দুই রাতে ২০ গরু চুরি, আতঙ্কে গ্রামবাসী
প্রাণিসম্পদ
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুই রাতে দুটি গ্রাম থেকে কৃষকের ২০টি গরু চুরি হয়েছে। এর বাইরে এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ধশতাধিক গরু চুরির খবর পাওয়া গেছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে গরুর মালিকদের। চোরের হাত থেকে নিজেদের গরু রক্ষায় পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে অনেকের। এরপরও থামছে না চুরি। তবে স্বল্প জনবল থাকলেও তৎপরতা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া চিনাডুলি গ্রামের পাঁচ কৃষকের ১২টি গরু চুরি হয়েছে। ওই গ্রামের মো. মিলন মিয়ার তিনটি, মো. ইলিয়াসের তিনটি, মো. চান মিয়ার তিনটি, মো. শাহজাহানের একটি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন শেখের দুটি গরু চুরি হয়। এর দাম প্রায় ৮ লাখ টাকা বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এর আগের দিন রোবরার রাতে সদর ইউনিয়নের পাবুর খান বাড়ি এলাকার মৃত আব্দুল বাতেন খানের ছেলে আবুল কাশেম খানের তিনটি, ওবায়দুল কবির খানের চারটি ও পারভেজ খানের একটি গরু চুরি হয়েছে। এগুলোর বাজার দাম প্রায় ৬ লাখ টাকা। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর রাতে রায়েদ মধ্যপাড়া গ্রামের আমীর আলীর দুটি এবং সিদ্দিকুর রহমান, কুরবান আলী, আব্দুস সাহিদ, হারিছ মিয়া ও আব্দুল হাইয়ের একটি করে গরু চুরি হয়েছে। এ ছাড়া সজীব মিয়ার তিনটি খাসি এবং হাইলজোর গ্রামের কলেজ মোড়ের দোকানি মো. জিয়াউদ্দিনের তিনটি গরু নিয়ে গেছে চোরেরা।
২৮ অক্টোবর রাতে রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হাসেমের পাঁচটি গরু চুরি হয়েছে। ঘটনার পরদিন তিনি কাপাসিয়া থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এর বাইরে উপজেলার রাওনাট, দুর্গাপুর, নাশেরা, ফুলবাড়িয়া, বেগুনহাটি, নলগাঁও, চাঁদপুর, বর্জনা, কোটবাজালিয়া, ভাকোয়াদিসহ কয়েকটি এলাকায় গরু চুরির খবর মিলেছে। স্থানীয়দের দাবি, এক মাসে এসব গ্রাম থেকে অন্তত ৬০-৭০টি গরু চুরি হয়েছে।
রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম ব্যাপারী বলেন, চোরের হাত থেকে গরু সুরক্ষায় বসতঘরের কাছে অনেক টাকা ব্যয়ে গোয়ালঘর করেছেন। তারপরও গরু চুরি হয়ে যাচ্ছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না।
পাবুর গ্রামের শাকিল হাসান বলেন, চোরের ভয়ে তাঁদের সারারাত নির্ঘুম থেকে পাহারা দিতে হয়। তারপরও চোরের হাত থেকে গরু রক্ষা করা যাচ্ছে না। সুযোগ পেলেই চোরেরা কাভার্ড ভ্যানে গরু ভরে উধাও হয়ে যায়।
কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম বলেন, পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হওয়ায় যাতায়াত সহজ হয়েছে। স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে বিশাল এলাকার চুরি প্রতিরোধ কষ্টসাধ্য। এ জন্য পুলিশের পাশাপাশি এলাকাবাসীকে সোচ্চার হতে হবে।