কোরবানির মাঠ কাঁপাবে ‘ভাটির রাজা’
প্রাণিসম্পদ
আসন্ন কোরবানিতে এবার আলোচনায় আসছে বিভিন্ন নামের গরু। ঠিক তেমনি সবার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে এবার কিশোরগঞ্জের এক টন ওজনের ষাঁড় ‘ভাটির রাজা’। জেলার সবচেয়ে সুদর্শন ও বড় হিসেবে আলোচিত গরুটি দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারাও। মালিক দাম হাঁকছেন ১২ লাখ টাকা। জেলার তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের মধ্য কাজলা গ্রামের খামারি মো. মতিউর রহমান এই ষাঁড়টির মালিক।
খামারি মতিউর রহমান জানান, ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়ের ওজন এখন প্রায় ১০০০ কেজি। প্রতিদিন এর ওজন দেড় থেকে দুই কেজি করে বাড়ছে। সারাদিনই ‘ভাটির রাজা’র যত্ন করতে হয়। খাওয়ানো, গোসল করানো ও পরিচর্যাসহ সবকিছু লক্ষ্য রাখতে হয়।
গরুটির যতটা না ওজন তার চেয়ে বেশি এটি সুন্দর। ৩০ মাস বয়সী দুই দাঁতের এই গরুটিকে এখন প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ কেজি করে খাবার দিতে হচ্ছে। খাবারের তালিকায় রয়েছে নিজস্ব জমির কাঁচা ঘাস, শুকনো খড়, গমের ভুষি, খেসারির ভুষি, ভুট্টাভাঙা ও কলা।
আরো পড়ুন: আসন্ন কোরবানি, ফটিকছড়িতে এক মাসে ১৫ গরু চুরি!
শুধু কিশোরগঞ্জ জেলা নয়, ভাটি এলাকার মধ্যে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বড় ও সুন্দর গরুর তালিকায় ‘ভাটির রাজা’ অন্যতম। খামারি মতিউর রহমান আরো জানান, স্থানীয় এক কৃষকের কাছ থেকে দেড় বছর আগে এক বছর বয়সী ‘ভাটির রাজা’কে কিনেছিলেন তিনি। কেনার পর এটিকে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এর খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বাড়ির পাশে একটি বিশাল ঘাসের জমিও করেছেন তিনি। ভালো দামে এবার গরুটি বিক্রি করতে পারলে, আগামীতে এ ধরনের আরো গরু তৈরি করতে তিনি উৎসাহ পাবেন বলেও জানান।
তাড়াইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরজাহান বেগম জানান, গরুটির মালিক একজন সফল উদ্যোক্তা। আহমেদ এগ্রো নামে তিনি একটি খামার গড়ে তুলেছেন। গত বছর তিনি দেশি জাতের ৬টি গরু বিক্রি করেছেন। এবার প্রথম বড় জাতের গরু মোটাতাজা করেছেন তিনি। গরুটি লালন-পালনে খামারি মতিউর রহমান কোনো ধরনের হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেন নি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার বিপুল পরিমাণ গবাদিপশু লালন-পালন হচ্ছে। অনেক জায়গায় বড় বড় গরু মোটাতাজাকরণ হচ্ছে। এগুলোর নিয়মিত খোঁজ রাখা হচ্ছে। তবে তাড়াইলের এ গরুটি কিশোরগঞ্জের সবচেয়ে নান্দনিক এবং সুন্দর গরু। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় গরুটি পালনে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছে। আশা করছি খামারি এটির ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে জানান তিনি।
এগ্রিভিউ/এসএমএ