ক্রেতা সংকটে বিপাকে ঠাকুরগাঁওয়ের খামারিরা
প্রাণিসম্পদ
কোরবানির জন্য ঠাকুরগাঁও জেলায় আনুমানিক ৮০ হাজার ৪৫৯টি গরু ও ছাগল হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া সারা দেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে কঠোর লকডাউন। তবে বিক্রয় নিয়ে খামারিরা যেমন শঙ্কায় আছেন তেমনি দুশ্চিন্তায় আছেন ক্রেতারাও। অনলাইনেও কোনও সাড়া মিলছে না ক্রেতার। এমন পরিস্থিতিতে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জেলার ছোট বড় সকল খামারিরা বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে অনলাইনে গরু বিক্রির জন্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই খরা কেটে যাবে ঈদের দু-চারদিন আগেই। প্রশাসনের পক্ষ হতে অনলাইন ছাড়াও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কিছু হাট বাজার খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আনুমানিক ৮০ হাজার ৪৫৯টি গরু ও ছাগল হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে কোরবানি দেওয়ার জন্য। এছাড়াও অনেকে বাসাবাড়িতে গরু লালন পালন করে সেই হিসেবে এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে কোরবানির পশু।
জেলা শহরের শীবগঞ্জ এলাকার ইমন এগ্রো ফার্মের মালিক খামারি রুহুল আমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, কোরবানির বাজারকে সামনে রেখে প্রায় পাঁচ বছর ধরে গরু লালন পালন করে আসছেন তিনি। ঈদের আগে এই সময়ে খামারে একটা গরুও অবিক্রিত থাকতো না। গেল সপ্তাহে একজন পার্টি এসে ঘুরে গেছেন। গরুর যে দাম বলছেন, তাতে ক্রয়মূল্যও থাকছে না। এ বছর খামারে দেশী গরু মোট ২০০টি রয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গরু কিনেছি। গরু বিক্রি না হলে কি যে হবে- তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
ঠাকুরগাঁও সদরের লোহাগাড়া এলাকার মকবুল হোসেন। সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে দোকানের পাশাপাশি নিজ বাড়িতে প্রতি বছর ৪-৫টি গরু হৃষ্টপুষ্ট করে থাকেন। গত কয়েক বছর ব্যবসা ভালো হলেও করোনার কারণে এ বছর বিক্রি নিয়ে সংশয়ে আছেন। মাত্র দুজন ক্রেতা এলেও তারা তেমন কোনও দাম বলেন নি।
ঠাকুরগাঁওয়ের প্রায় সকল খামারির একই অবস্থা। করোনার পরিস্থিতে খামার কিংবা হাট কোথাও দেখা মিলছে না ক্রেতার। জেলার বড় খোচাবাড়ি হাট, শীবগঞ্জ হাট, লাহিড়ী হাট, নেকমরদ হাটসহ আরও অনেকগুলো বড় বড় গরুর হাঁট রয়েছে। যেগুলো এখন লকডাউনের কারণে শূণ্য মাঠ হিসেবে পড়ে রয়েছে। অথচ গেল বছরগুলোতে এই সময়ে হাঁটগুলো থাকতো গরু ও লোকের সমাগমে ভরপুর।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলতাফ হোসেন জানান, খামারিদের এই হতাশা খুব শিগগিরই লাঘব হবে। অনলাইনের মাধ্যমে গরু বিক্রয়ের জন্য প্রশাসন থেকে একটি ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। তবে ঈদের আগে কিছু পশু বিক্রয়ের হাট নিয়ম মেনে খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খামারিরা যেন ক্ষতির সমুক্ষিন হতে না হয় সেজন্য আমরা সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি বলে জানান তিনি।
এগ্রিভিউ/এসএমএ