বরগুনায় বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার
প্রাণ ও প্রকৃতি
বরগুনার তালতলী থেকে বিরল প্রজাতির একটি হিমালয়ান শকুন উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে তালতলীর সোনাকাটা ইউনিয়নের কবিরাজপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে শকুনটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে ধানক্ষেতে শকুনটি দেখতে পান কয়েকজন যুবক। পরে গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শকুনটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় শকুনটি খুবই দুর্বল ছিল এবং ভালভাবে উড়তে পারছিল না।
স্থানীয় লোকজন বলেন, শকুন উদ্ধারের খবরটি ছড়িয়ে গেলে পাখিটিকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় শুরু হয়।
বন বিভাগের তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ধানক্ষেত থেকে স্থানীয়রা একটি শকুনটি উদ্ধার করে আমাদের অফিসে নিয়ে আসে। শকুনটি অসুস্থ রয়েছে বলে আকাশে উড়তে পারছে না। চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে পরিচয় নিশ্চিত হতে শকুনটির ছবি পাঠানো হয় বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলার কাছে। তিনি এই প্রজাতিটিকে হিমালয়ী শকুন (Himalayan Griffon) বা ‘হিমালয়ান গৃধিনী’ বলে চিহ্নিত করেন। তার ধারণা, শীতে পরিযায়নের পথে শকুনটি খাবারের অভাব বা অন্য কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে ‘মহাবিপন্ন’ (Critically Endangered)। বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আইইউসিএনের হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।
জোহরা মিলা বলেন, পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য সংকট এবং বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে। শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানো পাশাপাশি দেশের মানুষ অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু হতে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। বন অধিদপ্তরসহ আইইউসিএন শকুন রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাখিটির প্রতি আমাদের সদয় হওয়া খুবই প্রয়োজন।