গয়না বিক্রি করে গরুর খামার শুরু করে কোটিপতি জেসমিন!
প্রাণিসম্পদ
বিয়ের গয়না বিক্রি করে গরুর খামার শুরু করে কোটিপতি হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জেসমিন আরা। বর্তমানে তার খামারের বয়স ১৮ বছর হয়ে গেছে। তার খামারে ১০০টি গরু রয়েছে। পাশাপাশি গড়েছেন ছাগল ও হাঁসের খামার। পাশেই করছেন মাছ চাষ।
জানা যায়, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জোৎবানী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে বাসিন্দা জেসমিন আরা। তিনি তার বাড়ির পাশেই গড়ে তুলেছেন ‘জেসমিন ডেইরি ফার্ম’ নামে গরুর খামার। এখন পর্যন্ত উপজেলা ডেইরি বিভাগে তিনবার প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। জেসমিনের খামারে রয়েছে শতাধিক বিভিন্ন জাতের গরু। যার মধ্যে ৩০টি গাভি থেকে প্রতিদিন আড়াইশো লিটার দুধ পান। যা বিক্রি করে প্রতিদিন আয় হয় ৭-১০ হাজার টাকা। ছাগল, হাঁস ও মাছের খামার থেকে প্রতি মাসে আয় তিন লাখ টাকা। বর্তমানে তার খামারে ১০ জন যুবক কাজ করছেন।
খামারে কর্মরত শ্রমিক সবুজ হোসেন বলেন, আমি জেসমিন আপার খামারে একজন শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। খামারের গরুর গোসল করানো খাবার দেওয়াসহ দেখাশোনার কাজ করি। মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন দেয়। এতে আমার পরিবার নিয়ে ভালোই চলছে।
অপর শ্রমিক সিদ্দিক হোসেন বলেন, জেসমিন আপার খামারে গরু, হাঁস ও ছাগল চারটি পুকুর রয়েছে। যেগুলোতে মাছ চাষ করা হয়। খামারে আমরা ১০ জন শ্রমিক রয়েছি। যারা সব কাজ করে থাকি। এই খামারের মাধ্যমে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
পাশের গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, জেসমিন আরা গরুর খামার দেখে অবাক হয়েছি। তার খামারে অনেক জাতের গরু রয়েছে। সাথে পুকুরে মাছ চাষ করছে। আবার হাঁস মুরগিও পালন করছে। তার খামার দেখে নিজে খামার গড়ে তুলার ইচ্ছা রয়েছে।
জেসমিন আরা বলেন, আমার স্বামী একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। দিনে বেশির ভাগ সময় কাজকর্ম থাকতো না। না। আগে থেকেই আমার গরু ছাগল লালনপালনের ইচ্ছে ছিল। পরে নিজের গয়না বিক্রি করে সে টাকা দিয়ে দুটি গাভি কিনে ছোট একটি খামার তৈরি করি। তারপর ধীরে ধীরে সেই দুটি গাভির বাছুর থেকে খামারে গরুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গরু বাড়তে থাকায় বাড়ির পাশে আরও কিছু জাইগা কিনে বড় পরিসরে খামার দেই।
বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপুল কুমার জানান, আমরা জেসমিনকে সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। তার সাফল্য দেখে গ্রামের অনেকেই গরুর খামার তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এছাড়া গরু কিনা বিষয় তাদেরকে সকল ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। আমদানি নির্ভরতা কাটিয়ে মাংস ও দুধের চাহিদা মেটাতে তার মতো খামারির সংখ্যা বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।