অজ্ঞাত রোগে ১১০০ হাঁসের মৃত্যু, পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা খামারি!
প্রাণিসম্পদ
১১০০ হাঁসের মৃত্যুতে পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের স্বপন মিয়া নামে এক খামারি। তিনি উপজেলার মাওহা ইউপির নয়ানগর বাউশালী পাড়া গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে। পুঁজি হারিয়ে এখন পথে বসলো স্বপন।
সোমবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার মাওহা ইউপির নয়াননগর বাউশালী পাড়া এলাকার স্বপন মিয়ার হাঁসগুলো মারা যায়।
কৃষক স্বপন মিয়া জানান, প্রায় চার বছর আগে ঢাকার গার্মেন্টস থেকে চাকরি ছেড়ে গ্রামে এসে কৃষি কাজ শুরু করি। গত বছর এক হাজার হাঁস লালন পালন করে কিছুটা লাভবান হয়েছি। সে আশাতেই এবারো চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রামপুর থেকে বাকীতে ৩০ টাকা পিস ১২০০ হাঁসের বাচ্চা ৩৬ হাজার টাকায় কিনে আনি। তখন হাঁসের বাচ্চার বয়স ছিল একদিন। ওই হাঁসের বাচ্চা লালনপালন করার জন্য বাড়ির পাশে সুরিয়া নদীর পাড়ে মাচা ও নেটের বেড়া দিয়ে তৈরি করি খামার। এরপর হাঁসের বাচ্চার খাবার কেনার জন্য এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করি। এরপর প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ই পরিচর্যার জন্য বাড়ির পাশে বিল ও ডোবায় নিয়ে যাই হাঁসগুলিকে।
ধান ও পোল্ট্রি খাবার ক্রয় করে হাঁসগুলিকে খাওয়ানো ছাড়াও প্রয়োজনীয় ওষুধও দিয়েছি নিয়মিত। এ অবস্থায় হাঁসগুলির বয়স হয়েছিল ২ মাস ৭ দিন। তিনদিন পরেই বাজারে বিক্রি করে দেওয়ার কথা ছিল। এমতাবস্থায় গত সোমবার সন্ধার পর হাঁস খামাারে তুলি। ওই দিন রাতেই অজ্ঞাত রোগে ছটফট করে প্রায় ১ হাজার হাঁস মারা যায়। এরপর মঙ্গলবার রাতে আরো ১৪০ টি হাঁস মারা যায়। হঠাৎ করে হাঁসের খিঁচুনি দিয়ে মরতে শুরু করে। এত অল্প সময়ে আমি হাঁসের চিকিৎসাও করাতে পারিনি। এভাবেই ১ হাজার ১৫০ টি হাঁস মারা গেছে। এই হাঁসগুলিকে লালনপালন বাবদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এ গুলো সবই ঋণের টাকায়। এখন সরকারের সহায়তা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল করিম জানান, চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং সঠিক নিয়ম-নীতি না জেনে হাঁস পালন করায় অনেক সময় রোগাক্রান্ত হয়ে হাঁস মারা যায়। স্বপন যদি আমাদের পরামর্শ নিয়ে হাঁস পালন করতেন তাহলে হয়ত এই ক্ষতি হতো না। হাঁস পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত্যু কারণ বলা যাবে। এ ছাড়াও আমাদের জনবল কম। তাই, বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।