মরুর ফল চাষে লাখপতি স্কুল শিক্ষক
কৃষি বিভাগ
টানা দেড় বছর দাপ্তরিক প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এ সময় বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আন্ধারমানিক ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের স্কুলশিক্ষক হাসান মাহমুদ সাইদ (৪৫) চাষাবাদ করেছেন গ্রীষ্ফ্মকালীন ও মরুভূমির ফল তরমুজ ও বাঙ্গির।
দেখা যায়, সাইদ হাসান গত বছর ২৪ শতাংশ জমিতে মরুভূমির ফল আবাদ করে বিক্রির পর আড়াই লাখ টাকা লাভ করেছেন। এ বছর এক একর জমিতে আবাদ করে ১০ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। এসব ফলের বীজ বপনের ১৫ দিনের মধ্যেই ফুল ধরে এবং তিন মাসের মধ্যে ফলগুলো বিক্রয়যোগ্য হয়ে ওঠে। ১২ মাসই আবাদ করা যায় এসব ফলের।
এ ছাড়া তার খামারে আবাদ করা হয় বিদেশি জাতের ব্রোকলি (ফুলকপি), মিষ্টি মরিচ, লেটুস পাতা, রেডবিট (শালগম জাতীয়), টমেটো, আলুবোখারা, লবঙ্গ, ডুরিয়ান (মালয়েশিয়ান ফল) সাদা জাম, কমলাসহ দুষ্প্রাপ্য বিভিন্ন জাতের বিদেশি ফলের চারা। পাঁচটি মাছের ঘেরে আছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
হাসান মাহমুদ জানান, ১৯৯০ সালে এসএসসি পাসের পর কৃষি ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিনি মাছের ঘের করেন। এরপর আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এরই মধ্যে খামারের পরিধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ একরে। ২০১০ সালে পাঁচটি ঘেরের চারপাশে কৃষিকাজ শুরু করেন। এ সব কাজের পাশাপাশি দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে যোগ দিয়ে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন তিনি।
হাসান মাহমুদ সাইদ বলেন, গত বছর বরিশাল নগরীর একটি বীজ বিক্রির দোকানে তার পরিচয় হয় থাইল্যান্ডের চিয়াত তাই কোম্পানির (বীজ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান) এক বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে। তার পরামর্শ ও বিনামূল্যে দেওয়া বীজে আরব দেশের সুস্বাদু ফল আবাদে আকৃষ্ট হন তিনি।
আন্ধারমানিক ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মামুন সরদার জানন, হাসান মাহমুদের খামারে কৃষি অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের ফল ও আখ এবং নানা প্রকার সবজির প্রদর্শনী করা হচ্ছে। আগ্রহী তরুণদের নিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হয়। এরই মধ্যে আন্ধারমানিক ইউনিয়নের দুই যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে খামার গড়েছেন।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, অধিদপ্তরের বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসান মাহমুদের খামার পরিদর্শন করেছেন। তার উদ্যোগ সর্ব মহলে প্রশংসিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।