১১:৩৭ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ১৬ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৪ ১:২৬ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে ৫ লাখ ২০ হাজার টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ

গোপালগঞ্জে চলতি বোরো মৌসুমে ৫ লাখ ২০ হাজার টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে জেলার ৫ উপজেলার ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে। গোপালগঞ্জ জেলায় বোরো ধান আবাদ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো আবাদ হবে। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি বোরো ধান উৎপাদিত হবে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আঃ কাদের সরদার এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ২০ হাজার ৯৩৮ হেক্টরে, মুকসুদপুর
উপজেলায় ১৩ হাজার ৩০৬ হেক্টরে, কাশিয়ানী উপজেলায় ১১ হাজার ৭৩৬ হেক্টরে, কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৬ হাজার ৪৯৯ ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৮ হাজার ৯০১ হেক্টরে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে। এখান থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার টন বোরো ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্তি উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, এ জেলায় ধানের উৎপাদন ও আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ৭০ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনার বীজ-সার দিয়েছে। এরমধ্যে ৪০ হাজার কৃষককে ৮০ কেজি হাইব্রিড বোরো ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। এছাড়া ৩০ হাজার কৃষককে উচ্চ ফলনশীল (ইনব্রিড) বোরো ধানের বীজ, ১০ কেজি করে এমওপি এবং ১০ কেজি করে ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। প্রণোদনার এসব বীজ-সার দিয়ে কৃষক ৭০ হাজার বিঘা জমি আবাদ করেছে। তাই এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বোরো ধানের আবাদ বেশি হবে। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি বোরো ধান উৎপাদিত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৪ ১:২৪ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জের হাওরে সরিষার আবাদ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে
কৃষি বিভাগ

সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলের কৃষকদের কাছে সরিষার আবাদ দিনদিন জনপ্রিয় ও লাভজনক হয়ে উঠেছে।  সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাওরে প্রতি বছরই ধান চাষের পাশপাশি সরিষার আবাদ বাড়ছে। গতবারের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৬৫ কোটি টাকা।  কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় জেলায় সরিষা চাষ বাড়ছে, স্থাহানীয় কৃষকরা এ ফসল চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। চলতি বছর দাম ভালো পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। জেলার কৃষক মনফর আলী বিগত ৭ বছর ধরে সরিষা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলে জানান। চলতি মৌসুমে সাড়ে ১০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে ফলন ভালো হওয়ায় তিনি ভীষণ খুশি। তিনি জানান, ধান থেকে সরিষা চাষে লাভ বেশি। সেই সঙ্গে বাজারদরও অনেক বেশি। তবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে এ অঞ্চলের চাষিরা আরও বেশি সরিষা উৎপাদন করতে পারবেন।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সুত্র জানায়, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ২০ হাজার কৃষক ৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। যেখান থেকে ফলন হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৬৫ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘সরিষার চাষ বাড়াতে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে সরিষা থেকে প্রায় ৯১০ লিটার মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা।’ তিনি আরো জানান,সুনামগঞ্জের হাওরে আমন ধান কাটার পর বোরো চাষের আগে অলস জমিতে সরিষার চাষ করে স্থ্নাীয় কৃষকরা বাড়তি নুনাফা পাচ্চেন। সরিষা চাষ স্বল্প সময়ে উৎপাদনশীল একটি লাভ জনক রবিশস্য ফসল হওয়ায় এ জেলায় দিনে দিনে এর চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে কৃষকের সংখ্যা। হাওরের পরিবেশ উপযোগী ও অধিক মুনাফা অর্জনের চাষাবাদে স্থানীয় কৃষকদের উৎসাহিত ও সহযোগিতা করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সকল সময়ই কৃষকদের পাশে রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২৪ ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের পতিত জমিতে সবুজের বিপ্লব ঘটিয়েছেন আজাদ
কৃষি বিভাগ

জেলার লালমাই পাহাড় এলাকার চাষি আবুল কালাম আজাদ। তিনি পাহাড়ের পতিত জমিতে লেবু, কলা, পেঁপে ও কচুমুখি চাষ করেন। এতে তার গত বছর লাভ হয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। পাহাড়ের রূপবানমুড়া এলাকায় কলা, লেবু, মাল্টা, আনারস, আম, কাসাবা, পেঁপে ও মদিনানগর এলাকায় কচুমুখি চাষ করে স্থানীয় কৃষকদের তাক লাগিয়েছেন। সরেজমিনে পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড় ও তার ঢালুতে সবুজের সমারোহ। সবুজ থেকে চোখ ফেরানো দায়। নির্জন পাহাড়ে চলছে কাজের উৎসব। শ্রমিকদের কেউ লেবু তুলছেন। বাগানজুড়ে লেবুর মিষ্টি ঘ্রাণ। কেউ কলা ছড়িয়ে কাটছেন। কয়েকজন ব্যস্ত কচুর ছড়া তোলায়। হাত দিয়ে ছড়া পরিষ্কার করা হচ্ছে। কেউ পেঁপে পেকেছে কি না তা পরীক্ষা করছেন। আবুল কালাম আজাদের বাগানে ও জমিতে নিয়মিত ১০ জন শ্রমিক ও ফসল তোলার মৌসুমে আরও ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। বসে নেই চাষি আবুল কালাম আজাদও। সমানতালে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। এত পরিশ্রমের পরও তার মুখে লেগে আছে তৃপ্তির হাসি।

কৃষক আবুল কালাম আজাদ বাসসকে বলেন, কয়েকটি কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর ছিলাম। এতে খুব চাপ নিতে হয়। পাহাড়ে পরিবারের কিছু পতিত জমি ছিল। সেখানে প্রথমে লেবুর চাষ করি। প্রথম বছর ৫ লাখ টাকার চায়না লেবু-০৩ বিক্রি করি। পরে যোগ করি মাল্টা। এ বছর ৫ টন মাল্টা বিক্রি করেছি। আট বছর ধরে কচুর ছড়ার চাষ করছি। নতুন করে ড্রাগন, কাজুবাদাম ও কফির চারা লাগিয়েছি। কৃষিতে সময় দিয়ে আমি লাভবান হয়েছি। আমার পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে।

কৃষি তথ্য সার্ভিস কুমিল্লার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন মিজি বলেন, কৃষি তথ্য সার্ভিস বিভাগের কাজে আমাদের বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে যেতে হয়। লালমাই পাহাড়ের পতিত জমিতে কৃষক আবুল কালাম আজাদ সবুজের বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তিনি নিজে লাভবান হওয়ার সঙ্গে স্থানীয় বাজারে ফল ফসলের জোগান দিচ্ছেন। এতে স্থানীয়রা সাশ্রয়ী মূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন।

সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, সরকারের লক্ষ্য বাণিজ্যিক কৃষিকে এগিয়ে দেওয়া। আবুল কালাম আজাদ সে রকম একজন কৃষক। তিনি শুধু এক ফসলে পড়ে থাকেননি। তিনি লেবু, মাল্টা, আনারস, আমসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করেছেন। তিনি গত বছর কৃষিপণ্য বিক্রি করে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা লাভ করেছেন। সামনের বছরগুলোতে তার আয় আরও বাড়বে। তার মতো অন্য শিক্ষিত তরুণরাও কৃষিতে এগিয়ে এলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২৪ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
রংপুরে রবি মৌসুমে ২১ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ
কৃষি বিভাগ

প্রতি বছর রবি ও খরিপ মৌসুমে দুই বার ভুট্টা চাষ করে থাকেন কৃষকরা। চলতি রবি মৌসুমে জেলার ৮টি উপজেলা ও মেট্রো এলাকায় ২১ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন। রংপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন ভুট্টা চাষের ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, চলতি বছর রবি মৌসুমে রংপুর কৃষি অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত ৮টি উপজেলা ও মেট্রো এলাকায় ২১ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য ছিল। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া এবং কৃষি বিভাগের প্রণোদনার আওতায় উন্নতমানের ভুট্টার বীজ সরবরাহ, প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণসহ মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারীদের সহযোগিতা ও কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় জেলায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই মৌসুমে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় বরাবরের মতো অধিক জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। গতবছর এই উপজেলায় ভুট্টার চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর। এ মৌসুমে চাষ হয়েছে ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে।
এছাড়া মিঠাপুকুর উপজেলায় ৩ হাজার ৭৪০ হেক্টর, বদরগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৮২০ হেক্টর, গংগাচড়া উপজেলায় ২ হাজার ৪০০ হেক্টর, পীরগাছায় ২ হাজার ২৮০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, তারাগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ১৩০ হেক্টর, কাউনিয়া উপজেলায় ৮৭৫ হেক্টর ও মেট্রো এলাকায় ১৭৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।
গতবছরের তুলনায় এবছর রবি মৌসুমে অতিরিক্ত প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে জেলায় প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ১১ মেট্রিক টন করে ভুট্টা উৎপাদন সম্ভব। গত বছর জেলার কৃষকেরা জমি থেকেই কাঁচা ভুট্টা ভালো মূল্যে বিক্রি করতে পেরেছেন। অনেকেই শুকানোর পর বিক্রি করে অধিক লাভবান হয়েছেন। গত বছর ভুট্টার ফলন ভালো হওয়ায় এবং কৃষকরা লাভবান হওয়ায় চলতি বছর জেলার কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। এবছর জেলার পতিত জমিসহ চর অঞ্চলে ভুট্টা চাষ বেশি হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলার ঘাষিপুরের কৃষক মানিক উল্লা, কুয়েতপুরের আবুল কাশেম, বাবলু, আব্দুল মতিন, হাফিজুর, কাটাদুয়ারের জাকির হোসেন ও সৈকত জানান, করতোয়া নদীর চরে পতিত জমি গুলোতে ভুট্টা চাষ করলে সেচের প্রয়োজন কম হয়। চরাঞ্চলের কৃষকেরা কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করে এসব জমিতে অধিক হারে ভুট্টা চাষ করেছেন। দিনে দিনে চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে। ভুট্টা চাষে সফলতা এসেছে এবং ফলন ভালো হবারও সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগের সরবরাহ করা উন্নত জাতের ভুট্টার বীজে চাষ করেছেন তারা। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে কৃষকেরা অনেকেই ভুট্টা চাষ করেছেন। গত বছরের মতো এবারও বাজার মূল্য ভালো পাওয়া যাবে বলেই প্রত্যাশা তাদের। অধিক লাভের আশায় এবার উপজেলায় আগাম জাতের ভুট্টা চাষ বেশি হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, কৃষিবান্ধব সরকারের কৃষি প্রণোদনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পরামর্শ ও নির্দেশনায় কৃষকরা বাণিজ্যিক ভাবে ভুট্টা চাষে উৎসাহিত হচ্ছে। এছাড়া ভুট্টা থেকে মাছ ও মুরগির খাদ্য উৎপাদন এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় এটি লাভজনক। এ মৌসুমে উপজেলার ১৮ হাজার ২০০ কৃষককে প্রণোদনার আওতায় ধান, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ ও বিনামূল্যে সার সরবরাহ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২৪ ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
কুমিল্লায় স্বল্পকালীন জাতের শসার বাম্পার ফলন
কৃষি বিভাগ

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলারামপুর গ্রামের যুবক কাজী আনোয়ার হোসেন স্বল্পকালীন জাতের শসা চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তিন মাসেই শসা বিক্রি করে তিন লাখ টাকা মুনাফা করেছেন। আনোয়ারের মুখে এখন তৃপ্তির হাসি। এর আগেও তিনি হলুদ তরমুজ ও মরুর ফল সাম্মাম চাষ করে সফল হয়েছেন। মুদি দোকানি থেকে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়া আনোয়ার কৃষিতেই জীবনে সচ্ছলতা এনেছেন।
আনোয়ার জানান, সেপ্টেম্বরের শুরুতে ১৮০ শতক জমিতে শসার বীজ রোপণ করেন। চারা মাটি ভেদ করে উঁকি দিলে মাচা তৈরি করেন। প্রতিদিনই বেড়ে ওঠে শসাগাছ। মাচা আঁকড়ে ধরে ফুল দেয় গাছগুলো। সেই ফুল থেকে শসা হয়। বুলবুলি, দোয়েল ও শালিক পাখি অনেক শসা নষ্ট করেছে বলে চোখে-মুখে বিরক্তি প্রকাশ করেন আনোয়ার। তিনি জানান, জমি তৈরি, বীজ সংগ্রহ ও সার বাবদ ব্যয় হয় এক লাখ টাকা। পোকামাকড় দমনে সেক্স ফেরোমন ও আলোর ফাঁদ তৈরি করেছেন। তাই শসাগুলো স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। কৃষক আনোয়ার বলেন, ১৮০ শতক ক্ষেতে শসা চাষ করে ১০ হাজার কেজি বিক্রি করি। এখনও যে শসা আছে আরও ৫০০ থেকে এক হাজার কেজি শসা বিক্রি করা যাবে। সব মিলিয়ে আমার আয় হবে চার লাখ। খরচ এক লাখ বাদ দিলে তিন লাখ টাকা লাভ হবে।
নগরীর রাজগঞ্জ থেকে পাইকাররা যান আনোয়ারের বাড়িতে। ৪০ টাকা দরে তারা শসা কিনে নেন। বাজারে সেই শসা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন পাইকাররা। রাজগঞ্জ বাজারের পাইকার আবদুল মোতালেব বলেন, আনোয়ারের স্বল্পকালীন জাতের শসা স্বাদে ভালো। গত এক মাসে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। ক্রেতারা আমাদের কাছে দু-তিন মণ করে শসার অর্ডার করতেন। আমরা আনোয়ারকে জানাতাম। পরে গাড়িতে সেই শসা নিয়ে আসি। আমরা ৪০ টাকায় এনে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতাম।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইউব মাহমুদ জানান, আনোয়ার হোসেন একজন কৃষি উদ্যোক্তা। নতুন কৃষি ফসল উৎপাদনে আনোয়ারের জুড়ি নেই। চলতি বছরের শুরুতে হলুদ তরমুজ, ব্ল্যাকব্যারি জাতের তরমুজ ও মরুর ফল সাম্মাম চাষ করে সফল হয়েছেন। তিনি জানান, আনোয়ার যখনই কোনো সমস্যায় পড়েন, তখনই কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হয়। তার মতো কৃষকদের যেকোনো ধরনের পরামর্শ দিতে কৃষি অফিস সব সময়ই প্রস্তুত।

Continue reading “কুমিল্লায় স্বল্পকালীন জাতের শসার বাম্পার ফলন”

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২৪ ৮:৫২ পূর্বাহ্ন
যশোরের ছাতিয়ানতলার জনপ্রতিনিধি তৌহিদুল ‘টক কুল’ চাষেও সফল
কৃষি বিভাগ

‘টক কুল’ চাষে সফলতা পেয়েছেন যশোর জেলা সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাতিয়ানতলা গ্রামের মেম্বার তৌহিদুল ইসলাম। এই স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জমিতে উৎপাদিত কুল যাচ্ছে খুলনা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। এক বিঘা কুল চাষে খরচ করেছেন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর বিঘা প্রতি কুল পেয়েছেন দেড় লাখ টাকার বেশি। এতে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চার বিঘা জমিতে কুলের চাষ করেছেন। জনগণের খেদমত আর কুল গাছ পরিচর্যা করে এখন সময় কাটে এই জনপ্রতিনিধির।

ছাতিয়ানতলা গ্রামের তরফদার পাড়ার মৃত আজহার আলীর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম। তিনি এলাকার নির্বাচিত মেম্বার হিসেবে জনগণের খেদমত করার পাশাপাশি তিনি কুল চাষের পরিকল্পনা নেন। প্রথমবার তিনি এক বিঘা জমিতে টক কুল চাষ শুরু করেন। তখন থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কারণে চার বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন।

তৌহিদুল ইসলাম জানান, এক বিঘা জমিতে কুলের চারা, সেচ, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যাসহ মোট খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে বিঘা প্রতি দেড় লাখ টাকার কুল বিক্রি করার আশা করছেন। এখন প্রায় দিন কুল তোলা হচ্ছে। যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা জমি থেকে কুল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেকে কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। অনেক কৃষি উদ্যোক্তা জমি ও চাষ দেখতে আসছেন। তিনি হাসিমুখে তাদের কুল চাষের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, উচ্চ ফলনশীল সেকেন্ড টক কুল চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এই কুল চাষ করে মেম্বার তৌহিদুল ইসলাম আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তাকে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২৪ ১০:৩২ পূর্বাহ্ন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশীয় কারিগরি জ্ঞান [Indigenous Technical Knowledge (ITK)] সম্পর্কিত কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কৃষি গবেষনা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল  [৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি.] অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের দেশীয় কারিগরি জ্ঞান সম্পর্কিত কর্মশালা। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনে অবস্থিত সাংবাদিক লিয়াকত আলী অডিটোরিয়ামে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা এবং উদ্ভাবনী কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. কাজী মোহাম্মাদ দিদারুল ইসলাম। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান। গবেষণা প্রকল্পের প্রধান বক্তা হিসেবে তথ্য পরিবেশন করেন ‘Identification and Efficacy Assessment of Indigenous Technical Knowledges (ITKs) as Climate Smart Agriculture (CSA) Technology’ শীর্ষক গবেষণা প্রকলপের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোঃ মতিউল ইসলাম এবং সহযোগী হিসেবে ছিলেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গ্রাজুয়েট  চঞ্চল বিশ্বাস, সাবরিনা ইমরোজ,  সুমনা সরকার এবং মো. আমিনুল খান। গবেষণা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় প্রাচীন কারিগরি জ্ঞান খুঁজে বের করা এবং এর ব্যবহার ও উপযোগিতাসমূহ বৈজ্ঞানিকভাবে পর্যালোচনা করা। গবেষণা প্রকল্পের জন্য তথ্য ৫টি জেলার ৫টি উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। উপজেলাগুলোর দেড় ডজনের অধিক ইউনিয়নকে নির্বাচন করা হয়েছিল । এগুলো হচ্ছে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার শিবপুর , চিতলমারী ও চরবানিয়াড়ী ইউনিয়ন; সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমারী ও শ্যামনগর ইউনিয়ন; খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ও চাঁদখালী ইউনিয়ন; গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার  আমতলী ও কোটালীপাড়া ইউনিয়ন; যশোর জেলার সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠী ও হৈবতপুর ইউনিয়ন। গবেষণা প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকবৃন্দের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছে। গবেষণা প্রকল্পটির প্রথম অংশটির তথ্য সংগ্রহ পরিচালিত হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক উপজেলা থেকে ১০০ জন করে মোট ৫০০ জন সম্মানিত কৃষকদের বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. কাজী মোহাম্মাদ দিদারুল ইসলাম বলেন এটি খুবই চমৎকার উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে দেশব্যাপী এই প্রকল্পের কাজ বিস্তৃত করার অনুরোধ করেন এবং প্রাপ্ত দেশীয় প্রাচীন কারিগরি জ্ঞানসমূহকে বই আকারে প্রকাশিত হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন । প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান বলেন এগুলো খুবই পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি এবং ভবিষ্যতে এ গবেষণা কাজে সম্ভব সকল ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে খুলনার নিকটস্থ স্থানসমূহের কৃষকসহ মোট ৬৫ জন উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৮, ২০২৪ ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
নিরাপদ সবজিউৎপাদনে যুক্ত ঝিকরগাছার ৮ হাজার কৃষক-কৃষাণী
কৃষি বিভাগ

মিঠুন সরকারঃ ফসলের মাঠের পরিবেশ ঠিক রাখতে ও ফসলকে মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে নিরাপদ করতে জৈব প্রযুক্তির বিকল্প নেই। যশোরের ঝিকরগাছায় প্রায় ৮ হাজার কৃষক কৃষাণী জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের সাথে যুক্ত হয়েছেন। ঝিকরগাছা কৃষি অফিস বলছে, সবজির এমন কিছু জাত আছে যেগুলো কম উপকরণ ব্যবহার করলেও ভালো ফল দেয় ও রোগ-পোকার আক্রমণ কম হয়। বিশেষ করে স্থানীয় বা দেশি জাতগুলোর এরূপ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এরূপ জাত খুঁজে জৈব পদ্ধতিতে চাষ করতে হবে।

নেটহাউস তৈরি করে তার ভেতরে শাকসবজি চাষ করে কীটনাশক ছাড়াই অনেক পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার, সবুজ সার, খামারজাত সার ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।
বায়োফার্টিলাইজার (রাইজোবিয়াম, অ্যাজোটোব্যাকটার) ও বালাই দমনে বায়ো এজেন্টসমূহকে (ট্রাইকোগ্রামা, ব্রাকন) ব্যবহার করতে হবে। বালাই দমনে বিভিন্ন গাছ-গাছড়া থেকে তৈরি করা বালাইনাশক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিছু জৈব কীটনাশককে জৈব কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে যাদের নাম দেয়া হয়েছে ‘গ্রিন পেস্টিসাইড’। যেমন- নিমবিসিডিন, নিমিন এবং স্পিনোসাড। সাধারণভাবে জৈব কীটনাশকসমূহ অজৈব কীটনাশকের চেয়ে কম বিষাক্ত এবংপরিবেশবান্ধব। যে তিনটি প্রধান জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা হয় তারা হলো- বি টি (একটিব্যাক্টেরিয়ালটক্সিন), পাইরিথ্রাম এবং রোটেনন।


অল্প বিষাক্ত জৈব বালাইনাশকসমূহের মধ্যে রয়েছে নিম, সাবান, রসুন, সাইট্রাসওয়েল, ক্যাপসেসিন (বিতারক), বেসিলাস পোপিলা, বিউভেরিয়া বেসিয়ানাইত্যাদি। বালাইনাশকের প্রতি পোকার প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠার আশঙ্কা থাকায় এসব জৈব বালাইনাশক পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা উচিত।
এগুলোর পাশাপাশি- আগাছা দমনে কোন আগাছানাশক ব্যবহার না করে নিড়ানি ও হাত দিয়ে আগাছা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আন্তঃফসল ও মিশ্র ফসলের চাষ করতে হবে। শস্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। হিসাব করে সবজির বপন বা রোপণ সময় আগাম বা নাবিক রতে হবে। যুক্তিসঙ্গতভাবে সেচব্যবস্থাপনা করতে হবে। প্লাবন সেচ না দিয়ে ঝাঝরি দিয়ে বাকলসিভরে পানি গাছের গোড়ায় ঢেলে সেচ দিতে হবে। প্রয়োজনে খরার সময় মালচিং করতে হবে। পরিণত হওয়ার সূচক মেনে অর্থাৎ উপযুক্ত সময়ে সবজি তুলতে হবে। শাকসবজি তোলার পর তা ধোয়া বা পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুমুক্ত পানি ব্যবহার করতে হবে। বাছাই করে জীবাণুযুক্ত বা পচন ধরা শাকসবজি আলাদা করে বাদ দিয়ে প্যাকিং করতে হবে। প্যাকিং সামগ্রী জীবাণুমুক্ত হতে হবে। যতটা সম্ভব ক্ষেত থেকে শাকসবজি সংগ্রহের পর দ্রুত বাজারজাত করতে হবে। শাকসবজি খাওয়ার আগে জীবাণুমুক্ত পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে কাটতে হবে।

ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের বোধখানা গ্রামের কৃষক আব্দুল বারেক জানান, বিভিন্ন ধরনের ফেরেমন ফাঁদ ও হলুদ আঠা যুক্ত কাগজ ক্ষেতে ঝুলিয়ে রেখেছি। তার পর থেকে আমার আর দামী দামীকীটনাশক স্প্রে করা লাগেনা। আমাদের ফসল ৯০ ভাগ নিরাপদ বলা যায় । ৫ নং পানিসারা ইউনিয়নের বর্নি গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া জানান, আমরা নিরাপদ পেপে উৎপাদন করি। কোন রকম বিষ ছাড়াই। বিভিন্ন গাছের ফল, সাবান ইত্যাদি ব্যবহার করে।
ঝিকরগাছা উপজেলার উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান বলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে আমাদের একটি নিরাপদ সবজী উৎপাদনের মডেল প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেখান থেকে দেখে আশে পাশের কৃষক উদবুদ্ধ হচ্ছে ও আমাদের থেকে পরামর্শ নিচ্ছে, লাভবান ও হচ্ছে।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ’কম খরচে ও নিরাপদে ফসল উৎপাদনে জৈব কৃষি প্রযুক্তির বিকল্প নেই। বর্তমানে আ্মরা প্রায় ৮ হাজার কৃষক-কৃষাণীর মাঝে জৈব প্রযুক্তি সম্প্রসারণে সফল হয়েছি। এ সংখ্যা ধীরে ধীরে আরও বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২৪ ৩:২৭ অপরাহ্ন
পীরগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শিম চাষ
কৃষি বিভাগ

রংপুরের পীরগঞ্জে বিগত কয়েক বছর ধরে বানিজ্যিক ভিত্তিতে শিম চাষ করছেন চাষিরা। এ মৌসুমে শিমের ভালো দাম পেয়ে অনেক খুশি চাষিরা। পাইকারিতে শিমের কেজি ৫৫/৬০ বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে এবছর শিমের দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা।
চাষিরা জানান, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং অন্যান্য কৃষি পণ্যের সাথে তাল মিলিয়ে এবার শিমের দাম একটু বেশি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে হাইব্রিডসহ কয়েকটি জাতের শিম চাষ হয়েছে প্রায় ৩’শ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নে অধিক হারে শিম চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো শিম। কয়েক বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় শিম আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। তবে ফলন ও বাজার পেয়ে অনেক খুশি তারা।
কাবিলপুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের শিম চাষি আনিছার রহমান জানান, এখন আমার শিম চাষের মাঝামাঝি সময়ে এসেছি। বর্তমানে পুরো দমে শিম বিক্রি করছি। শিম ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর গ্রাম থেকে কিনে বিভিন্ন মোকামে নিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা বিকেলে জয়পুর গ্রামের তিন মাথায় থেকে শিম কিনে ট্রাকযোগে বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বিক্রি করে তাদের অনেক সুবিধা। তিনি আরও জানান, ১০ শতাংশ জমিতে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দেড় মণ শিম উঠানো সম্ভব হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে। হয়তো বা শিম চাষের শেষ সময়েও একই পরিমান বিক্রি হতে পারে।

জামালপুর গ্রামের আবু তাহের মিয়া জানান, বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহে জমি চাষ করে বরবটি লাগানো হয়। বরবটির আবাদ শেষ হলেই শ্রাবণ মাসে শিমের বীজ রোপণ করা হয়েছে। কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশি জাতের চিকন শিম ক্ষেতে ফলন শুরু হয়। এবছর শিম চাষের রোগ বালাই কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এবছর বাজারও অনেক ভালো। এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। এছাড়াও এলাকার অধিকাংশ চাষিরা বলছেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পরিবেশ বান্ধব কৌশলে শাকসবজি উৎপাদন বেড়েছে। সেই সাথে বিষ মুক্ত নিরাপদ সবজির উৎপাদনও বেড়েছে। যে কারণে সবজি ব্যবসায়ীরা গ্রাম থেকে শিম সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া শিম চাষের উপযোগী। এ অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ায় কম খরচে বেশি শাকসবজি উৎপাদন সম্ভব। এ উপজেলার চাষিরা এখন নানা প্রযুক্তির মাধ্যমে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এছাড়াও উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন সবসময় চাষিদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৪, ২০২৪ ২:০৯ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে নারীদের জলবায়ু সহনশীল জলজ খাদ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক কর্মশালা ঢাকায় অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনুঃ বাংলাদেশে কম বয়সী নারী ও বালিকাদের স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য জলবায়ু-সহনশীল জলজ খাদ্য ব্যবস্থা’ (অ্যাকোয়াফুড) শীর্ষক প্রকল্পের স্টেকহোল্ডার মত বিনিময় এবং উদ্বোধনী কর্মশালা রবিবার ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার গুলশানে অবস্থিত হোটেল লেক ক্যাসেলে
এই স্টেকহোল্ডার উদ্বোধনী কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জনাব মোঃ আব্দুর রহমান এমপি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিরেক্টর ফর নিউট্রিশন, সিজিআইএআর ড. শকুন্তলা থিলস্টেড। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ দিদার-উল-আলম।


কর্মশালায় বিদেশী অতিথি, ড. নান্না রুস, অ্যাকুয়াফুড প্রকল্পের প্রধান গবেষক এবং সমন্বয়কারী, প্রফেসর ড. ডেভিড লিটিল, ইউনিভার্সিটি অফ স্টার্লিং, যুক্তরাজ্য, প্রফেসর ড. বাউকি ডি রুস, ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাবারডিন, যুক্তরাজ্য; বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উন্নয়ন বিশেষজ্ঞগণ, উদ্যোক্তাবৃন্দ, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগের শিক্ষক এবং একোয়াফুড প্রজেক্ট এর বাকৃবি পার্টের পিআই প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক ।বক্তব্য রাখেন একোয়াফুড প্রজেক্ট এর বাকৃবি একোয়াকালচার বিভাগের কো-পিআই প্রফেসর ড. এম. এ. সালাম, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পার্টের পিআই প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ-আল মামুন, আইসিডিডিআরবির পার্টের পিআই ড. গুলশান আরা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জনাব মোঃ আব্দুর রহমান এমপি বলেন , জলজ খাবার বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং অর্থনীতি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ ২০১৮ সালে অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে, একোয়াকালচারে ৫ম এবং সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদনে ১১তম স্থান অর্জন করেছে। এ কারণে আমরা মৎস্য খাতকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে আমরা গুরুত্ব দিয়ে আসছি।বাকৃবি ভিসি বলেন ,প্রকল্পের মাধ্যমে ইন্টারডিসিপ্লিনারি গবেষণার মাধ্যমে তথ্য ও জ্ঞানের ঘাটতিগুলো পূরণ করবে। স্টেকহোল্ডার এবং নীতিনির্ধারকদের অবগত করার জন্য আরও নতুন জ্ঞান তৈরি করবে। চিংড়ি এবং চিংড়ির মতো মূল্যবান প্রজাতিগুলি মূলত রপ্তানির জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে ঘেরে চাষ করা হয়। মজার বিষয় হল, এই উচ্চ-মূল্যের সীফুড আইটেমগুলো অভ্যন্তরীণ বাজার এবং স্থানীয় ব্যবহারের জন্য মাছের মিশ্রচাষ পদ্ধতির মাধ্যমে উৎপাদিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগের শিক্ষক এবং একোয়াফুড প্রজেক্ট এর বাকৃবি পার্টের পিআই প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন , বাংলাদেশে মৎস্য খাতে তিনটি মূল উপাদান রয়েছে, যেমন: অভ্যন্তরীণ ক্যাপচার ফিশারিজ, একোয়াকালচার এবং সামুদ্রিক ক্যাপচার ফিশারিজ। ২০২১-২২ অর্থবছরে সমগ্র মৎস্য খাত থেকে মোট মাছের উৎপাদন ৪.৭৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন ছুঁয়েছে, যা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৪.৫৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন উৎপাদনের ভিশন ২০২১ লক্ষ্যকে অতিক্রম করেছে। অধিকন্তু, একাধিক উন্নয়ন উদ্যোগ চলমান রয়েছে, যার লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে ৬.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৮.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। মৎস্য খাত জাতীয় জিডিপিতে ২.০৮% এবং কৃষি জিডিপিতে প্রায় ২১.৮৩% অবদান রাখে। গত এক দশকে গড় বৃদ্ধির হার ৫.৪৩%।

একোয়াফুড প্রকল্প যে বিষয়টিকে গুরুত্ত্ব দিয়েছে তা হলো জলজ খাবার বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং অর্থনীতি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের সমৃদ্ধ উপকূলীয় এবং নদীমাতৃক ইকোসিস্টেম ঐতিহ্যগতভাবে মৎস্য আহরণের ব্যাপক সূযোগ করে দিয়েছে, এবং মৎস্য চাষকে দ্রুত সম্প্রসারনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।।তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্য, সামাজিক পক্ষপাত, বাল্যবিবাহ এবং কম বয়সে গর্ভাবস্থার সম্মুখীন কিশোরী ও যুবতীরা বিশেষভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কার্যকর স্থানীয় পদক্ষেপ এবং নীতি বাস্তবায়নের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জলজ খাদ্য উৎপাদন, পুষ্টি এবং জনস্বাস্থ্যের মধ্যে খাতগত বৈষম্য সমন্বিত নীতিমালাগুলো বাস্তবায়নে আরও বাধা দেয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাকে সীমিত করে তোলে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এবং আইসিডিডিআরবির যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ড্যানিডা অর্থায়ন করেছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop