৯:৩১ পূর্বাহ্ন

সোমবার, ২৬ মে , ২০২৫
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ২৬, ২০২৫ ৯:২১ পূর্বাহ্ন
কচুয়ায় পানির নিচে সুপারির ব্যবসা
কৃষি বিভাগ

বাগেরহাটের কচুয়ায় পানির নিচে রেখে কোটি টাকার সুপারি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পানির নিচে রেখে সুপারি বিক্রি সনাতন পদ্ধতি হলেও এ পদ্ধতি চলে আসছে বহুদিন ধরে। এ পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাতকরণ সুপারি সাধারণত মজা সুপারি কোথাও ঢোপ সুপারি নামে পরিচিত।

কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় কাঁচা পাকার মৌসুমে সুপারি মজুদ করে বিশেষ পদ্ধতিতে পানির ভিতর নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত রেখে এক সময় ভালো মূল্যে বিক্রি করা হয়। এ পদ্ধতিতে সুপারি বিক্রি করে লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভাষ্য অনুযায়ী প্রতিবছর পানির নিচে রাখা কোটি টাকার সুপারি এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি করা হয়।

তবে এ ধরনের পদ্ধতিতে সুপারি বিক্রি করা লাভজনক হলেও দূষিত হচ্ছে পানি। আর এ পানি দূষণের হাত থেকে রক্ষার জন্য সুপারি প্রক্রিয়াকরণের জন্য সুপারিকে চৌবাচ্চা অথবা সংরক্ষিত ডোবায় রাখা জরুরি।

তবে মদা সুপারিকে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ কিংবা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার আকাশ বৈরাগী বলেন, কচুয়া উপজেলায় মোট ১১৫৩ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়। এ বছর ফলন হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৭১ মেট্রিকটন। সুপারিকে ভিজিয়ে বেশিক্ষণ কাঁচা রাখার জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। যা স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক চাহিদা রয়েছে। মদা সুপারি দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা ভালো লাভবান হচ্ছেন।

পানি ও পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, প্রশাসনসহ সবার সহায়তা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের যদি এ ব্যাপারে সচেতন করা যায় তবে এ ধরনের সমস্যা সমাধান হবে এবং কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৫, ২০২৫ ৩:১২ অপরাহ্ন
কৃষিতে নারীশ্রম, ফসলে চওড়া হাসি
কৃষি বিভাগ

অগ্রহায়ণ শেষে পৌষের আগমন। প্রকৃতিতে ইতোমধ্যে শীতের দাপট। আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মৌসুম শেষ। এখন চলছে নানা ধরনের শাক-সবজি আর শস্য চাষ ও ঘরে তোলার সময়। আর এসব কাজে চলনবিলসহ এর আশপাশের কৃষিপ্রধান জেলাগুলোয় চলছে নারী-পুরুষের ব্যস্ততা। কেউ মরিচ বা সবজি ক্ষেতে কাজ করছেন, অনেকেই আলু তোলায় ব্যস্ত। কেউ বা ব্যস্ত অন্যান্য শস্য ঘরে তোলা কিংবা গাছ পরিচর্চায়।

সম্প্রতি চলনবিল সমৃদ্ধ নাটোর, সিরাজগঞ্জ ছাড়াও বগুড়াসহ আশপাশের উত্তরের জেলাগুলো ঘুরে এমনটাই চোখে পড়েছে।  স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমন ধান কাটা মৌসুমে কৃষিপ্রধান এলাকায় স্বাভাবিকভাবেই কৃষি শ্রমিকদের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। ফলে অন্যান্য ফসল আবাদের জন্য শ্রমিক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষিপ্রধান এলাকাগুলোতে এই সংকট নিরসনে নারী কৃষি শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বাড়ে।

চলন বিল ছাড়াও বগুড়াসহ উত্তরের বিভিন্ন জেলায় নারী কৃষি শ্রমিকরাও সমানভাবে কাজ করছেন। এই মৌসুমে যেমন এখন বগুড়ার আলু ক্ষেতগুলোতে গেলেই চোখে পড়ছে দলবেঁধে কাজ করছেন নারী শ্রমিকরা।

বগুড়ার শেরপুরের বাসিন্দা মো. রতন মিয়া নামে কৃষক জানান, আলু ক্ষেতে গত কয়েক বছর ধরেই নারী কৃষি শ্রমিকদের উপস্থিতি বাড়ছে। এতে ধান কাটার মৌসুমে আলু ক্ষেতে শ্রমিক সংকট কেটে গেছে। অন্যদিকে আগে থেকেই ধান মাড়াই ও সংরক্ষণে নারীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এখন ধান ক্ষেতে ধান আবাদের অন্যান ধাপেও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। সব মিলিয়ে কৃষিশ্রমের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠছেন উত্তরের নারী শ্রমিকরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বগুড়াসহ উত্তরের নারী শ্রমিকদের আগে শুধু ধান কাটার মৌসুমে মাড়াই বা সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত দেখা গেলেও এখন তাদের ব্যস্ততা চোখে পড়বে ধান বা আলু ক্ষেত থেকে শুরু করে অন্যান্য শস্য ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল আবাদের নানা পর্যায়ে। ফসল আবাদের প্রায় সব প্রক্রিয়াতেই এখন নারী কৃষি শ্রমিকদের রয়েছে সরব উপস্থিতি। আলুর জমিতেও ক্ষেত পরিচর্যা থেকে শুরু করে বীজ বপন ও ফলন তোলার সময় নারী শ্রমিকদের দল বেঁধে কাজ করেন।

জানা যায়, পৃথিবীর ইতিহাসে খাদ্যশস্য আবাদের সূচনাই নারীদের হাত ধরে। কালক্রমে বিবর্তনের পথ ধরে সেই কৃষি পুরুষদের হাতে চলে যায়। তবে বিভিন্ন দেশে সবসময়ই কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন নারীরা। দেশেও কৃষি, বিশেষ করে খাদ্যশস্য আবাদে নারীদের অংশগ্রহণ ঐতিহ্যগতভাবেই দৃশ্যমান। তবে শস্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ধাপেই গত কয়েক দশকে নারী কৃষি শ্রমিকদের উপস্থিতি বেশি দৃশ্যমান ছিল। ধানের ক্ষেত্রে যেমন মাড়াই ও সংরক্ষণ ধাপে কাজ করতে দেখা যেত নারীদের।

নারী শ্রমিকদের কৃষিতে সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে জাতিসংঘের খ্যাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএওর এক প্রতিবেদনেও। সংস্থাটির গত বছরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের কৃষি শ্রমে নারীদের অংশগ্রহণের হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। ২০০৫ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে কৃষি ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা ৯ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

বগুড়া জেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসমত জাহান এই প্রতিবেদককে বলেন, বগুড়াসহ উত্তরের জেলাগুলোতে ধান ক্ষেতেও এখন পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়বে। আর আলুসহ অন্য সবজি আবাদে ক্ষেত্রেও জমি তৈরি থেকে শুরু করে পরিচর্যা, বীজ বপন, অঙ্কুরোদ্গম, ফসল উত্তোলন ও সংরক্ষণের প্রতিটি ধাপে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

তবে সমাজে নারী-পুরুষ বৈষম্যের মতো কৃষি শ্রমিকদের মধ্যেও নারীদের কম মজুরি পাওয়ার অভিযোগ করেছেন মোছা. শরিফ নামে এক নারী।

তিনি বলেন, ক্ষেতে সারা দিন কাজ করার জন্য একজন পুরুষ শ্রমিক যেখানে ন্যূনতম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পেয়ে থাকেন, সেখানে আমরা পাই ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

বগুড়ার শাখারিয়া এলাকার তিলের পাড়া গ্রামের শিফা বেগম কৃষি জমিতে কাজ করেন।  তিন সন্তানের জননী শিফার স্বামী সেলুনে কাজ করেন। সন্তানদের শিক্ষা ও সংসারের ব্যয় সামলাতে এখন তিনি আলুর ক্ষেতে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ৩০০ টাকা দিন হাজিরায় জমিতে আলু তুলছি।

শিফা বেগমের সঙ্গেই মাঠে কাজ করছিলেন আরও তিন নারী। তাদেরও অভিযোগ, তারা দিনে ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করলেও পুরুষ শ্রমিকরা মজুরি বেশি পান। অথচ নারী ও পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা ক্ষেতে সমান কাজই করে থাকেন। বৈষম্য থাকলেও উপার্জনের মাধ্যমে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর জন্য তারা কাজ বন্ধ করছেন না।

নারী শ্রমিক সাথী বেগমের স্বামী আব্দুস সামদ নির্মাণ শ্রমিক। সাথী বেগম বলেন, ‘আমাদের পাঁচজনের সংসার। স্বামীর একার আয়ে সংসার চলে না। তাই মাঠে কাজ করি।

এখন দুজনের আয়ে মোটামুটি সংসার চলে যায়।’ সবজির মৌসুম শেষ হলে বাসাবাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

নারী শ্রমিকরা জানালেন, তাদের আশপাশের গ্রামগুলোতে দুই শতাধিক নারী শ্রমিক রয়েছেন, যারা সরাসরি ক্ষেতে কাজ করেন। আগের তুলনায় নারী শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ছে।

কেবল বগুড়া নয়, উত্তরের অন্য জেলাগুলোতেও আলুর জমিতে নারী শ্রমিকদের কাজ চোখে পড়ার মতো। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আলু বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. পারভেজ রশীদও জানালেন সে কথা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের আওতায় যেসব জমিতে আলু আবাদ হয়, সেখানে অনেক নারী শ্রমিক কাজ করেন। জমিতে যত ধরনের কাজ রয়েছে, সব কাজই নারী শ্রমিকরা করে থাকেন। ধান কাটার মৌসুমে আলুর ক্ষেতের জন্য শ্রমিক সংকট তৈরি হতো। নারী শ্রমিকরা এগিয়ে আসায় সেই সংকট এখন কেটে যাচ্ছে। নারী শ্রমিকরা না থাকলে আমাদের আবাদ অব্যাহত রাখা কষ্ট হয়ে যেত।’ তবে পারভেজের দাবি, তারা মজুরিতে নারী-পুরুষ বৈষম্য করেন না।

কৃষিশ্রমে নারীদের সম্পৃক্ততা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহাকরী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বলেন, ‘বগুড়ায় মরিচের ক্ষেতে ৮০ শতাংশ, আলুতে ৬০ শতাংশ এবং মূলা, গাজর ও ঢেড়স আবাদে ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক সম্পৃক্ত রয়েছেন। জমিতে কায়িক শ্রমেও এখন পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন নারীরা। তারা নিজেরা উপার্জন করছেন, পরিবারের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।’

সূত্র জানায়, আলু উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা বগুড়া। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার অভ্যন্তরীণ আলুর চাহিদা আড়াই লাখ মেট্রিক টন। সেখানে এ বছর সাড়ে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন।

কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার জেলায় বৃষ্টিজনিত কারণে দেরিতে বপন হওয়ায় আগাম জাতের আলুও একটু দেরিতে উঠছে। তবে মূল আলু আবাদের ভর মৌসুমে ফলন ভালো হয়েছে। এভাবে শুধু উত্তরের জেলাগুলোই নয়, কৃষিতে নারীর শ্রমে সাফল্য আসছে ফসলে। আরও চওড়া হচ্ছে কৃষকের মুখের হাসি।

 

(বাসস)
শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৩, ২০২৫ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ

হাওর বেষ্টিত বোরো প্রধান চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো  আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত গড়ে ৮৫ ভাগ রোপণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভাল থাকায় কৃষকরা ভাল ফলনের আশা করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় চার লাখ কৃষক পরিবার বোরো চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। চার লাখ পরিবারে প্রায় ১০ লাখ কৃষক চাষাবাদের যুক্ত রয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে জেলার সদর উপজেলয় মোট ১৬ হাজার ১৮৫ হেক্টরে, বিশ্বম্ভরপুর ১০ হাজার ৫৮৩ হেক্টরে, দোয়রাবাজার ১২ হাজার ৯০১ হেক্টরে, ছাতক ১৪ হাজার ৯৭৯ হেক্টরে, দিরাই ৩০ হাজার ১৭৭ হেক্টরে, শাল্লা ২১ হাজার ৬৯৯ হেক্টরে, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ২২ হাজার ৬১২ হেক্টরে, জগন্নাথপুর ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টরে, জামালগঞ্জ ২৪ হাজার ৫০৫ হেক্টরে, তাহিরপুর ১৭ হাজার ৪৩৯ হেক্টরে, ধর্মপাশা ৩১ হাজার ৯০৭ হেক্টরে বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। চাষ করা ধানের মধ্যে হাইব্রিড ৬৫ হাজার ২’শ হেক্টরে, উফশি ১ লাখ ৫৭ হাজার ২১০ হেক্টরে, স্থানীয় ধান এক হাজার হেক্টর জমিতে  চাষ করা হয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে উফশি ১৯ মণ, হাইব্রিড ২২ মণ ও স্থানীয় ৮ মণ ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে প্রতি হেক্টর জমিতে উফশি ১৪৩ মণ , হাইব্রিড ১৬৭ মণ এবং স্থানীয় ৬০ মণ ধান উৎপাদন করা হবে। যা গড়ে হেক্টর প্রতি ১২৩ দশমিক ৩৩৩ মণ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার  মেট্রিক টন ধান।

তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের রামজীবনপুর গ্রামের স্বাবলম্বী কৃষক ও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ মুরাদ বাসসেেক জানান, এবার তিনি ৪৪ একরে বোরো ধান চাষ করছেন। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি ৩২ একর জমি রোপণ করেছেন।

তিনি বাসসকে আরো জানান, তাহিরপুর উপজেলার বৃহত্তর শনির হাওরে জলাবদ্ধতার কারণে ১২ একর জমি রোপণের উপযোগী হয়নি। পানি নেমে গেলেই রোপণ করা হবে।

ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই গ্রামের কৃষক গোলাম রেজা বাসসকে জানান, এবার তিনি ৮ কেদার জমিতে বোরো চাষাবাদ করেছেন। গত বছরও তিনি এ ৮ কেদার জমি চাষাবাদ করে প্রায় ২৫০ মণ ধান পেয়েছেন। এবার আল্লাহ চাহে তো আবহাওয়া ভাল থাকলে ফলন আরো বেশি  হাওয়ার আশা করছেন তিনি। চারজন সদস্যের পরিবার তার। যে ফসল পেয়েছেন তা দিয়েই সংসার চলে যাচ্ছে তার।

তিনি বাসসকে আরো জানান, কৃষি বিভাগ বোরো ধান ফলাতে এবার তাকে তিন প্রকারের  সার দিয়েছে এবং ১ কেজি বীজ দিয়েছে। যে পরিমান সার কৃষি বিভাগ তাকে দিয়েছে এই পরিমান সার তাকে কিনতে হলে অন্তত ৮০ হাজার টাকা লাগতো। তিনি আরো জানান, স্কিমের (গভীর নলকূপে পানি সেচ) জমি হওয়ায় কৃষি বিভাগ তাকে সার ও বীজ দিয়ে উৎসাহ দিয়েছে।

দিরাই উপজেলার কলিয়ার কাপন গ্রামের স্বাবলম্বী কৃষক গোলাম জিলানী চৌধুরী বাসসকে জানান, গত বছর তিনি দেড়শত কেদার মানে ৫০ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করে প্রায় ২ হাজার মণ ধান পেয়েছেন। এবছর তিনি ২০০ কেদার মানে ৬৭ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। তিনি গ্রামের পাশে উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম চাপতির হাওরে এসব বোরো জমি চাষাবাদ করেছেন। চারদিন আগে বোরো ধান রোপণ করা শেষ হয়েছে।

জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার নয়াহালট গ্রামের কৃষক মো. সেরুল আলম বাসসকে জানান, এবার তিনি উপজেলার বৃহত্তম পাকনার হাওরে ৪৫ কেদার বোরো জমি রোপন করেছেন। তিনি আরো জানান, গতকাল শুক্রবার তার বোরো জমি রোপণ শেষ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বাসসকে জানান, চলতি  মৌসুমে বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। আজ শনিবার পর্যন্ত হাওরে ৮৫ ভাগ জমিতে বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। বাকি ১৫ ভাগ জমি এক সপ্তাহের মধ্যে রোপন শেষ হবে বলেও বাসসকে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৮, ২০২৫ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
ক্রেতা বিক্রেতার হাঁক ডাকে সরগরম হয়ে উঠে হাতিয়ার চরঈশ্বর সবজি বাজার
কৃষি বিভাগ

ভোরের আলো ফোটার আগেই ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাকে সরগরম হয়ে উঠে হাতিয়ার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের নিরাপদ সবজি বাজার। কৃষকদের পরম যত্নে আবাদ করা সবজি বিক্রি হয় এ বাজারে ।

সূর্য ওঠার আগেই কৃষকরা তাদের জমিতে উৎপাদিত তরতাজা সবজি নিয়ে হাতিয়ার চর ইশ্বর ইউনিয়নের সবজি বাজারে আসেন। কেনা-বেচা চলে মাত্র ৩০ থেকে ৫০ মিনিট, বিক্রি হয় লাখ লাখ টাকার সবজি। ভ্রাম্যমাণ দোকানের মাধ্যমে বিক্রি হওয়া এসব সবজি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে চলে যায়। ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় খুচরা বিক্রেতারাও পাইকারি দামে সবজি কিনে নিয়ে যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, সূর্য ওঠার আগেই হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কৃষকরা পুঁইশাক, কলমি শাক, লাল শাক, পালংশাক, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, শালগম, নতুন আলু, বেগুন, গাজর, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, ধনেপাতাসহ নানা রকমের টাটকা সবজি বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন।

 

চাষী মো. আবু হোসেল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি এ বাজারে সবজি বিক্রি করি। বাড়ির আঙিনায় উৎপাদন করা কীটনাশকমুক্ত সবজিই এ হাটের মূল আকর্ষণ। খুব ভোরেই আমাদের বিক্রি শেষ হয়। প্রায় ৩০ মিনিটে লাখ টাকার সবজি বিক্রি হয়। তবে উৎপাদন হিসেবে সবজির দাম কম পাই।

আহসান হাবিব বেলাল নামের আরেক চাষী বলেন, এখানে সব নিরাপদ সবজি বিক্রি হয়। আমরা যা খাই তাই আমরা বিক্রি করি। আমাদের সবজিতে কোনো ক্ষতিকর কিছু ব্যবহার করা হয় না। আমরা চাই সরকার আমাদের সবজির বিষয়ে গুরুত্ব দিক, তাহলে আমরা আরও ভালো করতে পারবো।

মোশাররফ হোসেন নামের আরেক চাষী বলেন, আমাদের উৎপাদিত সবজি পুরো হাতিয়ায় যায়। আমরা এতে খুশি। তবে সরকারি কোনো সুবিধা আমরা পাই না। যদি পাইতাম তাহলে আরও ভালো করতাম। বর্তমানে সবজির দাম কম তাই ন্যায্য মূল্য পাই না। তবে হাতিয়ার সবজিগুলো যদি হাতিয়ার বাইরেও পাঠানো যেতো তাহলে কৃষকরা লাভবান হতো।

মো. ফিরোজ হোসেন নামের আরেক চাষী বলেন, এক একর জমিতে শীতকালীন সব ধরনের সবজি আমি চাষাবাদ করছি। আমাদের এখানে নিরাপদ ও ফরমালিনমুক্ত শাক-সবজি পাওয়া যায়। বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা আসেন নিরাপদ সবজি কেনার জন্য। অনেক সাধারণ মানুষ এখান থেকে সবজি কেনেন। নিরাপদ সবজি বাজার হিসেবে এর সুনাম রয়েছে।

হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, চরঈশ্বর ইউনিয়নের সবজির বাজারটি একটি প্রাচীন বাজার। বাজারটিতে নিরাপদ সবজির ভালো চাহিদা রয়েছে। এখানে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত এসব সবজি বিক্রি করেন। নিরাপদ সবজি উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করনে আমরা আগামীতে পরিকল্পনা নেবো।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪ ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
শীতকালীন ফসলে ভরেছে তিস্তার বুক
কৃষি বিভাগ

নানা ফসলে ভরে গেছে তিস্তার বুক। এটি যেন এখন আর নদী নয়,  কৃষকের আবাদি জমি।  তিস্তার বুকে যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ফসলের ক্ষেত।

বালু মাটির ওপর পলি জমায় এ বছর ধান, গম, আলু, ভুট্টা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচসহ শীতকালীন অন্যান্য ফসলের চাষ হয়েছে। শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে তিস্তার বুক।  ভালো ফলন পাবার আশায় চরের বুকে দিনরাত কাজ করছেন চাষীরা, পাচ্ছেন সাফল্যও।

এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে চরের কৃষককে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ায় চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

চাষীরা জানান, তিস্তার পানি আগেভাগে নেমে যাওয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে চরের হাজারো কৃষক ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

কৃষি বিভাগের তদারকির কারণে চরে ফসলও হচ্ছে দ্বিগুণ এমন অভিমত চরের কৃষকদের।

 

কৃষি বিভাগের তদারকির কারণে চরে ফসলও হচ্ছে দ্বিগুণ এমন অভিমত চরের কৃষকদের।

লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় ১১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তার বুকে অন্তত ১৫০ চরে চাষাবাদ হয়েছে। আগে যেসব চরে ফসল ফলানো সম্ভব হয়নি সেসব চরেও এ বছর আবাদ হয়েছে। ফসলের আশানুরূপ ফলনও ঘরে তুলতে শুরু করেছেন তিস্তাপাড়ের কৃষকরা।

 

গত অক্টোবরে উজানে ভারতের সিকিমে তিস্তার বাঁধ ভাঙায় ভাটিতে বাংলাদেশে তিস্তার বুকে প্রচুর বালু জমেছে। এ কারণে বালুচরে এবার সব ধরনের ফসল হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিস্তাপাড়ের কৃষকরা। এমনটি জানিয়েছে কৃষি বিভাগও।

কৃষি বিভাগ বলছে, দেশে ১১৫ কিলোমিটার তিস্তার বুকে প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমি আছে। গত বছরগুলোয় শুকনো মৌসুমে ২০-২২ হাজার হেক্টর জমিতে ফসলের চাষ হতো। এ বছর আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে।

 

ভুট্টা চাষ হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ও ধান হয়েছে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে। এ ছাড়াও, আলু, গম, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, কুমড়াসহ  শীতকালীন নানা জাতের সবজি চাষ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে।

তিস্তাপাড়ের কৃষকরা  জানান, উজানে ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তার চুংথাং বাঁধ ভেঙে যায়। ওইদিন বিকেল নাগাদ বাংলাদেশে তিস্তার পানি অস্বাভাবিক বেড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। বন্যার পানির সঙ্গে বিপুল পরিমাণে পলিমাটি আসে। তিস্তার বুকে বালুচরে এসব পলি জমা হয়ে জমিগুলোকে উর্বর করে তোলে।

 

এ বছর আগাম বন্যা পরিস্থিতি দেখা না দিলে তিস্তার চর থেকে আশানুরূপ ফসল তোলা যাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। তারা বাম্পার ফলনে খুশি।

রংপুরের গংগাচড়া  উপজেলায় তিস্তার চর ইচলি এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন (৬৫)  বলেন, ‘চরে ৩০ বিঘা জমি আছে। গত ২০ বছরে এসব জমিতে চাষাবাদ করতে পারিনি। জমিতে শুধু বালু আর বালু। এ বছর সব জমিতে ফসল হয়েছে। আলু তুলতে শুরু করেছি। প্রতি শতাংশ জমিতে গড়ে ৪৫ কেজি আলু পেয়েছি। সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি।’

 

তিস্তার চর ছালাপাকের কৃষক রফিজ উদ্দিন মন্ডল (৭০)  বলেন, ‘তিস্তার কোনো চরই এ বছর ফাঁকা পড়ে নাই। সব চরে চাষাবাদ হয়েছে। চরের মাটিতে প্রচুর পলি জমেছে। অতীতে তিস্তার অধিকাংশ চর ফাঁকা পড়ে থাকতো। বালুর কারণে ফসল ফলাতে পারেননি। এ বছর পলি জমায় তা চরের কৃষকদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে।’

কাউনিয়া উপজেলার চর মধুপুর এলাকার কৃষক আমজাদ আলী বলেন,  দেড় বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করেছি, বাম্পার ফলন হয়েছে।  ভালো দাম পেলে আর পিছনে তাকাতে হবে না। চর নোহালীর চাষীমফিজুল বলেন, চরে তিনবিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়েছে।  আলু তোলার পর ওই জমিতে ভুট্রা লাগিয়েছি।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল   বলেন, ‘গত বছরগুলোয় শুকনো মৌসুমে তিস্তার চরাঞ্চলে যে পরিমাণ জমিতে চাষাবাদ হয়েছিল, এ বছর হয়েছে দ্বিগুণের বেশি জমিতে। চরে পলি জমায় জমিগুলো চাষযোগ্য হয়েছে।’

‘বাম্পার উৎপাদন হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এসব জমিতে সার ও কীটনাশক দিতে হয় না। কম খরচে কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছেন।

 

-বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৮, ২০২৪ ৯:১৫ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজারে টীম কর্ণফুলীর মাটি পরীক্ষা শেষে সার সুপারিশ কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগার কর্ণফুলী কর্তৃক কক্সবাজার সদর উপজেলা ও চকোরিয়া উপজেলায় মাটি পরীক্ষা পূর্বক কৃষকের মাঝে সার সুপারিশ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর উপজেলার ৫২জন কৃষকের ফসলী জমির মাটি এনালাইসিস করে সার সুপারিশ কার্ড বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার কক্সবাজার সদর জনাব মো: জাহিদ হাসান। টীম কর্ণফুলীর দলনেতা রায়হানুল ইসলাম ও সদস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: আবুল বাশার ও আফনান হোসাইন চৌধুরী। উল্লেখ্য গত ১ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার জেলার দুটি উপজেলা (চকোরিয়া ও কক্সবাজার সদর)এর মাটি পরীক্ষা করে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব কর্ণফুলী।

‘মাটি পরীক্ষা করে সার দিন, সারের অপচয় কমিয়ে অধিক ফসল ঘরে নিন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে চলতি রবি মৌসুমে এসআরডিআইর ১০টি ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগারের মাধ্যমে সারাদেশে চলছে কৃষক সেবা কার্যক্রম। এর অংশ হিসেবে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগার (এমএসটিএল) কর্ণফুলীর উদ্যোগে এই সার সুপারিশ কার্ড বিতরণের আয়োজন করা হয়। এরই মাধ্যমে রবি মৌসুমে টীম কর্ণফুলীর ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া কৃষক সেবা ৭ ডিসেম্বর শেষ হয়।

কৃষক পর্যায়ে গণসচেতনতার লক্ষ্যে চলতি রবি মৌসুমে চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ উপজেলা ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, পটিয়া, বান্দরবান সদর, চকোরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলায় এই ভ্রাম্যমাণ ল্যাবের ককার্যক্রম পরিচালিত হয়। কর্মসূচিতে মাত্র ২৫ টাকার বিনিময়ে মাটি পরীক্ষার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছেন চাষিরা; যার প্রকৃত খরচ ৪শ’ ৪০ টাকা। বাকি ৪ শ’ ১৫ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। মাত্র ২৫ টাকায় কৃষক ফসলি জমির মাটি পরীক্ষা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত ও উচ্ছসিত।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিভাগীয় গবেষণাগার চট্টগ্রাম ড. এন.এম জাহাঙ্গীর, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আঞ্চলিক কার্যালয় কক্সবাজার কাজী জাহিদ ফজল, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা চকোরিয়া ইশরাত জাহানসহ আরও অনেকেই।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৫, ২০২৪ ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত লালমনিরহাটের কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

লালমনিরহাট জেলায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষকদের  ব্যস্ততা বেড়েছে। বাজারের চাহিদা বিবেচনায় রেখে একটু বেশি লাভের আশায় সবজিতে স্বপ্ন বুনছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, লালমনিরহাট জেলার ৫ উপজেলাসহ তিস্তা নদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিগুলোতে দিন দিন বেড়েই চলেছে সবজি চাষ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি  ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ,টমেটো, বেগুন,শিম, মুলা, করলা, পটল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির আবাদ। মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষকরা। কিছুদিনের মধ্যেই  এসব সবজি বাজারজাত শুরু করবেন এমনই প্রত্যাশা করছেন এখানকার কৃষকরা।

বর্তমান সময়ে এখানকার কৃষকরা কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে জমিতে হালচাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি দেওয়া ও  আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের এ মৌসুমে জেলার বিভিন্ন বাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে সবজি পাঠাবেন কৃষকরা । এ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে লালমনিরহাটের কৃষকেরা।  লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে কোনো আগাম সবজি চাষ হলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। আর মুনাফাও অনেক বেশি হয়। তাই কৃষকরা বিশেষ করে উঁচু জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক মুনাফা লাভের জন্য ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও বাঁধাকপির জুড়ি নেই। পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে কপি চাষের জন্য উপযুক্ত।

তিস্তা নদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবে  আগাম সবজি চাষে বেশ আলোড়ন তুলছেন  কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষক মতিয়ার রহমান(৫০) বলেন, বর্তমানে  সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহার অনেকটাই কম থাকায় গুণগত মানে চাহিদাও অনেক বেশি । গত বছর আমি এক একর জমিতে ফুলকপি চাষাবাদ করে খরচ বাদে ৮০ হাজার টাকা লাভ করেছি। চলমান বাজার ও আবহাওয়া ভালো থাকলে একই জমি থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় হবে বলে আশা রাখছি।

পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আশরাফুল হক(৪০) জনান, গত বছর তিনি ১ একর জমিতে প্রায় ৪০ মেট্রিক টন শাক সবজি পেয়েছেন। তা পাইকারি বিক্রি করে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে।

বড়বাড়ী ইউনিয়নের কৃষক জাহিদ হাসান (৪২) বলেন, সবজি চাষে তুলনামূলকভাবে মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তেমন বেশি না। কম সময়েই সবজি বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। তবে সেবায় ত্রুটি করা যাবে না।

এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালোই আর পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব। সব মিলিয়ে সবজি চাষকেই আমরা লাভজনক মনে করছি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা  খন্দকার সোহায়েল আহমেদ জানায়, এবার শীতকালীন শাক-সবজিসহ প্রায় সব রকমের ফসলের ভালোই ফলন হচ্ছে।  আশা করি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি শাকসবজি  উৎপাদন হবে এ অঞ্চলে।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, ড. মোঃ সাইফুল আরিফিন জানান, চলতি  মৌসুমে জেলায় ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজির চাষ আবাদ হয়েছে এবং

২ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমির ফসল কাটা  হয়েছে। সেইসাথে আগাম শাকসবজি ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বর্তমানে কৃষকরা জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত শাকসবজি  উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে সবজির চাহিদা থাকায় কৃষকরা নায্য দামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ২৮, ২০২৪ ৪:৫৯ অপরাহ্ন
পটুয়াখালীর দুমকীতে মাত্র ২৫ টাকায় মাটি পরীক্ষাপূর্বক ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকার কৃষক সেবা প্রদান
কৃষি বিভাগ

পটুয়াখালীর দুমকীতে মাটি পরীক্ষা পূর্বক সার সুপারিশ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে বৃহঃস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুমকী উপজেলায় সার সুপারিশ কার্ড বিতরণ ও কৃষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসআরডিআই বিভাগীয় গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা একেএম আমিনুল ইসলাম আকন, প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও এএমএসটিএল কর্মসূচীর সমন্বয়ক একেএম জগলুল পাশা, পটুয়াখালী আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশিক এলাহী এবং দুমকী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ইমরান হোসেন। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ কায়েস মাহমুদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসআরডিআই পটুয়াখালীর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও টিম কীর্তনখোলার দলনেতা কাজী আমিনুল ইসলাম।

‘মাটি পরীক্ষা করে সার দিন, সারের অপচয় কমিয়ে অধিক ফসল ঘরে নিন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে চলতি রবি মৌসুমে এসআরডিআইর ১০টি ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগারের মাধ্যমে সারাদেশে চলছে কৃষক সেবা কার্যক্রম। এর অংশ হিসেবে দুমকী উপজেলায় দক্ষিণের ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগার (এমএসটিএল) কীর্তনখোলার উদ্যোগে এই সার সুপারিশ কার্ড বিতরণ এবং কৃষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।

কৃষক পর্যায়ে গণসচেতনতার লক্ষ্যে বরিশাল বিভাগের ৪ উপজেলায় এই কার্যক্রম গত ১৭ নভেম্বর শুরু হয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। উপজেলাগুলো হলো: নেছারাবাদ, গৌরনদী, দুমকী ও বরগুনা সদর। কর্মসূচিতে মাত্র ২৫ টাকার বিনিময়ে মাটি পরীক্ষার সুবর্ণ সুযোগ পাচ্ছেন চাষিরা; যার প্রকৃত খরচ ৪শ’ ৪০ টাকা। বাকি ৪ শ’ ১৫ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। মাত্র ২৫ টাকায় কৃষক ফসলি জমির মাটি পরীক্ষা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত ও উচ্ছসিত।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ২৭, ২০২৪ ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
নওগাঁয় আগাম জাতের আলু চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন
কৃষি বিভাগ

নওগাঁ জেলার কৃষকরা আগাম আলু চাষ করে বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। নওগাঁর বাজারে ইতিমধ্যেই আগাম জাতের নতুন আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাট থেকে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি আলু ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় কিনে এনে বাজারে খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে প্রতি কেজি আলু ১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রি করছেন। খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। কৃষি বিভাগের হিসেব অনুযায়ী প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১২ মেট্রিক টন হিসেবে জেলায় মোট ৪৮ হাজার ৭২০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন চলতি মৌসুমে জেলায় কৃষকরা মোট ৪০৬০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করেছেন।

উপজেলা ভিত্তিক আগাম আলু চাষের জমির পরিমাণ নওগাঁ সদর উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ১৫ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ১ হাজার ৮শ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ২২০ হেক্টর, পত্নীতলা উপজেলায় ১০ হেক্টর, ধামইরহাট উপজেলায় ২৫০ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ৩৬০ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ৫০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ২৫০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ১০৫ হেক্টর।

কৃষকরা আগাম জাত হিসেবে লালপাপড়ি, সাদা পাপড়ি, সাইটা এবং ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ২০, ২০২৪ ১০:০০ পূর্বাহ্ন
নড়াইলে কৃষকদের মধ্যে ধান বীজ বিতরণ
কৃষি বিভাগ

নড়াইল জেলার সদর উপজেলায় রবি ২০২৪-২৫ মৌসুমে বোরো ধানের হাইব্রিড জাতের বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলা কৃষি অফিস চত্ব¡রে সদর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অফিস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শতাধিক কৃষকের মধ্যে এসব বীজ বিতরণ করা হয়।সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ রোকনুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস।

এ সময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সৌরভ দেবনাথ,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমীন, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা একেএম মামুনুর রশিদ,উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজন কুমার র্প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে, নড়াইল সদর উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক শতাধিক কৃষকের মধ্যে জনপ্রতি দুই কেজি করে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের বীজ বিতরণ করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ কর্মসূচির আওতায় নড়াইল পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে মোট ৭হাজার ৫শ’ কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বোরো ধানের বীজ বিতরণ করা হবে।

whatsapp sharing button
শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop