পাহাড়ে টিয়ার ঝাঁকে খুশি পাখিপ্রেমীরা , বিপাকে কৃষকরা
প্রাণ ও প্রকৃতি
খাগড়াছড়িতে সকাল-বিকাল চলছে অবিরাম কিচির-মিচির। ঝাঁক বেঁধে উড়ছে হাজারো টিয়া। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীদের আনন্দের সীমা নেই। কিন্তু এই টিয়ার দল যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষকদের।
স্থানীয়রা জানালেন, খাগড়াছড়ির পাশে একটি সমতল এলাকা আছে। যার নাম নিউজিল্যান্ড পাড়া। পাহাড় দিয়ে ঘেরা সমতল ধান ক্ষেত, সবুজ মাঠ, বিস্তীর্ণ গোচারণভূমি ও মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির কারণেই লোকজন এ নাম দিয়েছে। এখানে ধান চাষ হয় বেশি। এখন কৃষকেরা ধান কাটায় ব্যাস্ত। আর সেই পাকা ধানের লোভেই সেখানে হানা দিচ্ছে টিয়াবাহিনী।
টিয়ার শব্দে মুখর গোটা নিউজিল্যান্ড পাড়া। স্থানীয়রা সময় পেলেই ছুটে আসছেন টিয়ার মিলনমেলা দেখতে।
খাগড়াছড়ির ইসলামপুর এলাকার মাহবুবুল আলম, মনপুরার কনিকা দে ও আপার পেরাছড়া এলাকার রূপায়ন তালুকদাররা জানালেন, গত ১০-১৫ দিন ধরে নিউজিল্যান্ড পাড়ার ধানক্ষেতে হাজার হাজার টিয়া। দৃশ্যটা অসাধারণ। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকালে আমরা টিয়া পাখি দেখতে আসছি। তবে কুয়াশা বেশি পড়লে টিয়ারা আসে না।
এদিকে টিয়া-বিপাকে আছেন কৃষকরা। টিয়া ঠেকাতে তাদের এই শীতেও পাহারা দিতে হচ্ছে ধানক্ষেতে। বলছেন, ক্ষেতে টিয়া নামলেই একগাদা ধান সাবাড় করে ফেলে।
পানখাইয়া পাড়া এলাকার কৃষক সাথোয়াই মারমা, চাইন্দা মগিনী জানান তারা ভোর থেকে বিকাল ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন। ১০-১৫ মিনিট ছাড় দিলেই পুরো ক্ষেত শেষ করে দেবে পাখির দল। এখন অন্তত ১০-১৫ শতাংশ ধান খেয়ে ফেলছে টিয়ার পাল। তারা বলছেন, টিয়া দেখে আমরাও খুশি, তবে ওরা সব ধান খেয়ে ফেললে আমরা কী খাবো?
মূলত শীত ও জঙ্গলে খাদ্য সংকটের কারণে লোকালয়ে আসছে টিয়া। তবে যে করেই হোক জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে সকলকে কাজ করার অনুরোধ জানান বন কর্মকর্তারা।
খাগড়াছড়ির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, টিয়া পাখিরা সাধারণত ফুলের রস ও দানাদার খাদ্য খায়। খাবারের খোঁজে ও আবহাওয়াগত কারণ জঙ্গল ও পাহাড় হতে হাজার হাজার টিয়া খাগড়াছড়ি আসছে। এটা আনন্দের। তবে টিয়া শিকার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন তিনি। করলে ২০১২ সালের আইন অনুযায়ী বন্যপাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান হুমায়ুন কবির।