হবিগঞ্জে বোরো আবাদের ধুম
কৃষি বিভাগ
হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে রোপা আমন তোলা শেষে বোরো ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। ভোরের আলো ফুটতেই কোমর বেঁধে ফসলের মাঠে নেমে পড়ছেন কৃষকরা। আর এ কাজে পরিবারের সদস্যরাও চাষিদের পুরোদমে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি জেলার কয়েকটি হাওড় ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে কৃষকরা আবাদের সরঞ্জাম নিয়ে হাওড়ে যাচ্ছেন। কেউ বীজতলা তৈরি করছেন, কোথাও কোথাও পুরোদমে চলছে রোপনের কাজ। পুরুষের সঙ্গে নারী ও শিশুরা কাজে যোগ দেওয়ায় নেই শ্রমিক সঙ্কটও।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর হবিগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিকে। তবে আমনের জমিতেও বোরোর চাষ শুরু হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৪৯ হাজার, উফসী ৭৩ হাজার ২২০ ও স্থানীয় জাতের ধান ৮০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হবে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কৃষক সবুজ মিয়া, আলম মিয়া, তাহের মিয়া, আলী হোসেন, রমিজ মিয়া ও শফিক মিয়া বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সফলভাবে রোপা আমন ধান তোলা শেষ হয়েছে। শুরুতে ধানের ন্যায্যমূল্য থাকলেও শেষের দিকে দাম অনেকটা কমে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বোরো চাষে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
বানিয়াচং উপজেলার তৌফিক মিয়া জানান, ইতোমধ্যেই হাওড়ের নীচু জমিতে চারা রোপন শেষ। এখন উঁচু জমিতে সেচের মাধ্যমে আবাদ চলছে। এবার রোপা আমনের জমিতেও বোরো চাষ হচ্ছে। এতে আবাদের পরিমাণ বেড়েছে।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলার সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ১২ হাজার ৪০০, মাধবপুরে ১১ হাজার ৭০, চুনারুঘাটে ১০ হাজার ৮৯৫, বাহুবলে ৮ হাজার ৬১০, নবীগঞ্জে ১৯ হাজার ৫৮০, লাখাইয়ে ১১ হাজার ১২০, বানিয়াচংয়ে ৩৩ হাজার ৬৮৫ এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১৪ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এসব জমি থেকে ৫ লাখ ২২ হাজার ১০৯ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, এখন পর্যন্ত হাওড়ের অবস্থা ভালো। সামনের দিনে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।