ইউটিউব দেখে মুরগির খামার, চাকরির পাশাপাশি বিকল্প আয়ের খোঁজে কবির
পোলট্রি
করোনা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। আর এই সংক্রমণে বিশ্বের পুরো অর্থনৈতিক অবস্থা হয়ে আছে কোণঠাসা। সেখান থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। বাংলাদেশের অনেক মানুষ অর্থনৈতিক শূণ্যতায় আছেন করোনার এই ক্রান্তিকালে। হারিয়েছেন অনেকে চাকরি, লস হয়েছে আর হচ্ছে ব্যবসায়। ঠিক এমন ক্রান্তিকালে মুরগির খামারের দিকে ঝুঁকছেন অনেক যুবক। তেমনি একজন হলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বালিয়াডাঙ্গী থানা লাহিড়ী গ্রামের সানাউল কবির। তিনি চাকরির পাশাপাশি খামার করতে চান ভাগ্য বদল। এগ্রিভিউ২৪.কম এর একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে আসে তার খামারে ঝুঁকার নানাবিধ দিক।
ঢাকায় চাকরি করেন সানাউল কবির। করোনায় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় দেখে খুঁজতে থাকেন উদ্যোক্ত হওয়ার পথ। ঘাঁটতে থাকেন ইউটিউব এবং দারস্থ হোন পরমর্শের জন্য অনেকের। সর্বশেষ দেখলেন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন এবং সঠিক পরিচর্যায় বেশি লাভবান হওয়ার অন্যতম উপায় মুরগির খামার। এতে একদিকে যেমন পাওয়া যাবে মুরগির মাংস আর অন্যদিকে পাওয়া যাবে পুষ্টিকর ডিম। হওয়া যাবে স্বাবলম্বী। এমন উদ্যোগ থেকেই তিনি গত ১২ মার্চ থেকে সাড়ে ১৭ হাজার টাকার ৫০০ বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন ফাউমি মুরগির খামার। আজ প্রায় ৪০ দিন হয় তার খামারের বয়স।
শুরুর প্রায় ৪৫ দিনে আপনার খামারের কোন মুরগি মারা গিয়েছে? এমনটি জানতে চাইলে তিনি এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে জানান, প্রথমে খামারে মুরগি তোলার সময় কয়েকটা বাচ্চা মারা গিয়েছে। আর এখন অবধি প্রায় ১০-১৫টার মত মুরগি মারা গিয়েছে। এছাড়া আর কোন ক্ষতি হইনি।
এত ব্যবসা থাকতে আপনি খামারের দিকে ঝুঁকলেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মূলত আমি খুব অল্প বয়সে বিয়ে করি। আর আমার স্ত্রী‘কে আমার পরিবার এখনও মেনে নেয়নি। সেই সুবাদে পরিবার থেকে সাপোর্ট না পেয়ে স্ত্রীকে নিয়েই খামার শুরু করি। আর এতে আমি মনে করি,খামার করে একদিকে নিজে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। অন্যদিকে পাওয়া যাবে মুরগির মাংস। যা সবার জন্য উপকারী। আর পুষ্টিকর ডিম সবার জন্য দরকার। এবং মুরগি আর ডিম মানুষের নিত্য খাবারের তালিকায় পড়ে। মানুষ ডিম আর মুরগির মাংসের দিকে ঝোঁক বেশি। আর প্রতিদিন অন্যকিছু বেচা-কেনা হোক বা না হোক মুরগি আর মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। তাই নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার নেশায় আর পুষ্টিকর মাংস আর ডিম উৎপাদনের জন্য আামি খামারে দিকে ঝুঁকি।
নতুন খামার করতে গিয়ে পরিবার থেকে সাপোর্ট পাচ্ছেন কেমন? সানাউল কবির বলেন, পরিবার বলতে আমার একটা সন্তান এবং আমার স্ত্রী আছে। আমি এখনও চাকরি করি। মূলত খামারের বেশির ভাগ দেখা-শোনা আমার স্ত্রী করে। আমার ছোট মেয়েটিও তাকে সহযোগিতা করে। আর আমি যখন ঢাকা থাকি তখন আমি বিজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে স্ত্রীকে মোবাইলেই বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকি। বলতে পারেন আমার খামার বেশির ভাগ আমার স্ত্রী পরিচর্যা করে।
এই পেশায় লেগে থাকতে পারবেন? জ্বি-ইনশাআল্লাহ, আমি এই পেশায় লেগে থাকার জন্যই নেমেছি। সবার সঠিক পরামর্শ আর অনুপ্রেরণা পেলে আমি এতে লেগে থাকবো। এবং এই সেক্টরে ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।
আপনার গ্রামে মুরগি খামার কেমন? এমন প্রশ্নে তিনি এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে বলেন, আমাদের চারপাশে কোন খামারী নেই। এখানে আমি কেবল একা। সাহস করে আমি শুরু করেছি। ইউটিউব দেখে দেখে শিখেছি কিভাবে খামার করতে হয়, কিভাবে পরিচর্যা করতে হয়। আর সেখান থেকে দেখেই খামার করা। এখন এই লাইনে যারা বিজ্ঞ আছেন তাদের সাথে পরামর্শ করে খামারকে আর উন্নতির দিকে নেয়ার চেষ্টায় আছি।
এগ্রিভিউ২৪.কম: আপনার জন্য শুভ কামনা।
কবির: এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে ধন্যবাদ।