৭:৩৬ পূর্বাহ্ন

রবিবার, ১৭ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ১৬, ২০২২ ২:৩৩ অপরাহ্ন
শিং মাছ চাষে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দমনে যা করবেন
মৎস্য

আগের মত এখন আর প্রাকৃতিক উৎসে তেমন শিং মাছ পাওয়া যায় না। তাই অনেকেই পুকুরে শিং মাছ চাষ করে থাকেন। শিং মাছ চাষে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দমনে করণীয় যেসব কাজ রয়েছে সেগুলো মৎস্য চাষিদের ভালোভাবে জেনে রাখা দরকার।

শিং মাছ চাষে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দমনে করণীয়:

লক্ষণসমূহ:
১.মাছ ভারসাম্যহীনতা মাঝে মাঝে ঝাঁকুনিনদিয়ে চলাফেরা করে।
২.মাছের শরীর সাদাটে বর্ণ ধারণ করে এবং লেজে পঁচন ধরে।
৩.সাদাটে দাগ ক্রমশ: বিস্তৃত হয় ও আক্রান্ত অংশ ক্রমে ক্ষয় হয়ে যায়।
৪.আক্রান্ত মাছ খাদ্যগ্রহণে অনীহা প্রদর্শন করে।
৫.মাছের শরীরে শ্লেষ্মার পরিমাণ কমে যায়।
৬.আক্রান্ত হওয়া ২-৭ দিনের মধ্যে ব্যাপক মড়ক দেখা দেয়।

রোগ দমনে যা করবেন:
১। শিং মাছ চাষের পুকুরের পানি পরিবতর্ন ও সঠিক ঘনত্বে শিং মাছ চাষ করতে হবে।
২। শিং মাছ চাষ করা পুকুরে শতাংশে ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম হারে চুন ও লবন প্রয়োগ করতে হবে।
৩। পুকুরের শতাংশে প্রতি ৩ ফুট গভীরতার জন্য ৫ থেকে ৭ গ্রাম হারে সিপ্রোফ্লোক্সাসিন ৩ থেকে ৪ দিন প্রয়োগ করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৩, ২০২২ ৪:৫৬ অপরাহ্ন
কৃষির উৎপাদন এমন পর্যায়ে নিতে হবে যাতে বিদেশ নির্ভর হতে না হয়- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, কৃষির উৎপাদন এমন পর্যায়ে নিতে হবে যাতে বিদেশ নির্ভর হতে না হয়। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক জায়গায় খাদ্যাভাব দেখা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশে কোনভাবেই খাদ্যাভাব হতে দেব না। এ জন্য দেশের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। উৎপাদিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে প্রয়োজনে বিদেশে রপ্তানির বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) পিরোজপুরের নাজিরপুরে ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচি এবং বোরো মৌসুমে উন্নয়ন সহায়তার আওতায় বীজ, রাসায়নিক সার এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর সচিবালয়ের নিজ দপ্তর কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। নাজিরপুর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নাজিরপুর এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কৃষকবান্ধব সরকার। ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের মাঝে সার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ধরনের সিদ্ধান্ত অতীতে বাংলাদেশের কোনো সরকার গ্রহণ করেনি। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন কৃষিনির্ভর বাংলাদেশ বাঁচাতে হলে কৃষককে বাঁচাতে হবে। কৃষককে বাঁচাতে হলে সব কৃষি উপকরণ তার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কৃষিজীবী, কৃষক ও খামারিরা যাতে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সরকার সার আমদানি পূর্বের মতো অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কৃষকদের স্বার্থে যেখানে যে প্রণোদনা দরকার, কৃষি উপকরণ দরকার সরকার সেটা সরবরাহ করবে।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ। সে বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষি অন্যতম প্রধান খাত। কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ ও যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষকের উৎপাদিত সামগ্রী যাতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যায় সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার। নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিগবিজয় হাজরা, পিরোজপুর জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ খান, নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ফেরদৌস রুনা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শেখ আব্দুল লতিফ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান তুহিন, উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৭, ২০২২ ২:১০ অপরাহ্ন
ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি: সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম
ডেইরী

এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে দেশীয় ফিড ইন্ডাষ্ট্রি। কাঁচামালের দর ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধির কারনে বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়েছে পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্যখাদ্য প্রস্তুতকারক শিল্প। ফিডের দাম বাড়িয়েও লোকসান ঠেকানো যাচ্ছেনা। এমন পরিস্থিতিতে আমরা ২০২৫ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতির আবেদন জানিয়েছি সরকারের কাছে। আসন্ন জাতীয় বাজেটেও কাঁচামাল আমদানিতে কর ও শুল্ক সুবিধার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। করোনা শুরুর পর থেকেই ফিড ইন্ডাষ্ট্রিতে বিপর্যয় নামতে শুরু করেছে, এখন অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সকলকে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে।

গত ২ এপ্রিল ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এফআইএবি) এর বার্ষিক সাধারণ সভার আলোচনার টেবিলে এ বক্তব্যগুলোই প্রাধান্য পায়।

বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে প্রত্যক্ষ ভোটে নতুন কমিটির সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়। সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন নারিশ গ্রুপের পরিচালক, শামসুল আরেফিন খালেদ (অঞ্জন); সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন এসিআই গোদরেজ এগ্রোভেট প্রাইভেট লিঃ এর এসোসিয়েট ভাইস-প্রেসিডেন্ট, মোঃ নজরুল ইসলাম।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন:

সিনিয়র সহ-সভাপতি : স্পেক্ট্রা হেক্সা ফিডস লিঃ এর পরিচালক, মোঃ আহসানুজ্জামান
সহ-সভাপতি : নাহার পোল্ট্রি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ রকিবুররহমান (টুটুল)
যুগ্ম সম্পাদক : পিসিএফ ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃশরিফুল ইসলাম রানা
অর্থ সম্পাদক : এস এম এস ফিডস লিঃ এর পরিচালক মোহাম্মাদ খসরু
সাংগঠনিক সম্পাদক : পদ্মা ফিড এন্ড চিকস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ আনোয়ারুল হক
লোকসম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মিশাম এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ মাসুম মিয়া
অফিস সম্পাদক : সুষম ফিড লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ সবির হোসেন

নির্বাহী সদস্য :

:কোয়ালিটি ফিডস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এহতেশাম বি. শাহজাহান
: প্যারাগন পোল্ট্রি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মসিউর রহমান
: আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান
: এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ট্রাস্ট, এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ সাইফুল আলম খান
: কাজী ফার্মস লিঃ এর পরিচালক,কাজী জাহিন শাহ পার হাসান
: এলিয়া ফিডস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খন্দকার মনসুর হোসেন
: সিপি বাংলাদেশ কো. লিঃ এর প্রেসিডেন্ট, সুচাৎ শান্তিপদ
: এজি এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, লুৎফর রহমান
: এগ্রোটেক ফিডস লিঃ এর চেয়ারম্যান, মোহাঃ আতিয়ার রহমান
: ছোঁয়া এগ্রো প্রোডাক্টস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ টিপু সুলতান

নব-নির্বাচিত সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ (অঞ্জন) বলেন, কাঁচামালের দরের উর্ধ্বগতি, বিএসটিআই মানসনদ, পাটের ব্যাগে পোল্ট্রি ও মৎস্যখাদ্যের মোড়কীকরণ, আমদানিকৃত বেশ কিছু পণ্যেরর অপ্রয়োজনীয় ল্যাব টেস্টসহ আরও বেশ কিছু সমস্যা এখন আমাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সকল সমস্যা সমাধানে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে, অ্যাসোসিয়েশনকে সহযোগিতা করতে হবে। অঞ্জন বলেন, পোল্ট্রি সেক্টরে মোট বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশই ফিড ইন্ডাষ্ট্রির; তাছাড়া শিল্প হিসেবে গার্মেন্টস এর পর পোল্ট্রি শিল্পই সর্বাধিক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। সে হিসাবে আমাদের বার্গেইনিং পাওয়ার এখনও বেশ দূর্বল।

তিনি বলেন, নতুন কমিটি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করবেনা বরং সামগ্রিকভাবে ফিড ইন্ডাষ্ট্রির জন্য কাজ করবে। সংকটময় সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করার জন্য তিনি বিদায়ী কমিটিকে ধন্যবাদ জানান এবং অর্পিত দায়িত্ব যেন সুষ্ঠুভাবে পালন করে পারেন সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চান।

মসিউর রহমান জানান, বিএসটিআই এবং পাটের ব্যাগ বিষয়ে বিপিআইসিসি’র পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। যতটুকু জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, ইন্ডাষ্ট্রির স্বার্থে প্রত্যেকেরই আরও সক্রিয় হওয়া উচিত এবং যে সহযোগিতা আপনারা করছেন তা আরও বাড়ানো দরকার।

সাইফুল আলম খান বলেন, আমরা যখন শুরু করেছিলাম তখন পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট একটি সংগঠন বিরোধী অবস্থানে দাঁড়িয়েছিল যেন আমাদের নিবন্ধন না হয়। আজ এফআইএবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সংগঠন। নতুন কমিটিতে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা এ সংগঠনটিকে আরও সামনের দিকে নিয়ে যাবেন- এমনটাই প্রত্যাশা।

বিদায়ী সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি যথাসাধ্য করার। নতুন সভাপতি জনাব খালেদ অত্যন্ত সক্রিয় একজন মানুষ। তাঁর নেতৃত্বে এ সংগঠন আরও এগুবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

আনোয়ারুল হক বলেন, খুব একটা খারাপ সময় মোকাবেলা করেছেন বিদায়ী কমিটি; তাঁদের ধন্যবাদ। ফিড ইন্ডাষ্ট্রির নতুন অফিস সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন অফিসের রূপরেখা যাঁরা তৈরি করেছিলেন তাঁদের সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁদের উদ্যোগের কারণেই আজ আমরা এত সুন্দর একটা অফিস এবং এত ভাল পরিবেশ পেয়েছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২২ ৪:৪০ অপরাহ্ন
জাটকা সংরক্ষণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য

জাটকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে অতিরিক্ত ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সোমবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে সহনশীল আহরণ ও জাটকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক কর্মশালায় বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

কর্মশালায় মন্ত্রী আরো বলেন, “ইলিশ আন্তর্জাতিক পরিসরে জিআই সনদপ্রাপ্ত আমাদের অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ। বিশ্বের সর্বোচ্চ ইলিশ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। শুধু জাটকা সংরক্ষণ করা হলে আরও ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের সুযোগ আমরা দিতে পারবো। এ জন্য জাটকা রক্ষায় আমাদের সবাইকে যত্নশীল হতে হবে”।

মন্ত্রী আরো জানান, “২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন। সরকার গৃহীত ব্যবস্থাপনা কৌশল সঠিকভাবে বাস্তবায়নের ফলে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে জাটকা ও প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণ এবং অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে ইলিশের আকার অনেক সুষম হয়েছে। বাজারে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ প্রায় সব সময়ই পাওয়া যাচ্ছে। অতীতে পাওয়া না গেলেও এখন শীতকালেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বিপুল পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন এমনকি শীত মৌসুমেও ইলিশ প্রাপ্তির সুযোগ আমাদের হয়েছে”।

দেশের মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, “দেশের প্রায় ৬ লক্ষ লোক ইলিশ আহরণ সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রায় ২০-২৫ লক্ষ মৎস্যজীবি ও তাদের পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা ইলিশ আহরণ ও বিপণনের ওপর নির্ভরশীল। দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য যতপ্রকার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হয়, সরকার সেটা করছে। এতে একদিকে মৎস্যজীবীদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে, অপরদিকে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্যও নানাভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার জেলেকে চাহিদা অনুযায়ী নানা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা না হলে জাটকা আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটাও সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রেখেছে।”

কিছু দুষ্টু প্রকৃতির লোক কোন না কোনভাবে জাটকা নিধনে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে উল্লেখ করে মন্ত্রী এসময় বলেন, “জাটকা আহরণে বিরত থাকতে তাদের উদ্বুদ্ধ করা, সামাজিকভাবে তাদের বোঝানো এবং অসহায় ও দরিদ্র জেলেদের যাতে তারা ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’-এ মন্ত্রে আমরা সাধারণ মানুষকে বোঝানো ও উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি”।

শ ম রেজাউল করিম আরো যোগ করেন, “ইলিশের ৬টি অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম ও এর যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চতের বিষয়গুলো সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে সরকার নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। ইলিশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা এবং ইলিশ গবেষণার বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে । জাটকা সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, ইলিশের সহনীয় আহরণসহ অপরাপর কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা হবে”।

বিএআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নিয়ামুল নাসের ও মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহা. আতাউর রহমান খাঁন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসেনসহ মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৩, ২০২২ ১:৫৮ অপরাহ্ন
ছোট জলাশয়ে কৈ মাছ চাষ করবেন যেভাবে
মৎস্য

বর্তমানে বাজারে কৈ মাছের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। এছাড়াও অনেক উদ্যোক্তা কৈ মাছের বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু করেছেন। এই মাছ ছোট কোন জলাশয়েও ব্যাপক চাষ করা যায়। জেনে নিন ছোট জলাশয়ে কৈ মাছের চাষ পদ্ধতি।

কই মাছ চাষের পুকুর নির্বাচন:
কৈ মাছ যেকোন ভাবেই চাষ করা যায় । এটি সাধারণত খাল এবং বিলে পাওয়া যায়।
খ) তবে বর্তমানে আমাদের দেশে এই মাছকে পুকুর কিংবা ছোটখাট জলাশয়ে চাষ করা হচ্ছে। কৈ মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে প্রথমে উপযুক্ত পুকুর নির্বাচন করতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে পুকুরের পাড় যেন সর্বদা মজবুত ও বন্যামুক্ত থাকে। এছাড়াও পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে ও পুকুরটি যেন জলজ আগাছামুক্ত থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কৈ মাছ চাষ করার সঠিক সময়/মৌসুম:
বাড়িতে কৈ মাছ চাষ করার জন্য আপনি বছরের যেকোন সময় নির্বাচন করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন কৈ মাছ বছরে একবার প্রজনন করে। প্রজনন কাল মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস। এই সময়ে কৈ মাছের চাষ করা উত্তম। যে পুকুরে কিংবা যেকোন ধরণের ছোটখাট জলাশয়ে কৈ মাছের পোনা ছাড়ার ক্ষেত্রে আপনাকে সকাল অথবা সন্ধ্যা এই দুই সময়ের যেকোন একটি নির্বাচন করতে হবে। কারণ এসময় তাপমাত্রা সহনীয় অবস্থায় থাকে । তা না হলে মাছ মরে যেতে পারে।

যেভাবে কই মাছের পোনার যত্ন নিতে হবে:
কই মাছ যেহেতু মিঠা পানির মাছ সেহেতু এই মাছ চাষ করার আগে পোনা সংগ্রহ করতে হবে।্মাছ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন হ্যাচারীতে যোগাযোগ করতে পারেন আজকাল বাণিজ্যিকভাবে অনেক হ্যাচারি মাছের পোনা উৎপাদন করে থাকে।এখন বর্তমানে কৈ মাছের পোনা পলিব্যাগে কিনতে পাওয়া যায় । আপনি সেখান থেকেও পোনা আহরন করতে পারেন ।
তবে পোনা ছাড়ার পর আপনাকে পোনার সঠিক নিয়মে যত্ন নিতে হবে ।

সঠিক নিয়মে কৈ মাছের চাষাবাদ পদ্ধতি/কৌশল:
পুকুরে কৈ মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে সঠিক নিয়ম অবলম্বন করতে হবে । পুকুরে পোনা ছাড়ার ক্ষেত্রে প্রথমে অক্সিজেন ব্যাগে পরিবহন কৃত পোনা ব্যাগ সহ পানিতে ভাসিয়ে রাখতে হবে । এরপর পরিবহনকৃত ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা একই মাত্রায় আনতে হবে । তারপর ব্যাগের মুখ খুলে পুকুরের পানি অল্প অল্প করে ব্যাগে দিতে হবে এবং ব্যাগের পানি অল্প অল্প করে পুকুরে ফেলতে হবে । ৪০-৫০ মিনিট সময় ধরে এরূপভাবে পোনাকে পুকুরের পানির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে ।

কৈ মাছের খাবারের পরিমাণ ও সঠিক নিয়মে খাবার প্রয়োগ:
কৈ মাছ চাষ করা অত্ত্যন্ত সহজ কেননা এই মাছ চাষ করতে বেশি পরিমাণে খাবারের প্রয়োজন পড়েনা।ভাল ফলন পেতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য দিতে হবে সেটা হতে পারে খৈল, ফিশমিল সহ অন্যান্য খাদ্য।এতে মাছের ভাল ফলন পাওয়া যায় ।

কৈ রোগ বালাই ও তাঁর প্রতিকার:
কৈ মাছের মূলত তেমন কোন রোগ বালাই হয় না। তবে মাঝে মধ্যে মাছের গায়ে সাদা ফুসকুড়ি দেখা যায়।এটা দেখা গেলে সাথে সাথে পানিতে উপযুক্ত ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। তবে শীত মৌসুমে থাই কৈ মাছ ক্ষত রোগে আক্রান্ত হতে পারে।তাই শীত আসার পূর্বেই পুকুরে যথাসময়ে চুন প্রয়োগের পাশাপাশি পুকুরের পানি ও মাছের স্বাস্থ্য সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

কৈ মাছ চাষে সার প্রয়োগ:
কৈ মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে পুকুরে বা জলাশয়ে সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে । মাঝেমধ্যে ইউরিয়া এবং অন্যান্য সার প্রয়োগ করতে হবে ।এতে পানির গুণাগুণ বজায় থাকে এবং মাছের কোন ক্ষতি হয় না। বরং এতে মাছের বৃদ্ধি অনেক ভাল হয় ।

কৈ মাছ চাষে রাক্ষুসে মাছ দূরীকরণ:
বাড়িতে পুকুর কিংবা যেকোন ধরণের ছোটখাট জলাশয়ে কৈ মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে প্রথমে পুকুরের রাক্ষুসী মাছ দূর করতে হবে ।যেমন শোল, টাকি, গজার, বোয়াল, ইত্যাদি হল রাক্ষুসে মাছ । এই মাছ কৈ মাছের পোনা খেয়ে ফেলে ।
যার ফলে মাছের ভাল ফলন পাওয়া যায় না । তাই সর্বপ্রথম রাসায়নিক সারের মাধ্যেমে এই সকল মাছ দূরীভূত করতে হবে ।
রাক্ষুসে মাছ নিধন করার জন্য সবথেকে ভাল পদ্ধতি হল পুকুর একেবারে শুকিয়ে ফেলা।

কিভাবে কৈ মাছের যত্ন নিবেন:
বাড়িতে কই মাছ চাষ করার জন্য সব সময় মাছের খাদ্য ও পুকুরেরে পানির গুণাগুণ বজায় রাখার দিকে মনযোগ দিতে হবে।
পুকুরের পানি যাতে রোদে গরম হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পুকুরের পানি বেশি গরম হলে মাছ মারা যেতে পারে।
তাই কৈ মাছ যেন পুকুর থেকে উঠে যেতে না পারে সে জন্য বাঁশের তৈরী বেড়া বা নাইলনের নেট দিয়ে পুকুরের চার দিকে বেড়া দিতে হবে ।

ছাড়াও যদি পানির কোন সমস্যা হয় তাহলে পানি পরিবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে পানিতে প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করে পানির সঠিক মান ফিরিয়ে আনতে হবে।এছাড়াও পুকুরের বা জলাশয়ের তলদেশ সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নন রাখতে হবে। মাছের যত্ন নিতে হবে।
পুকুরে অতিরিক্ত কাদা থাকলে তা উঠিয়ে ফেলতে হবে কারণ অতিরিক্ত কাদা পুকুরে গ্যাস সৃষ্টি করে।

কৈ মাছের খাদ্য গুণাগুণ:
কৈ মাছের মধ্যে অনেক ধরনের খাদ্য গুনাগুন রয়েছে। এই মাছটি খেতে অনেক সুস্বাদু।
পুষ্টির দিক দিয়ে এই মাছে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে।

কখন কৈ মাছ সংগ্রহ করবেন:বাড়িতে পুকুরে কিংবা যেকোন ধরণের ছোটখাট জলাশয়ে কৈ মাছের চাষ করার পর তা বেশ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে।
কৈ মাছ সঠিক অনুপাতে বড় হলে আপনি কৈ মাছ সংগ্রহ করতে পারেন।

কি পরিমাণে কৈ মাছ পাবেন:
বাড়িতে পুকুর কিংবা যেকোন ধরণের ছোটখাট জলাশয়ে সঠিক নিয়মে কৈ মাছ চাষ করলে সেখান থেকে আপনি প্রচুর পরিমাণে কৈ মাছ পেতে পারেন। যা আপনার পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে আপনি ইচ্ছা করলে এই মাছ বাজারে বিক্রিও করতে পারেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২, ২০২২ ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
পুকুরে “মলা মাছ” চাষের পদ্ধতি
মৎস্য

আমাদের দেশের খাল-বিল কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে এখন মলা মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে মলা মাছ এখন বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই মাছ স্বাদে যেমন অনন্য ঠিক,পুষ্টিতেও ভরপুর।

মলা মাছের একক চাষ পদ্ধতি:
মলা মাছের পোনা পরিবহন করা একটা জটিল পদ্ধতি এবং রেনু পরিবহন করা অত্যন্ত সহজ তাই রেনু নিয়ে নিজে পোনা তৈরি করে চাষাবাদ করাই উত্তম। এতে খরচ ও ঝুঁকি দুটোই কম। যারা অল্প খরচে মলা মাছ চাষ করতে চান তারা নিচের পদ্ধতি ভালোভাবে জেনে নিন।

মাছ ছাড়ার আগে পুকুর প্রস্তুতকরণ
প্রথম দিন হতে ৭ থেকে ৮ দিন পর রেনু ছাড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রথমে পুকুরে বিষটোপ ব্যবহার করে সব রাক্ষুসে মাছ মেরে ফেলতে হবে। তারপর পুকুরের সব পানি সেচ দিয়ে ফেলে দিতে হবে। যদি পুকুর আকৃতিতে বড় হয় তাহলে সব পানি অপসারণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক্ষেত্রে অর্ধেক পানি ফেলে দিয়ে পরিস্কার পানি দিয়ে ভরে দিতে হবে। যদি কোনো পানি পরিবর্তন করার সুযোগ না থাকে তাহলেও চলবে, সেক্ষেত্রে চুনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। বিষটোপ প্রয়োগের দ্বিতীয় দিন শতাংশ প্রতি আধা কেজি চুন পানিতে গুলে ছিটিয়ে দিতে হবে। সূত্র:জাগো নিউজ

যদি পুকুর বেশি পুরাতন হয় এবং পানি পরিবর্তন করার সুযোগ না থাকে সেক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ১ কেজি পরিমাণ চুন দেয়া ভালো। বিষটোপ প্রয়োগের ষষ্ঠ দিনে হাসপোকা মারার জন্য সুমিথিয়ন ব্যবহার করতে হবে পুকুরে। ০.৩ পিপিএম মাত্রায় সুমিথিয়ন ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই হাসপোকার মারার জন্য অন্য ঔষধ ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মলা মাছের ক্ষেত্রে সুমিথিয়ন ভালো। সুমিথিয়ন সন্ধ্যা বেলায় প্রয়োগ করতে হবে। এর দুদিন পর পুকুরে রেনু ছাড়তে হবে।

পুকুরে রেনু ছাড়ার পদ্ধতি
প্রথমে পানি ভর্তি রেনুর ব্যাগ পুকুরের পানিতে আধাঘণ্টা ভাসিয়ে রাখতে হবে পুকুরের পানির তাপমাত্রা সামঞ্জস্য হওয়ার জন্য। আধাঘণ্টা পর ব্যাগের মুখ খুলে ব্যাগের পানির ভিতর হাত ঢুকিয়ে এবং পরে পুকুরের পানিতে হাত ঢুকিয়ে ব্যাগ ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা একই মনে হবে তখন পুকুরের পানি দিয়ে অল্প অল্প করে ব্যাগে ঢুকিয়ে আবার বের করে এভাবে রেনু ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে। এভাবেই রেনু ছাড়ার কাজ শেষ করতে হবে।

রেনুর উপর খাবার প্রয়োগ পদ্ধতি
রেনু ছাড়ার ২ ঘণ্টা পর খাবার দিতে হবে। দিনে দুইবার খাবার দিতে হবে। সকাল ১০টার দিকে এবং বিকাল ৫টার সময়। খাবার হিসেবে প্রথম ২ দিন ডিম ( সাদা অংশসহ) খেতে দিতে হবে। এ জন্য প্রথমে হাঁসের ডিম সিদ্ধ করে ব্লেন্ডার দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে পলেস্টার কাপড় দিয়ে ছেঁকে মিহি মতো করে পানির সাথে মিশিয়ে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে।

প্রতি ৫ শতাংশে একটি করে ডিম দিতে হবে। তৃতীয়দিন থেকে নার্সারি পাউডার ৩-৬ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রতি ১০ শতাংশে ১ কেজি খাবার দিতে হবে দিনে দুইবার ভাগ করে। ১০ দিন পর খাবার প্রতি ১০ শতাংশে ১.৫ কেজি খাবার দিতে হবে। এভাবে চলবে ২০ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত। এরপর খাদ্য প্রয়োগের কৌশল বদলাতে হবে।

পরিবর্তিত খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি ২৫ দিন পর থেকে এক সপ্তাহের খাবার এক সাথে পুকুরে ভিজিয়ে রেখে খাওয়াতে হবে। যেহেতু মলা মাছ ফাইটোপ্লাংকটন ভোজী তাই একটু ভিন্নভাবে খাবার দেয়া দরকার। ধরা যাক ১ সপ্তাহের জন্য ১০০ কেজি খাবার প্রয়োজন।

এখন আর নার্সারি পাউডারের মতো দামি খাবার খাওয়াবেন না। তাই ১০০ কেজি সরিষার খৈলকে সাতটা বস্তায় সমান ভাগ করে প্রতি বস্তায় ৪ কেজি ইউরিয়া সার খৈলের সাথে মিশিয়ে পানিতে খুঁটিতে বেঁধে রাখলে তিনদিন পর এই খৈলের বস্তা পানিতে ভেসে উঠবে।

তারপর এক এক বস্তার খৈল প্রতিদিন দুই বেলা দিতে হবে। এতে প্লাংকটনের বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের খাবার ভালো মানের হবে। এভাবে সাড়ে তিন মাস থেকে ৪ মাসেই বাজারজাত করা যায় মলা মাছ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৩১, ২০২২ ১:১৪ অপরাহ্ন
আজ থেকে সপ্তাহব্যাপী জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ শুরু
মৎস্য

দেশের ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে, জাটকা রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরি এবং জেলেদের জাটকা আহরণে নিরুৎসাহিত করতে আজ ৩১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে  জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ শুরু হয়েছে। আগামী ৬ই এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। 

এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ জাটকা ধরলে সর্বনাশ।’ এবছর দেশের ইলিশ সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২২ এর কাযর্ক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে”।

ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরি ও জাটকা আহরণে নিরুৎসাহিত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসময় ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রগুলোতে মাছ না ধরতে জেলেদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মৎস অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখায় উৎপাদন বেড়েছে।

এতে দেশের মানুষের ইলিশে চাহিদা পূরণ করেও রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ইলিশের দাম মানুষের নাগালের মধ্যে রাখাও সম্ভব হয়েছে। জাটকা রক্ষা করা গেলে রপ্তানির ক্ষেত্রেও সফলতা আসবে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের উদ্বোধন করা হবে। এছাড়া তৎসংলগ্ন পদ্মা নদীতে নৌ-র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন হয়ে আসছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২২, ২০২২ ১:৫২ অপরাহ্ন
মাছের উৎপাদন বাড়াতে সম্পূরক খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা
মৎস্য

সুষম পুষ্টিকর খাদ্য ছাড়া মাছের সন্তোষজনক উৎপাদন আশা করা যায় না। সুষম খাদ্যের উপাদানগুলো হচ্ছে আমিষ, শ্বেতসার, ভিটামিন, তৈল, খনিজ লবণ ও পানি। প্রাকৃতিক নিয়মে পুকুরে মাছের যে খাবার (প্লাঙ্কটন) উৎপাদন হয়, তা মাছের সার্বিক পুষ্টি চাহিদা মেটাতে মোটেই যথেষ্ট নয়।

এ ছাড়া পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার তৈরির জন্য যে সার প্রয়োগ করা হয়, তাতেও মাছের খাদ্য ঘাটতি অপূরণীয়ই থেকে যায়। ফলে মাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় না। প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি সম্পূরক খাবার মাছের উৎপাদন বাড়াতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই স্বল্প সময়ে স্বল্পায়তনের জায়গা থেকে মাছের অধিক ফলন পেতে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ অত্যাবশ্যক।

মাছের সম্পূরক খাদ্য তৈরির জন্য সচরাচর ব্যবহারযোগ্য উপাদানগুলো হচ্ছে চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, সরিষার খৈল, তিলের খৈল, ফিশমিল, গরু-ছাগলের রক্ত, নাড়িভুঁড়ি, রেশম কীট এবং জলজ উদ্ভিদ যেমন, কচুরিপানা, খুদেপানা, কুটিপানা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, সুষম খাদ্য তৈরির জন্য সাধারণত মোট খাদ্যের ০.৫-২% ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ প্রয়োজন হয় এবং খাবার বেশি সময় স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাইন্ডার হিসেবে আটা, ময়দা অথবা চিটাগুড়ের ব্যবহার অতীব জরুরি বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ কর্তৃক রুইজাতীয় মাছের পুষ্টি চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সর্বোচ্চ মাত্রায় উৎপাদনের জন্য এজাতীয় মাছের সম্পূরক খাদ্যে কমপক্ষে ৩৫% আমিষ থাকা বাঞ্ছনীয়। উপরন্তু, এ দেশের মাছচাষিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ রুইজাতীয় মাছের মিশ্র চাষ ও আঁতুড় পুকুরে পোনা মাছ চাষের জন্য উন্নত মানের সুষম সম্পূরক খাদ্য তৈরির সূত্র ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে, যা নিম্নে উদ্ধৃত হলো।

রুইজাতীয় মাছের মিশ্র চাষের সম্পূরক খাদ্য তৈরির সূত্র ফিশমিল ১০%, চালের কুঁড়া ৫৩%, সরিষার খৈল ৩০.৫০%, ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ ০.৫০%, চিটাগুড় ৬.০০%।

আঁতুড় পুকুরে পোনা মাছের সম্পূরক খাদ্য তৈরির সূত্র- ফিশমিল ২১%, সরিষার খৈল ৪৫%, চালের কুঁড়া ২৮%, আটা ৫%, ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ ১%।।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২০, ২০২২ ৮:৪৫ অপরাহ্ন
৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত উদযাপন হবে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২২
প্রাণিসম্পদ

দেশের ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে জাটকা রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জেলেদের জাটকা আহরণে নিরুৎসাহিত করতে আগামী ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন করা হবে।

রবিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম , বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক মো. শেফাউল করিম, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হাফছা বেগম, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহা. আতিয়ার রহমান, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গবেষকবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, র‌্যাব, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, নৌপুলিশ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি, জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও বাংলাদেশ ফিশিং বোট মালিক সমিতিসহ ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্সের অন্যান্য সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, “দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপনের গুরুত্ব অপরিসীম। জাটকা সংরক্ষণের জন্য দেশের আপামণ জনসাধারণকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে”।

সভায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহে কেন্দ্রীয়ভাবে ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এসব কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সংবাদ সম্মেলন, উদ্বোধনী সমাবেশ, নৌর‌্যালি ও আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জাটকা রক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে টকশো, টিভিসি ও স্ক্রল প্রচার, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ, জেলে-মৎস্যজীবীদের নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা আয়োজন, জাটকা রক্ষায় ভ্রাম্যমান আদালত ও অভিযান পরিচালনা, ইলিশ বিষয়ে সেমিনার আয়োজন প্রভৃতি।

উল্লেখ্য, দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে ইলিশ তথা মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে অবৈধ জাল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক ও জাটকা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন হয়ে আসছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১৯, ২০২২ ৪:৩৫ অপরাহ্ন
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুকুরে মাছের মিশ্র চাষ করবেন যেভাবে
মৎস্য

রুই, কাতলা, মৃগেল, রাজপুঁটি, নাইলোটিকা, সিলভার কার্প ইত্যাদি চাষ লাভজনক। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এগুলো চাষ করলে ঝুঁকি কম ও খরচ কম। এজন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছের মিশ্র চাষ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

১. পুকুর নির্বাচন: পুকুর নির্বাচন ও পুকুর প্রস্তুতি এবং ব্যবস্থাপনার উপর মাছ চাষের সফলতা বহুলাংশে নির্ভরশীল। সারা বছর পানি থাকে অথবা মৌসুমি পুকুর এই দুই ধরনের পুকুরেই চাষ করা যায়। পুকুরের আয়তন ১-৩ বিঘা এর মধ্যে হলেই ভালো হয়। তবে এর চেয়ে বড় বা ছোট আকারের পুকুরেও মাছ চাষ করা যায়। পুকুরটি আগাছামুক্ত ও খোলামেলা এবং বন্যামুক্ত স্থানে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। পুকুরের গভীরতা ৩-৫ ফুট হওয়াই সমীচীন। বছরে ৫-৬ মাস পানি থাকে এমন পুকুর নির্বাচন করতে হবে। পুকুর পাড়ে বড় ধরনের গাছপালা এবং গাছের পাতা পানিতে পড়তে পারে এ জাতীয় গাছ না থাকাই ভালো। পুকুরের উপর গাছের ছায়া পড়লে পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাবার প্রচুর পরিমাণে জন্মাতে পারে না। তদুপরি গাছের পাতা পানিতে পচে পানির স্বাভাবিক গুণাগুণ নষ্ট করাসহ উৎপানদশীলতা কমিয়ে দেয়। সাধারণত দো-আঁশ ও কাদাযুক্ত দো-আঁশ মাটি পুকুরের জন্য উত্তম। মাছ চাষ ব্যবস্থাপনার জন্য পুকুরটি আয়তাকার হওয়া উচিত। সার্বিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে পুকুরের অবস্থান বসতবাড়ির নিকটে হওয়াই ভালো।

২. পুকুর প্রস্তুতি: পুকুরে পোনা মজুদের আগে অবশ্যই পুকুর ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। মাছের শারীরিক বৃদ্ধির স্বার্থে পুকুরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রাকৃতিক খাবার তৈরি নিশ্চিত করতে হবে। পুকুর প্রস্তুতিকালে বিভিন্ন পর্যায়গুলো হলো- জলজ আগাছা নিয়ন্ত্রণ, রাক্ষুসে মাছ ও অবাঞ্ছিত প্রাণী দমন, চুন ও সার প্রয়োগ ইত্যাদি।

জলজ আগাছা নিয়ন্ত্রণ : পুকুরে অপ্রয়োজনীয় আগাছার উপস্থিতিতে মাছ চাষ বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। মাছের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করে ও মৎস্যভুক প্রাণীর শিকারের সুযোগ করে দেয়। জলজ আগাছা মাটির, পানির মৌল উপাদান বা পুষ্টি গ্রহণ করে মাটি ও পানি অনুর্বর করে ফেলে। ক্ষেত্র বিশেষে পানিতে অক্সিজেনের স্বল্পতা ঘটায়। বিভিন্ন প্রকার সার প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট পানির পুষ্টিগুলো জলজ আগাছা বহুলাংশে গ্রহণ করে নেয়। ফলশ্রুতিতে পুকুরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ মাছের খাদ্য জন্মে না। তাই পুকুরে শেওলাজাতীয় উদ্ভিদ, ভাসমান উদ্ভিদ, লতানো উদ্ভিদ ও নিমজ্জমান উদ্ভিদজাতীয় জলজ আগাছা জন্মাতে ও বৃদ্ধি ঘটতে দেয়া উচিত নয়। জলজ আগাছার মধ্যে সাধারণত কচুরিপানা, কলমিলতা, হেলেঞ্চা, ঝাউ ইত্যাদি লক্ষ করা যায়; যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সূর্যের আলো পুকুরের পানিতে খাদ্য তৈরিতে সহায়ক এবং আগাছা পুকুরের পানিতে সূর্যকিরণ প্রবেশ করতে বাধার সৃষ্টি করে। সুতরাং সকল প্রকারের জলজ আগাছা শিকড়সহ দমন করা অপরিহার্য। তন্তুজাতীয় শেওলা পুকুরে থাকলে তা পরিমিত পরিমাণে (প্রতি শতাংশে ৮ গ্রাম) তুঁত ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। অন্যান্য আগাছা কেটে পুকুর থেকে টেনে উঠাতে হবে।

রাক্ষুসে মাছ ও ক্ষতিকারক প্রাণী অপসারণ : পুকুর শুকানোর মাধ্যমে রাক্ষুসে মাছ যেমন- বোয়াল, চিতল, শোল, গজার, আইর, টাকি ইত্যাদি এবং চাষের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় মাছ যেমন- মলা, চান্দা, চেলা, পুঁটি, দারকিনা ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে ফেলতে হবে। মাছের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য প্রাণী যেমন- সাপ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ইত্যাদি মেরে ফেলার ব্যবস্থা নিতে হবে। পুকুর শুকানোর কাজ শুকনা মৌসুমেই করা উচিত। পানি নিষ্কাশনের পর পুকুরের তলার মাটি ন্যূনতম সাতদিন ধরে রৌদ্রে শুকাতে হবে। এর পরেও যদি অতিরিক্ত কাদা থাকে তাহলে কিছু কাদা তুলে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর মাটি শুকানোর পর পুকুরের তলায় চাষ দেওয়ার অন্তত ২/৩ দিন পর প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি সরবরাহ করতে হবে (যদি সম্ভব হয়) নতুবা বৃষ্টির পানির অপেক্ষায় থাকতে হবে।

কোনো কারণে পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে জাল টেনে অথবা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ এবং ক্ষতিকর প্রাণী দমন করতে হবে।

৩. চুন প্রয়োগ: পুকুরে মাটি ও পানি অম্ল ও দূষণমুক্ত করা, মাছের রোগ জীবাণু ও পরজীবী ধ্বংস করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও পানিতে ক্যালসিয়াম বাড়াতে তথা পুকুরের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য চুন প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। পুকুরের মাটি ও পানির গুণাগুণের ওপর চুনের সঠিক মাত্রা নির্ভরশীল। সাধারণত পুকুরের তলদেশে শুকনা অবস্থায় পাথুরে চুন গুঁড়া করে শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে সারা পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। তবে অম্ল­মান ৪ হলে ১০ কেজি, ৪.৫ হলে ৫ কেজি, ৫.৫ হলে ৩ কেজি, ৬.৫ হলে ২ কেজি প্রতি শতাংশে প্রয়োগ করতে হয়। চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর পুকুরে পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি শুকানো না হলে পানি ভর্তি পুকুরে একই হারে চুন পানিতে গুলে সারা পুকুরে ঢালু পাড়সহ ছিটিয়ে দিতে হবে।

৪. সার প্রয়োগ: পুকুরে মাছের জন্য উদ্ভিদ ও প্রাণী জাতীয় প্রাকৃতিক খাদ্য বা প্ল­াঙ্কটন জন্মানোর জন্য পুকুরে জৈব ও অজৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। চুন প্রয়োগের অন্তত ৪-৫ দিন পর নিম্নলিখিত হারে সার প্রয়োগ করা যেতে পারে :

৫. বিষক্রিয়া পরীক্ষা: পানিতে বিষক্রিয়া থাকলে পোনা মারা যাবে বিধায় সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না। পোনা ছাড়ার আগে পানির বিষক্রিয়া পরীক্ষা করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে যে কোনো পাত্রে পোনা রেখে অথবা পুকুরের পানিতে হাঁপা স্থাপন করে কিছু পোনা ছেড়ে অন্তত ২৪ ঘণ্টা রাখার পর পোনা মারা না গেলে পোনা ছাড়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। পোনা ছাড়ার আগের দিন পুকুরে ২-৩ বার হররা বা জাল টেনে নেয়া যেতে পারে।

৬. পোনা মজুদ: পানি ও মাটির গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে সঠিক মাত্রায় উন্নতমানের পোনা মজুদের ওপরই মাছ চাষের সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। একক চাষের ক্ষেত্রে ৩-৫ ইঞ্চি আকারের (৫-১০ গ্রাম ওজনের) পোনা নির্বাচন করাই উত্তম। ছোট আকারের পোনা মজুদে পোনা মৃত্যুর হার বেশি হবে এবং আশানুরূপ ফলন লাভের সম্ভাবনা কম থাকে। সার প্রয়োগের ৮-১০ দিন পর প্রাকৃতিক খাদ্য পরিমিত পরিমাণে পুকুরের পানিতে বিদ্যমান থাকলে প্রতি শতাংশ পুকুরে মোট ৩০-৩৫টি চারা পোনা মজুদ করা যাবে। এর মধ্যে রুই ১০-১৫টি, কাতলা ৮-১০টি, মৃগেল ৮-১০টি, রাজপুটি ৫-৬টি, নাইলোটিকা ৫-৬টি পোনা প্রতি শতাংশে ছাড়তে হবে।

পোনা মাছ সকালে বা বিকেলে পাড়ের কাছাকাছি ঠাণ্ডা পরিবেশে ছাড়াই উত্তম। অতি বৃষ্টিতে বা কড়া রোদের সময় পোনা ছাড়া উচিত নয়। পুকুরে পোনা বেঁচে থাকার হার বাড়ানোর জন্য পোনা ছাড়ার কারিগরি পদ্ধতি অবশ্যই অনুসরণ করে পোনা ছাড়তে হবে। নিকটবর্তী স্থানের জন্য পোনা পরিবহনের ক্ষেত্রে মাটির হাঁড়ি বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে পোনা পরিবহন করা যেতে পারে। তবে দূরবর্তী স্থানের জন্য অক্সিজেন ভর্তি পলিথিন ব্যাগে পোনা পরিবহন করা অধিকতর নিরাপদ। পুকুরে পোনা ছাড়ার সময় পোনা ভর্তি ব্যাগ বা পাত্রের অর্ধাংশ পুকুরের পানিতে ১০-১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। এরপর ব্যাগ বা পাত্রের মুখ খুলে দিতে হবে। অতঃপর পাত্র বা ব্যাগের কিছু পানি বের করে এবং পুকুরের পানি ভেতরে ঢুকিয়ে উভয় পানির তাপমাত্রা সমতায় আনতে হবে। যখন পাত্রের ভেতরের এবং পুকুরের পানির তাপমাত্রা সমান হয়েছে বলে প্রতীয়মান হবে তখন ব্যাগ বা পাত্রটিকে কাত করলে পোনাগুলো আপনা আপনি পুকুরে চলে যাবে।

৭. পোনা মজুদ পরবর্তী সার প্রয়োগ : পুকুরে পোনা মাছ মজুদের পর সাপ্তাহিক ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে জৈবসার যেমন- গোবর প্রতি ১৫ দিন অন্তর ১ কেজি অথবা হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা ৫০০ গ্রাম হারে পুকুরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ৪০ গ্রাম ও টিএসপি ২০ গ্রাম হারে একটি পাত্রে ৩০ গুণ পানির সাথে মিশিয়ে অন্তত ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে রোদের সময় গোলানো সার সারা পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। উল্লেখ্য, পুকুরের পানি যদি অত্যধিক সবুজ রঙ ধারণ করে তাহলে সার প্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে। মেঘলা ও বৃষ্টির দিনে সার প্রয়োগ করা যাবে না।

৮. মাছের খাদ্য : মাছের খাদ্য প্রধানত দুই রকম- ক. প্রাকৃতিক খাদ্য খ. সম্পূরক খাদ্য।

ক. প্রাকৃতিক খাদ্য দুই রকম-
১. উদ্ভিদ কণা (Phytoplancton) : জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সবুজ কণা তৈরি হয়, যা মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন- শেওলা, ফেকাস, নষ্টক, ডায়াটম, ভলবক্স, এনাবিনা ইত্যাদি।
২. প্রাণী কণা (Zooplanton) : জলাশয়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। যেমনÑ ময়না, ড্যাফনিয়া, বসমিনা, কেরাটেলা, ফিলিনিয়া, সাইক্লপস, প্রোটোজোয়া, রটিফার ইত্যাদি।

এসব প্রাকৃতিক খাদ্য জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্মে। তবে বেশি পরিমাণে জন্মানোর জন্য জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। প্রাকৃতিক খাদ্য খাওয়া মাছ দ্রুত বড় হয় ও মাছ খেতে সুস্বাদু। পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য আছে কি-না বোঝার পদ্ধতি হচ্ছে কাচের গ্লাসে পুকুরের স্বচ্ছ পানি নিয়ে সূর্যের আলোর দিকে ধরলে যদি গ্লাসে ৮-১০টি কণা দেখা যায় তবে বুঝতে হবে প্রাকৃতিক খাদ্য আছে। সেক্কিডিস্ক বা হাত পুকুরের পানিতে ডুবালে যদি হাতের তালু বা ডিস্ক দেখা যায় তবে বুঝতে হবে প্রাকৃতিক খাদ্য নাই। পুকুরের পানির রঙ হালকা সবুজ বা বাদামি দেখা গেলে বুঝতে হবে প্রাকৃতিক খাদ্য আছে। প্রাকৃতিক খাদ্য যথেষ্ট পরিমাণে থাকলেও মজুদ মাছের মোট ওজনের ২-৫% সম্পূরক খাদ্য দিতে হয়।

খ. সম্পূরক খাদ্য : পুকুরে উৎপাদিত প্রাকৃতিক খাদ্যের অভাব হলে মাছের দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধির নিমিত্তে প্রাকৃতিক খাবারের পাশাপাশি সম্পূরক খাবার সরবরাহ করা একান্ত প্রয়োজন। মাছ ছাড়ার পরের দিন হতে প্রতিদিন সকালে ও বিকেল মজুদকৃত মাছের মোট শরীরের ওজনের শতকরা ৫-৬ ভাগ হারে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। উল্লে­খ্য, প্রতি ২০ কেজি মাছের জন্য অন্ততপক্ষে ১ কেজি খাবার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি ১৫ দিন বা ১ মাস অন্তর একবার জাল টেনে কিছু মাছ ধরে ওজনের গড় বের করে নিয়ে মোট ওজনের উপর আনুপাতিক হারে খাবার দিতে হবে।

সরিষার খৈল ৩০% ও গমের ভুসি বা চালের কুঁড়া ৭০% অনুপাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে দুটি খাবারের মিশ্রণ পুকুরের বিভিন্ন স্থানে অথবা ৩-৪টি নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োগ করা যেতে পারে। উল্লে­খ্য, ভাসানো খাবার হিসাবে গমের ভুসি বা কুঁড়া পানির উপরে শুকনা অবস্থায় সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন সরবরাহ করা ভালো। সহজ ব্যবস্থাপনায় অল্প খরচে শুধুমাত্র গমের ভুসি বা চালের কুঁড়া শতাংশ প্রতি ১ম মাসে ৫০ গ্রাম, ২য় মাসে ১০০ গ্রাম, ৩য় মাসে ১৮০ গ্রাম, ৪র্থ মাসে ২২০ গ্রাম, ৫ম মাসে ২৬০ গ্রাম ও ৬ষ্ঠ মাসে ৩০০ গ্রাম দিতে হবে।

সম্পূরক খাদ্য তৈরির নিয়ম : ফিশমিল ১০%, চালের কুঁড়া ৫৩%, সরিষার খৈল ৩০.৫০%, ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ ০.৫% ও চিটাগুড় ৬% মেপে নিতে হয়। এগুলো গুঁড়ো করে মিশাতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ম- তৈরি করে পিলেট মেশিনে দিয়ে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করতে হবে। এগুলো শুকিয়ে মাছকে খেতে দেয়া যাবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূরক খাদ্য দিতে হয়। খাদ্যগুলো পুকুরে পানির নিচে নির্দিষ্ট গভীরতায় দিতে হয়। ভাসমান খাদ্য দিলে খাদ্যের অপচয় কম হয়। সম্পূরক খাদ্য দিলে মাছের খাদ্যের অভাব দূর হয়। মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও টোপাপানা, ক্ষুদিপানা, কলাপাতা, নেপিয়ার বা প্যারা জাতীয় নরম ঘাস, পাতা ইত্যাদি প্রতিদিন লবণ-পানিতে ধুয়ে সকাল-বিকেল পুকুরে আয়তাকার বেষ্টনীর মধ্যে সরবরাহ করা যেতে পারে।

৯. অন্যান্য পরিচর্যা: পুকুরের পানি ও মাটির বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে পুকুরে সার ও খাবার প্রয়োগ করা সমীচীন হবে। মাছের শারীরিক বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও রোগবালাই পরীক্ষা করার জন্য প্রতি মাসে অন্তত একবার জাল টেনে নমুনা দেখা তথা সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন, পিএইচ, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও প্ল­াঙ্কটনের পরিমাণ নিয়মিতভাবে পরিমাপ করা প্রয়োজন। মাছ ধরে পুনরায় পুকুরে ছাড়ার আগে ২০ লিটার পানিতে ৫০ মিলিগ্রাম পটাশ (পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট) অথবা ২০ লিটার পানিতে ১ মুঠো লবণ-পানি দ্রবণে ১-২ মিনিট গোসল করানো উচিত। কোনো রোগবালাই দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। পুকুরের পানির ওপর ঘন লাল স্তর পড়লে তা কলাগাছের পাতা পেঁচিয়ে পানির ওপর দিয়ে ভাসমান অবস্থায় টেনে নিয়ে এক জায়গায় জমা করে ঘন ফাঁসের জাল বা কাপড় দিয়ে তুলে ফেলতে হবে। সকালের দিকে বা দিনের অন্য সময়ে যদি অত্যধিক পরিমাণে মাছ পানির ওপর ভেসে উঠে খাবি খেতে দেখা যায় তাহলে ধরে নিতে হবে যে পানিতে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। এ অবস্থায় পুকুরে জাল টেনে, বাঁশ পিটিয়ে বা সাঁতার কেটে পানিতে ঢেউ এর সৃষ্টি করে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। কয়েক দিনব্যাপী মেঘলা আকাশ থাকলে মাছের এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। পুকুরে মাছ খাবি খাওয়া অবস্থায় সাময়িকভাবে সার ও খাদ্য প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। বাইরের বিষাক্ত পানি যেন পুকুরে কোনো অবস্থাতেই না ঢুকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। পুকুরে তন্তুজাতীয় শেওলা ও অন্যান্য আগাছার পরিমাণ বেড়ে গেলে পুকুরের পানিতে অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে মাছ মারা যেতে পারে। তাই তন্তুজাতীয় শেওলা ও জলজ আগাছা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

১০. মাছ আহরণ ও ফলন : সময়মতো মাছ ধরা ও বিক্রয় করা মাছ চাষের ক্ষেত্রে একটি উল্লে­খযোগ্য পদক্ষেপ। অপেক্ষাকৃত বড় আকারের বিক্রয়যোগ্য মাছ ধরে বাজারজাত করা উচিত। আংশিক আহরণ পদ্ধতিতে মাছ ধরে নেয়ার পর আহরণকৃত মাছের সংখ্যা পূরণ করার জন্য বড় আকারের সমপরিমাণ পোনা পুকুরে ছাড়তে হবে। উপোরল্লি­খিত পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে এবং আংশিক পদ্ধতিতে মাছ আহরণ করা হলে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব।

 

 

কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মেদ
কৃষি প্রাবন্ধিক, সহকারী অধ্যাপক, কৃষিশিক্ষা, শহীদ জিয়া মহিলা কলেজ, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop