রাজধানীতে “ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি ডে ২০২৩” উদযাপিত
প্রাণিসম্পদ
আজ ২৯ই এপ্রিল ২০২৩ রোজ শনিবার প্রাণিস¤পদ অধিদপ্তর এর প্রাঙ্গন থেকে বাংলাদেশের সকল স্তরের সাধারণ ভেটেরিনারিয়ান গণকে নিয়ে ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি ডে ২০২৩ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু করে খামার বাড়ি মোড় প্রদক্ষিণ করে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ এ এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ এর থ্রি-ডি হলে একটি আলোচনা সভা আয়োজিত হয়। উক্ত ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাঃ মোঃ এমদাদুল হক তালুকদার, মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. নাহিদ রশিদ, সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভূইয়া, সভাপতি, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ও উপাচার্য, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়; কৃষিবিদ প্রফেসর ড. নীতীশ চন্দ্র দেবনাথ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিম্যাল সাইন্সেস ইউনিভার্সিটি; কৃষিবিদ মোঃ খায়রুল আলম প্রিন্স, মহাসচিব, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ; কৃষিবিদ ডাঃ মোঃ মনজুর কাদির, সভাপতি, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল । সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ ড. এস এম নজরুল ইসলাম, সভাপতি, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন, কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা, মহাসচিব, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন সহ সারা বাংলাদেশের সাধারণ ভেটেরিনারিয়ানবৃন্দ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম তার বক্তব্যে বলেন, ‘‘২০০৯ সালে জনগণের বিপুল রায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠন করলে ভেটেরিনারি শিক্ষা ও ভেটেরিনারি পেশার উন্নয়নে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিভিন্ন শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে গবেষণা, পশুপাখির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অসংখ্য প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ভেটেরিনারিয়ানদের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশে প্রাণিসম্পদের ব্যাপক উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি খাতসমূহ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে বিগত এক দশকে প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। চাহিদার তুলনায় দুধ উৎপাদনে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও আশা করা যাচ্ছে ডেইরি সেক্টরে সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপ ও ডেইরি উদ্যোক্তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় স্বল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ দুধ উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হবে। বিগত কয়েক বছর ধরে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, কোরবানীর ঈদের সময় দেশে কোরবানীকৃত পশুর ১০০% চাহিদা দেশে উৎপাদিত প্রাণী দ্বারা পূরণ হয়ে থাকে, এমনকি কিছু পশু উদ্বৃত্ত থেকে যায়। এ বিষয়টি দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন নির্দেশ করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এখন জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এবং সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনের জন্য এ দেশের জনগণের নিকট মানসম্পন্ন ও নিরাপদ প্রাণিজাত খাদ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ভেটেরিনারি সার্ভিসকে আরও শক্তিশালি করার জন্য ২০২০ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অর্গানোগ্রাম পুনর্গঠন করা হয়েছে। নতুন অর্গানোগ্রাম বাস্তবায়নের ফলে অধিক সংখ্যক ভেটেরিনারিয়ানদের ক্যাডার সার্ভিসে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া ভেটেরিনারি সার্ভিস জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি উপজেলায় মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক প্রদান করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কৃষিখাতে সর্ববৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এখন জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এবং সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনের জন্য এ দেশের জনগণের নিকট মানসম্পন্ন ও নিরাপদ প্রাণিজাত খাদ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দেশবাসী লক্ষ্য করেছে যে, করোনাকালীন দেশের প্রাণিসম্পদের উৎপাদনশীলতা ধরে রাখার জন্য ও খামারীদের কথা বিবেচনা করে এবং জনগণের নিকট প্রাণিজ আমিষ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভেটেরিনারিয়ানগন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছিল। এসময় এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, ভেটেরিনারি সেবা প্রকৃত অর্থেই জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। এ সময় আপনারা ডিম, দুধ ও মাংস বিপণনের কাজ করেছেন। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবংতিনি এ কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আপনাদের এ কর্মকাণ্ড প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি বিপণন উইং সৃষ্টির দাবিকে জোরালো করে। ভেটেরিনারি সেবাকে জরুরি ঘোষণা ও প্রাণিসম্পদ বিপণন উইং চালুসহ ভেটেরিনারিয়ানদের পেশাগত ও জাতীয় উন্নয়নে যেকোনো উদ্যোগ গ্রহণ করলে আমি ব্যক্তিগতভাবে এ ব্যাপারে সবসময়ের মতো সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করবো।’’
এছাড়া আলোচনা সভায় উপস্থিত অন্যান্য অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে প্রাণিসম্পদে সাধারণ ভেটেরিনারিয়ানবৃন্দের বিভিন্ন অবদান উল্লেখ করেন।বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন এর মহাসচিব কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা ভেটেরিনারি সেবাকে জরুরি ঘোষণা ও প্রাণিসম্পদ বিপণন উইং কে চালু করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি ডে ২০২৩ যৌথভাবে উদযাপিত হয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন, দি ভেটএক্সিকিউটিভ, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট’স ফেডারেশন এর উদ্যোগে।