৩:৩৬ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • অজ্ঞাত রোগে গরু বিক্রির হিড়িক!
ads
প্রকাশ : ডিসেম্বর ৯, ২০২১ ১:০৫ অপরাহ্ন
অজ্ঞাত রোগে গরু বিক্রির হিড়িক!
প্রাণিসম্পদ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে অজ্ঞাত রোগে একে একে ২৮টি গরুর মৃত্যু এবং আরও বেশ কিছু গরু আক্রান্ত হয়েছে। এতে আতঙ্ক ও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন ওই এলাকার গরুর খামার মালিকরা।

ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় ওই এলাকায় গরু বিক্রির হিড়িক পড়েছে। অনেকেই কম দামেই বিক্রি করে দিচ্ছেন খামারের গরু। এদিকে গরু মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে দুটি টিম গঠন করেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর, সূর্যপড়া এবং বেতদিঘী ইউনিয়নের নন্দলালপুর ও মহেশপুর গ্রামে গত কয়েক দিনে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ২৮টি গরু। আরও আক্রান্ত হয়েছে ৩০-৩৫টি গরু।

অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত গরু মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় বাসুদেবপুর, সূর্যপাড়া গ্রামের গৃহস্থ ও খামার মালিকরা ক্ষতি থেকে রেহাই পেতে বাধ্য হয়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন গোয়ালের গরু। গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত গ্রামের প্রায় ৩০-৩৫টিরও বেশি গরু বিক্রি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

বাদশা হোসেনের ২টি, মন্টু ১টি, জহুরুল ১টি, মিনার ১টি, আনোয়ার ২টি, হাফিজ ৩টি, মুকুল ২টি, মিজান জামাই ১টিসহ আরও অনেকে বিক্রি করেছেন। পাশাপাশি অনেকে বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বাসুদেবপুর গ্রামের বাদশা হোসেন জানান, তার গরুসহ আশপাশের গ্রামের এ পর্যন্ত প্রায় ২৮টি গরু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার তিন মাসের বাছুর রেখে মারা যায় বাদশা হোসেনের একটি গাভী গরু। সেই আতঙ্কে তিনি বাকি দুটো গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। বাদশা হোসেনের গোয়াল এখন গরুশূন্য। সম্বল বলতে শুধু এখন মাতৃহারা তিনমাসের বাছুরটি। নন্দলালপুর, মহেশপুর গ্রামের সুলতান হোসেনের ৭টি গরুর মধ্যে ৩টি আক্রান্ত হলে ৭টি গরুই তিনি বিক্রি করে দেন।

এছাড়াও একই গ্রামের মুক্তার হুজুর ৪টি, মোশাররফ ১টি, বেলালের ৩টি, ইউনুসের ১টি এবং আজাহারের ১টি গরুর মৃত্যু ঘটে। অপরদিকে মোস্তফার ১টি গরু অসুস্থ হলে তিনি জবাই করেন। আতাউর রহমানের ১টি আক্রান্ত হলে হোমিও চিকিৎসা চালাচ্ছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা ধারণা করছেন, স্থানীয় পাকড়ডাঙ্গা স্থানে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি ব্যাটারি কারখানা। আশপাশের জমিতে ওই কারখানার বর্জ্যের বিষক্রিয়াযুক্ত সিসা ছড়িয়ে পড়ায় সেই জমিগুলোর ঘাস-খড় খেয়ে মৃত্যু ঘটছে গরুগুলোর। এলাকায় গরু মারা যাওয়ার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে ওই স্থান থেকে তড়িঘড়ি করে সরিয়ে নেওয়া হয় কারখানাটি। তবে ওই স্থানে এখনো ছড়িয়ে রয়েছে ব্যাটারির বিষাক্ত বর্জ্যসহ ঝাঁজালো গন্ধ।

এদিকে অজ্ঞাত রোগে গরু আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনায় দুটি তদন্ত টিম গঠন করেছে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। উপজেলার প্রাণিসম্পদের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নেয়ামত আলীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত টিম এবং অপর আরেকটিতে প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. শাহানুর আলমের নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করা হয়। ইতোমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করেছে তদন্ত টিমের সদস্যরা।

ব্যাটারি কারখানাটি রাতারাতি সরিয়ে নিলেও কারখানাটির বর্জ্য, ফসলি জমির নমুনা এবং এলাকার ঘাস ও পশুখাদ্য সংগ্রহ করেছে তদন্ত টিমের সদস্যরা। তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন লেড বিষক্রিয়ার কারণেই ওই গরুগুলো আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মো. নেয়ামত আলী বলেন, সেখানের কৃষকদের সচেতন করাসহ ওই এলাকার ঘাস ও খড় পশুকে না খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়াসহ মাইকিং করা হয়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। ওই এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop