সারের অতিমূল্যে বিপাকে কৃষক
কৃষি বিভাগ
পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও ‘সরবরাহ সঙ্কটের’ কথা বলে রবি মওসুমে তিনটি সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা; কিছু জেলায় চড়া দামেও চাহিদামত সার না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
ঝিনাইদহ, নওগাঁ, রংপুর ও কুড়িগ্রামের কৃষক ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সারের বাজারে এমন অস্থিরতার চিত্র পাওয়া গেছে।
সরকার টিএসপি সারের দাম প্রতিবস্তা এক হাজার ১০০ টাকা বেঁধে দিলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায়।
প্রতিবস্তা এমওপি বা পটাশ সার ৭৫০ টাকার জায়গায় ৯৫০ টাকায় এবং ডিএপি ৮০০ টাকার জায়গায় ৯৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক।
দেশে বছরজুড়ে যত রাসায়নিক সার ব্যবহৃত হয়, তার অর্ধেকই ইউরিয়া সার। টিএসপি, ডিএপি ও এমওপির মত নন-ইউরিয়া সারগুলো শুকনো মওসুমে ফসলের মাঠ প্রস্তুতের সময় ব্যবহৃত হয়। আর ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয় ফসলের বাড়ন্ত সময়ে।
কৃষকরা বলছেন, বর্তমানে আলু, ডাল, পেঁয়াজসহ অন্যান্য রবিশস্যের মাঠ প্রস্তুতির জন্য ইউরিয়া ছাড়া অন্য সারগুলোর চাহিদা বেড়েছে। এ সুযোগে এসব সারের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যদিও ইউরিয়া সার সরকার নির্ধারিত দরে প্রতিবস্তা ৮০০ টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ যে সত্যি কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের কথাতেও তা স্পষ্ট। গত মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ে সমন্বয় সভা শেষে তিনি বলেছিলেন, দেশে সারের কোনো সঙ্কট না থাকলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গুজব ছড়িয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ‘অসাধু এ সিন্ডিকেটের’ বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ার করেছেন।
রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিনমণ এলাকার কৃষক মহিকুল ইসলাম বলেন, সরকার এক হাজার ১০০ টাকায় দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দামে সার তিনি পাননি; কিনতে হয়েছে এক হাজার ৪০০ টাকায়।
“অনেক দোকানে পর্যাপ্ত সারও পাওয়া যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে ১৫ বস্তা চাইলে ১০ বস্তা পাচ্ছি।“
জসিম উদ্দিন নামে এক ডিলার দাবি করেন, বর্তমানে আলুর জমি তৈরিতে যে পরিমাণ নন-ইউরিয়া সারের চাহিদা তৈরি হয়েছে, বাজারে সেই পরিমাণ সার ‘নেই’। তাই দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। পটাশ ৮০০ টাকা সরকারি মূল্য, সেটা এখন এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।