৯:৩০ অপরাহ্ন

সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ১৮, ২০২৪ ৩:২১ অপরাহ্ন
ভাতের বিকল্প খাবার হতে পারে মিষ্টি আলু- বাকৃবি ভিসি
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনুঃ স্বাস্থ্য সচেতনতা বিবেচনায় ধান বা ভাতের আহরণ কমিয়ে বিকল্প খাবারের চিন্তা করতে হবে। এক্ষেত্রে বাউ-৫ মিষ্টি আলু ভাতের একটি বিকল্প খাবার হতে পারে। কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের আয়োজনে ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলাপমেন্ট অব বায়োফর্টিফাইড পটেটো এন্ড সুইট পটেটো ফর বাংলাদেশ এন্ড সাউথ এশিয়া’ প্রকল্পের মিষ্টি আলু উত্তোলন ও মাঠ পরিদর্শন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ (বুধবার) সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রহ্মাপুত্র নদীর ওপারে চর নিলক্ষিয়ায় অবস্থিত প্রকল্প প্লটের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় তিনি আরোও বলেন, বাউ-৫ মিষ্টি আলু বিটা-ক্যারোটিন এবং এন্থো সায়োনীন সমৃদ্ধ যা এন্টি ক্যান্সার হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এজাতের আলু খরচ বিবেচনায় ধানের চেয়ে প্রায় তিনগুণ উৎপাদনশীল।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের পি.আই প্রফেসর ড. এ. বি. এম. আরিফ হাসান খান রবিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. এ. কে. এম. শামসুদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-অর-রশিদ, কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রাশেদ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ এর অতিরিক্ত পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার প্রামানিক ও বাউরেসের সহযোগী পরিচালক প্রফেসর ড. চয়ন গোস্বামী।
উল্লেখ্য যে, মিষ্টি আলু উত্তোলন ও মাঠ পরিদর্শনকালে দেখা যায়, প্রতি ১০ স্কয়ার মিটার জমিতে ৩৩ কেজির বেশি বাউ-৫ মিষ্টি আলু উত্তোলন করা হয়েছে এবং যেখানে সর্বোচ্চ মিষ্টি আলুর ওজন পাওয়া যায় ১২৪২ গ্রাম। প্রকল্প পি.আই এর দেওয়া তথ্য মতে, এ আলু চাষে ভিটামিন-এ, সি, বিভিন্ন খনিজ উপাদানসহ বিটা-ক্যারোটিন এবং এন্থো সায়োনীন এর ঘাটতি পূরণ হবে এবং সেই সাথে কৃষকরা সাধারণ মিষ্টি আলুর তুলনায় প্রায় তিন গুণ লাভবান হবে। অনুষ্ঠানে সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আফরিনা মোস্তারি, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু এবং চর নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪০ জন কৃষক উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৩, ২০২৪ ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
গোপালগঞ্জে ৫,৩৪৫ হেক্টরে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ

গোপালগঞ্জে ৫ হাজার ৩৪৫ হেক্টরে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধারা হয়েছে ২২ হাজার ৪৪৯ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পারচালক আঃ কাদের সরদার এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, মুকসুদপুর উপজেলার ৪ হাজার ২২৬ হেক্টর জমিতে , গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৪২৫ হেক্টর জমিতে, কাশিয়ানী উপজেলা ৪৭২ হেক্টর জমিতে, কোটালীপাড়া উপজেলার ১৩৭ হেক্টর জমিতে ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৮৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে গোপালগঞ্জ জেলায় গম আবাদ শেষ হয়েছে। এখান থেকে অন্তত ২২ হাজার ৪৪৯ টন গম উৎপাদিত হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, জেলার ৫ উপজেলায় গম আবাদ বৃদ্ধির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে ২০ কেজি করে গম বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি সার এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। এসব বীজ-সার দিয়ে কৃষক ৩ হাজার বিঘা জমি আবাদ করেছেন। এ কারণে গোপালগঞ্জে গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে এ জেলায় গমের উৎপাদন এ বছর বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৪২৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৭৫০ জন কৃষককে ১৫ হাজারা কেজি গম বীজ, ৭ হাজার ৫০০ কোজ ডিএপি সার ও ৭ হাজার ৫০০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। এসব গম বীজ ও সার দিয়ে কৃষক ৭৫০ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে কৃষক সদর উপজেলার ৪২৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ করেছেন।

গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বণগ্রামের কৃষক বালা মোল্লা (৫৬) বলেন, আগে গমে ব্লাস্ট রোগ হত। তাই গম আবাদ করে লস হত। গম আবাদ ছেড়েই দিয়েছিলাম। সরকার প্রণোদনার গম বীজ ও দিয়েছে। তাই কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের গম পেয়ে আবাদ করেছি। গত বছর হেক্টরে ৪.২ থেকে ৪.৫ টন ফলন পেয়েছিলাম । এসব গমে ব্লাস্ট রোগ নেই। তাই গমের অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছিলাম। তাই এ বছর সরকারের প্রণোদনা পেয়ে ও নিজের খরচে ১ একর জমিতে গমের আবাদ করেছি। এ বছর ক্ষেতে গম ভালো দেখা যাচ্ছে। আশাকরি ফলন ভাল পাব।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২, ২০২৪ ১:২০ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে ৯ হাজার ৩৫ টন তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ

ভোজ্য তেলের আমতদানী নির্ভরতা কমাতে গোপালগঞ্জে ৯ হাজার ৩৫ টন তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরমধ্যে ৬ হাজার ২ শ’ ২৩ টন সরিষা, ৪৮০ টন তিল, ৮২ টন সূর্যমুখী ও ২ হাজার ২শ’ ৫০ টন চিনা বাদাম উদপাদিত হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বাসসকে বলেন, ৯ হাজার ৩৫ টন তেল ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ৫ হাজার ৯শ’ ৮১ হেক্টর জমিতে তেল জাতীয় ফসল আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪ হাজার ৯শ’ ৩৬ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৪০৬ হেক্টর জমিতে তিল, ৫১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী , ৫শ’৮৮ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম আবাদ করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে গোপালগঞ্জ জেলায় ৫ হাজার ৭শ’৪৩ হেক্টরে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ করেন কৃষক। সেখান থেকে ৭ হাজার ৮শ’ ৩৫ টন তেল জাতীয় ফসল উৎপাদিত হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, ভোজ্য তেলের আমতদানী নির্ভরতা কমাতে ও তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বছর গোপালগঞ্জে ২৩৮ হেক্টের জমিতে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এতে জেলায় ১ হাজার ২শ’ টন তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সরিষা আবাদে ৬ হাজার ২শ’ জন কৃষক, সূর্যমুখীতে ৫শ’ ৬০ জন কৃষক ও চিনা বাদাম আবাদে ৬শ’ ৮০ জন কৃষককে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার বীজ সার প্রদান করা হয়েছে। এসব বীজ-সার দিয়ে কৃষক ৭ হাজার ৪শ’৪০ বিঘা জমিতে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ করেছেন। এ কারণে জেলায় তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় তেল ফসলের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক রহমত শরীফ বলেন, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম চড়া। গত বছর ১ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলাম । তাতে ১.৮ টন ফলন পেয়েছিলাম। এতে আমার ব্যাপক লাভ হয়েছির। এবছর আমি সরকারি প্রণোদনার বীজ-সার পেয়ে ১ হেক্টরে আগাম জাতের সরিষা করেছি। এখান থেকে এ বছর বাম্পার ফলন পাব। সরিষা আবাদ করে কলাই ফসলের তুলনায় আমার প্রায় দ্বিগুন টাকা লাভ হবে।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩ ২:৫৯ অপরাহ্ন
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে শুকনা বীজতলা তৈরিতে আগ্রহী পলাশবাড়ীর পৌরসভার কৃষক
কৃষি বিভাগ

বোরো ধানের শুকনা বীজতলা তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন পলাশবাড়ী পৌরসভার কৃষকরা। ঘন কুয়াশা ও শীতজনীত রোগ থেকে রক্ষা পেতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এই প্রথম শুকনা বীজতলা তৈরী করেছেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শর্মিলা শারমিন জানান, শীতকালে বোরো বীজতলা নিয়ে কৃষকরা প্রতি বছরই নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে শুকনো বোরো বীজতলা তৈরিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার পৌরসভা ব্লকের উপজেলার আমবাড়ী গ্রামের কৃষক মোঃ মিন্টু মিয়া জানান, তিনি ২৫ শতাংশ জমিতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শর্মিলা শারমিন আপার পরামর্শে প্রথম শুকনা বীজতলা তৈরি করেছি। পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার কারণে শীতজনীত কোন রোগের আক্রমন নেই। মাত্র ৭ দিনে চারার বাড়বাড়তি অনেক ভাল।
পলিথিন ছাড়া সেচ,কাদার দরকার হযনা। মাত্র দুটা চাষ দিয়ে বেড করে চারা করা যায়। এতে তুলনামূলক ভাবে খরচ কম হয়। তার দেখে অনেক কৃষক শুকনা বীজতলা তৈরী করছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ ফাতেমা কাওসার মিশু জানান, এ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে কোল্ড ইনজুরী থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তুলনামূলক ফলনও ভালো হয়।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
টাঙ্গাইল মধুপুরে নৃ-গোষ্ঠির ঐতিহ্যবাহী বন আলু সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর
কৃষি বিভাগ

বন আলু সংগ্রহ যেন নৃ-গোষ্ঠির সংসারের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। মনের আনন্দে বা স্বাচ্ছন্দ্যে তারা তাদের দ্বিতীয় প্রধান বুনোখাদ্য আলু সংগ্রহ করতো। এসব আলু সিদ্ধ করে খেতো। সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ছিল ভরপুর। তাদের অন্যতম উৎসব ওয়ানগালায় সালজং দেবতা বা শস্য দেবতাকে উৎসর্গ করে বনআলু। কৃষ্টি-কালচার ও ঐতিহ্যের বন আলুর জুড়ি নেই। অতিথি কিংবা আত্মীয়-স্বজন এলে আপ্যায়নের জন্য সামনে দেয়া হতো বন আলু। এখনও বনে বিভিন্ন জাতের যত সামান্য পাওয়া যায়।
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ের শালবনের লাল মাটিতে ছিল হরেক প্রজাতির বুনো খাদ্য বন আলু। ছিল বুনোখাদ্যের সুবিশাল ভান্ডার। এই খাদ্যই ছিল গোটা জনপদের অভাবের সময়কার জীবন জীবিকার একটা উপাদান। এখন আর সেদিন নেই। নানাভাবে নানা কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হওয়ায় বিলীন হচ্ছে অফুরন্ত বুনো খাদ্যের ভান্ডার। অবশিষ্ট যে বন টিকে আছে, তাতে আগের মতো নেই বন আলু।
ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত টাঙ্গাইলের মধুপুর শালবন ছিল গভীর অরণ্যে ঘেরা। বনের চারপাশে ছিল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গারো, মান্দিসহ অন্যান্যদের বসবাস। গারো সম্প্রদায়ের খামালরা (কবিরাজ) বনের নানা গাছগাছরা দিয়ে চিকিৎসা করতো। স্থানীয় বসতিরাও ভেষজ চিকিৎসা নিতো। অরণ্যচারী গারো সম্প্রদায়ের লোকেরা ভক্ষণ করতো বুনো বাহারি খাবার। বনের বিশাল খাদ্যভান্ডারে হতো তাদের অনেকেরই অন্নের জোগান। খারি গপ্পার নানা উপকরণ আহরণ হতো বন থেকেই। পুষ্টিগুণে ভরা বন আলু ছিল তাদের অভাবের সময়কার খাদ্যের মধ্যে অন্যতম নিয়ামক। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গারোরা তাদের ভাষায় বন আলুকে থা’মান্দি বা থা’জং বলে থাকে। থা’মান্দি আচিক শব্দ। এর অর্থ বন আলু।
মধুপুর উপজেলার গায়ড়া, পীরগাছা, ধরাটি, মমিনপুর, জলছত্র, গাছাবাড়ি, ভুটিয়া ও চুনিয়াসহ বিভিন্ন গারো পল্লীতে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবিমা অঞ্চলের গারোরা বন আলুকে তাদের গারো বা আচিক ভাষায় থা’মান্দি বা থা’জং বলে থাকে।
তাদের মতে, নৃ-গোষ্ঠির গারো সম্প্রদায়ের লোকেরাই মধুপুর শালবনে সর্ব প্রথম এসব বাহারি নানা জাতের আলুর সন্ধান পেয়েছিলেন। প্রাকৃতিক শালবনের মধুপুর, ঘাটাইল, শেরপুর, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাটে এ আলু পাওয়া যেত। লালমাটির শালবনে প্রাকৃতিকভাবে এসব আলু জন্মায়। এ আলু ছাড়াও বনের অভ্যন্তরে পাওয়া যেত বাহারি রকমের জানা ও নাম না জানা অনেক ধরনের আলু। অরণ্যচারী গারোরা বনের চারপাশে বাস করার কারণে তারা এর প্রথম সন্ধান পান। এক সময় জুম চাষের কারণে এসব আলুর সন্ধান পেতে সহজ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ওই সময় ছনের ছোট ঘর বা মাচাং তুলে তারা থাকার জায়গা করতেন। ছাউনিতে বনের ছন আর বনের তারাই বাঁশ কিংবা ছোট-ছোট সরু আকারের ছোট গাছ দিয়ে সুন্দরভাবে বানাতেন ঘর। আগের দিনে খাবার সংকট হলেই যেতেন বনে। আধাবেলা আলু সংগ্রহ করলেই পরিবারের অন্নের যোগান হতো কয়েক দিনের।
তারা জানান, কার্তিক থেকে চৈত্র্য মাসে খাদ্যের জন্য তাদের অনেকেরই সংসারে অভাব থাকতো। এ সময়ে বনবাসীরা আলু তুলে খেতেন, ছুটতেন বনে। এভাবে চলতো তাদের খাবার যোগান। বনের নিচু জায়গাকে স্থানীয়ভাবে বাইদ বলে অভিহিত করে থাকেন গারোরা। এসব বাইদে ছিল প্রচুর ঝরণাধারা। ধান আবাদ ও খাবার পানি সংগ্রহ করতেন। হতো না তাদের পানিও জলের সংকট। তাদের উৎপাদিত ধানে চলত সংসার। বনের সবজি ও লতাপাতায় হতো সবজি তরকারি। ছিল না বিষ কিংবা হরমোনের বালাই। বন এলাকার গারোদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, এক সময় মধুপুরের এই বনে গাতি আলু, গারো আলু, পান আলু, গইজা আলু, দুধ আলু, শিমুল আলু, কাসাবা, ধারমচ আলুসহ বিভিন্ন ধরনের বন আলু পাওয়া যেত। এসব আলু তাদের প্রিয় খাবারের তালিকায় অন্যতম। এসব তথ্য বন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
অর্চনা নকরেক (৫০) বলেন, অনেকেই আবার স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতো। এই আলু দূরের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতেও পাঠানো হতো। বন আলুর বংশবিস্তারের জন্য আলু সংগ্রহের পর গাছগুলো আবার মাটিতে পুঁতে দিতেন গারোরা। আবার গাছ বেড়ে উঠতো। শাল-গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে লতার মতো জড়িয়ে থাকত। এ আলু কার্তিক-চৈত্রমাসে সবচেয়ে বেশি সংগ্রহ তোলা হতো। রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলে রাখা হতো। প্রাকৃতিক বন কমে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো আলু পাওয়া যায় না।
আচিক মিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ম্রং বলেন, বছরের পর বছর সামাজিক বনায়নে আদা-কচুর মতো কৃষি ফসল করতে গিয়ে বন হারাচ্ছে তার ঐতিহ্য। বিদেশি প্রজাতির গাছ ভাবিয়ে তুলেছে প্রকৃতি ও পরিবেশকে। বিশাল অংশ থেকে বিদায় নিচ্ছে বহু প্রজাতির আলু, সবজি, ফল-ফসল, গুল্মলতা-পাতা। এজন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গারো সম্প্রদায় ও গড় এলাকার মানুষেরা পাচ্ছে না প্রাকৃতিক বুনো খাবার।
অঞ্জনা নকরেক (৪৮) বলেন, বউ হিসেবে তিনি লালমাটির এ বন এলাকায় এসেছেন প্রায় ৩০ বছর। এসেও দেখেছেন এ বনে নানা ধরনের আলু পাওয়া যেতো। নানা ধরনের শাক-সবজি পাওয়া যেতো। প্রাকৃতিক বন সংকুচিত হওয়ায় বুনো খাদ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
আকবর হোসেন (৫০) বলেন, তাদের বাড়ির চারপাশে আগে প্রচুর আলু পাওয়া যেতো। বন থেকে আলু তুলে খেতো। আলুগুলো খেতেও স্বাদ। এখন বনে নেই আগের মতো আলু। প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর শাক ও সবজি পাওয়া যেতো। বন কমে যাওয়ায় বনের ভেষজ, শাকসবজি, আলু বিভিন্ন বুনো খাদ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
বৃহত্তর ময়মনসিহ ডেভেলাভমেন্ট কালচারাল ফোরামের সভাপতি অজয় এ মৃ জানায়, অভাবের সময় কার্তিক থেকে চৈত্র্য মাসে বনের আলু তোলে খেতেন। বর্তমানে প্রাকৃতিক বনে কমে সামাজিক বনায়ন বাড়ায় কমছে বন আলু। নৃ-গোষ্ঠি ছাড়া অন্য যারা আলু সংগ্রহ করেন তারা আলু তোলে আর গাছ লাগিয়ে দেয় না। ফলে কমছে বন আলু। খাদ্য হিসেবে বন আলু পুষ্টিগুণে ভরা। প্রাকৃতিক বন কমে যাওয়া, আলু উঠানোর পর গাছ পুনরায় না লাগানোর ফলে কমে যাচ্ছে বাহারি রকমের বন আলু।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩ ৯:০৭ অপরাহ্ন
টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে আগাম জাতের সরিষা চাষ
কৃষি বিভাগ

টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে দেড় মাস আগে থেকেই। নতুন ধান কাটার পরেই চাষ দিয়ে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বুনেছেন কৃষকরা। সরিষা তোলেই ইরি বোরো লাগাবেন। এভাবে বছরে একই জমিতে অধিক ফসল চাষের দিকে ঝুঁকছে গ্রামের কৃষকরা। বছরে কেউ কেউ তিন চার বার ফসল ফলান। আমন বোরো ধান চাষের মধ্যবর্তী সময়টা অলস পড়ে থাকে। এ সময়টাকে কাজে লাগাতে অল্প খরচে বাড়তি ফসল সরিষা চাষে এগিয়ে আসছে। কয়েক বছর ধরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চলছে একই জমিতে কয়েক বার ফসল চাষ।
ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এ উপজেলায় ৭৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। এ বছর ১২শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা আগের তুলনায় বেশি। এ বছর ৩ হাজার কৃষক প্রণোদনার আওতায় এসেছে। ধান, ভুট্টা, আলু, গমসহ সব ধরনের ফসল চাষে এ উপজেলা এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ধান চাষের পর সরিষার চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর গত বছরের চেয়ে পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ।
মুশুদ্দি গ্রামের কৃষক আনছার আলী বলেন, তাদের গ্রামে আলু। মরিচ, ভুট্টা, গম,শিম, কপি, লাউসহ প্রচুর পরিমানে সরিষা চাষ হয়ে থাকে। তিনি গত বছর ফসলের নিবিড়তা প্রকল্পের আওতায় সরিষা চাষে সেরা কৃষকের সম্মাননা পেয়েছেন। চার দিকে এ সময় সরিষার ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। ধনবাড়ী উপজেলার কয়েকজন সরিষা চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবহাওয়া ভালো থাকলে ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৫ থেকে ৭ মণ করে সরিষার ফলন হয় এবং সরিষা চাষে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলে খরচের তুলনায় লাভ বেশি থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। মুশুদ্দি ঝুপনা কামার পাড়া গ্রামের সরিষা চাষি জলিল মিয়া ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর এ এলাকায় অনেক কৃষক সরিষা চাষ করেছে। তুলনামূলক খরচও কম। তা ছাড়া সরিষা চাষে সেচ ও সার কম লাগে। অন্যদিকে ধান তোলার পর আগাম সরিষা চাষ করে আবার ধান চাষ করা যায়। শফিকুল ইসলাম জানান, তাদের এলাকায় ১ বিঘা থেকে শুরু করে ৭ বিঘা পর্যন্ত সরিষা চাষ করেছে। তার মতে এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে তারা আশানুরূপ ফলন পাবেন এমনটাই জানালেন এ চাষি
এ বিষয়ে ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এ পরিমাণে সরিষার চাষ এর আগে কখনো হয়নি। গত বছর ৭৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। এ বছর ১২শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা আগের তুলনায় বেশি। প্রদর্শনী ও অন্যান্য বীজ সহায়তার আওতায় ১ হাজারসহ মোট ৪ হাজার কৃষককে সরিষার বীজ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকরা লাভবান হবে। আগামীতে সরিষা চাষে আরও উৎসাহিত হবে এমনটাই প্রত্যাশার কথা জানালেন তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ৩:২১ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে ৪ হাজার ৬৬৯ হেক্টরে বোরো বীজতলা
কৃষি বিভাগ

গোপালগঞ্জে ৪ হাজার ৬৬৯ হেক্টরে বোরো বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর । এ বীজতলার চারা দিয়ে জেলার ৫ উপজেলার ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমি চাষাবাদ করা হবে। ইতিমেধ্য ৪ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমির বীজতলা করেছে কৃষক। বাকী ২৮৪ হেক্টরে বীজতলা প্রস্তুতের কাজ চলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমি চাষাবাদের জন্য ৪ হাজার ৬৬৯ হেক্টরে বীজতলা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ২৫৪.২ হেক্টর, মুকসুদপুর উপজেলায় ৫৩০.২ হেক্টর, কাশিয়ানী উপজেলায় ৫৩৫,২ হেক্টর, কোটালীপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৫৮০.২ হেক্টর ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৩৮৫.২ হেক্টর জমিতে মোট ৪ হাজার ৩৮৫ হেক্টরে বীজ তলা করা সম্পন্ন হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, জেলার কিছু জমিতে দেরীতে বোরো ধানের আবাদ হয়। সেসব জমিতে বোরো আবাদের জন্য আরো ২৮৪ হেক্টরে বোরো বীজতলা প্রস্তুত করছেন কৃষক।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুন্ডু বলেন, নি¤œজলা ভূমি বিশেষ করে বিল বেষ্টিত জেলা গোপালগঞ্জ। এ জেলায় ১ ফসলী জমি বেশি। এসব জমিতে কৃষক বছরে ১ বার বোরো ধান আবাদ করেন। বোরো ধান এ জেলার কৃষকের প্রধান কৃষি পণ্য। তাই বোরো আবাদে কৃষক সবচেয়ে বেশি সময় দেন। বোরো থেকেই কৃষক সারা বছরের ধান সংগ্রহ করেন। এ কারণে মৌসুমের শুরুতেই কৃষক বোরো আবাদে নেমে পড়েছেন। তারা বীজতলা তৈরী করেছেন। বেশি ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন। তাই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এ জেলায় বেশি বোরা আবাদ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তারা বলেন, বোরো নির্ভর জেলা গোপালগঞ্জ। এ জেলার কৃষকরা বীজতলার কাজ প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন। এখন তারা জমি চাষাবাদ দিয়ে ধান রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন। কিছু কিছু জায়গায় ধান আবাদ শুরু হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠি গ্রামের কৃষক সবেদ আলী বলেন, সরকার আমাদের ১ বিঘা জমি চাষাবাদের জন্য প্রণোদনার বীজ-সার দিয়েছে। এছাড়া বাজারে প্রচুর সার ও ধান বীজের সরবরাহ ছিল। তাই আমি বাজার থেকে সার ও বীজ কিনেছি। সহজে সার-বীজ পাওয়ায় এ বছর আমি ১ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করছি। ভালো বীজতলা করেছি। এখন সেখান থেকে চারা উত্তোলন করে জমিতে রোপণ শুরু করেছি। গত বছর এ ১ হেক্টরে হাইব্রিড ধানের আবাদ করে ১০ টন ধান পেয়েছিলাম। এতে লাভ হয়েছিল। হাইব্রিড ধান মোটা। তাই সব ধান বিক্রি করে দিয়েছিলাম। খাবার ধান ছিল না। এবছর হাইব্রিড ধানের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল জাতের (ইনব্রিড) ধানেরও আবাদ করছি। হাইব্রিড ধান বিক্রি করে দেব। আব চিকন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান রেখে দেব খাবার জন্য।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩ ৯:২৪ পূর্বাহ্ন
শরীয়তপুরে ভর্তুকি মূল্যে কৃষকের কাছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন হস্তান্তর
কৃষি বিভাগ

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি লক্ষ্যে শরীয়তপুর সদরের কৃষকের মধ্যে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে ৩২ লাখ টাকা দামের কমবাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় কমবাইন্ড হারভেস্টার হস্তান্তর করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের কৃষক লুৎফর রহমানের হাতে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ প্রধান অতিথি হিসেবে কমবাইন্ড হারভেস্টারের চাবি তুলে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীয়তপুর সদর মো. মাইনউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শরীয়তপুরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নুর আহমেদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অলি হালদার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তারসহ মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকতাগণ।
উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নুর আহমেদ বলেন, উচ্চমূল্যের শ্রমিক মজুরী ও শ্রমিক সংকটের এ সময়ে সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন ব্যয় কমাতে কাজ করে যাচ্ছে। কমবাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে ফসল কর্তনে কৃষকের ৫০ শতাংশেরও বেশি সাশ্রয় হবে। এর মাধ্যমে যেমন উৎপাদন ব্যয় কমে আগের তুলনায় কৃষক অধিক লাভবান হবেন। অন্যদিকে বাণিজ্যিক কৃষিও এগিয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। আমরা সবাই মিলে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করলেই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ গতিশীল হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩ ৭:০৪ অপরাহ্ন
কৃষিবিদদেরকেই বানিজ্যিক কৃষির দায়িত্ব নিতে হবে : সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর শামসুল আলম
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনুঃ পরিবেশ দূষণের অন্যতম উপাদান প্লাস্টিক যার অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে ভবিষ্যতে আমাদের ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের ছাত্র সমাজ যুবক সমাজ কৃষক এবং কৃষিবিদদের প্রধান ভূমিকা নিতে হবে। কৃষিবিদদেরকেই আবহাওয়া নিয়ন্ত্রিত কৃষি ও বানিজ্যিক কৃষির দায়িত্ব নিতে হবে।তারা হবে কৃষির এ রুপান্তরের গেম চেঞ্জার।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স হলে রিডিউসিং সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ইন স্টুডেন্ট ডরমেটরিজ শীর্ষক ক্যাম্পেইনিং প্রোগ্রামে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর শামসুল আলম প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ) সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন পরিবেশ দূষণ রোধে আগে নিজেকে সুস্থ মানসিকতায় পরিবর্তিত করতে হবে এবং অন্যের পরিবর্তনে প্রভাব বিস্তার করতে হবে এক্ষেত্রে কৃষিবিদদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।কৃষিতে শুধু মেকানাইজেশন এর দিকে গুরুত্ব দিলে হবে না বরং কৃষি হতে হবে স্মার্ট বাণিজ্যিক এবং নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়াযুক্ত কৃষি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে নিয়ে মাঠ বাংলাদেশ নির্মাণে ভবিষ্যৎ ১০০ বছরের পরিকল্পনা মাটির উর্বরতা হ্রাস বায়ু দূষণ পরিবেশ দূষণ রোধে ব দ্বীপ ২১০০ নামে ১০০ বছরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন যে পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক সামাজিক এবং পরিবেশগতভাবে বেশ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ রূপরেখা তৈরি করেছেন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দেশের ছাত্র সমাজ যুবক সমাজ বিশেষ করে কৃষিবিদদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। ক্যাম্পেইনিং প্রগ্রামে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ডক্টর খন্দকার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর এমদাদুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অক্সিজেন এবং পানি। দিন দিন আমরা যেভাবে পরিবেশকে ধ্বংস করছি ভবিষ্যতে এর বড় মাশুল দিতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা হলে সেই প্লাস্টিক মাইক্রোপ্লাস্টিক এ পরিণত হয় এবং বিভিন্ন খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের শরীরের জমা হয় এবং নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। পরিবেশ দূষণ রোধে বা প্লাস্টিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মানুষের স্বভাবগত পরিবর্তন আনতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় স্মার্ট কৃষিতে স্মার্ট কৃষক এবং স্মার্ট কৃষি গ্রাজুয়েট প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ সলিউশন নো পলিউশন এর উপদেষ্টা প্রফেসর ডঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ,জেন ল্যাব প্রোগ্রাম লিডার ইসরাত বিনতে রউফ স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রজেক্ট লিডার ডক্টর রিফাত আরা জান্নাত তমা ক্যাম্পেইনিং অনুষ্ঠানে ছাত্র সমাজের মধ্য থেকে ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী রিডিউসিং সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ইন স্টুডেন্ট ডরমেটরিজ এর পক্ষে শপথ বাক্য পাঠ করেন অনুষ্ঠানে ইউ জি সি প্রফেসর বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন বিভাগীয় প্রধান এবং শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রী কর্মকর্তা কর্মকার কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১২, ২০২৩ ১০:০০ পূর্বাহ্ন
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ে গ্রামীণ জনপদে মাসকলাই চাষ
কৃষি বিভাগ

টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড় অঞ্চলের মাটি লালচে। জেলার উচু এলাকায় কাঁকড়-কণাযুক্ত আর একটু নিচু এলাকায় বেলে দোআঁশ মাটি। এ এলাকায় যুগ-যুগ ধরে মাসকালই চাষ হচ্ছে।
মধুপুর, মুক্তাগাছার কিছু অংশ, ঘাটাইল, ধনবাড়ি, সখীপুর, ভালুকার কিছু অংশ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার কিছু অংশ এবং জামালপুর জেলার দক্ষিণ পূর্ব অংশ নিয়ে মধুপুর গড় এলাকা গঠিত। গড় এলাকার মধ্যে দুই পাশে উচুর মাঝখান দিয়ে নিচু খাল বয়ে গেছে। এ নিচু এলাকাকে বাইদ বলা হয়। টিলা উচু নিচু বাইদ এসব হচ্ছে গড় এলাকা ভূমি রুপ বা ভূমি বৈচিত্র্য।

পাহাড়ি এলাকায় আনারস, কলা, পেঁপে, আদা, কচু ও হলুদসহ বিভিন্ন অর্থকরি কৃষি ফসলসহ প্রায় সব ধরনের ফসল জন্মে থাকে।
গড় এলাকায় যুগ-যুগ ধরে মাসকলই চাষ হয়ে থাকে। এক সময় আড়হকলাই ও মাসকলাই চাষ হতো। সে সময়ে পানি সেচের জন্য মেশিন কম ছিল। সেচের অভাবে উচু এলাকায় সেচ বিহীন ফসল হিসেবে মাসকলাই চাষ করতো। নিচু এলাকায় ধান চাষ করতো কৃষকরা। ধীরে-ধীরে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় মাসকলাই চাষ কমতে শুরু করেছে। বাড়তে থাকে অর্থকরি ফসলের চাষাবাদ।
মধুপুর-ধনবাড়ি কৃষি অঞ্চলের কৃষকরা এক সময় মাসকলাইকে কাতিঠাকুরি বলতো। এ কলাই বা ডাল কার্তিক মাসে বুনা হয় বলে কাতিঠাকুরি বলে অভিহিত করতো। এ অঞ্চলে মাসের ডাল অতিথি আপ্যায়নে ব্যাপক সমাদৃত ছিল। গ্রামের মানুষেরা শীতকালে মাসের ডাল বা লাউয়ের পাতা ভর্তা সুস্বাদু খাবার হিসেবে খেতো। বাড়ি-বাড়ি শীতকালে মাসের ডালের সাথে কঁচি লাউ কেটে দিয়ে ডাল রান্না করতো। বড় কোন অনুষ্ঠান হলে আয়োজন হতো এ ডালের। ধনবাড়ি এলাকায় মাসের ডাল দিয়ে মেন্দা রান্না হতো। এ ডাল চাষ কমে যাওয়ার কারণে দামও বেড়ে গেছে। তবে মধুপুর, ধনবাড়ি ও ভুঞাপুর উপজেলার পাহাড়িয়া এলাকা ও ধনবাড়ি-ভুঞাপুর উপজেলার নিচু বেলে দোআঁশ মাটিতে ও চরাঞ্চলে মোটামোটিভাবে মাসকলাই চাষ হয়ে থাকে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মধুপুরে এ বছর ৬০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৯০ টন। ধনবাড়িতে বারি-৩ জাতের মাসকলাই চাষ হয়েছে ২৫ হেক্টর। ভুঞাপরে ১২২৪ হেক্টর মাসকলাই চাষ হয়েছে। কৃষক আব্দুল মজিদ এবার মাসকলাই বাড়ি থেকেই ১৫০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি করেছেন। বাজারে দাম আরো বেশি বলে জানালেন- তোতা মিয়া নামের আরেক কৃষক।
মাসকলাই এর আবাদ কমার কারণ উল্লেখ করে ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, খরিফ-১ মৌসুমে বেশির ভাগ জমি আমন আবাদের আওতায় থাকায় এবং উচু জমিগুলোতে সবজি চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় মাসকলাই এর আবাদ এ এলাকায় কম। ধনবাড়িতে আবাদ হয়েছে ২৫ হেক্টর বারি মাসকলাই-৩ জাতের। প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ২৫০ জনকে। ফলন হচ্ছে বিঘা প্রতি ২ দশমিক ৫ মণ। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হেক্টর। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা প্রকল্পের আওতায় ৫ কৃষককে মাসকলাই চাষের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, মধুপুরে এ বছর ৬০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। তার উপজেলায় ২০০ জনকে এ ফসলের প্রণোদনা দিয়েছে। তারমতে, প্রণোদনার আওতায় ২০০ বিঘা চাষ হয়েছে।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop