লোকসানে বন্ধ চট্টগ্রামের অনেক দুগ্ধ খামার
প্রাণিসম্পদ
দানাদার গোখাদ্যের অধিকাংশই আমদানিনির্ভর। সবুজ ঘাসের সংকটের কারণে খামারিরা দানাদার খাদ্যের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক মাস যাবৎ অব্যাহতভাবে দানাদার গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ডেইরি খামারিরা।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, খাদ্যের উৎসের ব্যবস্হা না করে ডেইরি খামার করা হচ্ছে। গ্রামে কিছুটা সবুজ ঘাস থাকলেও শহরে তার ব্যবস্হা নেই। ফলে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে খামারিদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য খামারিরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন।
ডেইরি খামারিরা জানান, গোখাদ্যের সংকটের কারণে ডেইরি খামারের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। গ্রামের খামারিরা স্হানীয়ভাবে সবুজ ঘাস ও বিভিন্ন মৌসুমি সবজি গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলেও শহরের খামারিরা দানাদার খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল। দানাদার গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মহাবিপাকে পড়েছেন তারা। আর গোখাদ্যের দাম বাড়লেও দুধের দাম বাড়েনি। অন্যদিকে দুগ্ধ খামারিদের গাভি লালন-পালনে খরচ বেড়ে গেছে। ফলে অব্যাহত লোকসানের কারণে অনেক দুগ্ধ খামার ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তারা দুধেল গাভি বিক্রি করে দিচ্ছেন।
দুগ্ধ খামারি মো. ওমর বলেন, গোখাদ্যের প্রতিটি আইটেমের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের সবুজ ঘাসের কোনো ব্যবস্হা নেই। দানাদার খাদ্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। সয়াবিন, ভুসি, ভুট্টা, চালের খুদসহ সবকিছুর মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু তরল দুধের দাম বাড়েনি। গোখাদ্যের বাজার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। বাজারে সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও গত পাঁচ-ছয় মাস যাবত্ কয়েক দফায় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই দুগ্ধ খামার বন্ধ করে দিয়েছেন।
ডেইরি খামারি ইকবাল হোসেন বলেন, গোখাদ্যের পুরো বাজার সিন্ডিকেট-নির্ভর হয়ে পড়েছে। মিলমালিকেরা সয়াবিনের দাম দফায় দফায় বাড়াচ্ছেন। আর রাইস মিল মালিকেরাও গোখাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। লোকসানের কারণে ছোট ছোট অনেক দুগ্ধ খামার বন্ধ হয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের দুগ্ধ খামারি হারুন চৌধুরী বলেন, প্রকৃত খামারিরা এখন টিকতে পারছেন না। সয়াবিনের বাজার দেশের দুটি শিল্প গ্রুপ ভাগ করে নিয়ন্ত্রণ করছে। গোখাদ্যের পাশাপাশি শ্রমিক মজুরিও বেড়েছে। গোখাদ্যের খরচ, শ্রমিক মজুরি দিয়ে দুগ্ধ খামার লাভজনক অবস্হায় নেই।