৯:৪৭ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ২:৫১ অপরাহ্ন
জাত উন্নয়নের অগ্রপথিক শ্লোগানে যশোরে ২ দিনব্যাপী ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজের AISP বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

জাঁকজমকপূর্ণভাবে অত্যন্ত সুন্দর মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীদের বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩। ‘জাত উন্নয়নের অগ্রপথিক’- এই স্লোগান কে সামনে নিয়ে গত শনিবার ও রবিবার (২০-২১ এপ্রিল ২০২৪) খুলনা রিজিওনের যশোর জেলা সহ ৭ টি জেলার ১১ টি সেলস্ সেন্টারের প্রায় ৩৫০ জন কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীদের নিয়ে যশোর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে উক্ত সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত ।

কৃষকের সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্র্যাক ১৯৮৭ সালে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গবাদীপশুর জাত উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয় । সে সময়ে দেশি জাতের গবাদীপশু কম ছিল, তাই দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃত্রিম প্রজনন সেবাকে খামারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্র্যাক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে তরল সিমেন নিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করে। তরল সিমেনের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান করার ফলে দেশী গরুর জাত উন্নয়ন প্রক্রিয়া কিছুটা গতি লাভ করলেও এই তরল সিমেনের সংরক্ষণ ও গুণগত মান রক্ষা করা কঠিন ছিল। তাই গুণগত মানের কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০০ সালে ব্র্যাক নিজস্ব বুল স্টেশনে হিমায়িত সিমেন উৎপাদন শুরু করে। বর্তমানে ব্র্যাকের ২ টি বুল স্টেশনে ৪ হাজারের অধিক কর্মী দেশের ৬৪ জেলায় নিয়োজিত থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
উক্ত অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা রিজিওনের আরএসএম মোঃ আবুল হোসেন খান । তিনি আগত সকল অতিথিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর বরিশাল রিজিওয়নের আরএসএম মোঃ আশরাফুল ইসলাম এআই কর্মীদের মাঝে সুন্দর সাবলীলভাবে মোটিভেশনাল বক্তব্য রাখেন। এরপর পশ্চিমাঞ্চলের জোনাল ম্যানেজার এম. এ মান্নান AISP দের উদ্দেশ্যে সুন্দর দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন।

আগত সকল অতিথিদের মাঝে AISP দের গত ২ বছরের কাজের মূল্যায়ণস্বরুপ সারা বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে সেরা ৯ জন এআই কর্মীদের সাফল্য নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।

এরপর বক্তব্য রাখেন আগত সকল অতিথিবৃন্দের মূল আকর্ষণ ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজ এর এজিএম ডা. মোঃ শওকত আলী, শুরুতেই তিনি সকল এআই কর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানান।


তিনি অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা এবং গুণগত মানের সেবা কিভাবে খামারির কাছে সহজে পৌছানো যায় সেই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর তথ্যবহুল যুগোপযোগী আলোচনা করেন। এসময় তিনি বলেন, Brac AI Enterprise বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার ৪৮০ টি উপজেলার শহর থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিদের ব্র্যাকের উন্নত জাতের গুনগতমান সম্পন্ন সিমেন দিয়ে কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিশ্চিত করছে। এর ফলে দেশের দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনে ব্র্যাক সাফল্যের অনন্য দাবিদার। এছাড়া ব্র্যাকের উদ্যোগেই প্রথম দেশে নারী কৃত্রিম প্রজনন কর্মী কাজ শুরু করে। বর্তমানে ৫২ জন নারী ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন সেবা খামারিদের দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দুগ্ধ শিল্পে নতুন মাত্রার গতি সঞ্চার হয়েছে। তিনি বলেন ভারতের শ্বেত বিপ্লবের কারিগর ভার্গিস কুরিয়ানের ন্যায় ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ কে সহজেই তুলনা করা যায় বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশে অন্যতম কারিগর হিসেবে। তিনি বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশের জন্য ১৯৮৭ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম কৃত্রিম প্রজনন সেবা চালু করেন যা বর্তমানে ৩৭ বছর পেরিয়ে খামারীদের নিকট সততা ও নিষ্ঠার সাথে উন্নত গুনগতমান সম্পন্ন কৃত্রিম প্রজনন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন অনেকটা দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দরকার Smart AISP সে লক্ষ্যে ১১ টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান ও দক্ষ কর্মী তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করছে ব্র্যাক। বর্তমানে ব্র্যাক বাংলাদেশে কৃত্রিম প্রজননে সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান এবং সবচেয়ে বেশি প্রায় ১০ লাখের অধিক খামারিদের প্রজনন সেবা প্রদান করে আসেছে। যার ফলে দেশে প্রতিবছর ২৩ লাখের অধিক উন্নত জাতের বাছুর উৎপাদন করছে ব্র্যাক এবং তৈরি হচ্ছে অধিক উৎদপাদনশীল গাভী ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে দুধ ও মাংসের উৎপাদন। তিনি আরো বলেন, ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন সেবা অত্যন্ত সফল। ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের গাভী প্রজননের জন্য সরাসরি কৃষকের বাড়িতে আসেন এবং ব্র্যাকের সিমেনের গর্ভধারণের হার গড়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি।


ডা. শওকত আলী আরো যোগ করেন ব্র্যাক আগামীতে আরো উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ব্র্যাক তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ২ টি বুল স্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৪৯৫ টি উপজেলার সকল খামারীকে কৃত্রিম প্রজননের আওতায় নিয়ে আসবে এবং সেই সাথে বাংলাদেশের মোট কৃত্রিম প্রজননের ৮০ ভাগ খামারীকে ব্র্যাকের সিমেন ব্যবহার নিশ্চিত করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এআই কর্মীদের জন্য ব্র্যাক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত কৃত্রিম প্রজনন সেবা কর্মীদের জন্য সাহসী পদক্ষেপ যৌথ সঞ্চয় তহবিল প্রেনশন এর ব্যবস্থা করেছে যাতে কর্মীদের অবসর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ব্র্যাক নিজস্ব বুল এন্ড বাক মাদার হার্ড চালু করেছে। এআই এন্টারপ্রাইজ সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা হচ্ছে। কর্মীদের জন্য এপস তৈরির কাজ চলছে। নিজস্ব নাইট্রোজেন সংরক্ষণ সেন্টার করা হয়েছে। ২ টি আধুনিক বুল স্টেশনে বার্ষিক ৯৫ লাখ সিমেন উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করেছে। ব্র্যাক সিমেনের গুনগত মানের জন্য বাংলাদেশে প্রথম ISO সনদ লাভ করেছে। গত তিন বছরে ১ লাখ ২০ হাজার খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে । গত তিন বছরে ১২৫ জন রোগে আক্রান্ত ও দুর্ঘটনায় আহত এবং ৩২ জন নিহত কর্মীদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ব্র্যাক। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য কর্মীদের গত ২ বছরের কাজের মূল্যায়ন স্বরুপ কর্মীদের পুরুষ্কৃত করা, খেলাধুলা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আগামী দিনে আরো অধিক উন্নত সেবা প্রদান, খামারী পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়।


অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ রাশেদুল হক, যশোর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, যশোর জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক কৃষিবিদ প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী। এসময় অতিথিরা খুলনা রিজিওনের ২০২১-২২ সালের মোট ৬৪ জন সেরা সেবাকর্মীদের পুরষ্কার প্রদান করেন এবং তারা কর্মীদের জন্য ব্র্যাকের এই ধরণের উদ্যোগকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানান। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদ এবং ব্র্যাক যৌথভাবে কাজ করবে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ব্র্যাককে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ব্র্যাক এআই এন্টারপ্রাইজ এর খুলনা রিজিওনের ভিএস ডা. ওলিদ হোসেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক যশোর বিএলসি অপারেশন ম্যানাজার, যশোর বিডিসি, সহ এরিয়া সেলস ম্যানেজারবৃন্দ মোঃ মনোয়ার হোসেন, মোঃ ফরহাদ আখন্দ, বিপ্লব কুমার দাস প্রমুখ । উক্ত অনুষ্ঠানে সারাদিন ব্যাপি কর্মীদের জন্য ছিল ব্যবসায়িক আলোচনা, খেলাধুলা, পুরুষ্কার বিতরণ, রাফেল ড্র। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফল বার্ষিক সম্মেলন সমাপ্ত হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২৪ ৯:১৮ অপরাহ্ন
কাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪’
প্রাণিসম্পদ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) থেকে সোমবার (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪’ এর অন্যতম লক্ষ্য হলো প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি, দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টি, ক্ষুদ্র খামারি ও উদ্যোক্তাদের গবাদি পশু উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করা। এছাড়া প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সেমিনার থেকে জনগণ গবাদি পশু পালনের আধুনিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জানতে পারবে। ফলে জনগণ উপকৃত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি আমাদের এসব কাজে উৎসাহ যোগাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে ১৮ ও ১৯ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে দুই দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দেশব্যাপী ৬৪টি জেলার ৪৬৬টি উপজেলায় এ প্রদর্শনী একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। এসব প্রদর্শনীতে স্ব স্ব উপজেলা থেকে উন্নত জাতের এবং অধিক উৎপাদনশীল জাতের গবাদিপশু যেমন- গাভী, বাছুর, ষাঁড়, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, মুরগী, হাঁস, দুম্বা, কবুতর, সৌখিন পাখি, পোষা প্রাণি এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রদর্শন ইত্যাদি স্থান পাবে।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় প্রদর্শনীতে ভিন্ন ভিন্ন ভ্যালুচেইন ভিত্তিক প্রায় ৪০০টি স্টল স্থাপন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রযুক্তি, ঔষধ সামগ্রী, টিকা, প্রাণিজাত পণ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ সরঞ্জাম, মোড়কসহ পণ্য বাজারজাতকরণ প্রযুক্তি ইত্যাদির স্টলও থাকবে। এছাড়া ৭টি প্যাভেলিয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, এলআরআই, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার অংশগ্রহণ করছে।

গুণগত মান, জাত, স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য্য, আকার, অবদান, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, বাজারজাতকরণ, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক প্রভাব, সার্বিক পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৯৩টি পুরস্কার, ক্রেস্ট এবং অংশগ্রহণকারীকে সনদ প্রদান করা হবে। প্রদর্শনীর বিশেষ আকর্ষণ থাকছে গবাদিপশুর র‍্যাম্প শো।

এছাড়া আগামী ১৮ ও ১৯ এপ্রিল ঢাকার আগারগাঁও এর পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে মোট ৬ টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারের মূল বিষয় থাকবে প্রাণিসম্পদের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ ভাবনা এবং করণীয়, ক্লাইমেট স্মার্ট ডেইরী সেক্টর, এন্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স ও খাদ্য নিরাপত্তা, পশুপাখির রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য বিষয়।

প্রদর্শনীতে ফুড সেফটি কর্নারে নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুত ও করনীয় সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম যেমন- ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, নিরাপদ খাদ্য-সামগ্রী প্রস্তুত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ/গুদাম জাতকরণ, পণ্য পরিবহন ও গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ পর্যন্ত সার্বিক পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিতকরণ এবং দুধ, ডিম, মাংসজাত নিরাপদ খাদ্য পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় করা হবে।

প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ১৯ এপ্রিল এবং প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান আগামী ২২ এপ্রিল রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন (বিডিএফএ) এবং বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৮, ২০২৪ ৯:১৫ পূর্বাহ্ন
গবাদিপশুকে কৃমি মুক্ত রাখার উপায়
প্রাণিসম্পদ

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গবাদিপশু পালন লাভজনক ও বেকার সমস্যা সমাধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু আমাদের খামারিরা গবাদিপশু পালন করতে গিয়ে একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়, তা হলো পরজীবী বা কৃমি। কৃমি এক ধরনের পরজীবী যা পশুর ওপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করে। তারা পশুর অন্ত্রে, ফুসফুসে, লিভারে, চোখে, চামড়ায় বাস করে ও পশুর হজমকৃত খাবারে ভাগ বসিয়ে পশুর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। অনেক কৃমি পশুর রক্ত চুষে ও আমিষ খেয়ে পশুকে দুর্বল ও স্বাস্থ্যহীন করে ফেলে।

পরজীবী সাধারণত দুই ধরনের-
১. দেহের ভেতরের পরজীবী
২. দেহের বাইরের পরজীবী।

একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের প্রাণিসম্পদ হাসপাতালগুলোতে গত বছর (২০১০) বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুর (গরু, ছাগল, ভেড়া) মধ্যে ৫১.৩৬ ভাগ কৃমি বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত। এর মধ্যে আক্রান্ত গরুর মধ্যে ৬৮.৯২ ভাগ, আক্রান্ত গাভীর মধ্যে ৪৫.১৬ ভাগ, বাছুরের মধ্যে ৫০.০৭ ভাগ, ভেড়ার মধ্যে ৬১.৬৬ ভাগ এবং আক্রান্ত ছাগলের মধ্যে ৩৪.৭৯ ভাগ বিভিন্ন কৃমি বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়। সুতরাং কৃমি বা পরজীবী আমাদের গবাদিপশু পালনের প্রধান শত্রু। কৃমি বা পরজীবীগুলো হচ্ছে কলিজাকৃমি, পাতাকৃমি, গোলকৃমি, রক্তকৃমি, ফিতাকৃমি, প্রটোজয়া ও বিভিন্ন ধরনের বহিঃপরজীবী উকুন, আঠালী, মাইট ইত্যাদি গবাদিপশুকে আক্রান্ত করে। কৃমির কারণে গাভীর দুগ্ধ উত্পাদন ক্ষমতা কমে যায় অস্বাভাবিকভাবে এবং বাছুরগুলো পেট ফুলে গিয়ে স্বাস্থ্যহীন হয়ে পড়ে। ফলে দুগ্ধ ও মাংস উত্পাদন ক্ষমতা মারাক্তকভাবে ব্যাহত হয়। এর কারণে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস গবাদিপশুকে আক্রান্ত করার পরিবেশ তৈরি করে।

গবাদিপশুকে কৃমি বা পরজীবী থেকে মুক্ত রাখার উপায়গুলো হচ্ছে-
১) গবাদিপশুর বাসস্থানের জন্য নির্ধারিত স্থানের মাটি শুষ্ক ও আশপাশের জমি থেকে উঁচু হওয়া প্রয়োজন। সম্ভব হলে নদীনালা, খালবিল, হাওর-বাঁওড় থেকে দূরে করতে হবে।
২) গবাদিপশুর খামারের আশপাশে যেন বৃষ্টির পানি এবং অন্যান্য বর্জ্য জমে না থাকে ।
৩) খামারের জন্য নির্ধারিত স্থানের মাটিতে বালির ভাগ বেশি হওয়া প্রয়োজন যেন বর্ষাকালে খামারের মেঝে কর্দমাক্ত না হয় ।
৪) পশুর মলমূত্র ও আবর্জনা অল্প সময় পরপর পরিষ্কার করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ঘরে মলমূত্র ও আবর্জনা জমা না থাকে।
৫) খামারের অনেক দূরে পশুর মলমূত্র ও আবর্জনা পুঁতে রাখতে হবে।
৬) গবাদিপশুর বাসস্থান প্রতিদিন আদর্শ ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে এবং জীবাণুনাশক মেশানো পানি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৭) তিন মাস অন্তর গবাদিপশুকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২৪ ১০:০০ পূর্বাহ্ন
Buffalo farming constraints: focused on International Buffalo Workshop 2024 in Bangladesh
প্রাণিসম্পদ

Udder Health Bangladesh (UHB) hosted the International Buffalo Workshop Bangladesh 2024, a four-day event held from 2nd to 5th March at BCDM, Saver, Dhaka, Bangladesh. The workshop focused on the theme of sustainable water buffalo farming in Bangladesh to address the challenges posed by climate change. The event witnessed active participation from numerous experts from both domestic and international spheres.

While many Southeast Asian countries have well-developed buffalo production systems, Bangladesh lags behind significantly in terms of buffalo production. To source out the causes working behind limiting buffalo production and to mitigate the effects of climate change on dairy production through a sustainable water buffalo dairy chain in Bangladesh, this collaborated project was launched in 2019. This project was funded by Swedish Research Council and run by partner organizations including Swedish Veterinary Agency (SVA) and Swedish University of Agricultural Sciences (SLU), Sweden; Utrecht University (UU) and Wageningen University and Research (WUR), The Netherlands; University of Milano (UNIMI) and National Reference Center on water buffalo farming and production hygiene and technologies (CReNBuf) of IstitutoZooprofilatticoSperimentale del Mezzogiorno, Italy; Sylhet Agricultural University (SAU) and Chattogram Veterinary and Animal Sciences University (CVASU), Bangladesh. As the project ending ceremony, this workshop was organized to share field study findings on buffalo milk chain constraintsand develop solutions in selected buffalo zones in Bangladesh, focusing on udder health, milk quality.

The inauguration session was graced by Dr. Md. Reajul Huq, the esteemed Director General of Livestock Services, Bangladesh, as the chief guest, alongside Prof. Md. Ahasanul Hoque, CVASU serving as the chairperson. Prof. M. Golam Shahi Alam, former Vice-Chancellor of SAU and member of Bangladesh Accreditation Council, graced the occasion as the distinguished guest of honor. The program featured distinguished special guests including Dr. S.M Jahangir Hossain, the Director General of Bangladesh Livestock Research Institute, Prof. Dr. Nitish C. Debnath, an esteemed Associate Fellow of Chatham House Global Health, Prof. Omar Faruque, serving as the President of the Bangladesh Buffalo Association, and Dr. Md. Habibur Rahman, National Technical Avdisor-One Health Training and Outreach at Food and Agriculture Organization (FAO) of United Nations.Dr. Ylva Persson, the project lead and State veterinarian, SVA, Sweden participated in the workshop remotely.

The program began with a welcoming address followed by a keynote presentation on the highlights of the Buffalo Project, delivered by Prof. Dr. Md. Mizanur Rahman, Coordinator ofBuffalo project, CVASU, emphasizing “Climate Change Mitigation through a Sustainable Water Buffalo Dairy Chain in Bangladesh.” The event then continued with the opening of the “Buffalo Management” website and the unveiling of the “Water Buffalo Manual”.

Several intellectual persons from different parts of the world came to enlighten the workshop. Among them,Prof. Abdul Samad, Ex-Dean, Faculty of Veterinary Science, Maharashtra Animal and Fishery Sciences University, India, Asst. Prof. Dr. S.Sivaraman, Veterinary College and Research Institute, andMr. Vishwas P Chitale, Chair of the company, Chitale Dairy and Buffalo Foundation, India,Dr. Nasim Ahmad, Professor Emeritus, University of Veterinary and Animal Sciences,Pakistan, Assoc. Prof. Dr. Subir Singh, Agriculture and Forestry University, Rampur, Nepal, andDr. SonevilayNampanya,FAO,Italy. Prof. Mohammed Shamsuddin, FAO Regional Office for Africa and Prof.Domenico Vecchio, Head, Dept. of Animal Science and Welfare, CReNBuf, Italyboth connected remotely to the workshop.The workshop brought together 117 participants from various sectors within the country, including academicians, researchers, veterinarians, animal production specialists, government and NGO officers, members of food safety authorities, and farmers.

The four-day workshop was structured featuring eight interactive sessions, eight group discussions, one round table talks with the policy makers, and one hands-on training session. Through these sessions, participants delved into the various challenges faced in buffalo farming in Bangladesh. They identified issues like climate-related issues in coastal areas, such as cyclones and rising salinity levels, which lead to a scarcity of feed and grazing land, ultimately impacting buffalo productivity.Moreover, the discussions shed light on the nexus between climate change and disease outbreaks among buffalo, particularly in regions where infrastructure is limited. This scenario often results in low productivity, inbreeding, and heightened calf mortality due to inadequate access to veterinary care.Amidst these challenges, participants brainstormed potential solutions e.g., government-led initiatives for climate-smart livestock production, advocacy campaigns to promote household buffalo farming among youth, genetic enhancements through crossbreeding to mitigate inbreeding risks, and the establishment of robust value chains for buffalo milk and meat products.

The workshop’s recommendation emphasizes the pivotal role of government support in bolstering the buffalo sector, leveraging the buffalo’s inherent adaptability to climate variability and resource-scarce conditions. It calls for policymakers to draft guidelines on antimicrobial use to combat antimicrobial resistance, thereby fostering a holistic One Health approach.Furthermore, the workshop underscores the necessity for enhanced research collaboration between national and international organizations. This collaboration, which includes the active involvement of graduate and postgraduate students, aims to address the existing constraints within buffalo production.Moving forward, the findings and recommendations of the workshop will be effectively disseminated to the policymakers through appropriate channels. This aims to facilitate the establishment of policy guidelines, thereby contributing not only for advancing livestock-led economic development but also for ensuring food security and food safety at the national level in Bangladesh.

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৫, ২০২৪ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
গরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য মিশ্রণ তৈরির উপায়
প্রাণিসম্পদ

গরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য মিশ্রণ তৈরির উপায় খামারিরা অনেকেই জানেন না। আপনার এলাকায় প্রয়োজনীয় উপকরণের সহজ প্রাপ্যতা এবং দামের বিষয়টি বিবেচনা করে আপনি দানাদার খাদ্যের মিশ্রণের উপকরণ পরিবর্তনও করা যাবে।
প্রথম মিশ্রণঃ

উপকরণ পরিমাণ

১। গমের ভূষি ৫.৪ কেজি

২। খেসারীর ভূষি ২.০ কেজি

৩। তিলের খৈল ১.৮ কেজি

৪। শুটকি মাছের গুড়া ৭০০ গ্রাম

৫। লবন ৫০ গ্রাম

৬। ঝিনুকের গুড়া ৫০ গ্রাম

দ্বিতীয় মিশ্রণঃ

উপকরণ পরিমাণ

১। চাল ভাঙ্গা (খুদ) ২.৫ কেজি

২। গমের ভূষি ১.৫ কেজি

৩। চালের কুড়া ২.০ কেজি

৪। মসুরের ভূষি ১.৯ কেজি গ্রাম

৫। তিলের খৈল ১.৫ কেজি

৬। শুটকি মাছের গুড়া ৫০০ গ্রাম

৭। ঝিনুকের গুড়া ৫০ গ্রাম

৮। লবণ ৫০ গ্রাম

তৃতীয় মিশ্রণঃ

উপকরণ পরিমাণ

১। চাল ভাঙ্গা (খুদ) ১.০ কেজি

২। গমের ভূষি ১.৫ কেজি

৩। চালের কুড়া ৪.০ কেজি

৪। খেসারি ভাঙ্গা ১.০ কেজি গ্রাম

৫। সরিষার খৈল ২.০ কেজি

৬। শুটকি মাছের গুড়া ৪০০ গ্রাম

৭। ঝিনুকের গুড়া ৫০ গ্রাম

৮। লবণ ৫০ গ্রাম

চতুর্থ মিশ্রণঃ

উপকরণ পরিমাণ

১। খেসারীর ভূষি ১.৪ কেজি

২। গমের ভূষি ১.০ কেজি

৩। চালের কুড়া ৫.০ কেজি

৪। মসুরের ভূষি ১.০ কেজি গ্রাম

৫। তিলের খৈল ১.৫ কেজি

৬। ঝিনুকের গুড়া ৫০ গ্রাম

৭। লবণ ৫০ গ্রাম

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১১, ২০২৪ ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন
জাতিসংঘে নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশে EcoAMR সার্ভিলেন্স সম্পন্ন
প্রাণিসম্পদ

ড. মো. আব্দুল ওয়ারেছ: বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা (WOAH) বিশ্বব্যাপী এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্টের (AMR) অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে একটি সার্ভিলেন্স পরিচালনা করছে। এরই অংশ হিসেবে কম্বোডিয়া ও দক্ষিন কোরিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে ০৫ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। জাতিসঙ্ঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে সম্পন্ন হয় এই সার্ভিলেন্সটি। বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এই কার্যক্রমটিতে সার্বিক সহযোগিতা করেন এবং মহাপরিচালকের পক্ষে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন ড. মোঃ সোহেল রানা।

কেইস স্টাডি পর্যায়ের এই সার্ভিলেন্সের শিরোনাম ছিল Economic Impact of Antimicrobial Resistance  in Humans and Food-producing animals to Inform Response and Policymaking using a One Health Approach (EcoAMR). গত ০৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের সূচনা হয়। প্রশিক্ষণটি সম্পন্ন হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পাস অডিটরিয়ামে। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন WOAH-এর এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্ট ও ভেটেরিনারি প্রোডাক্টস বিভাগের ডেপুটি হেড ড. হলি আকওয়ার এবং WOAH-এর গবেষণা সহযোগী মিজ সোহওয়ান কুইন। প্রথমেই তাঁরা উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে অনুজীব যেমন ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস নিজেদের গঠনকাঠামোগত পরিবর্তনসহ নানা উপায়ে বেশ শক্তিশালী হয়েছে এবং এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ঔষধের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে যাকে এন্টিমাইক্রোবিয়ালের রেজিস্টেন্ট (AMR) নামে পরিচিত। ফলশ্রুতিতে, প্রাণিকুল অধিক সময় রোগাক্রান্ত থাকে, চিকিৎসা খরচ বেড়ে যায়, উৎপাদন কমে যায় এমনকি এতে মৃত্যু হারও বেশী। প্রাণিসম্পদে এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব মারাত্মক এবং বহুমুখী। তাই, AMR-এর অর্থনৈতিক প্রভাব পর্যালোচনায় এই কেস স্টাডিটি সম্পন্ন হয়। শিক্ষার্থীদের ডাটা সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন কৌশল ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। প্রথমেই খামারীদের সাথে সম্পর্ক তৈরী, তথ্যের নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে নিশ্চয়তা প্রদান এবং সৌজন্যতার সাথে কারিগরি দিকের প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের দিকে গুরুত্বারোপ করেন। একইসাথে, তিনি জানান, সংগৃহীত তথ্য এই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে। এই উপাত্তগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্বব্যাপী AMR-এর ক্ষতিকর প্রভাব নিরসনে প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে। এসময় প্রশিক্ষণস্থলে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।

সফল প্রশিক্ষণের পরদিন অর্থাৎ ৬ মার্চ থেকে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। নিখুঁত ও কাংখিত ডাটা সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশের দুটি বিভাগ ও দুটি জেলা বাছাই করা হয়। বিদ্যমান প্রাণির সংখ্যা, প্রকৃতি, মান ও প্রভাবের কথা বিবেচনা করে ডেইরী শিল্পের জন্য বিখ্যাত জেলা সিরাজগঞ্জ এবং পোল্ট্রি শিল্পে উন্নত জেলা টাঙ্গাইলকে বিবেচনা করা হয়। তথ্য সংগ্রহের কাজ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন ও এনিমেল সায়েন্স অনুষদের শিক্ষার্থীবৃন্দ। দুজন শিক্ষার্থীর একেকটি টিম একটি করে উপজেলায় এই সার্ভেটি সম্পন্ন করে এবং এতে সহায়তা করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপসহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ভিএফএ, এফএ (এ/আই) এবং এসএএলও। শিক্ষার্থীদের গ্রুপগুলো প্রথমেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বড় খামারগুলো চিহ্নিত করেন এবং প্রত্যেকটি খামার সশরীরে পরিদর্শন করেন। তিন ধাপের এই কেস স্টাডিতে প্রথমেই খামারের তথ্যাদি, দিত্বীয় ধাপে, খামারে ব্যবহৃত ঔষধ ও ভ্যাকসিন, সেগুলোর উৎস ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ সাধারণ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। সবশেষে, প্রাণির রোগাক্রান্ত হওয়া, চিকিৎসা সেবা, ভেটেরিনারিয়ানদের প্রাপ্যতা, সেবামূল্য, সেবার মান, ব্যবহৃত ঔষধের ধরণ, কার্যকারিতা, অব্যবহৃত ঔষধের পরিণতি, প্রাণি মৃত্যুর হার, অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমান, তার প্রভাব, ক্ষতি কাটাতে গৃহিত পদক্ষেপ, দুরারোগ্য প্রাণির ব্যবহারসহ মোট ৭১টি বিষয়ে প্রশ্নের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। খামারে বসেই তারা তথ্যগুলো KoboCollect নামের সার্ভে এপসে জমাদান করেন যা WOAH-এর কাছে সরাসরি পৌঁছে যায়। ২৫টি টিম মোট ১০৫০টি খামারের তথ্য সংগ্রহ করেন। প্রোগ্রামটিতে স্থানীয় সম্বনয়কের ভূমিকা পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কে. এম. মোজাফ্‌ফর হোসাইন এবং সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ যা মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াধীন-এর শিক্ষক ও প্রশাসক ড. মো. আব্দুল ওয়ারেছ।

সার্ভেটিতে বাংলাদেশের AMR-এর অর্থনৈতিক প্রভাবের সার্বিক চিত্র ফুটে ওঠে। এক কথায়, এটি এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। তাই, সময় নষ্ট না করে এখনই এটি মোকাবিলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। কার্যকরি নীতি প্রনয়ন, বাস্তবায়ন, সচেতনতা এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি অনন্য অভিজ্ঞতা ছিল। এ সময় তারা গরু, ছাগল, ভেড়া, গাড়ল, দুম্বা, মুরগী ও উটপাখির খামার পরিদর্শন ও যাবতীয় ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করেন। যা তাদের ভবিষ্যতে এন্টিবায়োটিকের চৌকষ ব্যবহারে সচেতন করবে এবং এ ধরনের গবেষণা কার্যক্রমে উব্ধুদ্ধ করবে। WOAH-এর প্রতিনিধিগণ কার্যক্রমটির সফল সমাপ্তিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সার্বিক সহযোগিতার জন্য সমন্বয়কগণ, শিক্ষার্থীবৃন্দসহ সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৭, ২০২৪ ২:৪৭ অপরাহ্ন
বিএলআরআইতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপিত
প্রাণিসম্পদ

বিএলআরআইতে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ২০২৪ উদযাপিত হয়েছে।  সকাল ৯.৩০ ঘটিকার সময় বিএলআরআই-এর প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপনের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, প্রকল্প পরিচালকগণসহ ইনস্টিটিউটের সকল স্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।

এরপর মহাপরিচালক মহোদয়ের নেতৃত্বে বিএলআরআই-এ অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আলোকচিত্র গ্যালারি পরিদর্শন করেন বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। এসময় মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এক সময় অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে। তবে এখন সময় এসেছে সত্য জানার। আমাদের সকলকেই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য জানতে হবে, সেগুলো প্রচার করতে হবে। পাশাপাশি তিনি এসময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সকল কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলো বিএলআরআই-এর প্রধান কার্যালয়য়ের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জাকরণ, বিএলআরআই-এর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পোষ্যদের জন্য বঙ্গবন্ধু আলোকচিত্র গ্যালারি উন্মুক্তকরণ, সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন প্রভৃতি। এছাড়াও বিএলআরআই-এর আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৬, ২০২৪ ১:৫৮ অপরাহ্ন
জাত উন্নয়নের অগ্রপথিক শ্লোগানে ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজের AISP বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

জাঁকজমকপূর্ণভাবে অত্যন্ত সুন্দর মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীদের বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩। ‘জাত উন্নয়নের অগ্রপথিক’- এই স্লোগান কে সামনে নিয়ে গত সোমবার (৪ মার্চ ২০২৪) দিনাজপুর রিজিওনের প্রায় ২০০ জন কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীদের নিয়ে দিনাজপুর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত ।

কৃষকের সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্র্যাক ১৯৮৭ সালে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গবাদীপশুর জাত উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয় । সে সময়ে দেশি জাতের গবাদীপশু কম ছিল, তাই দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃত্রিম প্রজনন সেবাকে খামারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্র্যাক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে তরল সিমেন নিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করে। তরল সিমেনের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান করার ফলে দেশী গরুর জাত উন্নয়ন প্রক্রিয়া কিছুটা গতি লাভ করলেও এই তরল সিমেনের সংরক্ষণ ও গুণগত মান রক্ষা করা কঠিন ছিল। তাই গুণগত মানের কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০০ সালে ব্র্যাক নিজস্ব বুল স্টেশনে হিমায়িত সিমেন উৎপাদন শুরু করে। বর্তমানে ব্র্যাকের ২ টি বুল স্টেশনে ৪ হাজারের অধিক কর্মী দেশের ৬৪ জেলায় নিয়োজিত থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
উক্ত অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর রিজিওনের আরএসএম ডা. মোঃ এরমান আলী । তিনি আগত সকল অতিথিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর পশ্চিমাঞ্চলের জোনাল ম্যানেজার এম. এ মান্নান AISP দের উদ্দেশ্য সুন্দর দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন। এরপর সকল AISP এবং আগত অতিথিদের প্রধান আকর্ষণ অলোংকৃত করেন ব্র্যাক এআই এন্টারপ্রাইজ এর সিনিয়র ডিরেক্টর জনাব আনিসুর রহমান, তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এজিএম মহোদয়।

আগত সকল অতিথিদের মাঝে AISP দের গত ২ বছরের কাজের মূল্যায়ণস্বরুপ সারা বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে সেরা ৯ জন এআই কর্মীদের সাফল্য নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।

এরপর বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজ এর সিনিয়র ডিরেক্টর জনাব আনিসুর রহমান, শুরুতেই তিনি সকলের কাছে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ আজ থেকে ৪০-৪৫ বছর আগে চিন্তা চেতনা করেছিলেন বাংলাদেশের মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন করতে হবে যার ফলে মিলবে তাদের স্বচ্ছলতা। বর্তমানে গবাদি প্রাণির জাত উন্নয়নের ফলে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। আর এই ব্যাক্তি বা খামারী পর্যায়ে যে উন্নয়ন হচ্ছে এবং গ্রামের দরিদ্র মানুষদেরকে দারিদ্র থেকে বের হয়ে এসে স্বাবলম্বী হতে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীরা প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন ব্র্যাকের এআই কর্মীদের প্রতিবছর নাম্বার ডাটা এনালাইসিস করে রিফ্রেশার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজ। যেখানে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতার ঘাটতি আছে সেই জায়গাগুলো রিকোভার করতে হবে। ব্র্যাকের এআই কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন আপনারা অবশ্যই ট্রেইনিং এর বিষয়টা সিরিয়াসলি দেখবেন এবং যারা এই কর্মী হিসেবে যে এলাকায় কাজ করছেন সেই এলাকায় একটা ভালো পরিচিতি তৈরি করবেন যোগাযোগ ব্যবস্থা তরান্নিত করবেন এবং কাজে সততা ও নিষ্ঠার পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো যোগ করেন দেশে প্রায় প্রতিবছর ৩ হাজার কোটি টাকার গুড়ো দুধ আমদানি করতে হয় এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে। এমতাবস্থায় গবাদি প্রাণির জাত উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশে দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব।

এরপর ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজ এর এজিএম ডা. মোঃ শওকত আলী, শুরুতেই তিনি সকল এআই কর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানান।


তিনি অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা এবং গুণগত মানের সেবা কিভাবে খামারির কাছে সহজে পৌছানো যায় সেই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর তথ্যবহুল যুগোপযোগী আলোচনা করেন। এসময় তিনি বলেন, Brac AI Enterprise বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার ৪৮০ টি উপজেলার শহর থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিদের ব্র্যাকের উন্নত জাতের গুনগতমান সম্পন্ন সিমেন দিয়ে কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিশ্চিত করছে। এর ফলে দেশের দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনে ব্র্যাক সাফল্যের অনন্য দাবিদার। এছাড়া ব্র্যাকের উদ্যোগেই প্রথম দেশে নারী কৃত্রিম প্রজনন কর্মী কাজ শুরু করে। বর্তমানে ৫২ জন নারী ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন সেবা খামারিদের দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দুগ্ধ শিল্পে নতুন মাত্রার গতি সঞ্চার হয়েছে। তিনি বলেন ভারতের শ্বেত বিপ্লবের কারিগর ভার্গিস কুরিয়ানের ন্যায় ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ কে সহজেই তুলনা করা যায় বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশে অন্যতম কারিগর হিসেবে। তিনি বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশের জন্য ১৯৮৭ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম কৃত্রিম প্রজনন সেবা চালু করেন যা বর্তমানে ৩৭ বছর পেরিয়ে খামারীদের নিকট সততা ও নিষ্ঠার সাথে উন্নত গুনগতমান সম্পন্ন কৃত্রিম প্রজনন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন অনেকটা দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দরকার Smart AISP সে লক্ষ্যে ১১ টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান ও দক্ষ কর্মী তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করছে ব্র্যাক। বর্তমানে ব্র্যাক বাংলাদেশে কৃত্রিম প্রজননে সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান এবং সবচেয়ে বেশি প্রায় ১০ লাখের অধিক খামারিদের প্রজনন সেবা প্রদান করে আসেছে। যার ফলে দেশে প্রতিবছর ২৩ লাখের অধিক উন্নত জাতের বাছুর উৎপাদন করছে ব্র্যাক এবং তৈরি হচ্ছে অধিক উৎদপাদনশীল গাভী ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে দুধ ও মাংসের উৎপাদন। তিনি আরো বলেন, ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন সেবা অত্যন্ত সফল। ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের গাভী প্রজননের জন্য সরাসরি কৃষকের বাড়িতে আসেন এবং ব্র্যাকের সিমেনের গর্ভধারণের হার গড়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি।

ডা. শওকত আলী আরো যোগ করেন ব্র্যাক আগামীতে আরো উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ব্র্যাক তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ২ টি বুল স্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৪৯৫ টি উপজেলার সকল খামারীকে কৃত্রিম প্রজননের আওতায় নিয়ে আসবে এবং সেই সাথে বাংলাদেশের মোট কৃত্রিম প্রজননের ৮০ ভাগ খামারীকে ব্র্যাকের সিমেন ব্যবহার নিশ্চিত করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এআই কর্মীদের জন্য ব্র্যাক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত কৃত্রিম প্রজনন সেবা কর্মীদের জন্য সাহসী পদক্ষেপ যৌথ সঞ্চয় তহবিল প্রেনশন এর ব্যবস্থা করেছে যাতে কর্মীদের অবসর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ব্র্যাক নিজস্ব বুল এন্ড বাক মাদার হার্ড চালু করেছে। এআই এন্টারপ্রাইজ সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা হচ্ছে। কর্মীদের জন্য এপস তৈরির কাজ চলছে। নিজস্ব নাইট্রোজেন সংরক্ষণ সেন্টার করা হয়েছে। ২ টি আধুনিক বুল স্টেশনে বার্ষিক ৯৫ লাখ সিমেন উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করেছে। ব্র্যাক সিমেনের গুনগত মানের জন্য বাংলাদেশে প্রথম ISO সনদ লাভ করেছে। গত তিন বছরে ১ লাখ ২০ হাজার খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে । গত তিন বছরে ১২৫ জন রোগে আক্রান্ত ও দুর্ঘটনায় আহত এবং ৩২ জন নিহত কর্মীদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ব্র্যাক। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য কর্মীদের গত ২ বছরের কাজের মূল্যায়ন স্বরুপ কর্মীদের পুরুষ্কৃত করা, খেলাধুলা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আগামী দিনে আরো অধিক উন্নত সেবা প্রদান, খামারী পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোঃ সরোয়ার হাসান, দিনাজপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ গোলাম কিবরিয়া, দিনাজপুর জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের, জেলা ভেটেরিনারি অফিসার, ড. আশিকা আকবর তৃষা, হাজী দানেস বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ডীন, প্রফেসর ড. উম্মে সালমা, হাবিপ্রবি এর মেডিসিন সার্জারী এন্ড অবস্ বিভাগের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের প্রফেসর ড. বেগম ফাতেমা জোহরা। এসময় অতিথিরা দিনাজপুর রিজিওনের সেরা সেবাকর্মীদের পুরষ্কার প্রদান করেন এবং তারা কর্মীদের জন্য ব্র্যাকের এই ধরণের উদ্যোগকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানান। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদ এবং ব্র্যাক যৌথভাবে কাজ করবে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ব্র্যাককে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ব্র্যাক এআই এন্টারপ্রাইজ এর রংপুর রিজিওনের ভিএস ডা. দেবদ্রুত।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক দিনাজপুর বিএলসি অপারেশন ম্যানাজার জাহাঙ্গীর আলম, দিনাজপুর বিডিসি, সহ এরিয়া সেলস ম্যানেজার মোঃ জাহিদ হোসেন, মোঃ আমিনুল ইসলাম, আবু সায়েম, আবু জাফর, সিমা আক্তার প্রমুখ । উক্ত অনুষ্ঠানে সারাদিন ব্যাপি কর্মীদের জন্য ছিল ব্যবসায়িক আলোচনা, খেলাধুলা, পুরুষ্কার বিতরণ, রাফেল ড্র। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফল বার্ষিক সম্মেলন সমাপ্ত হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৩, ২০২৪ ১০:১৮ অপরাহ্ন
জাত উন্নয়নের অগ্রপথিক শ্লোগানে ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজের AISP বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

জাঁকজমকপূর্ণভাবে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীদের বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩। ‘জাত উন্নয়নের অগ্রপথিক’- এই স্লোগান কে সামনে নিয়ে গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) চ্ট্টগ্রাম রিজিওনের প্রায় ২৩০ জন কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী ক্যান্টনমেন্টের হিলভিউ পার্ক এন্ড ক্যাফেতে আনুষ্ঠানিকভাবে বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ এর উদ্বোধনী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

কৃষকের সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্র্যাক ১৯৮৭ সালে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গবাদীপশুর জাত উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয় । সে সময়ে দেশি জাতের গবাদীপশু কম ছিল, তাই দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃত্রিম প্রজনন সেবাকে খামারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্র্যাক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে তরল সিমেন নিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করে। তরল সিমেনের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান করার ফলে দেশী গরুর জাত উন্নয়ন প্রক্রিয়া কিছুটা গতি লাভ করলেও এই তরল সিমেনের সংরক্ষণ ও গুণগত মান রক্ষা করা কঠিন ছিল। তাই গুণগত মানের কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০০ সালে ব্র্যাক নিজস্ব বুল স্টেশনে হিমায়িত সিমেন উৎপাদন শুরু করে। বর্তমানে ব্র্যাকের ২ টি বুল স্টেশনে ৪ হাজারের অধিক কর্মী দেশের ৬৪ জেলায় নিয়োজিত থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।


উক্ত অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রিজিওনের আরএসএম মোঃ মোহসিন আলী খান। তিনি আগত সকল অতিথিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর পূর্বাঞ্চলের জোনাল ম্যানেজার এ.এফ.এম মানজুরুর রহমান AISP দের উদ্দেশ্য সুন্দর দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন।
আগত সকল অতিথিদের মাঝে AISP দের গত ২ বছরের কাজের মূল্যায়ণস্বরুপ সারা বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে সেরা ৯ জন এআই কর্মীদের সাফল্য নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।


এরপর সকলের প্রধান আকর্ষণ ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন এন্টারপ্রাইজ এর এজিএম ডা. মোঃ শওকত আলী সকল এআই কর্মীদের মাঝে প্রবেশ করেন। শুরুতেই তিনি সকল এআই কর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা এবং গুণগত মানের সেবা কিভাবে খামারির কাছে সহজে পৌছানো যায় সেই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর তথ্যবহুল যুগোপযোগী আলোচনা করেন। এসময় তিনি বলেন, Brac AI Enterprise বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার ৪৮০ টি উপজেলার শহর থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিদের ব্র্যাকের উন্নত জাতের গুনগতমান সম্পন্ন সিমেন দিয়ে কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিশ্চিত করছে। এর ফলে দেশের দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনে ব্র্যাক সাফল্যের অনন্য দাবিদার। এছাড়া ব্র্যাকের উদ্যোগেই প্রথম দেশে নারী কৃত্রিম প্রজনন কর্মী কাজ শুরু করে। বর্তমানে ৫২ জন নারী ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন সেবা খামারিদের দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দুগ্ধ শিল্পে নতুন মাত্রার গতি সঞ্চার হয়েছে। তিনি বলেন ভারতের শ্বেত বিপ্লবের কারিগর ভার্গিস কুরিয়ানের ন্যায় ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ কে সহজেই তুলনা করা যায় বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশে অন্যতম কারিগর হিসেবে। তিনি বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশের জন্য ১৯৮৭ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম কৃত্রিম প্রজনন সেবা চালু করেন যা বর্তমানে ৩৭ বছর পেরিয়ে খামারীদের নিকট সততা ও নিষ্ঠার সাথে উন্নত গুনগতমান সম্পন্ন কৃত্রিম প্রজনন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন অনেকটা দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দরকার Smart AISP সে লক্ষ্যে ১১ টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান ও দক্ষ কর্মী তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করছে ব্র্যাক। বর্তমানে ব্র্যাক বাংলাদেশে কৃত্রিম প্রজননে সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান এবং সবচেয়ে বেশি প্রায় ১০ লাখের অধিক খামারিদের প্রজনন সেবা প্রদান করে আসেছে। যার ফলে দেশে প্রতিবছর ২৩ লাখের অধিক উন্নত জাতের বাছুর উৎপাদন করছে ব্র্যাক এবং তৈরি হচ্ছে অধিক উৎদপাদনশীল গাভী ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে দুধ ও মাংসের উৎপাদন। তিনি আরো বলেন, ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন সেবা অত্যন্ত সফল। ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের গাভী প্রজননের জন্য সরাসরি কৃষকের বাড়িতে আসেন এবং ব্র্যাকের সিমেনের গর্ভধারণের হার গড়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি।

ডা. শওকত আলী আরো যোগ করেন ব্র্যাক আগামীতে আরো উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ব্র্যাক তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ২ টি বুল স্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৪৯৫ টি উপজেলার সকল খামারীকে কৃত্রিম প্রজননের আওতায় নিয়ে আসবে এবং সেই সাথে বাংলাদেশের মোট কৃত্রিম প্রজননের ৮০ ভাগ খামারীকে ব্র্যাকের সিমেন ব্যবহার নিশ্চিত করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এআই কর্মীদের জন্য ব্র্যাক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত কৃত্রিম প্রজনন সেবা কর্মীদের জন্য সাহসী পদক্ষেপ যৌথ সঞ্চয় তহবিল প্রেনশন এর ব্যবস্থা করেছে যাতে কর্মীদের অবসর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ব্র্যাক নিজস্ব বুল এন্ড বাক মাদার হার্ড চালু করেছে। এআই এন্টারপ্রাইজ সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা হচ্ছে। কর্মীদের জন্য এপস তৈরির কাজ চলছে। নিজস্ব নাইট্রোজেন সংরক্ষণ সেন্টার করা হয়েছে। ২ টি আধুনিক বুল স্টেশনে বার্ষিক ৯৫ লাখ সিমেন উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করেছে। ব্র্যাক সিমেনের গুনগত মানের জন্য বাংলাদেশে প্রথম ISO সনদ লাভ করেছে। গত তিন বছরে ১ লাখ ২০ হাজার খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে । গত তিন বছরে ১২৫ জন রোগে আক্রান্ত ও দুর্ঘটনায় আহত এবং ৩২ জন নিহত কর্মীদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ব্র্যাক। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য কর্মীদের গত ২ বছরের কাজের মূল্যায়ন স্বরুপ কর্মীদের পুরুষ্কৃত করা, খেলাধুলা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আগামী দিনে আরো অধিক উন্নত সেবা প্রদান, খামারী পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়।


অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চট্রগাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম, চট্রগ্রাম জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. সৈয়দ মো. ওয়ারেস কামাল, চট্টগ্রাম জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের থেরিওজেনোলজিস্ট ড. ওমর ফারুক। এসময় অতিথিরা চ্ট্টগ্রাম রিজিওনের সেরা ২৭ জন সেবাকর্মীদের পুরষ্কার প্রদান করেন এবং তারা কর্মীদের জন্য ব্র্যাকের এই ধরণের উদ্যোগকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানান। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদ এবং ব্র্যাক যৌথভাবে কাজ করবে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ব্র্যাককে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ব্র্যাক এআই এন্টারপ্রাইজ এর চট্টগ্রাম রিজিওনের ভিএস ডা. মেরিনা ঘোষ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক চট্টগ্রাম রিজিওনের বিডিসি এনামুর রহমান,জেজাডি এর আরএম হামিদুর হক সহ এরিয়া সেলস ম্যানেজারবৃন্দ। উক্ত অনুষ্ঠানে সারাদিন ব্যাপি কর্মীদের জন্য ছিল ব্যবসায়িক আলোচনা, খেলাধুলা, পুরুষ্কার বিতরণ, রাফেল ড্র। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফল বার্ষিক সম্মেলন সমাপ্ত হয়।

উল্লেখ্য, চট্রগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সারাদেশে ব্র্যাকের বিভিন্ন কৃত্রিম প্রজনন সেন্টারের মাধ্যমে আরো ২০টি স্থানে ৪০০০ কৃত্রিম প্রজনন কর্মীদের মধ্যে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৯, ২০২৪ ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
প্রতিদিন প্রোটিন খাই, শক্তি ও পুষ্টি পাই স্লোগানে পালিত হলো প্রোটিন দিবস
প্রাণিসম্পদ

প্রোটিনের গুরুত্ব ও উপকারিতা তুলে ধরার মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যবান ও মেধাবি জাতি গঠনে সরকারকে সহযোগিতা করার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশেও গতকাল উদযাপিত হলো-  ‘প্রোটিন দিবস”। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্র্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ইউ.এস. সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউ.এস.এস.ই.সি) যৌথভাবে এ দিবসটি উদযাপন করে। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার, র‌্যালি ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়; পোষ্টার ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। আগামী সপ্তাহে পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও অনুরূপ কর্মসূচী পালিত হবে।

দিবসটির উদযাপন উপলক্ষ্যে এক বার্তায় বিপিআইসিসি’র সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমাদের দেশে প্রোটিন, বিশেষ করে প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে তবে সচেতনতার অভাবে কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, বেঁচে থাকার জন্য আমরা খাদ্য গ্রহণ করি কিন্তু যতটুকু প্রোটিন খাওয়া দরকার তা কি খাচ্ছি? আমরা কি জানি কোন্ খাবারে কতটুকু প্রোটিন আছে? অল্প বয়সী শিশুটি, গর্ভবতী মা, যুবক-যুবতী কিংবা বয়স্ক মানুষের জন্য কতটুকু প্রোটিন দরকার?

ইউ.এস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের টীম লিড-বাংলাদেশ, খাবিবুর রহমান (কাঞ্চন) বলেন, প্রতি ৩জন বাংলাদেশীর মধ্যে ১জন মনে করে যে, প্রোটিনের ঘাটতি তাঁদের শরীরে তেমন একটা প্রভাব ফেলে না। ইউ.এস.এস.ই.সি কর্তৃক সম্পাদিত প্রোটিন পারসেপশন স্ট্যাডিতে অংশ নেয়া ৪৪ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন যে, প্রোটিনের চেয়ে ভিটামিন এবং মিনারেল ঢের বেশি দরকারি। তাছাড়া বেশিরভাগ বাংলাদেশীই জানেন না প্রতিদিন কতটুক প্রোটিন গ্রহণ করা দরকার।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্ধারিত মাত্রার চেয়েও ৪০ শতাংশ বেশি কার্বহাইড্রেট গ্রহণ করে থাকে। এ কারণে দেশের মোট কৃষি জমির বেশিরভাগ অংশ ধান চাষ করতেই অকুপায় হয়ে যাচ্ছে অথচ পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ করলে উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ানো যেত। গবাদিপশুর চারণভূমি কিংবা গোখাদ্যের জন্য ঘাস চাষ করার মত জমি পাওয়া যেত।  ড. এমদাদুল হক বলেন, ভাতের চেয়ে ডিম অনেক বেশি পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য। একজন মানুষ যদি অন্যকিছু না খেয়ে প্রতিদিন ৪-৫ টি ডিমও হয় তবে তার আর অন্যকিছুর প্রয়োজন হবে না। শুধু ডিম নয়, সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে হলে অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন- দুধ, মাছ ও মাংস গ্রহণ করাও অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন- মেধাবি জাতি গঠন করতে হলে প্রোটিনের কোনো বিকল্প নেই।

বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ মহুয়া বলেন, প্রোটিন আমাদের অধিকার। ইট যেমন একটি পর একটি সাজিয়ে বিল্ডিং তৈরি হয় তেমনিই মানবদেহের বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে প্রোটিন। আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ প্রোটিনের উপর নির্ভরশীল। ভেগান ও ভেজিটেরিয়ানদের ক্ষেত্রে প্রোটিন ঘাটতির ঝুঁকি অনেক বেশি। মহুয়া বলেন, প্রোটিন দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রোটিনের অভাবে পেশি দুর্বলতা হয়, গর্ভধারণজনিত সমস্যা, এনিমিয়া, আলঝেইমারসহ নানাবিধ অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। মহুয়ার মতে, ডিম হচ্ছে স্বল্প মূল্যের ফার্ষ্টক্লাশ প্রোটিন। ডিমের উপাদান- কোলিন আমাদের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য প্রয়োজন। এতে আরও রয়েছে ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড। তিনি বলেন- সয়া প্রোটিন দামে অত্যন্ত সস্তা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সয়া প্রোটিনের বহুল ব্যবহার থাকলেও আমাদের দেশে এর ব্যবহার কম।  সয়াতে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকে।  তাই নারীদের সয়া জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আখতার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম, ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম, ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহা. ইলিয়াছুর রহমান ভূঁইয়া এবং বিপিআইসিসি’র যোগাযোগ ও মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য্য প্রফেসর ড. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেটিরিনারি, এনিমেল ও বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. সিদ্দিকুল ইসলাম ও সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. মারুফ হাসান। সভাপতিত্ব করেন পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এ. এস. এম. মাহাবুব। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিপিআইসিসি’র সেক্রেটারি দেবাশিস নাগ।

প্রোটিন দিবসের রচনা প্রতিযোগিতায় পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরি ক্যাটাগরিতে বাকৃবি থেকে ৩জন এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩জন- মোট ৬জন শিক্ষার্থীকে ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop