মিয়ানমার থেকে সিমান্ত পথে ঢুকছে গরু
প্রাণিসম্পদ
বান্দরবানের আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অরতি সীমান্ত পথ দিয়ে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে ঢুকছে গরু-মহিষ। একটি প্রভাবশলী পাচারকারী চক্র রাজনৈতিক দলের ছত্রছায় দীর্ঘ ৮-৯ মাস ধরে এসব গরু-মহিষ সড়ক ও নদীপথে পাচার হয়ে আসছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি’র ১১ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাঁচটি ট্রাক ভর্তি ২৫টি গরু আটক করেন। চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর বাজার এলাকায় পাচারের সময় গরুভর্তি ওই ট্রাকগুলো আটক করা হয়।
জানা যায়, আলীকদম উপজেলার করুক পাতা ইউনিয়নের পশ্চিম ও দক্ষিণ সীমান্তে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ। এ ইউনিয়নের সীমান্তের বেশির ভাগ এলাকাই অরতি ও দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে ঘেরা। এই অঞ্চলের সীমান্ত পথ দিয়ে চোরাচালানি ও পাচারকারীরা চক্র নির্বিঘেœ গরু-মহিষ নিয়ে আসছে। গরু-মহিষের পাশাপাশি থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে মাদকদ্রব্যও আসছে এই সীমান্ত পথে। আলীকদমের নির্বাহী কর্মকর্তা পশু ডাক্তারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে জেনেছেন, সীমান্ত পথে আসা বিভিন্ন জাতের এসব গরু-মহিষের গায়ে এক ধরনের নেশাজাতীয় ট্যাবলেট খাইয়ে দেয়া হয় অথবা ইনজেকশন দেয়া হয়। এতে ওইসব পশু খুব দ্রুত হেঁটে সীমান্ত পার হতে পারে।
জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে আসা শত শত গরু-মহিষ এখনো আলীকদম উপজেলার গভীর জঙ্গলে উপজাতিদের জিম্মায় রাখা আছে। তারা ওই সব রাজনৈতিক নেতাদের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে পাচারের সুযোগ সৃষ্টি করে। এভাবে তারা চকরিয়া, লামা ও আলীকদমের বিভিন্ন সড়ক পথে এবং পাহাড়ি গভীর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
অবৈধভাবে নিয়ে আসা মিয়ানমারের গরু-মহিষগুলোর বৈধতা দেয়ার জন্য চকরিয়া উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে, বেড়া বাজার ও ডুলাহাজারা এলাকায় বেশ কয়েকটি গরু-মহিষের হাট বসে। রাতের আঁধারে সীমান্ত পথে আসা এসব গরু-মহিষ উল্লেখিত বাজারগুলোতে পথেও স্থানীয়দের চাঁদা দিতে হয়। তা না হলে সেগুলো লুট হয়ে যায়। চোরাইপথে আসা এসব গরু-মহিষ বাজারে এনে বিক্রি রসিদ ও ইউনিয়ন পরিষদের রসিদের মাধ্যমে গরু-মহিষগুলোকে বৈধ করে নেয়া হয়।
এদিকে দেশীয় গরু খামারিরা জানান, সীমান্তপথে আসা এসব গরু ও মহিষের কারণে তাদের খামার প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তারা অবৈধ পথে গরু-মহিষ আসা বন্ধ করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। চকরিয়া থানার ওসি চন্দ কুমার চক্রবর্তী জানান, পাঁচ ট্রাকে আসা আটককৃত ২৫টি গরু এখন তাদের হাতে রয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি’র নায়েক সুবেদার ফরিদ উদ্দিন বাদি হয়ে এ ব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।