ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ, শুঁটকি পল্লীর ঘুম হারাম
মৎস্য
দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গত দু’দিন ধরে বরগুনার তালতলীসহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আজ (রবিবার) সকাল থেকে হালকা দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি অব্যাহত আছে। আকাশে কালো মেঘের কারণে প্রকৃতি অন্ধকার রূপ ধারণ করেছে। গত দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না, সাগর উত্তাল হওয়ায় বরগুনার তালতলীতে আশারচর শুঁটকি পল্লীর জেলেরা বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
আজ দুপুরে সরেজমিনে শুঁটকি পল্লীর জেলেদের সাথে কথা বললে তারা ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে পল্লীর বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানান তারা।
তালতলী উপজেলার সমুদ্রের কোলঘেঁষা আশার চর এলাকার শুঁটকি পল্লীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ৫ শতাধিক জেলে ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা এই শীত মৌসুমে শুঁটকি উৎপাদন ও ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করে থাকেন। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদকে নিয়ে তারা এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। উড়িশ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে যাওয়া ঝড়টি যদি আঘাত হানে তাহলে এর প্রভাব পড়বে ওই আশারচর শুঁটকি পল্লীতে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তাতে জেলেদের ঘরে থাকা লাখ লাখ টাকার শুঁটকি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ঝড়ের সময় এখানকার জেলেদের আশ্রয়ের জন্য নেই কোনো আশ্রয় কেন্দ্র বা সাইক্লোন শেল্টার। বর্তমানে আকাশে কালো মেঘের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে এবং সাগরও কিছুটা উত্তাল রয়েছে।
শুঁটকি ব্যাবসায়ী জামাল আকন ও জেলে আবুল কালাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের সম্ভাব্য আঘাতের আশঙ্কায় আশারচর শুঁটকি পল্লীতে অবস্থানরত জেলে ও তাদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি জেলের অস্থায়ী ঘরে শুকনো শুঁটকি রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে এবং বৃষ্টি হলে এগুলো সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া তাদের ব্যবসা ও লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে শুঁটকি পল্লীতে অবস্থানরত একাধিক জেলেরা জানান, ঝড়ের সময় ওই শুঁটকি পল্লীতে অবস্থানরত জেলে ও তাদের পরিবার- পরিজন নিয়ে তারা চরম ঝুঁকিপূর্ণ ও অনেকটা আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছেন।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ কাওসার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের গতিবিধি ও আবহাওয়া বিভাগের সংকেতের প্রতি নজর রাখা হচ্ছে এবং আশারচর শুঁটকি পল্লীতে অবস্থানরত জেলেদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়াও সাম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তাদের সাবধানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আশারচরের শুঁটকি পল্লীর আশেপাশে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের বিষয়ে পরিকল্পনা রয়েছে।