৯:৫১ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • সুপেয় পানির পুকুরে মাছ চাষ!
ads
প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ ৭:৩০ পূর্বাহ্ন
সুপেয় পানির পুকুরে মাছ চাষ!
মৎস্য

‘পুকুরে গোসল করা, কাপড় কাচা, হাত-পা ধোয়া এবং মাছ চাষ সম্পূর্ণ নিষেধ। ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে খনন করা সংরক্ষিত পুকুর।’ এসব কথা লেখা রয়েছে জেলা পরিষদের খনন হওয়া আলীগাঁও নয়া পুকুরপাড়ে টানানো সাইন বোর্ডে।
২০২১ সালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের এমন ৩০টি পুকুর খনন করা হয়। খনন শেষে এসব পুকুর জনসাধারণের (সুপেয় পানি) জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা। তবে অভিযোগ উঠেছে, পুকুরগুলো মাছ চাষের জন্য গোপনে বন্দোবস্ত দিয়েছে জেলা পরিষদ।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জে পানি সংরক্ষণ ও নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ৩০টি পুকুর খননের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ কাজ বাস্তবায়নে জিওবি দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। খনন কাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়ে ২০২১ সালে শেষ হয়। প্রকল্পটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করে।

পুকুরগুলো হলো- ছাতিয়ান চূড়া, মোন্নাপাড়া, হাইতর, ফেরুশা, চিয়ারগাঁও, এনায়েতপুর, রশিকনগর, বড়গাঁও, চিয়ারগাঁও, পাকা, কামদিয়া, তেঘড়া, শ্যামপুর, আশকুর, উথবী, চালিতা, তেরইল, পূর্ব বড়গাঁও, বৈলগাঁও, মাকলাইম, খাড়িতা, বানিহারা, আমগাঁও, রঘুনাথপুর, এনায়েতপুর, ধাওয়াচিলা, আরজি পিয়ারাপুর, আরীগাঁও, শিহিগাঁও ও চণ্ডীপুর ডাকবাংলো।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রকল্পের কাজ শেষ হতেই মাছ চাষের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। টাকা হরিলুট করার জন্য পুকুর বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।

কামদিয়া ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম। তিনি একটি পুকুর ৩ বছরের জন্য বন্দোবস্ত নিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ৩৬ হাজার ৫০০ টাকার চুক্তিতে জেলা পরিষদের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়েছেন। এখন সেখানে তিনি মাছ চাষ করছেন।

এনায়েতপুরের মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মসজিদের নামে একটি ৩০ হাজার টাকায় বন্দোবস্ত নিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, মসজিদের নামে নেওয়া পুকুরটি সাব দিয়েছেন ৫০ হাজার টাকায়।
আরজিপেয়ারাপুর আতাউর রহমান রহমান জানান, এ গ্রামের পুকুরটি জেলা পরিষদের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বন্দোবস্ত নিয়েছেন।

শাখাহার ইউনিয়নের আলীগাঁও গ্রামের মৃত কিনা উদ্দিনের ছেলে বেলাল উদ্দিন তাঁদের গ্রামের পুকুরটি একই শর্তে নিয়ে মাছ চাষ করছেন। এভাবে জেলা পরিষদ ৩০টি পুকুরই বন্দোবস্ত দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, জেলা পরিষদ কীভাবে খাসপুকুর পেল, এটি জানার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদের তৎকালীন সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে প্রকল্পটি জেলা পরিষদ থেকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখভাল করার কথা। তবে প্রকল্পটির এখন কী অবস্থা, তা তিনি জানেন না।

পুকুর বন্দোবস্তের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জেলা পরিষদের প্রশাসক (সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) মো. আতাউর রহমান। তিনি দাবি করেন, প্রকল্পটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল এখনও জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করেনি।

প্রকল্পের নামে অর্থ হরিলুট ও অবৈধভাবে পুকুর বন্দোবস্তের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রশাসক বলেন, আসলে এই প্রকল্পটি জেলা পরিষদের নয়। এটি সরকারের প্রকল্প, এর বেশি কিছু জানেন না তিনি।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রেজওয়ান হোসেন জানান, পুকুরগুলোর মালিক জেলা পরিষদ। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্ব ছিল পুকুর খনন ও অবকাঠামো তৈরি করা। খনন ও অবকাঠামো কাজ শেষে পুকুরগুলো জেলা পরিষদের কাছে ২০২১ সালে হস্তান্তর করা হয়। এরপর এসব পুকুর তারা মাছ চাষের জন্য ইজারা দিয়েছে কিনা, সেটা তাঁদের জানা নেই। তবে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়ার কথা নয়। সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য সরকার এ প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে।
সমকাল

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop