১০:১৫ অপরাহ্ন

বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
কলা চাষ করে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে জয়পুরহাট চাষিদের
কৃষি বিভাগ

কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’। খনার ওই বচনটি কাজে লাগিয়ে ব্যাপক কলা চাষ করে ভাগ্য বদল করছেন জয়পুরহাটের কলা চাষিরা। রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ভৈরবসহ দেশের ৩৫ জেলায় যাচ্ছে জয়পুরহাটের কলা।

কলা চাষিদের পরিবারে কেবল ভাত কাপড়ের ব্যবস্থাই নয়। পরিবারের অন্যান্য ব্যয়ের সংস্থানও হয়েছে কলা চাষ করে। আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ায় জেলায় বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলার চাষ। জয়পুরহাট জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ কলা।

জেলায় বিশেষ করে জামালগঞ্জ ও ভাদসা এলাকার অনেক পরিবার কেবল কলা চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানান যায়, অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে অনেক বেশী লাভ হয় কলা চাষে।

বিশেষ করে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জে ও ভাদসা ইউপি ভবনের সামনে দূর্গাদহ বাজার এলাকায় কলার বিস্ময়কর বাজার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এখন কলার চাষও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জয়পুরহাটে। ২/৩ ফুট লম্বা কলা গাছের চারা লাগানোর অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়।

সাধারনত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপণ করলে অগ্রহায়ণ মাস থেকে কলা পাওয়া শুরু হয়। যেসব জমিতে বর্ষার পানি সাধারনত এক সপ্তাহের বেশি থাকে না সে সকল জমিতে কলার চাষ ভালো হয়। কৃষকরা জানান, একবিঘা জমিতে কলার জাত ভেদে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ কলার চারা রোপণ করা হয়ে থাকে।

যত্ন সহকারে কলা চাষ করলে একটি গাছ থেকে ২ থেকে আড়াই মন কলা পাওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ পড়লেও প্রতি বিঘা জমি থেকে কলা বিক্রি হয় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা। যা অন্য কোন ফসলে সম্ভব নয়। কলার জমিতে তেমন লেবার প্রয়োজন হয়না। ফলে উৎপাদন খরচ খুবই কম।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে এবার কলার চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

জামালগঞ্জ এলাকার মাতাপুর গ্রামের কলা চাষী আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে কলার চাষ করেছেন। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি। নুনুজ গ্রামের কলা চাষি নূর আলম বলেন কলা বিক্রিতে কোন ঝামেলা হয় না। পাইকাররা জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যায়।

এ ছাড়াও জামালগঞ্জে ও ভাদসা ইউপি ভবনের সামনে দূর্গাদহ বাজারে কলার বিশাল হাট বসে প্রত্যেক দিন সকালে ৬০/৬৫ জন আড়ৎদার কলা কিনে ট্রাকে লোড দেন। প্রতি কাইন ( স্থানীয় নাম ঘাউর) বিক্রি হচ্ছে চাপা কলা ২৫০-৩৫০ টাকা, সবরি কলা ৫০০-৬০০ টাকা, সাগর ও রঙ্গিন মেহের সাগর কলা প্রতি কাইন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

প্রায় ৫ শতাধিক লোক প্রতিদিন কলা কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত থাকেন। প্রতিদিন কোটি টাকার কলা কেনা বেচা হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয় কলা ব্যবসায়ীরা। জেলা শহরের গুলশান চৌ মোড়ে ছোট আকারে পাইকারী কলার হাট বসে।

জয়পুরহাটের কলা উন্নত মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ঢাকা, সিলেট ও চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, ভৈরব, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ ৩৫ জেলায় জয়পুরহাটের কলার বড় মার্কেট বলে জানান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, বাবু, তাব্বা ও মিজানুর রহমান।

বর্তমানে অফ সিজন তার পরেও জয়পুরহাট থেকে প্রতিদিন গড়ে বর্তমানে ৬/৭ ট্রাক কলা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান এস এ ট্রেডার্সের মালিক ও কলা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম।

জয়পুরহাটে উৎপাদিত কলার মধ্যে রয়েছে ওষুধী কলা হিসেবে চিহ্নিত চাম্পা কলা, সবরি কলা, রঙ্গিন মেহের সাগর ও সাগর কলা। বর্তমানে জয়পুরহাটের হাটবাজারে প্রকার ভেদে বা সাইজ অনুযায়ী সবরি কলা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হালি এবং চাম্পা ও সাগর কলা ১৫ থেকে ২০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

কলা চাষ বেশ লাভজনক ফসল। জেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার কলা চাষের সঙ্গে জড়িত। কলা চাষ করে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ভাগ্য বদল করছেন জয়পুরহাটের কলা চাষিরা। কলা চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে বলে জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৫, ২০২৩ ১১:৩০ অপরাহ্ন
রোপা-আমন ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত আত্রাইয়ে কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

উত্তর জনপদের শস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি আমন মৌসুমে সবুজ নীলিমায় একাকার বিস্তীর্ণ প্রতিটি ফসলের মাঠ। দিগন্তজুড়ে যেদিকে তাকাই শুধু সবুজ আর সবুজ। উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠে এখন রোপা-আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। বোরো কর্তন শেষে রোপা-আমন চাষে কোমর বেঁধে মাঠে নামছেন তারা। বর্তমানে ধান গাছের পরিচর্যায় যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের।

সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ধান গাছের আগাছা পরিষ্কার করছেন। আবার কেউ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। সবুজ পাতায় বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।। রোপা-আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে এখন হাসির ঝিলিক।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তারপরও কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী কৃষি দপ্তরের সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজম প্রামাণিক বলেন, এবার আমার মনে হচ্ছে বন্যার আশঙ্কা নেই, তাই অন্যান্য বারের তুলনায় এবার আমরা অধিকহারে আমন ধান চাষ করেছি। আশা করছি, এবার আমন ধানে বাম্পার ফলন হবে।

উপজেলার শলিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, ধান গাছে সময়মতো পানি পাওয়ায় এখন গাছ সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। চারিদিকে যেন সবুজের সমারোহ। যেদিকে তাকাই দৃষ্টি যেন জুড়িয়ে যায়। এবার বড় ধরনের বন্যা না হলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে আমরা অনেক উপকৃত হব এবং বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব বলে মনে করছি।

উপজেলার তারাটিয়া ছোটডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ছামাদ প্রামাণিক বলেন, এবার স্বর্ণা-৫, গুটি স্বর্ণা, চিনি আতপ জিরাশাল ও ব্রি-৭৫.৯০ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। এরমধ্যে বেশির ভাগ জমিতে সুমন স্বর্ণা ও জিরাশাল চাষ করছি। তবে যেসব জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করা হবে, কেবল ওই জমিতে জিরাশাল ধান রোপণ হয়েছে।

উপজেলার তারাটিয়া ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান বলেন, রোপা-আমন ধান চাষে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কৃষকরা যেন আমন চাষে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তাপশ কুমার রায় বলেন, অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার এ উপজেলার কোথাও কোন পোকা-মাকরের আক্রমণ নেই। ফলে আমরা আশা করছি, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে রোপা-আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২২, ২০২৩ ৭:০০ অপরাহ্ন
বীজহীন লেবু চাষে লাখোপতি শহিদুল
কৃষি বিভাগ

বীজহীন (সিডলেস) লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারীর শহিদুল ইসলাম। উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বর্নিচর গ্রামের শহিদুল ইসলামের বীজহীন লেবুর বাগান দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন মানুষ। অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন বীজহীন লেবুর চাষ করতে।

বেশি ফলন, রস বেশি আর চাহিদার কারণে বীজহীন লেবুতে লাভ বেশি হওয়ায় অনেকেই অন্য ফসলের আবাদ ছেড়ে এ লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছেন। বীজহীন লেবু চাষ করে মাত্র ৩ বছরেই লাখপতি হয়েছেন বোয়ালমারীর শহিদুল ইসলাম।

সফল লেবু চাষি শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ২০১৯ সালে দেড় একর জমি নিয়ে ওই জমিতে ৮০০টি বীজহীন লেবুর কলমকৃত চারা রোপণ করি। চারা কেনা, চারা রোপণ, জমি প্রস্তুত, জমি তৈরি, সেচ ও সারসহ বিবিধ খরচ মিলিয়ে প্রথম বছর তার প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়।

পরের বছরেই ওইসব লেবু গাছে লেবুর ফলন শুরু হয়। এরপরের বছর বেশ চাহিদা ও দাম পাওয়ায় প্রায় এক লাখ টাকার লেবু বিক্রি করি। ২০২১ সালে প্রায় আড়াই লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছি।

শহিদুল ইসলাম আরও বলেন, এবছর লেবুর দাম কম থাকায় মাত্র আড়াই লাখ টাকার লেবু বিক্রি হয়েছে, দাম বেশি পেলে ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করতে পারতেন। তিনি সপ্তাহে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেন।

ফলে তার মাসিক আয় প্রায় ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এ হিসাবমতে তার ১৫০ শতাংশ জমি থেকে বছরে আয় হয় ৩ লাখ ৬০ হাজার থেকে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। যা অন্য কোনো কৃষি আবাদে সহজলভ্য নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেকার যুবক শহিদুলের লেবু চাষে সাফল্য দেখতে, পরামর্শ নিতে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসছেন। অনেকেই এ বীজহীন লেবুর বাগান করার কথা চিন্তা-ভাবনাও করছেন। অনেকেই ছোট পরিসরে শুরু করেছেন এর চাষ।

রোপণের বছর বাদে প্রতি বছর একবার ডালপালা ছাঁটা, মাটি কোপানো, প্রতি ৩ মাসে একবার নিড়ানি ও ২-৩ মাস অন্তর সেচ ও সামান্য জৈব সার দিতে হয়।

ফলে একর প্রতি বার্ষিক খরচ হয় মাত্র ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। আর এক একর জমির লেবুতে আয় হয় কমপক্ষে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা। তাছাড়া নিজের উৎপাদিত কলম চারা দিয়ে ফিরতি বছর নতুন বাগান তৈরি করা ছাড়াও প্রতিটি কলম করা চারা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে বিক্রি করা সম্ভব।

স্থানীয় ময়না ইউনিয়নের বাসিন্দা, স্কুল শিক্ষক মুকুল কুমার বোস জানান, এটি অল্প পুঁজিতে ভালো একটি চাষাবাদ ও লাভজনক। শহিদুলের এ লেবু চাষের সফলতা দেখে অনেকেই লেবু চাষে আগ্রহ হয়ে উঠেছেন।

বোয়ালমারী উপজেলার শিল্পকলা একাডেমির সদস্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন জানান, এ লেবু চাষে শহিদুলের সফলতা শুনে বাগান দেখে এসেছি। নিজেও স্বল্প পরিসরে এর আবাদ শুরুর চিন্তা করছি।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মৃণাল বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, বীজহীন লেবু সারা বছর ফলন দেয়। এ লেবু অধিক ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ প্রচুর রস ও সুঘ্রাণ যুক্ত।

বর্তমানে মানুষের কাছে হাইব্রিড জাতের এ বীজহীন লেবুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আরেক সুবিধা হচ্ছে একবার এ লেবুর চারা রোপণ করলে একাধারে ১২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত এ জাতের লেবু গাছে ফলন দেয়। তিনি আরও জানান, এ লেবু চাষে যদি কেউ এগিয়ে আসতে চায় তাহলে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। সূত্র: জাগো নিউজ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২০, ২০২৩ ২:৫২ অপরাহ্ন
ধানে চিটা হওয়ার কারণ ও সমাধান
কৃষি বিভাগ

বোরো ধান উৎপাদনে উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব –
মার্চ মাসের ৩য় সপ্তাহ থেকে দিনের বেলার তাপমাত্রা প্রায়শই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেড়ে যাচ্ছে। যা ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে চিটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ধান গাছের জীবনচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রায় গাছের বাড়-বাড়তি প্রভাবিত হয়। আমাদের দেশে চাষকৃত জাতসমূহ সাধারনত: ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রায় বৃদ্ধি ও উন্নয়ন সবচেয়ে ভালো হয়। তাপমাত্রা এর চেয়ে উপরে বা নিচে চলে গেলে ধান গাছের বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ব্যহত হয়।
তবে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সাধারনত: প্রজনন পর্যায় যথাঃ শীষ গঠন ও ফুলফোটা/পরাগায়ন এবং দানা ভরাট/গঠন পর্যায়ে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর চেয়ে বেশী হলে ধানে চিটা সমস্যা ও দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয়।
ধানের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হলেও ফুলফোটা পর্যায়ে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর চেয়ে বেশী হলে ধানে চিটা সমস্যা দেখা দেয়।
সাধারনত: ফুলফোটা পর্যায়ে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর বেশী হলে ঐদিন যে ফুলসমূহ ফুটবে তা চিটা হয়ে যাবে এ কারনে সম্পূর্ন শীষ চিটা হবে না।
আমাদের দেশে দীর্ঘ জীবনকালের বোরো ধানের জাত সমূহ, নাবী বোরো ও আউস ধানে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে চিটা সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও এসময়ে চাষকৃত জাতসমূহ রাত্রীকালীন উচ্চ তাপমাত্রা এবং ঝড়ের কারণে দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয় ও দানা কালো বর্ণ ধারণ করে ফলে বীজ ও ধানের মান এবং ফলন কমে যায়।

উচ্চ তাপমাত্রার ক্ষয়ক্ষতি ও প্রভাবঃ
প্রজনন পর্যায়ে অতি উচ্চ তাপে (৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর বেশী হলে) শিষে ধানের সংখ্যা কমে যেতে পারে।
ফুল ফোটা পর্যায়ে অথবা পরাগায়ণের সময় উচ্চ তাপে (৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর বেশী হলে) ধানের পরাগায়ন বাধাগ্রস্থ হয় ফলে চিটার সংখ্যা বেশী হয়।
রাত্রীকালীন উচ্চ তাপমাত্রা (২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর বেশী হলে) ও ঝড়ের কারণে দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয় ও দানা কালো বর্ণ ধারণ করে।
ফুল ফোটা পর্যায়ে অথবা পরাগায়ণের সময় ইট-ভাটার আশে-পাশের জমিতে উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবের কারণে ধানের শীষ আগুনে-ঝলসে যাওয়ার মত লক্ষণ দেখা যায় ফলে চিটার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যায় ও দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয় ও ফলন ব্যাপকহারে কমে যায়।

ক্ষয়ক্ষতি পূরণে ব্যবস্থাপনাঃ
চৈত্র ও বৈশাখ (এপ্রিল) মাসের উচ্চ তাপমাত্রা প্রাকৃতিক বিধায় প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে বোরো ধানের জাত নির্বাচন এবং এদের বপন ও রোপন সময় সমন্বয় করে এ সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
স্বল্প জীবনকালের বোরো ধানের জাত যথা: ব্রি ধান২৮, অগ্রহায়ন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বপন এবং ৪০-৪৫ দিন বয়সের চারা রোপন করে প্রজনন ও ফুল ফোটা পর্যায়ে চৈত্র ও বৈশাখ (এপ্রিল) মাসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব এড়ানো সম্ভব।
দীর্ঘ জীবনকালের বোরো ধানের জাত সমূহ যথা: ব্রি ধান২৯ ও ব্রি ধান৫৮, কার্তিক মাসের ৩য়-৪র্থ সপ্তাহের মধ্যে বপন এবং ৪০-৪৫ দিন বয়সের চারা রোপন করে প্রজনন ও ফুল ফোটা পর্যায়ে চৈত্র ও বৈশাখ (এপ্রিল) মাসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব এড়ানো সম্ভব।
জমিতে সেচ প্রদান করে এবং পানি ধরে রেখে চৈত্র ও বৈশাখ মাসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব কিছুটা কমানো যেতে পারে।
ধানের জমির আশে-পাশে ইট-ভাটা স্থাপনের অনুমোদন না দেওয়া অথবা ইট-ভাটার আশে-পাশে ধান চাষ না করা।
উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু ধানের জাত চাষ করতে হবে।

এ সময় করণীয়:-
ক)জমিতে পানি ধরে রাখুন।
খ) কাইচ থোর পর্যায়ে পটাশ, জিবি বোরন, মাইটিভিট, জিবি জিংক এবং কেমোজল জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে পারেন।
গ) ১০লিটার পানিতে ৬০গ্রাম পটাশ সার+৬০গ্রাম মাইটিভিট একত্রে মিশিয়ে ৫শতক জমিতে স্প্রে করতে পারেন।
বিস্তারিত পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে অথবা ইউনিয়ন/ ব্লক পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিন।

তথ্যসূত্র : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ১৯, ২০২৩ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
কুমিল্লায় ধুন্দল চাষে লাভবান চাষিরা
কৃষি বিভাগ

কুমিল্লা জেলায় ধুন্দল চাষে লাভবান হচ্ছে সবজি চাষিরা। স্থানীয় হাট বাজারে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। বাগান থেকে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে। কৃষকের প্রতি কেজি ধুন্দল উৎপাদণে সব খরচ বাদে ব্যয় হচ্ছে সর্বোচ ১০ টাকা।
সরেজমিনে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের কৃষকরা সবজির বাগানে বাঁশের খুঁটি ও সুতার নেট দিয়ে ধুন্দলের মাচা তৈরি করা হয়েছে। এসব মাচায় অসংখ্য ধুন্দল ঝুলছে। সবুজ মাচা জুড়ে ধুন্দলের হলুদ বর্ণের ফুলে ভরে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমিতে ধুন্দলসহ অন্যান্য মৌসুমী সবজির চাষাবাদ করা হয়েছে। স্থানীয়দের প্রতীত জমিতে পুষ্টি বাগান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল শাক-সবজি চাষের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

পদুয়ার বাজারের সবজি বিক্রেতা মনির হোসেন বাসসকে বলেন, এখন ৭৫-৮০ টাকা দরে ধুন্দলের কেজি বিক্রি করছি। মো. সাইফুল ইসলাম নামে এক উদ্যোক্তা জানান, মাটিয়ারা গ্রামে ৭০ শতাংশ জমিতে আগাম ধুন্দলের সাথী ফসল হিসেবে শশা চাষ করেছেন। ধুন্দলের মাচার নিচে সারিবদ্ধভাবে প্রায় ৭ হাজার শশার চারা রোপণ করি। এ পন্থায় ধুন্দলের পাশাপাশি শশা চাষেও সফল হয়েছি। পাইকারের কাছে প্রতি কেজি ধুন্দল ও শশা ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন জানান তিনি। কামাল হোসেন বলেন, প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে আগাম ধুন্দলের বাগান করেছেন। দু’দিন পরপর বাগান থেকে ৭০-৮০ কেজি ধুন্দল নামছে। এসব ধুন্দল নিমসার বাজার, লালমাই বাজার, পদুয়ার বাজার বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন। কৃষক মো. মনির হোসেন জানান, তিনি মৌসুমী সবজির আবাদ করেছেন। উৎপাদিত ধুন্দল, ঝিঙ্গা, কচু, লাউ, লাল শাক, পুঁই শাক, ডাটা বিক্রি করছেন। বছর জুড়ে সবজি চাষ থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় হচ্ছে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কৃষি কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন, সদর দক্ষিণে প্রচুর পরিমানে ধুন্দল ও করলা শষা চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর করলা ও ধুন্দলের ফলন ভালো হয়েছে এবং বাজার দাম ভালো পেয়ে কৃষক খুশি।

সূত্রঃ বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ১৩, ২০২৩ ৩:০০ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জলাবদ্ধ অনাবাদি জমিতে ভাসমান কৃষির আবাদ বাড়ছে
কৃষি বিভাগ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নিম্ন জলাভূমি বেষ্টিত একটি উপজেলা। এ উপজেলার অধিকাংশ জমি বছরের ৮ মাস জলমগ্ন থাকে। ওই জলে জন্ম নেয় জলজ জঞ্জাল কচুরিপানা। এ মৌসুমে কৃষকের কোন কাজ থাকে না। তাই কৃষক জলজ জঞ্জাল কচুরিপানা দিয়ে পানির ওপর ভাসমান বেড তৈর করেন। কচুরিপানা পচে গেলে এসব বেড সবজি চাষের উপযোগী হয়। তখন কৃষক এখানে শাক, সবজি, ফল ও মসলার আবাদ করেন। জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ভাসমান বেডে চলে চাষাবাদ। এ সময়ে বাজারে সবজির আমদানী কম থাকে। তাই ভাসমান বেডের সবজি এ ঘাটতি পূরণ করে। কৃষক দামও পান ভালো। প্রতি বছরই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ভাসমান বেডে সবজি, ফল ও সমলা চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। এরমধ্য দিয়ে জলাবদ্ধ আনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আসছে। দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতিশীল হচ্ছে কৃষি অর্থনীতির চাকা।

ভাসমান বেডে চাষাবাদে রাসায়নিক সার বা কীট নাশক ব্যবহার করা হয় না। তাই ভাসমান বেডের সবজি, ফল ও মসলা মানব দেহের জন্য নিরাপদ। ভাসমান বেডে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করে কৃষক নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছেন। বাড়তি ফসল বাজারে বিক্রি করে অর্থ পাচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় জলাবদ্ধ আনাবাদি কৃষি জমি বেশি। এ জমি চাষাবাদের আওয়াতায় আনতে সরকার ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয় করণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় আমরা ২১ টি ইউনিয়নে ৬০টি প্রদর্শনী দিচ্ছি। গত বছর ২৬ একরে ভাসমান বেড চাষাবাদ হয়েছিল। এ বছর প্রায় ৩০ একরে এ বেডে চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা হবে। এখান থেকে ৫৪০ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে । যার বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ১ হাজার কৃষক এ চাষাবাদর সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। আমরা প্রকল্প থেকে কৃষকদের প্রদর্শনীতে বীজ, সার, ট্রে, নেটসহ ভাসমান বেড তৈরির উপকরণ সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভাসমান কৃষি এলাকায় গিয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ভাসমান বেডে শাক, সবজি, ফল ও মসলা আবাদ করে কৃষক নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছেন। বাড়তি ফসল বাজারে বিক্রি করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এভাবে জলাবদ্ধ আনাবদি জমি চাষাবাদের আওতায় আসছে। দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতিশীল হচ্ছে কৃষি অর্থনীতির চাকা।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার বলেন, ভাসমান বেডে ফসল উৎপাদনে কোন রাসায়নিক সার বা কীট নাশক ব্যবহার হয় না। তাই ভাসমান বেডের ফসল মানব দেহের জন্য নিরাপদ। ভাসমান বেডের শাক, সবজি, ফল খেতে সুস্বাদু। তাই বাজারে ভাসমান বেডের সবজি ও ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভাসমান বেডের ফসল বাজারে বেশি দামে বিক্রি হয়। তাই কৃষক এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে লাভবান হন। এজন্য গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষক ভাসমান বেডে ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে। প্রতি বছরই এ পদ্ধতির চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ছিলনা গ্রামের কৃষাণী যশোদা ওঝা (৪৮) বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ নিয়ে ১০ টি ভাসমান বেড করেছি। এ বেড থেকে ৮ হাজার টাকার লাল শাক বিক্রি করেছি। আগামী ৪/৫ দিরে মধ্যে আরো ৫ হাজার টাকার লাল শাক বিক্রি করব। এছাড়া ওই বেডে ঘি-কাঞ্চন শাক, পাট শাক, ঢ্যাড়শ, কচুর চাষাবাদ করেছি। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এখান থেকে অন্তত ১ লাখ টাকার শাক, সবজি, ফল ও হলুদ বিক্রি করব। ১০টি বেড থেকে খরচ বাদে আয় হবে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া এখানে উৎপাদিত শাক সবজি আমরা খাচ্ছি ও আত্মীয় স্বজনদের দিচ্ছি।

একই গ্রামের কৃষক প্রদীপ বিশ্বাস (৪৫) বলেন, ১০ বছর ধরে ভাসমান বেডে ফসল উৎপাদন করছি। গত বছর ৪৫টি বেড করেছিলাম। এ বছর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমি ৯০টি বেড করেছি। এখানে লাল শাক, ঢ্যাড়শ, সাম্মামসহ বিভিন্ন শাক, সবজি ও ফলের আবাদ করছি। এখানে উৎপাদিত ফসলে আমরা কোন কেমিক্যাল সার বা কীট নাশক ব্যাহার করি না। তাই বাজারে নিরাপদ এ ফসল বেশি দামে বিক্রি করতে পারি। এ সময়ে আমাদের কোন কাজ থাকে না । তাই এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে আমরা জলাবদ্ধ আনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনি। এতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আমাদের হাতে ফসল বিক্রির নগদ অর্থ আসে। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় সঠিকভাবে চাষাবাদ করতে পারলে এ পদ্ধতি খুবই লাভ জনক। এ সবজি বিদেশে রফতানী করতে পারলে আমরা অধিক দাম পেয়ে আরো বেশি লাভবান হতে পারব।

ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয় করণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ভাসমান বেডে চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে জলাবদ্ধ আনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এতে দেশে ফসলের উৎপাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে । তাই আমরা ভাসমান কৃষির অধুনিক চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করে কৃষকের কাছে প্রযুক্তি হস্তান্তর করছি। কৃষক এ নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ করে শাক,সবজির পাশাপাশি ভাসমান বেডে উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদন করছেন। ভাসমান বেডে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে বাজারে নিরাপদ সবজির সরবরাহ বাড়বে। কৃষক লাভবান হবেন।

 

(বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ৯, ২০২৩ ৭:২০ অপরাহ্ন
বাকৃবিতে ‘বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রভাব শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনু: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যায়ে (বাকৃবি) ‘বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রভাব শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোমেটেরিওলজি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে মূল বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগের প্রধান ড. মো. শামীম হাসান ভুইঁয়া।পরে একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য উন্নয়ন প্রকল্প’ এর অর্থায়নে

এগ্রোমেটেরিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. এ.বি.এম আরিফ হাসান খান রবিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং এগ্রোমেটেরিওলজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা।

মূল বক্তব্যে ড. মো. শামীম হাসান ভূঁইয়া বলেন, জলবায়ুর যে কোনো পরিবর্তন  পরিবেশ এবং এর বাসিন্দাদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ফ্যাক্টর যা জীবের জীবনধারা নিয়ন্ত্রণ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলি ব্যাপক প্রাণহানির পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতির ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। জীবন ও সম্পত্তির এই ক্ষয়ক্ষতিগুলি জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে কিনা তা প্রশ্ন তোলে।তিনি আরও জানান বিভিন্ন উপজেলায় বর্তমানে ২৭৪টি আবহাওয়া পর্যেবক্ষণাগার বসানো হয়েছে। স্থবির কুয়াশার পূর্বাভাসের মাধ্যমে ছত্রাকজনিত রোগের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।
এছাড়া ১৩টি ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে এখন ভূমিকম্প পরিমাপ করা হয়। এতে অনেক তাড়াতাড়ি ও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ৫, ২০২৩ ৭:০০ অপরাহ্ন
খুবিতে কুয়াসের উদ্যোগে ন্যাচার বেসড সল্যুশন বুট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
কৃষি গবেষনা

‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এসোসিয়েশন অফ স্টুডেন্টস ইন এগ্রিকালচারাল এন্ড রিলেটেড সাইন্স’ (কুয়াস) ক্লাবের উদ্যোগে ‘Nature based Solution Boot-Camp’ শীর্ষক সেমিনার নুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৫ আগস্ট) স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের উঠানে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

‘প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান’ এ প্রতিযোগিতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন থেকে মোট ১৫ টি দল অংশগ্রহণ করে। এতে প্রথম ও দ্বিতীয় দল হিসেবে নাম লেখায় ব্যাক স্পেসার ও রিসাইকেল পিয়েল।

উল্লেখ্য, টিম রিসাইকেল পিয়েল-বায়োএনজাইম-বিষাক্ত রাসায়নিক ক্লিনজারের চূড়ান্ত প্রাকৃতিক সমাধান দেখান। ‘সবুজ ফিল্টার’ : একটি বায়োইনস্পায়ারড কম খরচে কম শক্তি চালিত জল ডিস্যালিনেশন মেকানিজম গ্রিন মস ব্যবহার করে তাদের প্রাকৃতিক সমাধান দেখান ক্যাম্পের শীর্ষ দল ব্যাক স্পেসার।

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় রাউন্ডে বিজয়ীরা ন্যাশনাল রাউন্ডে অংশগ্রহণ করবেন এবং সেখানকার বিজয়ীরা নেদারল্যান্ডসের ওয়েনিংগেন ইউনিভার্সিটি এন্ড রিসার্চ এর শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন কুয়াস এর সভাপতি অভিজিৎ কুমার পাল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন।

অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে ছিলেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মতিউল ইসলাম, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মাসুদুর রহমান ও বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনেের প্রফেসর ড.কাজী মুহাম্মাদ দিদারুল ইসলাম।

অতিথিরা বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি কো-কারিকুলার এক্টিভিটি বাড়াতে হবে। তাদের ভাবনা থেকেই নতুন কিছু সৃষ্টি হবে। তারা মনে করেন শিক্ষার্থীদের ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে এই ক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।

মোঃ আমিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২, ২০২৩ ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
কানাইঘাটে বালাইনাশকের নিরাপদ ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলায় কৃষি অফিসের উদ্যোগে ১ আগস্ট দুপুর ১২ ঘটিকার সময় কৃষি অফিসের হল রুমে  বালাইনাশক বিক্রেতা, কোম্পানী প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি ও ডিএই কর্মকর্তাদের নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে  উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  সিলেট অঞ্চলের উপ পরিচালক ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি  হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেট জেলার অতিরিক্ত উপ -পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: এমদাদুল হক এর সভাপতিত্বে ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ হায়দার আলি টুটুল এর পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোজাদ্দেদ আহমেদ,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বৃন্দ, উপজেলার সার ও কীটনাশক বিক্রেতায় জড়িত ডিলার বৃন্দ এবং বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির প্রতিনিধি।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২০, ২০২৩ ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
ধানের ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতার ব্লাইট রোগ
কৃষি বিভাগ

ধানের রোগবালাইয়ের কারণে উৎপাদনে গড়ে ১০ শতাংশ হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে, সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক সময়ে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারে। অধিক উৎপাদন ও আয় পেতে ধানের প্রধান রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য।

ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতার ব্লাইট রোগ

Xanthomonas oryzae নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এই রোগ হয়, এই রোগে পাতার উপরের অংশ থেকে শুরু করে এক বা উভয় প্রান্ত দিয়ে নিচের দিকে শুকিয়ে যেতে থাকে। এবং পাতা ফ্যাকাশে হলুদ হয়ে যায়। এ রোগে আক্রান্ত গাছের পাতা শুকিয়ে যায় এবং দানা খালি থাকে যার কারণে উৎপাদনশীলতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়।

 

নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত

রোগমুক্ত প্রত্যয়িত বীজ ব্যবহার করতে হবে।

এই রোগের বিস্তার রোধ করার জন্য,সময়ে সময়ে নিষ্কাশন ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

মাটি পরীক্ষার পর নাইট্রোজেন সুষম পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে,সুপারিশকৃত পরিমাণের বেশি নাইট্রোজেন ব্যবহার করলে এ রোগের বিস্তার ও বিস্তারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

 

এ রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ৭৫ গ্রাম এগ্রিমাইসিন ১০০ এবং ১.৫ কেজি কপার-অক্সিক্লোরাইড ৫০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে হেক্টর প্রতি তিন থেকে চার বার স্প্রে করতে হবে। এই রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই প্রথম স্প্রে করতে হবে এবং তারপরে প্রয়োজন অনুসারে ১০-১২ দিনের ব্যবধানে স্প্রে করতে হবে।

এলাকা নির্দিষ্ট রোগ প্রতিরোধী ও প্রত্যয়িত স্ট্রেইনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

 

খাপ ব্লাইট (ঝলসে যাওয়া)

এই রোগের উপসর্গ সাধারণত পাতায় ও পাতার খাপে ২-৩ সেন্টিমিটার লম্বা এবং কিছুটা সবুজ বাদামী রঙের দাগের আকারে দেখা যায়, যা পরে হালকা হলুদে পরিণত হয় যা কিছুটা নীলাভ ধূসর বর্ণে পরিণত হয়। বেল্ট।  এই রোগের লক্ষণগুলি সাধারণত ২-৩ সেন্টিমিটার লম্বা দাগের আকারে দেখা যায় এবং পাতা এবং পাতার চাদরে সামান্য সবুজ বাদামী বর্ণ ধারণ করে যা পরে হালকা হলুদে পরিণত হয় যা কিছুটা নীলাভ ধূসর বর্ণে পরিণত হয়। বেল্ট তীব্র সংক্রমণের সময়, স্ক্লেরোটিয়া দানার উপরও তৈরি হয় এবং দানাগুলি অসুস্থ কানে খালি থাকে। ঘন রোপণ এবং অতিরিক্ত পরিমাণে নাইট্রোজেন সারের ব্যবহার এই রোগের বিকাশ ও বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

 

নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

ক) ঘনভাবে রোপণ করবেন না।

খ) অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করবেন না।

গ) মাটি পরীক্ষার পর সুষম নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করুন।

ঘ) ফসলের ঘূর্ণন অনুসরণ করুন।

ঙ) সংক্রমিত ও রোগাক্রান্ত গাছপালা এবং ফসলের অবশিষ্টাংশ সংগ্রহ করে নিরাপদ স্থানে পুড়িয়ে ফেলুন।

চ) এর প্রতিরোধের জন্য কার্বেনডোজিম 50 ডব্লিউপি 500 গ্রাম বা হেক্সোকোনাজল 500 মিলি 500 লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি হেক্টর হারে আক্রান্ত ধান ফসলে স্প্রে করতে হবে।

ছ) ফসলে এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে নাইট্রোজেন সারের পরিমাণ কমাতে হবে এবং পটাশ ব্যবহার করতে হবে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop