৩:৩৭ অপরাহ্ন

সোমবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ডিসেম্বর ১০, ২০২২ ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
হাসপাতালের পতিত জমিতে সবজি চাষ
কৃষি বিভাগ

্গো্পালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পাঁচ একর পতিত জমিতে সবজি, ফল ও ফুলের আবাদ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি ও ফল উৎপাদন করে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা হবে।
হাসপাতালের সামনের ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফুল ও পরিবেশবান্ধব ঔষধি গাছের চারা রোপণ করেছে।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে মোট ১৫ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে স্থাপনা ও রাস্তা প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে। পতিত ছিল পাঁচ একর। এ জমির আগাছা পরিস্কার করা হয়েছে। এখানে কলাবাগান, লাউ, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, শিম ও সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এখন কপিসহ শীতের সবজির আবাদ চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আমার ক্যাম্পাস সবজি, ফল ও ফুলে সুশোভিত হয়ে উঠবে।

ডা. নাহিদ বলেন, ‘সবজি ও ফল উৎপাদনে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করব না। জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহূত হবে। মানবদেহের জন্য নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে আমরা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। আমাদের দেখাদেখি আরও অনেকে এমন চাষাবাদে উৎসাহী হবেন।’
কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, ‘বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালের উদ্যোগটি চমৎকার। এটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। চক্ষু হাসপাতাল দেখিয়ে পতিত জমিতে এভাবে চাষাবাদ করতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে উদ্বুদ্ধ করব।’

হাসপাতালসংলগ্ন ঘোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা চৌধুরী আবেদ হোসেন বলেন, ‘তাঁরা সফল হলে আমরাও পতিত জমিতে সবজি ও ফল উৎপাদন করব।’
বদর উদ্দিন অহমেদ বলেন, হাসপাতালের পরিচালকসহ সবাই শ্রম দিচ্ছেন। পরিচর্যা করছেন। হাসপাতাল-ক্যাম্পাসজুড়ে কৃষিকাজের উৎসব সৃষ্টি হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৯, ২০২২ ৮:০৪ অপরাহ্ন
বরিশালে কচুফসলের আবাদ বিষয়ক এসএএও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালে কচু ফসলের উন্নত জাত ও উৎপাদন বিষয়ক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রহমতপুরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের হলরুমে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। কন্দালফসল গবেষণা কেন্দ্র এবং আরএআরএসর যৌথ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) ড. মহা. বশিরুল আলম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের (আরএআরএস) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল চন্দ্র কুন্ডু এবং কন্দালফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোশাররফ হোসেন মোল্লা।

আরএআরএসর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে রাখেন ভাসমান কৃষি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া, পিএসও ড. মো. আলিমুর রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কচু একসময়ে অবহেলিত হলেও এখন অনেকের পছন্দের সবজি। এর বেশ কয়েকটি উন্নত জাত রয়েছে। এগুলোর ফলন আশানুরূপ। তাই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এসব জাত এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি কৃষকের দ্বারে সময়মত পৌঁছাতে হবে। তবেই হবে জনকল্যাণকর। হবে উৎপাদন বৃদ্ধি।
দিনব্যাপি এই প্রশিক্ষণে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা, উধর্বতন বৈজ্ঞানিক সহকারি এবং বৈজ্ঞানিক সহকারি মিলে ৩০ জন অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৯, ২০২২ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
ভাসমান সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন মাদারিপুরের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কৃষকরা জলাবদ্ধ পতিত জমিতে ভাসমান ধাপ পদ্ধতিতে ফসলের চারা উৎপাদন ও চাষাবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। কৃষকরা সফলতা পাওয়ায় দিন দিন এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাসমান পদ্ধতিতে কৃষকরা রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়া শুধু জৈব সার ব্যবহার করে চারা উৎপাদন ও সবজি চাষ করছেন। এপদ্ধতিতে অধিক ফলন ও সবজির বাজারদর ভালো থাকায় অল্প খরচেরই কৃষকরা লাভবান হতে পারছেন। তাই এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ কৃষককের মাঝে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

জানা যায়, জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা এবং পর্যায়ক্রমে শ্যাওলা, দুলালীলতা, টোপাপানা, কুটিপানা, কলমিলতা, জলজ লতা স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই থেকে তিন ফুট পুরু করে ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়। তারপর সামান্য ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি বাঁশ, নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া, তুষ, নৌকা প্রভৃতি প্রয়োজন হয়। প্রায় ১০ দিনের মধ্যেই ধাপ চাষের উপযোগী হয়।

জানা যায়, কৃষকরা ভাসমান পদ্ধতিতে লাউ, শসা, করলা, মিষ্টিকুমড়াসহ আরো বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। তাদের ভাসমান বেডে সারি সারি ভাবে ঝুলছে সবজি। অনেকে আবার বেডের নিচে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক চাষ করছেন। চাষিদের সফলতায় দিন দিন এই পদ্ধতিতে চাষ বাড়ছে।

রমজানপুর ইউনিয়নের চরপালরদি গ্রামের কৃষক শাহীন রাড়ী বলেন, আমি এই পদ্ধতিতে গত ৫ বছর যাবত বিভিন্ন সবজি চাষ করছি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহায়তা নিয়ে ৩৪ শতাংশ জমিতে ৩০টি বেডে এবং ১৭টি মাদা আকারে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছি। সবজি চাষে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫-৬ হাজার টাকার শসা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, করলা, লাল শাক বিক্রি করছি। ইতোমধ্যে ৯০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি। আশা করছি আরো প্রায় ২ লাক টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবো।

পাশের এলাকার কায়কোবাদ শামীম বলেন, ভাসমান পদ্ধতিতে জৈব সার দিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে। অন্যান্য চাষিদের মাচায় দেখলাম সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তাই আমিও আমার বাড়িরে পাশের পতিত জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষ করার পরিকল্পনা শুরু করেছি।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার তানভীর হাসান বলেন, আমরা কৃষককের মাঝে প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করছি। ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে কোনো প্রকার রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করা হয়না। ভাসমান ধাপ পদ্ধতিতে সবজি চাষ কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় এলাকার প্রায় ৪০টি পরিবার এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে। এই পদ্ধতিতে সবজির উৎপাদন বেশি হয়। আর সবজির বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের নিয়মিত সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অল্প খরচে লাভ বেশি হয় বলে কৃষকরা এই পদ্ধতিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৭, ২০২২ ৭:০২ অপরাহ্ন
ভালো লাভ হওয়ায় কচু চাষের দিকে ঝুকছেন মিরসরাইয়ের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

কচু চাষে ব্যাপক সফলতার পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন চট্টগ্রাম মিরসরাই পৌরসভার প্রান্তিক চাষিরা। স্থানীয় বাজারসহ সারাদেশে কচুর চাহিদা থাকায় কচু চাষে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চাষি যুক্ত হচ্ছেন। কৃষক হারুন বলেন, এবছর তিনি ১০০ শতক জমিতে কচু চাষ করেছেন। অন্যের চাষকৃত আরো ৭০ শতক জমি কিনেছেন তিনি। ইতোমধ্যে ১২০ শতক জমির কচু বিক্রি শুরু করেছেন। ১২০ শতক থেকে কচু বিক্রি করেছেন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকার।

হারুনের পাশাপাশি উপজেলার আরো অনেক কৃষক এই কচু চাষের সাথে জড়িত আছেন। উপজেলায় কচু চাষ করে অধিকাংশ কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।

চাষি আবুল হোসেন বলেন, মিরসরাই উপজেলার ‍অন্যান্য গ্রামের থেকে আমাদের গ্রামে কচুর চাষ বেশি হয়। এবছর ২৫ শতক জমিতে কচুর চাষ করেছি। ২২ হাজার টাকার কচুর ফুল ও লতিই বিক্রি করেছি। আর বাকি জমি ৬৫ হাজার টাকায় অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ জমি চাষে খরচ ৪০ হাজার টাকা হয়েছিল।

মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, উপজেলায় এবার ১৫০ একর জমিতে কচু চাষ করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষ হলেও সর্বোচ্চ চাষ হয় মিরসরাই পৌরসভা ও মঘাদিয়া ইউনিয়নে। এসব এলাকার কৃষকরা কচু চাষে ভালো করেছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ৫:৫৯ অপরাহ্ন
শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত ঝালকাঠির চাষিরা
কৃষি বিভাগ

ঝালকাঠিতে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকেরা জমিতে চারা পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার করা ও পানি দেয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। ভালো দাম পেতে আগাম শাক-সবজির চাষে ঝুকছে কৃষকরা। ঝালকাঠিসহ পাশের জেলাগুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাচ্ছেন এ জেলার কৃষকেরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষি কাজে তৎপরতার সাথে অংশগ্রহণ করছেন। ঝালকাঠি জেলার ৪ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এখনও পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন শাক-সবজির চারা।

জানা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিমগাছ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লালশাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। তাই মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল অবধি মাঠে থেকে চারার গোড়ায় পানি ঢেলে সবাই বাড়ি ফিরছেন। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন নিড়ানি। কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। কেউ আবার নেতিয়ে পড়া চারার স্থলে সতেজ চারা প্রতিস্থাপন করছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। বেড়েই চলছে কৃষকদের কাজের চাপ।

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ৩৬ গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে প্রতিবছরই শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়। পুরুষের পাশাপাশি এ সবজি চাষে বিপ্লবে অবদান রেখেছেন নারীরা। এর মধ্যে সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে ১২ মাসই সবজির চাষ হয়।

এখানে সম্মিলিতভাবে নারী-পুরুষ মাঠে চাষবাস করেন। পুরুষরা তাদের সঙ্গে সহায়তা করেন এবং বাজারজাতের কাজ করেন। এসব এলাকার পাঁচ হাজার পরিবার এখন সবজি চাষ করে তাদের জীবিকা চালায়। কৃষিবিভাগ এই সবজি চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সদর উপজেলায় রবি মৌসুমে তিন হাজার একশ হেক্টর জমিতে এবং গ্রীষ্মকালীন সময় এক হাজার দুইশ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়ে থাকে। রবি মৌসুমে ৪৩ হাজার চারশ মেট্রিক টন এবং গ্রীষ্মকালীন সময় ১৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয় হয়। যা দিয়ে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, গ্রামগুলোর উৎপাদিত শাক-সবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে ঢাকা ও বরিশালে চালান হচ্ছে। পদ্মা সেতুর সুবাদে এখন গ্রাম ঘুরে ঘুরে পাইকারেরা ক্ষেত থেকে সবজি সংগ্রহ করে চালান করেন বড় বাজারে। অনেক সময় পরিমাণে অল্প হলেও হাটে সবজি বিক্রি করতে নিয়ে যান নারীরাই।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, এবার শীতকালীন শাকসবজিসহ সব রকমের ফসলের ভালো ফলন হচ্ছে। প্রান্তিক চাষিদের মাঝে শীতের শাকসবজির মানসম্পন্ন বীজ এবং সার দেওয়া হয়েছে। আশা করি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ এবং উৎপাদন হবে। তিনি আরো বলেন, গ্রামগুলোতে কৃষক-কৃষাণিদের প্রণোদনা ও পরামর্শ দেওয়াসহ নানাভাবে কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করে আসছে। কৃষিক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা আরো মজবুত করছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
৩ মৌসুমেই করতে পারেন কলা চাষ
কৃষি বিভাগ

কলা উপকারী ফল। সকাল-সন্ধ্যার নাস্তায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কলার চারা বছরে ৩ মৌসুমে অর্থাৎ প্রথমত আশ্বিন-কার্তিক, দ্বিতীয়ত মাঘ-ফাল্গুন এবং তৃতীয়ত চৈত্র-বৈশাখ মাসে রোপণ করা যায়। তাহলে আসুন জেনে নেই কলা চাষের নিয়ম-

মাটি
কলা চাষের জন্য পর্যাপ্ত রোদযুক্ত ও পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা সম্পন্ন উঁচু জমি উপযুক্ত। উর্বর দো-আঁশ মাটি কলা চাষের জন্য উত্তম।

গর্ত তৈরি
জমি ভালোভাবে গভীর করে চাষ করতে হয়। দুই মিটার দূরে দূরে ৬০*৬০*৬০ সেন্টিমিটার আকারের গর্ত খনন করতে হয়। চারা রোপণের মাসখানেক আগেই গর্ত খনন করতে হয়। গর্তে গোবর ও টিএসপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত বন্ধ করে রাখতে হয়।

রোপণ
কলার চারা বছরে ৩ মৌসুমে অর্থাৎ প্রথমত আশ্বিন-কার্তিক, দ্বিতীয়ত মাঘ-ফাল্গুন এবং তৃতীয়ত চৈত্র-বৈশাখ মাসে রোপণ করা যায়।

চারা রোপণ
রোপণের জন্য ‘অসি তেউড়’ উত্তম। অসি তেউড়ের পাতা সরু, সূচালো এবং অনেকটা তলোয়ারের মত, গুড়ি বড় ও শক্তিশালী এবং কাণ্ড ক্রমশ গোড়া থেকে উপরের দিকে সরু হয়। তিন মাস বয়স্ক সুস্থ তেউড় রোগমুক্ত বাগান থেকে সংগ্রহ করতে হয়। সাধারণত খাটো জাতের গাছের ৩৫-৪৫ সেন্টিমিটার ও লম্বা জাতের গাছের ৫০-৬০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের তেউর ব্যবহার করা হয়।

সার
কলা চাষের জন্য প্রতি গর্তে গোবর-আবর্জনা সার ১৫-২০ কেজি, টিএসপি ২৫০-৪০০ গ্রাম, এমপি ২৫০-৩০০ গ্রাম এবং ইউরিয়া ৫০০-৬৫০ গ্রাম করে দিতে হবে।

সার প্রয়োগ
সারের ৫০% গোবর জমি তৈরির সময় এবং বাকি ৫০% গর্তে দিতে হয়। এসময় অর্ধেক টিএসপি গর্তে প্রয়োগ করা হয়। রোপণের দেড়-দুই মাস পর ২৫% ইউরিয়া, ৫০% এমপি ও বাকি টিএসপি জমিতে ছিটিয়ে ভালোভাবে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এর দুই-আড়াই মাস পর গাছপ্রতি বাকি ৫০% এমপি ও ৫০% ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। ফুল আসার সময় অবশিষ্ট ২৫% ইউরিয়া জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

পরিচর্যা
চারা রোপণের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা না থাকলে তখনই সেচ দেওয়া উচিত। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে ১৫-২০ দিন অন্তর সেচ দেওয়া দরকার। বর্ষার সময় কলা বাগানে যাতে পানি জমতে না পারে তার জন্য নালা থাকা আবশ্যক। মোচা আসার আগে গাছের গোড়ায় কোন তেউড় রাখা উচিত নয়। মোচা আসার পর গাছপ্রতি মাত্র একটি তেউড় বাড়তে দেওয়া ভালো।

কলা সংগ্রহ
রোপণের পর ১১-১৫ মাসের মধ্যেই সাধারণত সব জাতের কলা পরিপক্ক হয়ে থাকে। এতে প্রতি হেক্টরে ১২-১৫ টন ফলন পাওয়া যায়।

পানামা রোগ
এটি ছত্রাক জাতীয় মারাত্মক রোগ। এর আক্রমণে প্রথমে বয়স্ক পাতার কিনারা হলুদ হয়ে যায় এবং পরে কচি পাতাও হলুদ রং ধারণ করে। পরবর্তীতে পাতা বোটার কাছে ভেঙে গাছের চতুর্দিকে ঝুলে থাকে এবং মরে যায়। কিন্তু সবচেয়ে কচি পাতাটি গাছের মাথায় খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অবশেষে গাছ মরে যায়। কোন কোন সময় গাছ লম্বালম্বি ভাবে ফেটেও যায়। অভ্যন্তরীণ লক্ষণ হিসেবে ভাসকুলার বান্ডেল হলদে-বাদামি রং ধারণ করে।

প্রতিকার
আক্রান্ত গাছ গোড়াসহ উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত গাছের তেউড় চারা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

বানচি-টপ
এ রোগের আক্রমণে গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং পাতা গুচ্ছাকারে বের হয়। পাতা আকারে খাটো, অপ্রশস্থ এবং উপরের দিকে খাড়া থাকে। কচি পাতার কিনারা উপরের দিকে বাঁকানো এবং সামান্য হলুদ রঙের হয়। অনেক সময় পাতার মধ্য শিরা ও বোটায় ঘন সবুজ দাগ দেখা যায়। পাতার শিরার ঘন সবুজ দাগ পড়ে।

প্রতিকার
আক্রান্ত গাছ গোড়াসহ উঠিয়ে ফেলতে হবে। গাছ উঠানোর আগে জীবাণু বহনকালী ‘জাব পোকা’ ও ‘থ্রিপস’ কীটনাশক ওষুধ দ্বারা দমন করতে হবে। সুস্থ গাছেও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।

সিগাটোকা
এ রোগের আক্রমণে প্রাথমিকভাবে ৩য় বা ৪র্থ পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। ক্রমশ দাগগুলো বড় হয় ও বাদামি রং ধারন করে। এভাবে একাধিক দাগ মিলে বড় দাগের সৃষ্টি করে এবং তখন পাতা পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়।

প্রতিকার
আক্রান্ত গাছের পাতা পুড়ে ফেলতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর গাছে ছিটাতে হবে।

বিটল পোকা
কলার পাতা ও ফলের বিটল পোকা কলার কচি পাতায় হাঁটাহাঁটি করে এবং সবুজ অংশ নষ্ট করে। ফলে সেখানে অসংখ্য দাগের সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত আক্রমণে গাছ দুর্বল হয়ে যায়। কলা বের হওয়ার সময় হলে পোকা মোচার মধ্যে ঢুকে কচি কলার উপর হাঁটাহাঁটি করে এবং রস চুষে খায়। ফলে কলার গায়ে দাগ হয়। এসব দাগের কারণে কলার বাজারমূল্য কমে যায়।

প্রতিকার
পোকা-আক্রান্ত মাঠে বার বার কলা চাষ করা যাবে না। কলার মোচা বের হওয়ার সময় ছিদ্রবিশিষ্ট পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। প্রতি ১ লিটার পানিতে ১ গ্রাম সেভিন ৮৫ ডব্লিউ পি মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার গাছের পাতার উপরে ছিটাতে হবে। ম্যালথিয়ন বা ডায়াজিনন ৬০ ইসি বা লিবাসিড ৫০ ইসি ২ মিলি হারে ব্যবহার করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৫, ২০২২ ৫:২৯ অপরাহ্ন
পোরশায় ড্রাগন চাষে বছরে আয় কোটি টাকা
কৃষি বিভাগ

নওগাঁর সীমান্তবর্তী পোরশা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কাট-পুকুরিয়া গ্রামে ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করে তাক লাগিয়েছেন উদ্যোক্তা আব্দুর রহমান শাহ। তিনি উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের পোরশা গ্রামের বাসিন্দা। আব্দুর রহমান একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। পাশাপাশি কৃষির সঙ্গেও জড়িত। এ বাগান থেকে এ বছর প্রায় ১ কোটি টাকার ফল বিক্রির আশা করছেন তিনি। এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৪০ জন নারী-পুরুষের।

বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, আম বাগানের মাঝখানে ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান। প্রায় ৫ ফুট উচ্চতায় কংক্রিটের খুঁটির ওপর টায়ার (চাকা) পেঁচিয়ে ও চায়না (রড) পদ্ধতিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফলের গাছ। প্রতিটি গাছে ১৫-২০টি করে ফুল ধরেছে। ফুল থেকে ৪-৫টি করে কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা ফল ঝুলে আছে। বাগানে কাজ করছিলেন নারী-পুরুষ মিলে ২৫-৩০ জন। কেউ গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করছিলেন। কেউ কোদাল দিয়ে মাটি আগলা করছেন। কেউ বা ফল ওজন করে ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। নারী শ্রমিকরা নিড়ানি দিয়ে ঘাস পরিষ্কার করছিলেন।

জানা গেছে, বছরের যে কোনো সময় ড্রাগন চারা রোপণ করা যায়। সব ধরনের মাটিতেই চাষযোগ্য। তবে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। ৩ মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। কংক্রিট বা বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে দিতে হয়। গাছের বয়স ১ থেকে দেড় বছর হলে ফুল আসে। ফুল আসার ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন ২০০-৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। উঁচু মাটিতে ভালো ফলন হয়। একটি ড্রাগন গাছ পরিপক্ক হতে ৩-৪ বছর সময় লাগে। পরিপক্ক প্রতিটি গ্রাছে ৩০-৪০টি ফল ধরে। ড্রাগন চাষে পরিশ্রম বেশি। তবে অন্য ফল-ফসলের চেয়ে লাভজনক বলে মনে হয়।

জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। আব্দুর রহমান শাহের বাগান দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ এবং ড্রাগন ফল চাষ অব্যাহত থাকলে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা।

নারী শ্রমিক আদরি পাহান বলেন, ‘১২ জন নারী শ্রমিক আব্দুর রহমানের বাগানে কাজ করেন। সারাবছরই তারা কাজ করেন। ফলের মৌসুমে চাপ বেশি থাকায় ২৫০ টাকা এবং অন্য মৌসুমে ২০০ টাকা মজুরি পান। স্বামীর পাশাপাশি বাগানে কাজ করে বাড়তি আয় হয়।’

গোপালপুর গ্রামের শ্রমিক মুনছুর আলী, মামুনুর রশিদ ও লেলেঙ্গাহার গ্রামের মনোরঞ্জন পাহান বলেন, ‘৩ বছর ধরে বাগানে কাজ করছেন। আগাছা পরিষ্কার, সার ও কীটনাশক স্প্রে এবং পানি দেওয়ার কাজ করতে হয়। মজুরি পান দিনে ৩০০ টাকা। ফলের মৌসুমে বেশি শ্রমিক কাজ করে।’

নাটোর থেকে পরামর্শ নিতে আসা শাফিউল ইসলাম বলেন, ‘পড়াশোনা শেষ করে উদ্যোক্তা হতে চাই। বাগান দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আমার কাছে খুবই লাভজনক মনে হয়েছে।’

বাগানের ম্যানেজার শাহ জামাল বলেন, ‘প্রথমে ৮ বিঘা জমিতে ৮ হাজার চারা দিয়ে শুরু করা হয়। জমিতে চারা রোপণের ৭ মাস পর ২-১টা করে ফুল আসে। গাছের বয়স ১ বছর হলে বিক্রি শুরু হয়। দ্বিতীয় বছরে বেশি ফল আসে। বিঘায় প্রায় ১ লাখ টাকার মতো ফল বিক্রি হয়। পরের বছর আরও ১৬ বিঘায় চারা রোপণ করা হয়। মোট ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১০-১৫ দিন পরপর ২০ মণ করে প্রায় ২০০ মণ ফল উঠানো হয়। পাইকারি দরে প্রকারভেদে ২০০-২৫০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হয়। ৭ মাস ফল পাওয়া যায়। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ হবে। এ বছর বাগান থেকে প্রায় কোটি টাকার মতো ফল বিক্রি হবে। ফলের মৌসুমে খরচ হবে মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা। এছাড়া বাকি সময় সার, ওষুধ, শ্রমিক ও পরিচর্যায় খরচ হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে। সে হিসেবে মাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা করে বছরে খরচ ৩০ লাখ টাকা।’

বাগান মালিক আব্দুর রহমান শাহ বলেন, ‘২০১৭-২০১৮ সালে আমের দাম কম থাকায় গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর সেখানে বরই বাগান করার পরিকল্পনা ছিল। পরে নওগাঁ শহরের বন্ধু মাহাবুবের সঙ্গে আলোচনা করি। তিনি ড্রাগন চাষের পরামর্শ দিলেন। পরে যশোর থেকে ২০১৮-২০১৯ সালে প্রতিটি ড্রাগন চারা ৩০-৩৫ টাকা পিস হিসেবে কিনে আনি। ২৪ বিঘা জমিতে প্রায় ৪৫ হাজার পিস ড্রাগন চারা লাগানো হয়। প্রথম বছর প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। এখন বাগান থেকে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে জমিগুলো ইজারা নেওয়া হয়েছে। এজন্য টাকাও কম লেগেছে। এখন ড্রাগন চাষ সারাদেশেই হচ্ছে। উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। লাভের পরিমাণও কমে এসেছে। উৎপাদন বেশি হলে দামও কমে আসবে। সামনে আরও বাগান হবে। দাম ভালো না পেলে নতুন উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সরকার যদি উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়, তাহলে রপ্তানি করা সম্ভব।’

কাট-পুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলামও ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত দু’বছর আগে বাড়ির পাশে ৪০ শতাংশ জমিতে ড্রাগন চারা লাগিয়েছি। গাছে ফল আসা শুরু হয়েছে। আশা করছি লাভবান হওয়া যাবে। বরেন্দ্র এলাকায় পানি স্বল্পতার কারণে ধানের আবাদ ভালো না হওয়ায় এখন সবাই ফলের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন।’

উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাগানের বয়স প্রায় ৪ বছর। বাগান মালিককে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। জৈব সার ব্যবহারে বেশি পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সারও ব্যবহার করা হয়। এ উপজেলার ড্রাগন ফল সুমিষ্ট। ১ বিঘা জমিতে ১২০-১৪০ পিস ড্রাগন গাছ থেকে হেক্টরপ্রতি ৩০ টন ফল উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে।’

তিনি বলেন, ‘গাছে ফল আসার ১০-১৫ দিন পর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। না হলে ফুল ও ফল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ড্রাগনে রোগ-বালাই খুবই কম। খরা মৌসুমে পরিমিত সেচ দিতে হবে। যারা ড্রাগন বা যে কোনো ফল চাষে আগ্রহী; তারা বাগান মালিকের কাছ থেকে বা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে শুরু করবেন। না হলে মুখ থুবড়ে পড়ে আগ্রহ হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’ সৃত্র: জাগো নিউজ

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৫, ২০২২ ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
চিনা বাদাম চাষে খুশি বরগুনার চাষিরা
কৃষি বিভাগ

উপকূলীয় জেলা বরগুনায় বেড়েছে চিনা বাদাম চাষ। চলতি মৌসুমে চিনা বাদামের বাম্পার ফলেন পাশাপাশি ভালো দাম পেয়ে খুশি উপকূলীয় জেলা বরগুনার চাষিরা। তাছাড়া চাষিদের উৎপাদিত চিনা বাদাম স্থানীন চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে বরগুনা সদর উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া ২০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ বেড়েছে।

বাদাম চাষি হানিফ বলেন, এ বছর বাদামের চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় বিগত কয়েক বছরের চেয়ে লাভ বেশি হয়েছে। আশা করি আগামী বছর একটু বেশি জমিতে বাদাম চাষ করবো।

বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বরগুনায় বাদামের উল্লেখযোগ্য কিছু বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে দেশ ও বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমার কৃষকের কারিগরি পরামর্শ ও সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৪, ২০২২ ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
রংপুরে ফুলকপির বাম্পার ফলন
কৃষি বিভাগ

রংপুরের পীরগঞ্জে ফুলকপির বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা। এই অঞ্চলের কৃষকরা ফুলকপির পাশাপাশি অন্যান্য সবজির আবাদও করে থাকেন। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় ফুলকপি চাষ করে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

জানা যায়, আশা করছেন এবছর আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন। অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো বীজ বপনের পাশাপাশি সুষম সার ব্যবহারের কারণে পীরগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়নে এবার ফুলকপির ফলন ভালো হয়েছে। এতে লাভের আশায় মুখিয়ে আছেন তারা। এলাকার উৎপাদিত ফুলকপি চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফুলকপির চাহিদা থাকায় বাজারদরও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।

কৃষক নুরুল মিয়া জানান, আমি প্রতি বছর ফুলকপির আবাদ করি। আল্লাহর রহমতে ফুলকপির ভালো আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন বেশি হয়েছে। তবে এবছর খরচের পরিমানও বেশি হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকলে লাভবান হতে পারবো।

উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের কৈগাড়ী গ্রামের সবজি চাষি শরিফুল ইসলাম জানান, এবার আগাম জাতের ফুলকপির আবাদ করেছি। সার ও সেচে খরচ বেশি পড়েছে। বিশেষ করে কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় ধকল গেছে। তবে এই সবজির ফলন ভালো হওয়াতে কোনো আপসোস নেই। এখন ফুলকপি বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছি। বাজার ভালো হওয়ায় সারের খরচ কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রতিবছরই ফুলকপিসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির চাষ করে থাকেন। চাষিরা অত্যন্ত শ্রমজীবী। ফসল উৎপাদনে তাদের মধ্যে অলসতা নেই। তাই তারা সবজির ভালো ফলন পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন চাষিদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩, ২০২২ ১০:১৪ অপরাহ্ন
সরিষাবাড়ীতে সবজি চাষে সফল কৃষক সেলিম
কৃষি বিভাগ

সরিষাবাড়ীতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে সবজি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক নুরুল ইসলাম সেলিম। উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চর পোগলদিঘা গ্রামের মৃত মমতাজ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম সেলিম প্রতি বছরই সবজি চাষ করে সফল কৃষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চর পোগলদিঘা গ্রামের কৃষক সেলিম বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় ৬ বিঘা জমিতে টমেটো, করলা, শসা, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, লালশাক, ধনিয়া, রসুন, পাটশাক, পেপে, মাল্টা, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ চাষ করে সফল ও লাভবান হয়েছেন। জীবন-জীবিকায় ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা। তার এই সফলতা দেখে আশপাশের কয়েকজন কৃষক তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন সবজি চাষসহ অন্যান্য শীতকালীন আবাদে ঝুঁকছেন। প্রতিদিন ভোরে সেলিম ছুটে যান তার সবজি ক্ষেতে। সবজি দেখে বাড়ছে তার স্বপ্নপূরণের আশা।

নুরুল ইসলাম সেলিম বলেন, এবার শাকসবজি চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছরও উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগীতায় ৬ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ করেছি। ৬ বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার। এসব সবজি বিক্রি করে পুরো খরচ বাদ দিলে বিঘাপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করি।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প এলে আমরা একটি প্রকল্প কৃষক সেলিমকে দিই। এ প্রকল্পের বেগুন, টমেটো, মিষ্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করা সহজতর। এ অঞ্চলের মাটি সবজি চাষের উপযোগী। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সবসময় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের তদারকি ও বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এবারও বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভালো থাকায় কৃষক লাভবান হচ্ছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop