৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ১ মে , ২০২৫
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২৭, ২০২৫ ৯:৩০ পূর্বাহ্ন
বোরো ধানের ফলন সন্তোষজনক : কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি বিভাগ

কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশে বোরো ধানের ফলন সন্তোষজনক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হবে।

আজ মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলে ধান কাটা ও মাড়াই পরিদর্শন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

এসময় শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও জেলার পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়।

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, আড়িয়াল বিল প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যসম্পন্ন এলাকা। এখানকার জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আড়িয়াল বিল ও সংলগ্ন অঞ্চলের পানি নিষ্কাশন এবং ফসল পরিবহনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন ও সেগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন।

আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর নির্মাণ প্রতিরোধে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারে কৃষকরা অনুরোধ করলে উপদেষ্টা তাদের মামলা প্রত্যাহারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধে টহল চৌকি স্থাপনে কৃষকরা অনুরোধ করলে উপদেষ্টা জরুরি ভিত্তিতে টহল চৌকি স্থাপনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

কৃষকদের সাথে মতবিনিময়ে শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আড়িয়াল বিলের পরিবেশ রক্ষায় এলাকাবাসী সহযোগিতা করবেন। মুন্সিগঞ্জের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ যেন যথাযথ ভাবে হয়। দেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয় এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় সরকার সেভাবে কাজ করছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২২, ২০২৫ ৯:২৪ পূর্বাহ্ন
মিষ্টি আলু চাষে মানিকগঞ্জ তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে
কৃষি বিভাগ

মিষ্টি আলু চাষের হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে মানিকগঞ্জ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ১২২ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। এর আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১১৬ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৪’শ ৭ মেট্রিক টন। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্ষেত থেকে মিষ্টি আলু তোলা শেষ হতে চলেছে। বাজারে মিষ্টি আলুর উচ্চমূল্য পেয়ে কৃষকরা খুশি।

ডিএই সূত্র আরো জানায়, একসময় মানিকগঞ্জ জেলা মিষ্টি আলু চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল।  সেসময় জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ করা হত। কিন্তু উৎপাদকরা তাদের পণ্যের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এভাবে আস্তে আস্তে জেলায় মিষ্টি আলুর চাষ কমে আসে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কুশেরচর গ্রামের একজন বয়স্ক মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল জলিল (৭০) বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও প্রতি মণ মিষ্টি আলু ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হত। বাজারে বিক্রি করে উৎপাদন খরচও আমরা পেতাম না। এখন মিষ্টি আলু অন্যতম সেরা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি আলু ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম চাষের কাটা মিষ্টি আলুও প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’

হরিরামপুর উপজেলার চর হরহারদিয়ার আরেক মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল হক (৭৫) বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আগে আমরা উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আমাদের বালুকাময় জমিতে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি আলু চাষ করতাম। স্বাধীনতার পরও বিস্তীর্ণ এলাকার দারিদ্র্য পীড়িত মানুষ খাদ্য সংকটের জন্য কষ্ট ভোগ করত। তখন মিষ্টি আলুই ছিল তাদের প্রধান খাদ্য।’  অতীতের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, আমার পরিবার প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করত এবং নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত আলু বাজারে বিক্রি করত। কিন্তু ন্যায্য মূল্য পেত না। প্রতি মণ আলু মাত্র ৫ থেকে ৬ টাকায় বিক্রি হতো। তখন আধুনিক চাষ পদ্ধতি শুরু হয়নি। গৃহস্থরা তখন জীবিকা নির্বাহের জন্য ওইসব জমিতে আউশ ও আমন চাষ করত।

বৃদ্ধ কৃষক আব্দুল হক বলেন, প্রবল পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে হরিরামপুর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের ৫টি ইউনিয়নই গ্রাস করে ফেলেছিলো। ফলে এই পাঁচ ইউনিয়নের বাসিন্দারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। এতে সব ধরনের ফসলের চাষাবাদও বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘দুই দশক পর আমরা আবার পরীক্ষামূলকভাবে মিষ্টি আলু চাষ শুরু করেছি’।

জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের মিষ্টি আলু চাষি ৭২ বছর বয়সী আব্দুল ওহাব মোল্লা বলেন, ‘বাজারে এর চাহিদা লক্ষ্য করার পর আমরা দীর্ঘদিন পর আলু চাষ শুরু করেছি। এখন এটি একটি জনপ্রিয় খাদ্য পণ্য এবং সবজিও বটে।’

ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামের আরেক মিষ্টি আলু চাষি আলী আসগর বলেন, ‘মিষ্টি আলু চাষ করা সহজ এবং এর জন্য কোনও সার ও সেচের প্রয়োজন হয় না।’

বেউথা বাজারের মিষ্টি আলু ক্রেতা ৩৫ বছর বয়সী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরা মিষ্টি আলু সবজি হিসেবে ব্যবহার করি এবং মিষ্টি আলু অন্যান্য সবজির সাথে মিশিয়ে দিলে সবজি এবং সবজি খিচুড়ি আরও সুস্বাদু হয়ে ওঠে।’

ডিএই অফিস সূত্র জানায়, বেলে এবং আধা-বালি জমি মিষ্টি আলু চাষের জন্য উপযুক্ত। জেলার কিছু মানুষের কাছে মিষ্টি আলু একটি ভালো খাদ্যদ্রব্য। মিষ্টি আলু অনেকের কাছে ভালো খাদ্য হিসেবে জনপ্রিয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৯, ২০২৫ ৯:১৭ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জের হাওরে বোরো ধানকাটা উৎসবের সম্ভাব্য তারিখ পহেলা বৈশাখ
কৃষি বিভাগ

সুনামগঞ্জ জেলায় ৬ এপ্রিল হাওরের বোরো ফসল সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কর্তন এবং কৃষকের গোলায় তোলা পর্যন্ত করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় সুনামগঞ্জ জেলায় হাওরের বোরো ধানকাটা উৎসবের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল)।

রোববার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে  আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

সভায় জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, এবারের বোরো ধানকাটা উৎসবে কৃষি উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

তিনি জানান, এবারের বোরো মৌসুমে ধান কাটার জন্য ৯৫০ টি কম্বাইন্ড হার্ভেষ্টার মেশিন, ১৭২টি রিপার মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও আরও ধান কাটার মেশিন আনা হবে। ধানকাটার জন্য দেড় লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছেন। এছাড়াও ১৫ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার বালু-পাথর মহালগুলো বন্ধ রেখে শ্রমিকদের ধান কাটা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে তবে চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই জেলার সবক’টি হাওরে বোরো ফসল কর্তন করে কৃষকের গোলায় তোলা সম্ভব হবে। তারপরও যদি অকাল বন্যা ও অন্যকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়, তা মোকাবেলার জন্য জেলা প্রশাসন সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যেই জেলার ১২ টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল-এর সঞ্চালনায় এ সভায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াই সম্পের্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ।

মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানান, জেলায় এ বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান, একলাখ ৫৪ হাজার ৯৮২ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধান, ৯৭০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় ধান আবাদ করা হয়েছে। সম্ভাব্য ধান উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ধান। এর ফলে ৯ লাখ ২১ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। উৎপাদিত চালের আনুমানিক মূল্য দাঁড়াবে সাড়ে চারহাজার কোটি টাকা।

জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. এমদাদুল হক সভায় জানান, জেলার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে এবার জেলায় ৫৯৪ কিলোমিটার বাধে ৬৯৩টি পিআইসির মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাধের কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সভাপতি আবু নাছার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মোমতাজুল হাসান আবেদ, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, জেলা ক্যাব-এর সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, সাংবাদিক পংক দে, এমরানুল হক চৌধুরী, গিয়াস চৌধুরী, মো. ওসমান গনী, শহীদ নুর আহমেদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৯, ২০২৫ ৯:১৩ পূর্বাহ্ন
ঝিনাইদহে বেড়েছে তামাক চাষ, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
কৃষি বিভাগ

বেশি লাভের আশায় দিন দিন ক্ষতিকর তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছেন ঝিনাইদহ জেলার কৃষকরা। ফলে জেলার শত শত হেক্টর জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। উচ্চমাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে জমির প্রকৃতিও পরিবর্তন হচ্ছে। এবছর ফলন নিয়ে কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

কৃষকরা জানান, এ বছর বিঘা প্রতি তামাক চাষের ব্যয় বাড়লেও, দাম বাড়েনি। ফলে লোকসানের ঝুঁকি রয়েছে। অন্যদিকে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কেও অনেক কৃষক কিছুই জানেন না।

সরেজমিনে জেলার হরিণাকুণ্ডু, মহেশপুর, সদর উপজেলা ও শৈলকূপার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে বিস্তীর্ণ তামাকের ক্ষেত দেখা গেছে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাঠের পর মাঠ জুড়ে মানুষ ও জমির জন্য ক্ষতিকর তামাক চাষের রহস্য।

তামাক চাষি কৃষকরা জানান, অন্যান্য ফসল আবাদ করলে দাম পাওয়া যায়। কিন্তু ধান, গম, ভুট্টা বিক্রি করে একবারে অনেক টাকা পাওয়া যায় না। যে কারণে কৃষক তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কারণ তামাক বিক্রির জন নির্ধারিত মার্কেট, দর ও ক্রেতা রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি নির্ধারিত মূল্যে তামাক ক্রয় করেন। ফলে কৃষক তামাক বিক্রি করে এককালীন টাকা পায়। এই এককালীন টাকার মোহে পড়ে কৃষকেরা দিনদিন ক্ষতিকর তামাক চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের তামাক চাষি আলী হোসেন বাসসকে বলেন, ৪ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। কিন্তু দাম কেমন পাওয়া যাবে, তা জানি না। কোম্পানিগুলো তামাক লাগানোর সময় এক রকম দামের কথা বলে। কিন্তু তামাক বিক্রির সময় সেই দাম আর পাওয়া যায় না।
একই গ্রামের তামাক চাষি আকিমুল হোসেন জানান, এবছর প্রতি বিঘা তামাক চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৫ থেকে ৯৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া তামাক শুকানোর জন্য কাঠ ক্রয় বাবদ খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেড়েছে। সব মিলিয়ে এবার খরচ বাড়লেও দাম বাড়ায়নি কোম্পানিগুলো।

জানা যায়, গত বছর তামাকের প্রতি কেজি মূল্য নির্ধারণ ছিল ২২৬ টাকা। গুণগত মান ভেদে তামাকের কয়েকটি গ্রেড হয়। গ্রেড অনুযায়ী দাম নির্ধারিত হয়। সবচেয়ে ভালো ‘এ’ গ্রেডের তামাকের প্রতি কেজি মূল্য এবছরও ২২৬ টাকা চলছে। ফলে দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

বেসরকারি তামাক ক্রয় কোম্পানি গ্লোবাল টোবাকো লিমিটেডের সুপারভাইজার জাহিদুল ইসলাম বাসসকে বলেন, ‘কোয়ালিটি অনুযায়ী তামাকের গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। এবছর তামাক পাতার কোয়ালিটি খুব একটা ভালো হয়নি। যে কারণে গত বছরের দরে এবারও তামাক কেনা হচ্ছে। আমরা কৃষকদের নির্ধারিত কার্ড করে দিয়েছি। কার্ড ছাড়া কোনো চাষির পণ্য আমরা কিনি না। এতে করে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমেছে।’

সাবেক বিন্নি গ্রামের মো. মোনতাজ মন্ডল বলেন, ‘তামাক চাষ করে ভুল করেছি। জমির উর্বরতা একেবারে ধ্বংস হয়ে যায়। যেই জমিতে একবার তামাক লাগানো হয়, সেই জমিতে অন্য ফসল ভালো হতে চায় না।

শ্রীফলতলা গ্রামের তামাক চাষি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘বেশি লাভের আশায় তামাক চাষ করেছি। কিন্তু এবছর জ্বালানি খরচ, শ্রমিক খরচ মিলিয়ে লাভের পরিমাণ খুব বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে না। তামাক চাষ আর করব না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় মোট ২২৯ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে বেশি। গত বছর জেলায় ১৯৩ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করেছিল কৃষক। সরকারি উদ্যোগে কৃষক পর্যায়ে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ না নেয়ার ফলে বেড়েছে তামাক চাষ।

জেলার সচেতন বাসিন্দারা মনে করেন, তামাক চাষ সীমিত করা জরুরি। তামাক চাষ করার কারণে একই জমিতে একাধিক ফসল চাষ করা সম্ভব হয় না। জমির উর্বরতা কমে যায়। পরিবেশ-প্রকৃতির জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ তামাক। গ্রামের পরে গ্রামে কৃত্রিম উপায়ে আগুনের তাপে তামাক শুকানোর ফলে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত ধোয়া। ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামার বাড়ী) উপ পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বাসসকে বলেন, ‘তামাক চাষ গত বছরের তুলনায় এবছর বেড়েছে। আমরা কৃষকদের কাছে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করার জন্য আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। সরকার দ্রুতই এ সংক্রান্ত কর্মসূচি হাতে নিতে যাচ্ছে বলে জেনেছি। আশা করছি, আমরা আগামী বছর তামাক চাষ অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারব।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৪, ২০২৫ ১২:০৮ অপরাহ্ন
ব্রি উদ্ভাবিত দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্রের মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার সরেজমিন পরিদর্শন
কৃষি বিভাগ

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনুঃ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ‘দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্র’কৃষি উন্নয়নে নতুন সম্ভবনা হিসাবে দেখা দিয়েছে ।যন্ত্রটি দেশের কৃষিখাতকে আধুনিকায়নে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। এটি দেশের কৃষি খাতে সারের অপচয় কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে ।

যন্ত্রটির মাঠ পর্যায়ে কার্যকারিতা দেখতে এবং গবেষণা মাঠ পরিদর্শন শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫বিকেল ৫টায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সিসিডিবি ক্লাইমেট পার্ক এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়পরিদর্শন টীমে ছিলেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুনির হোসেন এবং ব্রি উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন ,সিসিডিবি ক্লাইমেট চেইঞ্জ ম্যানেজার মো,কামাল হোসেন ও উন্নয়ন সাংবাদিক কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু ।
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুনির হোসেন বলেন ,বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে বিরুপ কৃষির আবির্ভাব ঘটছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে এর প্রতিকারে ভূমিকা রাখা সম্ভব এবং তিনি ব্যাপকভাবে কৃষকদের মাঝে এ টেকনোলজি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।

প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন জানান, “এনসিসি ব্যাংকের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) কর্মসূচির আওতায় দেশের চারটি কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে এই যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য গবেষণা চলছে। মাটির ৭-৮ সেন্টিমিটার গভীরে সরাসরি ইউরিয়া প্রয়োগ করলে সারের প্রায় ৪০ শতাংশ সাশ্রয় হয়। পাশাপাশি, মাটির গভীরে সার প্রয়োগের ফলে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন হ্রাস পায়, যা পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি একটি ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি; ধান চাষে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম”

উল্লেখ্য, প্রতি ঘণ্টায় ১ বিঘা জমিতে সার প্রয়োগ করতে সক্ষম এই যন্ত্রটি সহজে ব্যবহারযোগ্য। সাশ্রয়ী মূল্যে মাত্র ১০হাজার টাকায় এটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৪, ২০২৫ ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন
ভুট্টা চাষে চাঙ্গা লালমনিরহাটের তিস্তার চরের অর্থনীতি
কৃষি বিভাগ

ভুট্টা চাষে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে লালমনিরহাটের তিস্তার চরের অর্থনীতি। জেলার তিস্তা নদীর বাম তীরের ৬৭ কি.মি. জুড়ে শুষ্ক মৌসুমী জেগে ওঠা চরের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে দামী সোনালী দানা ভুট্টা।

জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে  নদীবেষ্টিত চার উপজেলায় তিস্তা নদীর চরে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে এ ভুট্টা ।

এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি ইউনিয়নের কিছু অংশ তিস্তা নদী বিধ্বস্ত। এ ৩টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের চাষীরা জমিতে বিভিন্ন প্রকার ভুট্টার চাষাবাদ করেছেন। তাদের ঘুরে দাঁড়াতে একমাত্র অবলম্বন নদীতে জেগে ওঠা বালুচরে ভুট্টার আবাদ। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়।

ধানসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ বেশি লাভবান হওয়ায় চরের কৃষকরা অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ করছেন বেশি।

৩৩ শতাংশের চরের এক বিঘা জমিতে ভুট্টার ফলন হয় ৪০ থেকে ৪২ মণ, উৎপাদন খরচ ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা।  ভুট্টার বর্তমান বাজার দর ১২৫০-১৩৫০ টাকা। অন্য ফসলের থেকে ভুট্টায় দ্বিগুণের বেশি লাভ হওয়ায় গত কয়েক বছর থেকে ধারাবাহিকভাবে ভুট্টার চাষ করছেন চরের কৃষকেরা।

দামি সোনালী দানা ভুট্টা চাষ করে অবহেলিত বঞ্চিত চরের মানুষেরা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছেন।

সরেজমিনে কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত কাকিনা ইউনিয়নের চর রুদ্রেশ্বর, ভোটমারী ইউনিয়নের শৈলমারী ও তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সির বাজার চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এ বছর বন্যার কারনে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হলেও ভুট্টা চাষের মাধ্যমে সে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন চরাঞ্চলের কৃষকেরা। বন্যার পানিতে পলি জমে চরাঞ্চলের জমি বেশি উর্বর হওয়ায় ভুট্টার ফলন ভালো হয় বলে জানান চাষীরা। ভুট্টাকে  ঘিরে নদী গর্ভে নিঃস্ব হওয়া মানুষের মুখে এখন সুখের হাসি।

উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়ন শৌলমারী এলাকার ভুুূট্টাচাষী আব্দুল খালেক জানায়, এবারে তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। ভুট্টা উঠানো পর্যন্ত আরও খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা। মোট খরচ হবে প্রায় ২ লক্ষ টাকা। ভুট্টার ফলন যেভাবে হয়েছে তাতে তিনি প্রায় ২৫০’ থেকে ৩’শ মণ ভুট্টার আশা করছেন। বাজারদর ভালো থাকলে লক্ষাধিক টাকা লাভের আশা করছেন এ চাষী। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বীজ, সার ও কীটনাশকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হাতের লাগালে থাকলে দ্বিগুণ লাভ হতো বলে জানান তিনি।

চর ভোটমারী এলাকার ভুট্টা চাষী শরিফুল ইসলাম ৩ একর জমিতে ভূট্টা চাষাবাদ করেছেন তিনি বলেন, ভুট্টা চাষ করে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ভুট্টার ভালো ফলনে তার মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যায়। ভুট্টার বাজারদর ভালো থাকলে অনেক লাভের আশা করছেন এ চাষী।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ভোটমারী ব্লক) মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চরাঞ্চলের ভুূট্টা চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এবার ভোটমারী ইউনিয়নে ১৯৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ প্রণোদনার ভুট্টার বীজ ও সার দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করছে এবং পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, এ বছর কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪১৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। লাভজনক ফসল হওয়ায় চরাঞ্চলে ভুূট্টার আবাদ বেশি হচ্ছে। কৃষকরা অধিক লাভ করতে পারে, সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’

চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাজারদর ভালো থাকলে ভুট্টা চাষীরা অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি। ভুূট্টা চাষে চরের মানুষের জীবনমান বদলে গেছে। অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কৃষকরা এর সঠিক বাজার মূল্যে পেলে চরের অর্থনীতি আরও সচল হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১৮, ২০২৫ ৯:৪০ পূর্বাহ্ন
লিচুর সাথী ফসল মিষ্টি কুমড়া চাষে সাফল্য, কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে
কৃষি বিভাগ

লিচু বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন শিক্ষক হুমায়ুন কবির জনি। তিনি প্রথমবারের মত প্রায় এক একর লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে সফল হয়েছেন। তার উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও সাফল্য দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন অন্য চাষিরাও।

বোচাগঞ্জ উপজেলার নেহালগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ক শিক্ষক হুমায়ুন কবির জনি (৪০) একই উপজেলার আটগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদীনের পুত্র। তিনি নিজে নিজেই পরীক্ষামূলকভাবে লিচু বাগানের নিচের পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষের উদ্যোগ নেন। প্রথমবারেই সফল হন।

হুমায়ুন কবির জানান, তিনি প্রথম দিনাজপুর থেকে এক হাজার দু’শতটি উন্নত জাতের মিষ্টি কুমড়ার বীজ কিনে এনে বাসায় চারা তৈরি করেন। নিজের তৈরি করা চারা এক একর ২০ শতক জমির লিচু বাগানে রোপণ করেন।

জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন জাতের মিষ্টি কুমড়ার চারা রোপণ করে প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া গাছে ১০টির বেশি কুমড়ার অংকুর দেখতে পান। কিন্তু তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে ৫ থেকে ৬টি কুমড়া সংগ্রহ করছেন। এতে অর্জিত ফসলের আকার বড় হয়েছে এবং মিষ্টি কুমড়ার গাছ বালাই মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

দিনাজপুর জেলায় আম ও লিচু বাগানের সংখ্যা অনেক। প্রতিটি বাগানে গাছের নিচে হাজার হাজার একর জমি ফাঁকা পড়ে থাকে। সেই বাগানে গাছের নিচের জমিতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ শুরু করলে জেলার কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষিবিদরা।

বাসসের সাথে আলাপকালে জনি বলেন, ‘আমি লিচু বাগানে তিন জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। এই কুমড়া আবাদ করতে আমার প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত দেড় লক্ষ টাকার মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত থেকেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছি। এখন আরো অনেক মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ আশা করছি, এ মৌসুমে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে ৫ লক্ষ টাকা আয় হবে।’
লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষের এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জনি বলেন, ‘আমি কৃষি বিভাগের স্কুল শিক্ষক। এই পদ্ধতি নিজেই চিন্তা করে প্রয়োগ করেছি। কারণ লিচু বাগানের নিচের পতিত জমিটি সাধারণত পড়ে থাকে। তাই আমি প্রথমবার সেই পতিত জমিতে কুমড়া চাষ করেছি এবং সফলতা পেয়েছি।’

সরেজমিনে হুমায়ুন কবিরের মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে গিয়ে দেখা হয় একই এলাকার কৃষক আব্দুর রহিমের সাথে। আব্দুর রহিম বাসসকে বলেন, ‘আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা যায়।

তাই পদ্ধতি দেখতে এসেছি। লিচু বাগানের মধ্যে মিষ্টি কুমড়া চাষ দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি আগামী বছর আমার আম বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষ করব।’

বোচাগঞ্জ উপজেলার কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বাসসকে বলেন, হুমায়ুন কবীরের সাফল্য দেখে জেলার অনেক লিচু ও আম বাগানের মালিক কৃষি বিভাগের কাছে পরামর্শ নিতে আসছেন। ওই সব বাগান মালিকদের লিচু গাছের নিচের জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে এসব বাগানে উন্নত জাতের মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করলে সাফল্যের হার বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, জেলার হাজার হাজার একর লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদিত হলে জেলার চাহিদা পূরণ করে তা দেশের অন্যান্য জেলাতেও সবজির চাহিদা পূরণ করতে পারবে।’

বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন কুমার শাহা বলেন, ‘ কৃষি শিক্ষক হুমায়ুন কবির জনি নিজ উদ্যোগে এক একর জমিতে প্রথমবারের মতো লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে সফল হয়েছেন । আশা করছি, এ পদ্ধতিতে চাষ করে ভালো ফলনে কৃষক লাভবান হবেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তাকে কারিগরি পরামর্শ প্রদান করছি। আমি হুমায়ুন কবির জনির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, সম্প্রতি জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলায় লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষ পরিদর্শন করেছি। এটি একটি সফল উদ্যোগ। এই জেলার ১৩ টি উপজেলার লিচু ও আম বাগানে গাছের মাঝখানের পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়াসহ সাথী ফসল চাষে বাগান মালিকদের উৎসাহ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘লিচু ও আম বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষে সাফল্য অর্জিত হলে তা জেলার কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।’

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১৬, ২০২৫ ১:১৭ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্বভার গ্রহণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে প্রাচীন অন্যতম পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতি (সয়েল সায়েন্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এসএসএসবি) এর ২০২৫-২০২৬ সেশনের কমিটির দায়িত্বভার গ্রহণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পূর্ববর্তী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কমিটি নতুন নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

১৫ মার্চ/২০২৫ ফার্মগেটের BARC তে বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতির নবনির্বাচিত ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সভাপতি হিসেবে ড. মো: মনোয়ার করিম খান এবং জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে SRDI এর মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা, সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ও লেখক জনাব ড. মো: নুরুল হুদা আল মামুনসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি -১ প্রফেসর ড. মো: জহির উদ্দিন, সহ-সভাপতি -২ প্রফেসর ড. আক্তার হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক -১ ড. মো: বখতিয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক -২ প্রফেসর ড. এমএমআর জাহাঙ্গীর, কোষাধ্যক্ষ ড. ফরিদুল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রফেসর ড. মো: মিজানুর রহমান, নির্বাহী সদস্য হিসেবে ড. মো: শহিদুল ইসলাম, প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. মো: জসিম উদ্দিন, প্রফেসর ড.মো: দেলোয়ার হোসেন, ড. মো: রফিকুল ইসলাম, ড. হাবিব মোহাম্মদ নাসের,প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, ড. মো: মাহবুবুল আলম তরফদার, ড. মো: তারেক বিন সালাম ও ড. ফাতেমা নাসরিন জাহান নির্বাচিত হয়েছেন।

নবনির্বাচিত পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ তাদের উপর বিশ্বাস আস্থা ও গুরু দায়িত্ব প্রদানের জন্য সকল মৃত্তিকা বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষার্থী, পেশাজীবীদের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও সহযোগিতার জন্যে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আগামী দিনে দেশ ও জাতির কল্যাণে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও পেশাজীবীদের কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১৬, ২০২৫ ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
সয়াল্যান্ডে ৪০০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদনের সম্ভাবনা
কৃষি বিভাগ

লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সয়াবিন আর সয়াবিন। এক থেকে দেড় মাস বয়সী সয়াবিনের চারার কচিপাতায় দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। দেড় থেকে দুই মাস পর কৃষকের ঘরে উঠবে সয়াবিন।

উপকূলীয় এই জেলার আবহাওয়া এবং মাটি সয়াবিন চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হওয়ায় রবি মৌসুমে কৃষকেরা সয়াবিন চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন। বিশেষ করে যে সব জমিতে বোরো ধানের আবাদ সম্ভব হয় না, সেসব জমিতেই সয়াবিন চাষ করা হয়।

অন্যান্য ফসল উৎপাদনের তুলনায় সয়াবিন চাষে খরচ কম লাভ বেশি। বিভিন্ন পশুখাদ্য তৈরির কারখানায় সয়াবিনের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে দাম। সয়াবিন এখন অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রায় লক্ষ্মীপুর জেলায় ৪০০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। দেশের ৮০ ভাগ সয়াবিন উৎপাদন হয় এই জেলায়। এ জন্য লক্ষ্মীপুরকে ‘সয়াল্যান্ড’ বলা হয়।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে যে খরচ হয়, তার চেয়ে সয়াবিন চাষে খরচ কম। অন্যান্য ফসল চাষে যেখানে মাটির শক্তি হ্রাস পায়, সেখানে সয়াবিন চাষের ফলে মাটির উর্বরতা বাড়ে। ফলে সয়াবিনের জমিতে অন্যান্য ফসলও বেশ ভালো হয়। সয়াবিন চাষে সর্বোচ্চ দুবার করে সার-ওষুধ দিতে হয়। এছাড়া আগাছা পরিষ্কারের জন্য গাছের চারা ছোট অবস্থায় একবার নিড়ানি দিলেই যথেষ্ট।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মাঝে মধ্যে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় সয়াবিন চাষিদের। এক্ষেত্রে জলবায়ু ও লবণাক্ততা সহনশীল এবং স্বল্প জীবনকালের সয়াবিনের জাত চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুরে চলতি মৌসুমে ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪৩ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় দুই মেট্রিক টন সয়াবিন পাওয়া যায়। সে হিসেবে এবার সয়াবিনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার মেট্রিক টন। জেলার সবচেয়ে বেশি সয়াবিনের আবাদ হয় মেঘনার উপকূলীয় উপজেলা রামগতিতে। এখানে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। কমলনগর উপজেলাতে ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর, সদর উপজেলাতে ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর ও রায়পুর উপজেলাতে ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয়েছে।

সদর উপজেলার চর রমনী এলাকার কৃষক মোস্তফা কামাল বাসসকে বলেন, ৪০শতাংশ জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। আশা করি, ৩০ মণ সয়াবিন পাব। প্রতি মণ সয়াবিনের বাজার দর দুই হাজার টাকার মধ্যে থাকে। প্রতি বছর সয়াবিন চাষ করি। ধানের চেয়ে লাভ বেশি হয়। গেল বছর ২২০০ টাকা মণ দরে ৪৯ হাজার টাকার সয়াবিন বিক্রি করেছি। এবারও ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার সয়াবিন বিক্রির আশা করছি। সয়াবিন চাষে ধান আবাদের চেয়েও খরচ এবং পরিশ্রম কম হয়।

কমলনগর উপজেলার মতির হাটের সয়াবিন চাষি মিজান মুন্সী বলেন, বোরো ধান বা বিভিন্ন সবজি আবাদে প্রচুর সার এবং কীটনাশক প্রয়োজন। এতে খরচও বেশি পড়ে। কিন্তু সয়াবিনে সার-কীটনাশক কম লাগে। জমিতে বীজ বপনের আগে একবার এবং গাছে ফুল আসার সময় একবার সার দিতে হয়। কীটনাশকও দুই বার দিলেই চলে। এ কারণে সয়াবিন চাষে খরচ কম। এতে সেচের ও প্রয়োজন হয় না। এজন্য যেসব জমিতে পানি সেচের উৎস থাকে না, ওই সব জমিতেই সয়াবিনের আবাদ করা হয়।

কৃষক রহিম উল্যাহ,স্বপন ও গাজী শহীদসহ অনেকেই বলেন, সয়াবিন লাভবান শস্য। কিন্তু ঝুঁকিও আছে। পাকা সয়াবিন ঘরে তোলার আগে যদি অতিবৃষ্টি হয় এবং ক্ষেতে পানি জমে যায়, তাহলে সয়াবিন নষ্ট হয়ে যায়। এতে লাভের বদলে লোকসান হয়। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে এবছর সয়াবিনে গত বছরের চেয়ে ভালো দাম পাওয়া যাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ বলেন, সয়াবিন চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। গত মৌসুমে জেলায় ৩৫০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৪০০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সয়াবিন চাষে পানি কম লাগে। এছাড়া উপকূলীয় জমিতে কিছুটা লবণ রয়েছে, অন্য ফসল লবণাক্ততা সহ্য করতে না পারলেও সয়াবিন পারে। আমরা কৃষকদের উন্নত জাত সরবরাহ করি। বীনা ৫, বীনা ৬, বারি ৪, বারি ৬, বিইউ ৩, বিইউ ৪, বিইউ ৫- এসব জাতের সয়াবিনের দানা বড়, ওজন বেশি। তাই ফলনও বেশি। এগুলো পানি ও জলবায়ু সহনশীল। আগাম ঝড় থেকে রক্ষা পায়। বর্তমানে সয়াবিনের জীবনকাল কম। কৃষকরা আগেভাগেই বীজ বপন করলে দ্রুত সয়াবিন কাটতে পারেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১২, ২০২৫ ৯:১৫ পূর্বাহ্ন
মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে লাভবান উল্লাপাড়ার কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

পুষ্টিগুণে ভরপুর টমেটো। কাঁচা বা রান্না করা, জুস বা কেচাপ, মিষ্টি, টক বা নোনতা যে কোনো উপায়েই এটি খাওয়া যায়। অনেকে আবার সালাদ বানিয়ে টমেটো খান। রান্নায় স্বাদ এবং রং আনতেও টমেটোর জুড়ি মেলা ভার। টমেটো পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। এ ছাড়াও টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লাইকোপিন যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণসহ নানা রোগ ব্যাধি থেকে দূরে রাখে। এ কারণে টমেটোর চাহিদা দিন-দিন বেড়েই চলেছে।

সম্প্রতি জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার আলিয়ারপুর গ্রামের মৃত মজিবর আকন্দ ও মোছাঃ জাহানারা খাতুন দম্পতির পুত্র কৃষক নেজাব আলি (৪০) মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে অধিক লাভবান হয়েছেন। মালচিং হলো এক ধরনের পলিথিন। তাকে অনুসরণ করে মালচিং পদ্ধতিতে এখন অনেকেই টমেটো চাষের স্বপ্ন দেখছেন।

বাসসের সাথে আলাপকালে নেজাব আলী বলেন, মানব মুক্তি সংস্থা (এমএমএস) থেকে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। প্রশিক্ষণ শেষে নিজ বাড়ির সাথে মাত্র  ২৫ শতাংশ  জমিতে বেড প্রস্তুত করে ২০২৪ সালের অক্টোবর এর শেষে চারা রোপণ করে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমার তৈরি করা বাগানে প্রতিটা গাছে বিপুল পরিমাণ টমেটো ধরে আছে। যা অনেকেই দেখতে আসছেন। আমি ইতোমধ্যে প্রায় ৮ মন টমেটো বাজারে বিক্রি করেছি।

তিনি জানান, ২৫ শতক জমিতে টমেটো চাষ করে তার মোট খরচ  ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। তবে এবার বাজারে টমেটোর দাম কম থাকায় লাভের পরিমাণ একটু কম। তা সত্ত্বেও এবছর ২৫/৩০ হাজার টাকা লাভ হবে।

এমএমএস-এর কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল  জানান, মালচিং হলো এক ধরনের পলিথিন। যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। রোগজীবাণু থেকেও গাছকে রক্ষা করে। অতিরিক্ত পানি রোধ করে। গাছের গোড়ায় আগাছা হয় না। এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতে হলে প্রথমে জমি তৈরি করে মাটির সঙ্গে প্রয়োজন মতো সার মিশিয়ে নিয়ে বেড তৈরি করতে হয়।

তিনি জানান, বেডের প্রস্থ হবে এক মিটার। এক বেড থেকে আরেক বেডের দূরত্ব হবে ৩০ সেন্টিমিটার। এরপর জমিতে তৈরি করা সবকটি বেড মালচিং পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পলিথিনের নিচে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে তাই বেডের চারপাশে পলিথিনের উপরে ভালোভাবে মাটিচাপা দিতে হবে। বেডে চারা রোপণের জন্য ১৮ ইঞ্চি দূরত্ব রাখতে হবে। এরপর চার ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ দিয়ে ছিদ্র করে ওই ছিদ্রে টমেটোর চারা রোপণ করতে হবে।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, এ উপজেলায় কৃষির বৈচিত্র্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এখানে বিভিন্ন বিলসহ নিচু ও সমতল এলাকার  কৃষিতে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে এখানে যে সব ফসল উৎপাদিত হচ্ছে তার মধ্যে টমেটো চাষ করে আলিয়ারপুরের নেজাব আলী-সহ বেশ কয়েকজন কৃষক ব্যাপক হারে সফলতা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, টমেটো চাষ লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। টমেটোর ফলন এবং দাম দুটিই ভালো হওয়ায় তারা বেজায় খুশি। তাদের এ সাফল্য দেখে এখন অন্য চাষিরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। মানব মুক্তি সংস্থার এহেন উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি।

সুবর্ণা ইয়াসমিন জানান, এবছর উল্লাপাড়ায় মোট ৫১ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। তার মধ্যে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে।

কৃষি অফিসারের মতে, মালচিং ব্যবহার করলে জমিতে প্রায় ১০ থেকে ২৫ ভাগ আদ্রতা সংরক্ষণ করা সম্ভব। এ পদ্ধতি খুবই সুন্দর একটা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করলে জমিতে আগাছা হয়না বললেই চলে। মালচিং পেপারে কার্বন থাকার কারণে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং সারের গুণাগুণ ঠিক থাকে ফলে ফলনও বৃদ্ধি পায়।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop