পা হারিয়েও থেমে যাননি রুবিনা, সফল হলেন খামার করে
প্রাণিসম্পদ
উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণ না হলেও গরুর খামার করে স্থানীয়দের রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী রুবিনা খাতুন।
তার বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের শান্তিনগর জংলিপাড়া গ্রামে। বাবা হারানো রুবিনা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ব্যাপক মেধাবী।
পথচলায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রেল দুর্ঘটনা। ২০১৮ সালে ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের বাড়িতে ফেরার পথে হঠাৎই রেল দুর্ঘটনায় পড়ে দুই পা হারিয়ে পুঙ্গত্ব বরণ করেন। মা রহিমা বেগমও শরীরে টিউমার নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়। বড় বোন মানসিক প্রতিবন্ধী। একমাত্র ছোট ভাই রংপুরে পড়াশোনা করছে।
দরিদ্র পরিবারের হাল ধরতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ থেকে ফেরা রুবিনা জানান, দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এক লাখ, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে দুই লাখ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন সংগঠন থেকে ৯২ হাজার টাকা চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছে।
ত্রাণ হিসেবে পাওয়া টাকা দিয়ে তিনি তার চিকিৎসার ব্যয় মিটিয়ে হাতে কিছু থাকা টাকা দিয়ে দেশীয় গরু ও একটি বড় গরু কিনেছেন। এখন সেই গরু লালন পালন করে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন রুবিনা।
গরুটিকে অনেক যত্ন আর স্নেহে পালন করায় আদর করে নামও রেখেছেন স্বপ্নরাজ। বর্তমানে গরুটির ওজন ১ হাজার ১০০ কেজি। দাম হেঁকেছেন ৯ লাখ টাকা।
রুবিনা খাতুন জানান, ১ হাজার ১০০ কেজি ওজনের স্বপ্নরাজের কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে পরিবারে অনেকটাই সচ্ছলতা ফিরে আসবে। তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে তার চলাচলের জন্য একটি ইলেকট্রিক হুইলচেয়ার সহায়তা চেয়েছেন।
রুবিনার মা রহিমা বেগম জানান, দরিদ্রতার কারণে নিজের চিকিৎসা করা তো দূরের কথা; পরিবারের চাহিদা মেটানো দায় হয়ে পড়েছে। রুবিনার স্বপ্নপূরণে এবং তার খামার সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল হাই জানান, রেলপথ দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করা রুবিনার গরুর খামার সম্প্রসারণে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।