পুরো গ্রামের একসাথে কোরবানি, সমহারে মাংস বণ্টন
প্রাণিসম্পদ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর এলাকার পোষ্টকামুরী গ্রামে ৯৩টি গরু ও ৮টি খাসি কোরবানি করা হয়েছে। এই পশুর এক তৃতীয়াংশ মাংস গ্রামের ৫ হাজার ১৮৪ জন মানুষের এক হাজার ১৮০ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিজন ৯০০ গ্রাম করে মাংস পেয়েছেন বলে জানা গেছে। গ্রামের লোকজন ২৭ বছর যাবত সমাজবদ্ধ হয়ে একত্রে এক জায়গায় পশু কোরবানি করছেন বলে জানিয়েছেন এলাকার প্রতিনিধিসহ গ্রামের সাধারণ মানুষ।
গ্রামের লোকজন জানান, পোষ্টকামুরী গ্রামটিতে পাঁচ হাজারের অধিক লোকজনের বসবাস। গ্রামবাসী সমাজবদ্ধ হয়ে দুই যুগের বেশি সময় ধরে একত্রে কোরবানি করে থাকেন। গ্রামের সব মানুষকে এক পরিবারের সদস্য মনে হয়। গ্রামটিতে কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে শতাধিক মানুষের। তবে কোরবানির মাংসের জন্য গ্রামের কাউকে কোথাও যেতে হয় না। যারা কোরবানি দেন তারাসহ গ্রামের সবাইকে সমহারে মাংস দেওয়া হয়। প্রতি বছর জনপ্রতি এক কেজি করে মাংস বিতরণ করা হলেও এ বছর গরু কোরবানি কম হওয়ায় জনপ্রতি ৯০০ গ্রাম করে সমহারে বিতরণ করা হয়।
প্রতি বছর পোষ্টকামুরী ক্লাব মাঠে গ্রামবাসী একত্রে কোরবানি করে থাকেন। এ বছর ক্লাবমাঠ সহ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের (পুরাতন) পাশে এবং কয়েকজন বাড়িতে পশু কোরবানি করেন। বাড়িতে কোরবানি করা পশুর এক তৃতীয়াংশ মাংস নিজ দায়িত্বে ক্লাব মাঠে মাংস বিতরণ কাউন্টারে পৌছে দেন। মহাসড়কের পাশে কোরবানি করা পশুর মাংস স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। পরে গ্রামটির এক হাজার ১৮০ পরিবারের মধ্যে এই মাংস বিতরণ করা হয়।
গ্রামের মানুষের একসঙ্গে পশু কোরবানি দেওয়া গ্রামটির রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে সামাজিক হৃদ্যতা বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি ভালো কাজে উৎসাহ পাচ্ছে গ্রামবাসী।
গ্রামবাসী জানায়, গ্রামটিতে ধনী-গরিব সবার মাঝে ঈদের খুশি ভাগ করে নিতে একসঙ্গে পশু কোরবানি করেন গ্রামের পাঁচ হাজারের অধিক মানুষ। ঈদের দিন কোরবানির পশু নিয়ে আসা হয় খোলা মাঠে। কোরবানির পর এক তৃতীয়াংশ মাংস একত্রিত করে তালিকা অনুযায়ী মাইকে নাম ডেকে মাংস বিতরণ করা হয়। মাংসের জন্য কাউতে ঘুরতে হয় না কারও দ্বারে দ্বারে। সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির এই মেলবন্ধন চলছে দুই যুগ ধরে।