নীলফামারীতে সুপার ফুড চিয়া ও কিনোয়ার চাষ শুরু
কৃষি বিভাগ
উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ ও সারাবিশ্বে সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত চিয়া ও কিনোয়ার চাষ শুরু হয়েছে নীলফামারীতে। ওষুধি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই দানাশস্য পুষ্টিহীনতা রোধে তৈরি করেছে নতুন সম্ভাবনা।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের কৃষক শাহাজান আলী চিয়া সিড ও কিনোয়া চাষ শুরু করেছেন। দানাদার এ ফসল মানবদেহে বিভিন্ন রোগের কার্যকরী মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া চিয়া চাষে উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কিনোয়া একটি অত্যন্ত উচ্চ প্রোটিন সম্পন্ন খাবার। এক কাপ কিনোয়ায় ৮ থেকে ১০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়াও কিনোয়া হচ্ছে একমাত্র উদ্ভিজ্জ প্রোটিন উৎস, যাতে ৯ ধরনের এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড উপস্থিত থাকায় নাসার মহাকাশচারীরা এটি খেয়ে থাকেন। গ্লাইসেন ইনডেক্স কম থাকায় ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও এটি বেশ উপকারী।
কৃষক শাহাজান আলী জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতাংশ জমিতে চিয়া ও কিনোয়ার চাষ করেছি। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এর চাষ পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন। রোগবালাই না থাকায় ও পরিচর্যা কম লাগায় ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে তিন হাজার টাকা। জমিতে ফলন হবে ৪০ থেকে ৫০ কেজি। ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, ফসল দুটি উদ্ভাবনের পর যে চার-পাঁচটি উপজেলায় আবাদ হচ্ছে, তার মধ্যে কিশোরগঞ্জ একটি। চিয়া সাধারণত একটি তিল ও রাই সরিষার শস্যদানার মতো। ফসলটি দেশীয় পদ্ধতিতে সারিবদ্ধ কিংবা বীজ ছিটিয়ে চাষাবাদ করা যায়। অক্টোবর মাসে বীজ রোপণ করতে হয়। গম বা সরিষার মতো মাড়াই করে চালুনি, মশারির কাপড়, কুলা দিয়ে সহজে পরিষ্কার করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, পুষ্টিপরিপূরক আর অধিক মানসম্পন্ন হওয়ায় বহির্বিশ্বের সুপার ফুড দুটির চাহিদা অনেক বেশি। চিয়া ও কিনোয়া ফসল দুটি আমরা কৃষকদের কাছে ছড়িয়ে দিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু এই চাষাবাদ প্রক্রিয়া অনেক সহজ এবং ৩ মাসেই ঘরে তোলা সম্ভব তাই আমরা সামনে যেন এই চাষের পরিধি বৃদ্ধি পায় সে বিষয়ে কাজ করছি।