বন্যায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়লেন কিশোরগঞ্জের মাছের খামারিরা
মৎস্য
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের পানাহার গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান ভূঁইয়া। গাজীপুরে ইলেকট্রিক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য গড়ে তুলেন মাছের বিশাল খামার। খামারের ওপর নির্ভশীল ছিল আরো ১৬ জন নারী-পুরুষের সংসার। কিন্তু বহু কষ্টে গড়ে তোলা খামারটি এক দিনেই বন্যার পানিতে তছনছ হয়ে গেছে। পানির সাথে ভেসে গেছে তার ৬০ লাখ টাকার মাছ। দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মাছের খাবার নষ্ট হয়ে গেছে পানিতে। তিনি এখন সর্বস্বান্ত। খামার পাড়ের কলাবাগান, পেঁপে বাগানেও পানি উঠে গেছে।
খামারে দেখা যায়, খামারের সবগুলো পাড়ে হাঁটুসমান পানি। খামারের ওপর দিয়ে প্রবল স্রোত বয়ে যাচ্ছে। খামারের পাড় রক্ষার জাল এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। খামার আর হাওরের পানি এখন একাকার। হু হু করে পানি বেড়ে যাওয়ায় এক দিনেই সব মাছ বেরিয়ে গেছে।
তার মতো সারা জেলায় বানের পানিতে ভেসে গেছে ৭৪০ জন মৎস্য খামারির স্বপ্ন।
জেলা মৎস্য অধিদফতর জানায়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটির বেশি।তবে বেশ কিছু এলাকা ঘুরে ও ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সাথে কথা বলে ধারণা করা গেছে, খামারের সংখ্যা ও ক্ষতির পরিমাণ আরো কয়েকগুণ বেশি হবে।
সাইদুর বলেন, ‘আমার খামারে এখন কোনো মাছ নেই। একদম পথে বসে গেছি। যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। এখন কিভাবে ঘুরে দাঁড়াব। সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ না দেয়া হলে বিপর্যয়ে পড়ে যাব।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল জানান, বন্যায় জেলার এই ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব প্রাথমিক পর্যায়ের। ক্ষয়ক্ষতির খবর আরো আসছে। এর পরিমাণ আরো বাড়বে। প্রতি দিনই জেলার ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু বন্যায় সব ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেয়া হলেও মৎস্য খামারিদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় না। এবারের বন্যায় ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ক্ষতিপূরণ না দেয়া গেলে তারা মাছ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন বলে জানান তিনি।