ইঁদুরের গর্তের জমানো ধান সংগ্রহে স্থানীয় শিশুরা
কৃষি বিভাগ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ঝরে পড়া ও ইঁদুরের গর্তে জমানো ধান সংগ্রহে মেতে উঠেছে স্থানীয় শিশুরা। রোদ কিছুটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতে খুন্তি, কোদাল, শাবল, ব্যাগ নিয়ে দল বেঁধে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করতে নেমে পড়েন ফসলের মাঠে। স্থানীয়ভাবে যাকে বলে ইঁদুরের গোলায় হানা। কোনো কোনো ইঁদুরের গর্তে মেলে প্রায় ৮ থেকে ১০ কেজি ধান।
এ মৌসুমে অনেক শিশু-কিশোর স্কুলে না গিয়ে দিন পার করছে ফসলের মাঠে। ইঁদুরের গর্তে ধান সংগ্রহ করতে আশা সাগর জানান, তাদের সংগ্রহ করা এই ধান ২ থেকে ৩ মাসের খাবারের যোগান দেয়।
গাড়াগ্রাম বিলে ধান সংগ্রহ করতে আসেন বেশ কয়েকজন কোমলমতি শিশু-কিশোর। এসময় তরিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন, বিভিন্ন মাঠে সংগ্রহ করা ধান বিক্রির টাকা দিয়ে পোশাক ও কেউ খাতা-কলম কেনেন।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠে শিশু-কিশোররা দল বেঁধে চষে বেড়াচ্ছেন। তারা তুলছেন পড়ে থাকা গোছা ধানের শীষ। ভাগ বসাচ্ছেন ইঁদুরের গর্তে জমানো ধানেও। দৈনন্দিন এমন দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।
চাঁদখানা ইউনিয়নের নগরবন গ্রামের আমন ধান চাষি শাহজাহান সিরাজ বলেন, ক্ষেত থেকে ইঁদুর ধানের শীষ কেটে নিয়ে গর্তে মজুদ রাখে। শিশু-কিশোরাও যেন ইঁদুরের ব্যতিক্রম নয়। তবে মাটিতে পড়ে থাকা ধান সংগ্রহে আমরা বাধা দেই না। এতে এক দিকে পড়ে থাকা ধানের অপচয় রোদ হয়। অন্যদিকে গ্রামের অনেক পরিবার এই ধান দিয়ে শীতকালীন মুড়ি, পিঠা তৈরি করে সংসারে আয়-রোজগার করেন।
নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, ধান ঘরে তোলার পর শূন্য ফসল মাঠে ধান কুড়ানি এবং ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তবে এখন আগের মতে ইঁদুরের গর্তে তেমন ধান পাওয়া যায় না। কারণ কৃষক পর্যায়ে ইঁদুর নিধনে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াই করলে ধানের অপচয় রোধ হবে।