মাগুরায় সমন্বিত ফল বাগান করে সাফল্য পেয়েছেন নাসির হোসেন
কৃষি বিভাগ
মাগুরা জেলার সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামের কৃষক নাসির হোসেন সমন্বিত ফল বাগান করে সাফল্য পেয়েছেন। কৃষি বিভাগের পাশাপাশি তার এ সাফল্যে স্থানীয় কৃষকরাও খুশি।
তিনি উচ্চফলনশীল যাতের আপেল কুল, আগাম টক জাতের কুল এবং থাই-৫ জাতের উচ্চফলনশীল পেঁয়ারা চারা লাগিয়ে তৈরি করেছেন সমন্বিত এ ফলের বাগান। এর পাশপাশি একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করেছেন বাঙ্গী জাতীয় ফল নালিম।
মৌসুম শেষে এ বাগানের ফল বিক্রি থেকে তিনি প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
সরেজমিন মাগুরা সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় জামির হোসেনের ছেলে কৃষক নাসির হোসেনের সাথে। পাচঁ ভাই বোনের মধ্যে নাসির হোসেন তৃতীয় সন্তান। ২০১২ সালে মাগুরা আর্দশ ডিগ্রি কলেজ থেকে বি.এ পাস করেন। বিভিন্ন জায়গায় চাকরির চেষ্টাও করেন। কিন্তু কাঙ্খিত চাকরি না পেয়ে কৃষি কাজ শুরু করেন তিনি।
নাসির হোসেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সৎ পরিশ্রম, আত্ম বিশ্বাস এবং কাজের প্রতি নিষ্ঠা রেখে কৃষিকে আরো আধুনিক করতে এ কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরই এক পর্যায়ে সাড়ে ১১ একর জমি পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়ে তৈরি করেন ফলের বাগান।
নাসির জানান, জমি লিজ, বাগান তৈরি এবং ক্ষেত পরিচর্যাসহ এ খাতে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। মৌসুম শেষে তিনি তার মোট ৩টি বাগান থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার কুল ও পেঁয়ারা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
তিনি জানান, তার কুল গাছের বয়স মাত্র ৮মাস। পাঁচ মাস পর থেকেই গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করে। নিজের ফার্ম থেকেই তিনি কুল ও পেঁয়ারার চারা উৎপাদন করেছেন। এ বছর কুলের ভালো ফলন হওয়ায় তিনি খুশি। একর প্রতি প্রায় ২০০ মণ কুলের ফলন আশা করছেন তিনি। পেঁয়ারা গাছেও ফল ধরতে শুরু করেছে।
নাসিরের বাগানের কুল,পেঁয়ারা ঢাকা ও বরিশালসহ অন্যান্য জেলাগুলোতেও বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। এছাড়া পাইকাররা বাগান থেকে এসব ফল কিনে বাজারে বিক্রি করেন। নাসির হোসেন জানান, লেখাপড়া শিখে চাকুরির পেছনে না ছুটে আমরা যদি কৃষি কাজে আত্মনিয়োগ করি তাহলে কৃষিতে আরো সমৃদ্ধি ঘটবে। স্বাবলম্বী হবে পরিবার। আমি নিজের মেধা ,আত্মপ্রত্যয়কে সামনে রেখে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছি।
মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, নাসির হোসেন একজন প্রগতিশীল কৃষক। শিক্ষিত যুবক নাসির সমন্বিত ফল বাগান করে সাফল্যে পেয়েছেন। বাগান তৈরিসহ ভালো ফলন পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।