ভারতীয় গরুর প্রবেশ নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা!
প্রাণিসম্পদ
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারিদের মাঝে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সারাদেশে খামারিরা তাদের গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তেমনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১২ হাজার খামারি প্রায় সাড়ে প্রায় সোয়া লাখ গবাদিপশু প্রস্তুত করেছে আসন্ন কোরবানির জন্য।
এত কষ্ট করে কোরবানির পশু প্রস্তুত করা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খামারিদের অনেকে জানায়, সীমান্তবর্তী এই জেলায় ভারতীয় গরুর আধিক্য ঠেকানো না গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। এছাড়া ভারতীয় গরু এবং সঙ্গে আসা লোকদের মাধ্যমে ছড়াবে করোনা। ত
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের নয়নপুর গরু বাজারে আসা প্রায় শতভাগ গরু ভারতীয়। এসব গরু সীমান্তের বিভিন্ন পকেট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গরুর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় নাগরিকেরাও এ দেশে গরু নিয়ে প্রবেশ করছেন। ফলে করোনার ভারতীয় ধরন আরও বড় আকারে ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যতম বড় খামার নিউ প্রিন্স ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. নাসির উদ্দিন জানান, বাজারে স্বাস্থ্যসম্মত মোটাতাজা গরু সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করছেন। তার খামারে বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। এর মধ্যে শাহিওয়াল, ফাইটার, নেপালী ঘির, রাজস্থানি, ওয়েস্টার্ন ফ্রিজিয়ান, উরবারী ষাঁড়, গইয়াল এবং মহিষ রয়েছে। সবমিলিয়ে অন্তত আড়াই শতাধিক গবাদি পশু রয়েছে। এর মধ্যে তিনি এ বছর ১২৮টি গরু-মহিষ বাজারজাতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার খামারে দেড় লাখ থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে।
তার প্রত্যাশা বাজারে ভারতীয় গরুর আধিক্য না থাকলে ১২৮টি গরু অন্তত চার কোটি টাকা বিক্রি করতে পারবেন। সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারে যেন ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। অন্যথায় গত দুই বছর ধরে খামারিরা লোকসান দিয়ে আসছেন। এ বছরও যদি লোকসান হয় তাহলে খামারিরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
আরেকজন খামারি জানান, আমরা খামারিরা গরুর যত্ন নিয়ে বাজারজাতের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি, এবার কোরবানির ঈদে গরুর ভালো দাম পাবো। ভারত থেকে যদি গরু আসে, তাহলে আমরা ন্যায্য মূল্য পাবো না। আমাদের লোকসানের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। আর ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম সাইফুজ্জামান জানান, ইতোপূর্বে প্রতি উপজেলা থেকে ২০ জন করে মোট ১৮০ জন খামারিদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খামার গড়ে তুলেছেন। সীমান্ত অঞ্চলে ভারতীয় গরুর প্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিবিকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। কারণ ভারতীয় গরু আনা নেওয়ার সময় লোকজন আসা যাওয়া করবে। এতে করে করোনা ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এক লাখ সাত হাজার গরু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে এক লাখ ২৪ হাজার ৭২৭টি গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।