১১:৩৯ অপরাহ্ন

বুধবার, ২০ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২৭, ২০২১ ১১:১০ পূর্বাহ্ন
কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা নিষিদ্ধ তিন মাস
মৎস্য

প্রতি বছরের মতো আগামী ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কার্পজাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ ধরা, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে কাপ্তাই হ্রদের মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণ বিষয়ক এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২০ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌ-পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

হ্রদে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সতর্ক করেন জেলা প্রশাসক।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শিল্পী রানী রায়, সদর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল মিয়া, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. আজহার আলীসহ মাছ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৬, ২০২১ ৩:২৭ অপরাহ্ন
বাগমারায় মাছ চাষে ২০ হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান
মৎস্য

মহামারী করোনাকালেও মাছ উৎপাদানে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বাগমারার মাছচাষীরা। মাছ চাষ ও রফতানি মিলে বাগমারায় এখন ২০ হাজারের বেশি বেকারের নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। অবিরামভাবে নানা জাতের মাছ উৎপাদন করে চলছেন বাগমারার মাছ চাষিরা।

মাছচাষী ও স্থানীয় পুকুর মালিকদের মতে, অনুকূল পরিবেশের কারণে এখানে উৎপাদন করে ব্যাপক সুবিধা পাওয়া যায়। এখানে মাছের রোগ বালাই কম হয়। মাটি ও পানির গুণে এখানেকার মাছ বেশ সুস্বাদুু হওয়ায় দেশব্যাপী এ মাছের চাহিদা ও পরিচিতি রয়েছে ব্যাপক।

উপজেলা মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ছোট বড় আকার মিলে বাগমারায় মোট পুকুর দীঘির সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৮টি। এসব পুকুর দীঘির মোট আয়তন প্রায় ২৪ হাজার ৮৬৩ হেক্টর। বছরজুড়ে এসব পুকুর দীঘিতে উৎপাদন হয় রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, ব্লাড কার্প, মিনার কার্প, চিতলসহ প্রায় ১০-১২ প্রজাতির মাছ। এসব পুকুর দীঘি থেকে বছরে প্রায় ১৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে।

স্থানীয় বাজারে বছরে মাছের চাহিদা রয়েছে বছরে প্রায় ১০ হাজার টন। অতিরিক্ত ৯ হাজার টন মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় রফতানি হয়ে থাকে। এসব মাছ উৎপাদন পরিবহন ও রফতানিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে এলাকার প্রায় ২০ হাজার বেকারের নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতিদিন এ সেক্টরে কর্মরত লোকজনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

উপজেললা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন জানান, বাগমারা এখন মাছ চাষের জন্য একটি মডেল উপজেলায় পরিণত হয়েছে। বাগমারার ১৬টি ইউনিয়নে তাদের নিযুক্ত একজন করে মৎস্য সহায়ক দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি মৎস্যচাষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবার কখনও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সহায়ত করে থাকেন। তাদের কাছে একটি করে কীটবক্স প্রদান করা হয়েছে। যা দিয়ে তারা পুকুর দীঘির পানি পরীক্ষা করে থাকেন বলেও জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৬, ২০২১ ১২:১৯ অপরাহ্ন
মাছ বিক্রিতে ধস, ক্রেতাশূন্য মাছের আড়ত!
মৎস্য

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। এ অবস্থায় রেণুপোনা ও মাছ বিক্রিতে ধস নেমেছে। এতে অনেক মৎস্য ব্যবসায়ী ব্যাংক ও এনজিওর ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। মৎস্য ভান্ডার খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হয়ে পড়ছে ক্রেতাশূন্য। মাছ ও রেণুপোনা বিক্রি করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন মৎস্যচাষি ও ব্যবসায়ীরা।

আদমদীঘি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুজয় পাল জানান, উপজেলায় সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ছোট-বড় ৬ হাজার ৪৪২টি পুকুর ও জলাশয় রয়েছে। রেণুপোনা উৎপাদনে ৫৩টি নিবন্ধিত হ্যাচারি ও নার্সারি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি চালু ও অবশিষ্ট ১৮টি হ্যাচারি বন্ধ রয়েছে। এখানে ৪০ হাজার কেজি রেণুপোনা ও ১১ কোটি পিস পোনার চাহিদা রয়েছে। বাজারজাতের মাছের উৎপাদন হয় ১৭ হাজার ৭৪ টন। চাহিদা রয়েছে ৪ হাজার ৬৩০ টন। উদ্বৃত্ত ১২ হাজার ৪০০ টন মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

আদমদীঘি থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, যশোর, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা রেণুপোনা ও বাজারজাতকরণের বড় মাছ কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যান।\হআদমদীঘি ও আশপাশের উপজেলার হাজার হাজার বেকার যুবক রেণুপোনা, মাছ বেচাকেনা করে বেকারত্ব দূর করেছেন। প্রতিদিন এ এলাকা থেকে কোটি টাকার মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও চাষিরা।

বর্তমানে করোনা সংক্রমণের পাশাপশি লকডাউনের প্রভাবে\হমাছ কিনতে পাইকাররা তেমন একটা আসছেন না। তাই এখন রেণুপোনা বেচাকেনা হচ্ছে না। ধস নেমেছে বড় মাছ বেচাকেনায়ও। উপজেলার অধিকাংশ হ্যাচারি এখন রেণুপোনা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে মৎস্যচাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন তাদের ঋণের বোঝা নিয়ে। অর্থের অভাবে ঋণ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুজয় পাল জানান, লকডাউনের কারণে মূলত মাছের খাদ্যের দাম বেশি। এদিকে ক্রেতাও কম। এ অবস্থায় লোকসানের মধ্যে পড়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও চাষিরা।

রফি মৎস্য প্রজনন খামারের মালিক শেখ রফি আহমেদ আচ্চু জানান, ৪ মাস আগে এক কেজি ওজনের রুই ও মৃগেল ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই মাছ মাত্র ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাশ বিক্রি হতো ১০০ টাকা কেজিতে, এখন সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০ টাকা কেজি দরে। ফলে লাভ তো দূরের কথা, লোকসান গুনতে হচ্ছে মৎস্যচাষিদের। এ ছাড়া পাঙ্গাশ, পাবদা ও গুলশা জাতীয় মাছের পোনা কেনার কোনো খদ্দের না থাকায় অধিকাংশ হ্যাচারি বন্ধ রয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৫, ২০২১ ৩:২৮ অপরাহ্ন
গভীর রাতে গেলো পুকুরে মাছ দেখতে, ভোরে মিলল লাশ!
পাঁচমিশালি

পঞ্চগড়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে হাসান আলী নামের একজন নিখোঁজের পাঁচ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই পুকুরে তিনি মাছ চাষ করতেন।

রোববার ভোর ছয়টার দিকে সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

পঞ্চগড় সদর থানার উপপুলিশ পরির্দশক ফিরোজ ফারুক এই ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলতামাস হুসাইন লেলিন জানান, শনিবার রাত ১টার দিকে স্ত্রী শারমিনা বেগমকে নিয়ে পুকুরে মাছ দেখতে যায় হাসান। স্ত্রীকে নিয়ে পুকুরেও নামেন তিনি। পরে স্ত্রী পুকুর থেকে উঠে এলেও সাঁতার না জানায় হাসান উঠতে পারেনি।

শারমিনা আশেপাশের লোকজনকে বিষয়টি জানালে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সেখানে গেলেও তাদের ডুবুরি দল না থাকায় ও পুকুরের গভীরতা বেশি থাকায় তারা হাসানকে উদ্ধার না করেই চলে যায় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজনই রাতে চারটি শ্যালো মেশিন দিয়ে পুকুর থেকে পানি তুলতে থাকে। রোববার ভোরে সেখানে পাওয়া যায় হাসানের মরদেহ।

হাসানের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম জানান, তিনি (হাসান) মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার মৃগি রোগও ছিল। তার স্ত্রী বলছেন, জোর করেই তাকে নিয়ে মাছ দেখতে পানিতে নামে হাসান।

সদর থানার উপপুলিশ পরির্দশক ফিরোজ বলেন, মরদেহের সুরতহাল শেষে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানিতে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে সদর থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৫, ২০২১ ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
ধরলা নদীতে নেই পানি-মাছ, দুর্দিনে জেলেরা!
মৎস্য

‘ধরলা নদীত পানিও নাই মাছও নাই, এ্যালা শুধু ধুধু করে বালা আর বালা। হামরাগুলা এ্যালা কন্টে যাই বা। আগত এইদন দিনে পানি দিয়া ভরি আছিল হেই নদী। এ্যালা শুকি ঠনঠনা হইচে। আইজ প্রায় ৪০ বছর থাকি এই নদীত মাছ মারং। আগে অনেক পানি আছিল এখন পানিও নাই, মাছও নাই।’কুড়িগ্রাম ধরলা নদী পাড়ের জেলে ষাটোর্ধ মোকছেদ আলী এ কথা বলেন।

তার মত আরও অর্ধশতাধিক জেলে যারা এভাবেই নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের এখন সকলের একই অবস্থা। এক সময় ধরলা নদীতে চৈত্র-বৈশাখেও থাকতো পানি। কিন্তু বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই নদী উপচে গিয়ে প্রবল বন্যার সৃষ্টি করে।

গত বছর পরপর ৬ বার বন্যার কবলে পড়ে এসব মানুষ। আর শুকনো মৌসুম এলে তা দ্রুত শুকিয়ে যায়। বর্তমানে এখন ধরলা নদী শুকিয়ে গেছে। নদীতে তেমন পানিও নেই; আবার পর্যাপ্ত মাছও নেই।

অন্যদিকে, নদীতে জেগে উঠা চরে কৃষকরা লাগিয়েছেন বোরো ধান। তাতে চরগুলো সবুজময় হয়ে উঠেছে।

ধরলার শাখা নদী দুধ কুমার পাড়ের বাসিন্দারা দিনভর মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতো। কিন্তু এখন তা আর তেমন নেই। ফলে অনেকেই বেকার জীবন যাপন করছেন।

জানা যায়, জেলায় ছোটবড় মিলিয়ে মোট ১৬টি নদনদী। এর মধ্যে সবচেয়ে রাক্ষসী ধরলা নদী, সেটিও আজ শুকিয়ে গেছে। বিগত ২০১৭ ও ২০২০ সালের প্রবল বন্যায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হলেও এখন ধরলা শুকনো। নদীর মাঝে পড়েছে বড় বড় চর। নদীর অনেক জায়গায় এক হাঁটু পানি দিয়ে পার হন পথচারিরা। ধরলার ৯ কি.মি. দূরে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও শংকোস পাড়ে গিয়ে দেখা যায় একই চিত্র। বর্তমানে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ঘাট আছে কিন্তু নৌকা চলেনা। ঘাটে বাধা রয়েছে ডিঙিও বড়বড় নৌকাগুলো।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকারের তথ্য মতে, জেলার ১৬টি নদ-নদীতে মোট ১৭২টি নৌ-ঘাটের মধ্যে জেলা পরিষদের ৫৭টি এবং ইউনিয়ন পরিষদের ১১৫টি ঘাট রয়েছে। পানি কমে যাওয়ায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি ঘাটে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ২০টি বন্ধ হওয়ার পথে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর উজান থেকে বন্যার পানির সাথে বালু এসে সব নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে জেলার নদ-নদীগুলোর খনন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে তিনি যোগ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৪, ২০২১ ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
বিএফআরআই‘র গবেষণায় বিলুপ্তপ্রায় ঢেলা মাছ ফিরছে বাজারে
মৎস্য

মলা-ঢেলা মাছ প্রিয় নয় এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে সময়ের আবর্তে মলা মাছ কিছুটা বাজারে এখনও পাওয়া গেলেও হারিয়ে গিয়েছিলো ঢেলা। তবে সু-খবর হলো সম্প্রতি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পুষ্টিসমৃদ্ধ ও বিলুপ্তপ্রায় ঢেলা মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে। ইনস্টিটিউটের ময়মনসিংহের স্বাদুপানি গবেষণা কেন্দ্রে গত দুই বছর ধরে এইা গবেষণা পরিচালনা করা হয়। আর তাতেই এখন আবার বাজারে ফিরছে ঢেলা।

এই গবেষক দলে ছিলেন কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এইচ এম কোহিনুর, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শাহা আলী, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিনা ইয়াসমিন ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রবিউল আওয়াল।

বিএফআরআই সূত্র জানায়, স্থানীয় ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন উৎস থেকে ঢেলা মাছের পোনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রের পুকুরে তা নিবিড়ভাবে প্রতিপালন করা হয়। এ সময় তাদের খাদ্যাভ্যাস পরীক্ষা করা হয় এবং সে অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়।

তাছাড়া বছরব্যাপী জিএসআই ও হিস্টোলজি পরীক্ষণের মাধ্যমে এর সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করা হয়। হিস্টোলজি পরীক্ষাকালে দেখা যায়, ঢেলা মাছের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম হচ্ছে মে-জুন মাস। তবে এপ্রিল মাসের শেষের দিক থেকে এর প্রজননকাল শুরু হয়। ঢেলা মাছের ডিম ধারণক্ষমতা হচ্ছে প্রতি গ্রামে ৭০০ থেকে ৮০০টি।

গবেষণাকালে দেখা যায়, একটি স্ত্রী ঢেলা প্রায় ছয় থেকে আট গ্রাম ওজনের হলেই প্রজনন উপযোগী হয়। প্রজনন উপযোগী পুরুষ ঢেলা আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট চার থেকে পাঁচ গ্রাম হয়। প্রকৃতিতে স্ত্রী ঢেলার চেয়ে পুরুষ ঢেলা অপেক্ষাকৃত কম পাওয়া যায়। বিভিন্ন উৎস থেকে ঢেলা মাছ সংগ্রহকালে দেখা গেছে, প্রকৃতিতে স্ত্রী ও পুরুষ ঢেলা প্রাপ্তির অনুপাত হচ্ছে ৪ :১ অর্থাৎ চারটি স্ত্রী ঢেলার সঙ্গে মাত্র একটি পুরুষ ঢেলা থাকে।

এই গবেষণায় ১০ জোড়া ঢেলা মাছকে হরমোন প্রয়োগ করা হয়। হরমোন প্রয়োগের আট থেকে ৯ ঘণ্টা পর ডিম ছাড়ে এবং ২২ ঘণ্টা পরে নিষিক্ত ডিম থেকে রেণু পোনা উৎপাদিত হয়। এ সময় ডিম নিষিক্ততার পরিমাণ ছিল প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ। উৎপাদিত পোনা বর্তমানে ইনস্টিটিউটের হ্যাচারিতে প্রতিপালন করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একসময় দেশের নদ-নদী ও হাওর-বিলে প্রচুর পরিমাণে ঢেলা মাছ পাওয়া যেত। পরবর্তী সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন, অতি আহরণ ও জলাশয় সংকোচনের কারণে ঢেলা মাছের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র বিনষ্ট হয়ে যায় এবং এ মাছটি বিলুপ্তির তালিকায় চলে আসে। ফলে ঢেলামাছ এখন প্রায় দুষ্প্রাপ্য এবং উচ্চমূল্যে বাজারে বিক্রি হয়। ইনস্টিটিউটে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উত্পাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হওয়ায় ঢেলা মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং চাষের মাধ্যমে এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান,অন্যান্য দেশীয় মাছের তুলনায় ঢেলা মাছে প্রচুর খনিজ পদার্থ আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেলা মাছে ভিটামিন ‘এ’ ৯৩৭ আইইউ, ক্যালসিয়াম ১২৬০ মিলিগ্রাম এবং জিঙ্ক ১৩.৬০ শতাংশ, যা অন্যান্য দেশীয় মাছের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি বলেন, ভিটামিন এ শিশুদের রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে, ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়তা করে। তাছাড়া জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা করোনাকালীন খুবই উপযোগী।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, ইনস্টিটিউটে বর্তমানে পিয়ালী, কাজলী, বাতাসি, কাকিলা, রাণী ও গাং টেংরাসহ আরও ১০টি মাছ নিয়ে গবেষণা চলছে।

বিএফআরআই ইতোমধ্যে পাবদা, গুলশা, টেংরা, বৈরালীসহ ২৪টি দেশীয় ও বিলুপ্তপ্রায় মিঠা পানির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন করেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে চাষের মাধ্যমে দেশীয় ছোট মাছের উৎপাদন ছিল ৬৭ হাজার মেট্রিক টন। পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হওয়ায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে আড়াই লাখ মেট্রিক টন হয়েছে। অর্থাৎ গত এক যুগে উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২১ ২:৪১ অপরাহ্ন
রাবির পুকুরে বিষ দিয়ে দুর্বৃত্তের মাছ চুরি!
ক্যাম্পাস

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রবীন্দ্র ভবনের পেছনের একটি পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এবং সেই মাছ চুরি করে নিয়েও গেছে তারা।

বুধবার দিবাগত রাতে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে পুকুরের পানিতে কিছু মরা মাছ ভাসতে দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী ও রিকশাচালক।

পুকুরে মাছ ভাসতে দেখা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ করা এক কন্টাকটার সকালে আমাকে ফোন করে জানান পুকুরের মাছ ভেসে উঠছে। আমি বেলা ১১টার দিকে পুকুরে গিয়ে দেখি, কয়েকজন রিকশাচালক ও কর্মচারী পুকুরের মাছগুলো ধরছে। তবে অধিকাংশ মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলে রাতেই চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, ‘আমার মনে হচ্ছে-পুকুরে গ্যাসের ট্যাবলেট দিয়ে মাছগুলো মেরে ফেলে জাল দিয়ে সেই মাছগুলোকে তোলা হয়েছিল। কারণ পুকুরের পাড়ে জাল ও পায়ের দাগ বোঝা যাচ্ছিল।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের সভাপতি ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা কে করেছে আমার জানা নেই। কিছুদিন আগে পুকুরগুলোতে কৃষি প্রকল্পের আওতায় মাছ ছাড়া হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, যখন ক্যাম্পাস খুলবে; মাছগুলো বড় হবে; ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা এই মাছগুলো বড়শি দিয়ে ধরবে আর সময় পার করবে। কিন্তু রাতের আধারে কারা মাছগুলোকে হত্যা করে চুরি করে নিয়ে গেল এটা এখনো পর্যন্ত জানতে পারিনি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২২, ২০২১ ২:৫৫ অপরাহ্ন
হাকালুকি হাওরে বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি মাছ উৎপাদন
মৎস্য

মৌসুমের শেষ দিকে এসে হাকালুকি হাওরে ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমাণের দেশী প্রজাতির মাছ। ছোট বড় মাছের পাশাপাশি এ বছর বিপন্ন প্রজাতির অনেক মাছের আধিক্য দেখা যাচ্ছে হাওরে।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, করোনাকালে হাওরে মানুষের চাপ কম থাকায় মাছের স্বাভাবিক প্রজননের সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে এ বছর মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি।

সরেজমিনে কুলাউড়া উপজেলার চকিয়া বিল ও নাগুয়াসহ কয়েকটি বিল ঘুরে দেখা যায়, বিলের পাড়ে অস্থায়ী নিলাম কেন্দ্র স্থাপন করেছেন বিল ইজারাদাররা। সেখানে ভোর থেকে ব্যবসায়ীরা মাছ কেনার জন্য ভিড় করছেন। ইজারাদারদের অধীনে জেলেরা সারাদিন বিলে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। কিছুক্ষণ পর পর সে মাছ নৌকায় করে ঘাটের নিলাম কেন্দ্রে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানান, এ বছর বড় রুই, বোয়াল, আইড়, কমন কার্প, মৃগেল মাছের আধিক্য বেশি। সঙ্গে অন্য জাতের দেশী মাছও ধরা পড়ছে। এছাড়া চাপিলা, টেংরা, মলা, চিংড়িসহ বিভিন্ন জাতের ছোট মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়ছে। ছোট ও বড় মাছ আলাদা করে বিক্রি করা হচ্ছে ঘাটে। এ বছর বিপন্ন প্রজাতির মাছ পাবদা, চিতল, ফলি, কালবাউস, গুলশাসহ কিছু মাছ আগের চেয়ে অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।

ব্যবসায়ী আকলুস মিয়া জানান, গত বছর বর্ষায় করোনার কারণে ভাসা পানিতে মাছ ধরতে কম গেছেন জেলেরা। মানুষ কম থাকায় প্রাকৃতিক খাবার পেয়েছে মাছ, তাই বড়ও হয়েছে দ্রুত। এজন্য বড় মাছ ধরা পড়ছে।

আলী হোসেন জানান, চকিয়ার বিলে ২০ কেজি ওজনের মাছও ধরা পড়ছে। হাকালুকির মিঠাপানির তাজা ও সুস্বাদু মাছের সুনাম রয়েছে দেশে। চাহিদা বেশি থাকায় দামও ভালো। তবে ঢাকা-সিলেটের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মাছ কিনে নেয়ায় কম পুঁজির স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন না।

বিল ইজারাদার সাইফুল ইসলাম জানান, এখানে অনেক জাতের মাছ ধরা পড়ে, যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। তবে যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ার কথা সে পরিমাণ ধরা পড়ছে না।

সাধারণ মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী হাওরের সরকারি বিলগুলো বিভিন্ন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ইজারা দেয়া হয়। কিন্তু পুঁজি বিনিয়োগ করেন বড় বড় ব্যবসায়ীরা। সেক্ষেত্রে সমিতির নিবন্ধিত প্রান্তিক জেলেরা নামমাত্র খাতা কলমে থাকেন। আয়ের পুরো অংশ যায় পুঁজি মালিকের ঘরে। কিছু জেলে দিনমজুর হিসেবে মাছ ধরেন। অন্যরা একবারেই বঞ্চিত থাকেন।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর আয়তনের হাকালুকি হাওরের ৮০ ভাগ মৌলভীবাজারে ও ২০ ভাগ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। মৌলভীবাজারের বড়লেখা অংশে ৬০ ভাগ, কুলাউড়ায় ১২ ও জুড়ী উপজেলায় আট ভাগ রয়েছে। প্রায় ১১২ প্রজাতির মাছের বিচরণক্ষেত্র হাকালুকি হাওরে ছোট-বড় ২৩৮টি বিল রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার অংশে ২০০টি আর বাকি ৩৮টি সিলেটে। প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে হাওরের পানি কমলে ধরা পড়ে দেশী প্রজাতির মাছ। প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

মৎস্য অফিস বলছে, কয়েক বছর থেকে বিপন্ন প্রজাতির অনেক মাছ ফিরে এসেছে। এর মধ্যে পাবদা, ফলি, চিতল, আইড়, কালবাউস ও গুলশা এবার বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া রানী মাছ, কাকিলা, ছোট চিংড়ি, কাজলি, মলা, পুঁটি, টেংরা, পটকা, ভেদা, গনিয়া, কানি পাবদা, মধু পাবদা বেড়েছে। কঠোরভাবে মৎস্য আইন প্রয়োগের ফলে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার টন মাছ উৎপাদন হয় হাকালুকিতে। সরকারি নানা উদ্যোগের ফলে উৎপাদন ৫ শতাংশের বেশি মাছ উৎপাদন বেড়েছে। এ বছর মার্চ পর্যন্ত হাকালুকির (মৌলভীবাজার অংশে) প্রায় ছয় হাজার টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। গত বছর এ সময়ে উৎপাদন ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, ২০১৭ সালে বন্যায় অ্যামোনিয়া গ্যাসে হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৫ টন মাছ মারা মায়। সে ক্ষতি পোষাতে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় ৩০টি বিল নার্সারির মাধ্যমে রুই, কাতলা ও মৃগেল জাতীয় ২৬ লাখ ৪০ হাজার পোনা উৎপাদন করে হাওরে ছাড়া হয়েছিল। এছাড়া আরো ২৮ লাখ টাকার পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। যার সুফল এখনো যাওয়া যাচ্ছে। হাকালুকি ছাড়াও জেলার কাউয়াদিঘী হাইল হাওরসহ ছয় হাওরে এ মৌসুমে ধরা পড়ে দেশী প্রজাতির মাছ। জেলায় বছরে মাছের চাহিদা ৪৭ হাজার ৩১৩ টন। হাওর, বিল, মৎস্য, খামার মিলে উৎপাদন হয়েছে ৫০ হাজার ৫১৮ টন মাছ। বর্তমানে হাকালুকিতে মাছের ১৫টি অভয়াশ্রম রয়েছে।-বণিকবার্তা

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২২, ২০২১ ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
সাতক্ষীরায় পুকুরে দুর্বৃত্তের বিষ, মরলো ১০ লাখ টাকার মাছ!
মৎস্য

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিব নগরের একটি মৎস্য ঘেরে বিষ দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন মৎস্য ঘেরের মালিক রাকিব হাসান রনি।

বুধবার (২১ এপ্রিল) বিষ প্রয়োগের ফলে মৎস্য ঘেরে রুই, কাতলা, সিলভারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে ওঠে।

রাকিব অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার রাজনগর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মিন্টু একই এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মনিরুল ইসলাম, মো. কামরুল ইসলামের ছেলে আজহারুল ইসলাম মঙ্গলবার রাতে ঘেরে বিষ প্রয়োগ করেছে।

তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন আগে ঘেরের সেচের মোটর চুরি করার প্রতিবাদ কারায় তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগেও অভিযুক্তরা এলাকায় বিভিন্ন ঘেরে মাছ চুরি ও বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান রাকিব।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বুরহান উদ্দীন জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২১, ২০২১ ৭:৫৮ অপরাহ্ন
করোনা: লোকসানের মুখে মাছ চাষিরা!
মৎস্য

করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাছের খাবারের বাড়তি মূল্য মারাত্মক সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে দেশের মৎস্য চাষের ক্ষেত্রে। অন্যদিকে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাওয়ায় কম দামে মাছ বিক্রি করত বাধ্য হচ্ছেন মাছ চাষিরা।

বুধবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীতে ‘অ্যাকুয়াকালচার সেক্টর স্টাডি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা সমীক্ষার ভার্চুয়াল প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লারিভ ইন্টারন্যাশনাল ও লাইটক্যাসল পার্টনার্স যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এই গবেষণা সমীক্ষা করা হয়। মাছ চাষি, বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি ৫০ জনের অধিক ব্যক্তির সাক্ষাতকার ও মতামতের ভিত্তিতে এই সমীক্ষা করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৪ শতাংশ কৃষক জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে যান চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় দূরত্বের স্থানগুলোতে খামারীদের মাঝে মাছের খাবার, মৎস্যজাত দ্রব্য ও পোনা সরবরাহে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে মৎস্য উৎপাদন। আবার মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তা বাজারে কম মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তদুপরি, এই পরিস্থিতিতে মাছের খাবারের দাম মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গেছে। এতে উৎপাদন খরচ আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে।

সমীক্ষায় বলা হয়, ২০২০ সালের শুরু থেকে ২০২১ সালের চলতি এপ্রিল নাগাদ এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। তবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বেড়ে গেলে সংকট আরও ঘনীভূত হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে বেশির ভাগ প্রজাতির মাছের দাম কোভিড পরিস্থিতির আগের তুলনায় ৫ থেকে ১৫ শতাংশ কমে যায়। আর এপ্রিল-মে মাসটা ছিল দেশে তুলনামূলক বেশি কোভিড সংক্রমণকালীন সময়। এই পরিস্থিতিতে ৩৭ শতাংশ কৃষক মনে করেন, ওই সময়টাতে তাদের ৫০-১০০ শতাংশ মূল আয় কমতে থাকে। ৫১ শতাংশ কৃষক মনে করেন, এই সময়টাতে তাদের আয়-ব্যয় সমান্তরালে ১-৫০ শতাংশ হয়, মাত্র ১০ শতাংশ তেমন ক্ষতির সম্মুখীন হননি।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৪ দশমিক ৩৮ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করে। এর ৫০ শতাংশের অধিক আসে চাষ করার মাধ্যমে। তাই এই খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বক্তারা মাছ চাষিদের ব্যাংক ঋণ প্রদান, সরকারি প্রণোদনা বাড়ানো ও তা সঠিকভাবে কার্যকর করা, মাছের খাবার দাম কমানো, মাছ চাষিদের বাস্তব উপযোগী প্রশিক্ষণ, সাপ্লাই চেইন বজায় রাখা এবং সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েজ, নেদারলান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ।

আরও বক্তব্য রাখেন লারিভ ইন্টারন্যাশনালের ডিরেক্টর ম্যাথিয়াস বিনেন, লাইটক্যাসল পার্টনার্স এর পরিচালক জাহেদ আমিন, একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র বিজনেস কনসালট্যান্ট সাইফ নজরুল প্রমুখ।

আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকারসহ এই খাত সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop