ধানে নয়, ঘাসে ঝুঁকছেন চাষি!
কৃষি বিভাগ
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আলুটারী বীরচরণের যুবক আবুল কাশেম ৯ শতক জমিতে নেপিয়ার ঘাস লাগিয়ে প্রতিবছর ২৮ হাজার টাকার ঘাস বিক্রি করছেন। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় সারাবছরই সহজে বিক্রি করা যায় এ ঘাস।
আবুল কাশেম জানান, বাড়ির সামনে গাছের জন্য ওই জমিতে সারাবছর ছায়া থাকত। কোনো ফসল আবাদ হতো না। এরপর পার্শ্ববর্তী একজনের ঘাস চাষ দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হই। লাইন করে ঘাসের চারা রোপণ করি ও স্বল্প সেচ ও গোবর সার দিই। অল্পদিনের মধ্যে ঘাস বড় হয়ে ওঠে। আমি বছরে ৭ থেকে ৮ বার এ ঘাস কাটতে পারি। এতে করে প্রতিবছর ওই ঘাস বিক্রি করে আমি প্রায় ২৮ হাজার টাকা উপার্জন করি। ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষে অনেক ঝুঁকি রয়েছে।
এ ছাড়া যে পরিমাণ ওষুধ দিতে হয়, ধান বিক্রি করে আর কোনো কিছু হাতে থাকে না। এ ছাড়া ধান আবাদ করলে বছরে দু’বার ফসল পেতাম। ৩ থেকে ৪ মণ ধান হতো এবং ধান ও খড় বিক্রি করে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা আসত। আমি মনে করি ধানের চেয়ে নেপিয়ার ঘাসেই বেশি লাভ।
কাউনিয়ার কাচু গ্রামের খামারি রফিকুল ইসলাম ১৪ শতক জমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে এ ঘাস আবাদ করেছেন। নিজ খামারের গরুর চাহিদা মিটিয়ে তিনি এ ঘাস বিক্রি করছেন। রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি যে জমিতে ঘাস আবাদ করি সেই জমিতে ধান আবাদ করলে আমার ১০ হাজার টাকা লাভ হতো। কিন্তু ঘাস আবাদ করে নিজ খামারের গরুদের খাইয়ে আমার প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রংপুর জেলার আট উপজেলায় ৪৮০ হেক্টর জমিতে গো-খাদ্য হিসেবে ঘাস ও ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ২৩৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে নেপিয়ার ঘাস।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, সহজ চাষাবাদ পদ্ধতি, ঝুঁকি কম থাকা এবং লাভ বেশি হওয়ার কারণে দিন দিন এ ঘাস চাষের আওতা বাড়ছে। বর্তমানে অনেক কৃষক এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছেন। আমরা তাদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি।