদলের সামনে উপস্থাপন করেন এরিয়া ম্যানেজার এবং হ্যাচারী ইন-চার্জ মোঃ আনিসুর রহমান এবংতার সহকারীবৃন্দ।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হ্যাচারী ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনের এবারের পর্বে, সিপি হ্যাচারী পরিদর্শনের সময় এর নিবিড় জীবনিরাপত্তা ব্যবস্থা ওয়ান হেলথ্ পোল্ট্রি হাব, বাংলাদেশ প্রজেক্টের গবেষকদলের মনোযোগ বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। জীবনিরাপত্তার ব্যবস্থাপনার মধ্যে ছিলো উন্নত জীবাণুনাশক স্প্রে সিস্টেম, উন্নতমানের ফগিং স্প্রে সিস্টেম, এবং পৃথক পোষাকের ব্যবস্থা। হ্যাচারীটির অবকাঠামো ছিলো বেশ সুবিন্যস্ত। ডিম সংগ্রহের কক্ষ থেকে শুরু করে সংরক্ষণ কক্ষ, প্রাক-উষ্ণতাদানকৃত কক্ষ, ডিম ফোটানোর কক্ষ, ডিমের গ্রেডিং এবং প্যাকেজিং রুম থেকে একেবারে এগ ডেলিভারি বা সরবরাহ স্থান পর্যন্ত ছিলো নিয়মের ছাঁপ।
প্রতিটি পর্যায়ের কাজগুলো গভীরভাবে জানা এবং দেখার সময় গবেষকদল খুবই আনন্দিত হয় হ্যাচারীর বিভিন্ন পর্যায়ে নারী কর্মীদের অংশগ্রহণ দেখতে পেয়ে। এই বিষয়ে হ্যাচারী ইন-চার্জ মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, “নারীরাও যাতে সমানতালে এগিয়ে যেতে পারে তাই সমমর্যাদা এবং পারিশ্রমিক প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে হ্যাচারীর বিভিন্ন কাজে নিয়োগ দেয়া হয়।”
সিপি হ্যাচারীতে নারীরা কাজ করছে ডিম বাছাই করা থেকে শুরু করে ডিমের ক্যান্ডলিং, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, সুস্থ বাচ্চা বাছাই এবং প্যাকেজিং। তাদের সাথে সাথে কাজ করছে দক্ষ পুরুষ কর্মীরাও। হ্যাচার থেকে বের হবার পর পরই বাচ্চাগুলোকে গ্রেডিং করা হয় এবং বাচ্চার খোসাগুলোকে প্রক্রিয়াজাত মেশিনে প্রক্রিয়াকৃত করা হয় যাতে এই খোসাগুলো পরিবেশের দূষণ না ঘটাতে পারে। সিপি কোম্পানির কন্ট্রাক্ট খামারের বাচ্চাতে তারা ভ্যাক্সিনও (এনডি এবং আইবিডি ভ্যাক্সিন) প্রয়োগ করে দেন। সিপি হ্যাচারীসহ সীতাকুন্ডের বারোরহাটে অবস্থিত সিপি ব্রয়লার ব্রিডার ফার্মেও ছিলো অভূতপূর্ব ব্যবস্থাপনা। বর্তমানে সেখানে দায়িত্বরত রয়েছেন ডা. মোঃ আলতাফ।
ওয়ান হেলথ্ পোল্ট্রি হাব, বাংলাদেশ এর জাতীয় সমন্বায়ক অধ্যাপক মোঃ আহসানুল হক বলেন, ”এসকল হ্যাচারীসমূহের কার্যক্রমসমূহ আমাদের সাধারণ জনগণ বিশেষ পোল্ট্রি খামারীদের দৃঢ়রূপে জানাতে পারলে এবং গবেষণার আলোকে কিছু বাস্তবসম্মত পরামর্শ প্রদান করতে পারলেই এই প্রজেক্টের সকল কার্যক্রম ফলশ্রুত হবে।”