লোকসানে পোলট্রি খামারিরা, বন্ধ হচ্ছে খামার
পোলট্রি
পটুয়াখালীতে লোকসানে পড়ে বাধ্য হয়ে পোলট্রি খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন অনেকেই। চলতি বছর মুরগির বাচ্চা আর খাবারের দাম দফায় দফায় বাড়তে থাকায় লোকসানে পড়ে বাধ্য হয়ে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন এ জেলার অনেক খামারি। এরই মধ্যে পোলট্রি শিল্প ছেড়ে দিয়ে অনেকেই অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। এ জেলার অধিকাংশ খামারির শেড এখন খালি পড়ে আছে।
জানা যায়, বর্তমানে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা। আর এই মুরগির বাচ্চার ওজন ১ কেজি বাড়াতে ১ কেজি ৬০০ গ্রাম খাদ্য খাওয়াতে হয়। সেখানে খাদ্যের দাম হয় ৮৩ টাকা। এর জন্য ওষুধ প্রয়োজন ১৫ টাকার। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ বিল, গাছের গুঁড়ি, শ্রম মিলে ব্যয় আছে আরো আট টাকা। ফলে এক কেজি ওজন পর্যন্ত একটি মুরগির পেছনে ব্যয় হয় ১৬৬ টাকা। অথচ ওই মুরগি মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা ১১৫-১২০ টাকার বেশি দামে খামারিদের কাছ থেকে কেনেন না। ফলে এ জেলায় পোলট্রি শিল্পে ধস নেমেছে।
খামারি শফিক মোল্লা বলেন, মুরগির খাবার আগে ৫০ কেজি কেনা যেত এক হাজার ৭০০ টাকায়, কিন্তু এখন একই খাবার দুই হাজার ৫০০ টাকা। এত টাকা দিয়ে খামারে মুরগি উঠাইলে খরচের টাকাই ওঠে না।
খামারি মানিক মিয়া জানান, আমাদের মতো ক্ষুদ্র খামারিরা সবাই খামার থেকে সরে এসেছে। যাদের লাখ লাখ টাকা অলস পড়ে আছে, তাদের টাকা ছাড়া এ ব্যবসা চলবে না। নতুন কেউ এ ব্যবসায় নামবেও না। এত ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা হয় না।
খামারি চান গাজী বলেন, পোলট্রি খামার নিয়ে আমার বড় হওয়ার স্বপ্ন ছিল। আমার বড় আয়ের পথ বন্ধ হওয়ায় সংসারে টানাপড়েন চলছে। সরকার যদি ১৮ থেকে ২০ টাকার মধ্যে বাচ্চার দর নির্ধারণ করে দেয় এবং ৫০ কেজি খাবার বস্তার দাম যদি এক হাজার ৬০০ বা ৭০০ টাকা করে দেয়, তাহলে নতুনভাবে খামারিরা আশা থাকবে।
লেয়ার খামারি সাঈদুর রহমান জানান, ডিমে আসা পর্যন্ত একটি মুরগি ৩৯১ টাকার খাদ্য খায়। ওষুধে ব্যয় হয় ৬০ টাকা, কর্মচারী ও বিদ্যুৎ খরচ ৪০ টাকা। একটি মুরগি ডিমে আসা পর্যন্ত ৫২১ টাকা ব্যয় হয়। ডিমের বাজারদর এখন সাত টাকা ১০ পয়সা, কখনো আবার সাত টাকা ২৫ পয়সা পর্যন্ত হয়। কিন্তু ডিম দেওয়া একটি মুরগিতে প্রতিদিন সব ধরনের খরচে ব্যয় হয় সাত টাকা। ফলে গত কয়েক মাসে লোকসান গুনতে গুনতে খামারিরা তাদের খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন।