১১:৩০ অপরাহ্ন

সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
ইউটিউব দেখে বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করে লাখপতি মাদ্রাসা শিক্ষক
মৎস্য

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বসতবাড়ির ভেতরে ও বাইরের উঠানে বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করে সাড়া ফেলেছেন এক মাদ্রাসাশিক্ষক। ইউটিউবের মাধ্যমে আগ্রহী হয়ে শখের বসে প্রথমে ভেতরের আঙিনায় মাছ চাষ শুরু করেন তিনি।

এতে লাভবান হওয়ায় বাইরের আঙিনাসহ দুটি জলাধারে এবার ৬০ হাজার কৈ মাছ ও দেশি টেংরা মাছ ছেড়েছেন। আর কিছু দিন পরেই মাছ তুলে কয়েক লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে জানান তিনি। তার এই ব্যতিক্রমধর্মী কাজ দেখতে প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে তার বাড়িতে।

জেলার রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের খালিসা কৈলাশকুটি গ্রামের মৃত মনসুর আলীর ছেলে আব্দুল মোমিন (৪২) পেশায় একজন মাদ্রাসাশিক্ষক। পার্শ্ববর্তী সরিষাবাড়ী হাট দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন পুকুর বা বিল লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন।

গতবার পুকুরে ৪০ হাজার হাইব্রিড কৈ মাছ ছেড়ে লোকসানে পড়েন তিনি। এর পর ইউটিউবে ছোট্ট পরিসরে বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছ চাষের কার্যক্রম দেখে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। নিজের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বাড়ির ভেতর ও বাইরের উঠান গর্ত করে জলাধার তৈরি করেন তিনি। দুটির গভীরতা ৪ ফুট করে। ভেতর আঙিনার জলাধারের দৈর্ঘ্য ২৩ ফুট ও ১৮ ফুট।

বাইরের আঙিনার জলাধারের দৈর্ঘ্য ৪১ ফিট ও ২৪ ফিট। চলতি বছরের ১৯ আগস্ট দুটি জলাধারে ৫৭ হাজার কৈ মাছ ও ৩ হাজার দেশি টেংরা মাছের পোনা ছেড়েছেন তিনি। এ কাজে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী ও ছেলে।

আগামী ১৯ ডিসেম্বর মাছ বিক্রি করা শুরু করবেন তিনি। জলাধার তৈরি, অক্সিজেন মেশিনসহ উপকরণ ক্রয়, খাবার, ওষুধ ও বিদ্যুৎ খরচসহ তার মোট ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা। এই মাছ বর্তমান বাজারে তিনি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। এতে সাড়ে ৪ মাসে তার আয় হবে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা।

আব্দুল মোমিনের স্ত্রী শাহজাদী বেগম জানান, গ্রামবাসী ও তার ভাইয়েরা এ কাজে নিরুৎসাহিত করলেও আমি স্বামীর কাজে খুশি ছিলাম। আমার ছেলেসহ আমরা তিনজন মানুষ। আমাদের যা আছে তা দিয়েই সংসার চলে। স্বামী ব্যতিক্রম কিছু করলে ভালোই লাগে। স্বামী মাদ্রাসায় গেলে আমি বাকি সময়টাতে খাবার দেওয়া, অক্সিজেন লাইন ঠিক আছে কিনা তা দেখভাল করি।

উদ্যোক্তা আব্দুল মোমিন জানান, শখের বসে ইউটিউবে দেখে দেখে ঢাকা থেকে সব উপকরণ সরবরাহ করেছি। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে অক্সিজেন মেশিন কিনেছি। প্রায় ৬০ হাজার টাকা দিয়ে মাছের পোনা সংগ্রহ করেছি। এ ছাড়া দুটি জলাধার নির্মাণে প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আমার কাছে কিছু টাকা ছিল, এ ছাড়া বিভিন্ন সংস্থা থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ করেছি। প্রাথমিক অবস্থায় খরচ বেশি হলেও লাভ দ্বিগুণেরও বেশি হয়।

বিষয়টি নিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, বায়োফ্লক পদ্ধতি একটি নতুন প্রযুক্তি। এতে ছোট্ট পরিসরে ৩০ ভাগ কম খরচে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। কেউ আগ্রহী হলে জেলা মৎস্য বিভাগ তাদের সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতা করবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৩, ২০২২ ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ শিকার, আটক ১৭ জেলে!
মৎস্য

সুন্দরবনে নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ ধরার সময় আলাদা অভিযান চালিয়ে ১৭ জেলেকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে সুন্দরবনের তালপট্টি পানির খাল এলাকায় থেকে ১২ ও  মান্দারবেড়ী আঠারবেকী এলাকা থেকে পাঁচ জেলেকে আটক করে বন-বিভাগের সদস্যরা।

এসময় জেলেদের ব্যবহৃত পাঁচ নৌকা, দুইটি ট্রলার, চরপাটা ৯৫ রশি জাল, পাটা জালসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।

আটক জেলেরা হলেন, খুলনার রামনগর গ্রামের জেলে লিপন, মামুন, খায়রুল, বাগেরহাটের উলোবুনিয়া গ্রামের মুজাহিদ, কয়রা সাতহালিয়া গ্রামের সাদ্দাফি হোসেন, ফকিরহাট উপজেলার দিয়াপাড়া গ্রামের ওলি হাওলাদার, রামপাল উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের নান্নু মাসুদ শেখ, একই উপজেলার ভেটবামারী গ্রামের সাইফুল ও রফিকুল, রেজাউল, রিপন শেখ, রামপাল উপজেলার টেংরামারী গ্রামের নাজিম শেখ, শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালি গ্রামের আব্দুস সাত্তার, মহাসিন, পার্শ্বেখালি গ্রামের শহিদুল, মজিদ মোড়ল, চকবারা গ্রামের ইন্দ্রিস।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ কে এম ইকবাল হোসেন চৌধুরী জানান, সুন্দরবনে অবৈধভাবে নৌকা ও ট্রলার নিয়ে মাছ ধরার সময় জেলেদের আটক করা হয়। এসময় তাদের ব্যবহৃত কয়েক লক্ষাধিক টাকা মূল্যের চরপাটা জাল, ট্রলার ও নৌকাসহ আনুষঙ্গিক মালামাল জব্দ করা হয়। বন আইনের মামলায় আটক জেলেদের সাতক্ষীরা আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১২, ২০২২ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন
শীতের মৌসুমে যেসব মাছের চাষ করবেন
মৎস্য

চলে এসেছে শীত মৌসুম। একাধিক জেলায় রুই, কাতলা, মৃগেল, বাগদা-চিংড়ি এই সব প্রজাতির মাছ চাষই বেশি হয়। কিন্তু এই জাতীয় মাছ সাধারণত শীতকালে খুব কম হয়। কারণ, এই জাতীয় মাছ ১৪-১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। কিন্তু তাপমাত্রা ওই ডিগ্রির নীচে বা উপরে ওঠানামা করলে মাছেরা পুকুরের বা জলাশয়ের গভীরে চলে যায়। অনেক সময় মাছ মারা যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

ফলে শীতের মরসুমে ওই সব প্রজাতির মাছের বৃদ্ধি হয় না বললেই চলে। কিন্তু এই সময় সাইপ্রিনাস কার্প, রুপোলি রুই বা সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প বা ঘেসো রুই-প্রভৃতি প্রজাতির মাছ চাষের উপযুক্ত সময়। এই সব প্রজাতির মাছ ৪-৫ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও খাবার খেয়ে দ্রুত বাড়তে সক্ষম।

তবে রুই-কাতলা মাছের যেমন স্বাদ তার চেয়ে এই সব মাছের স্বাদ একটু কম। তবে চাহিদা কম নয়। এই সব মাছের এক লক্ষ ডিম পোনার দাম মাত্র চারশো টাকা। তবে এক লক্ষ ডিম ছাড়লে মাত্র ৭-৮ হাজার ডিম পোনা বাঁচবে। বাদ বাকি মারা যাবে। তাতেও লাভ পাবেন চাষিরা।

সেপ্টেম্বর মাসের গোড়া থেকে অক্টোবর মাসেই চারা পোনা ছাড়ার সময়। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেও এই মাছের চাষ করা যায়। ৬-৭ মাসের মধ্যে মাছ বিক্রির উপযুক্ত হয়ে পড়ে। ধানের গুঁড়ো, সরষের খোল, গমের আটাই মাছেদের খাবার।

দফতর সূত্রের খবর, জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জলাশয় মাছ চাষের উপযুক্ত। শীতের মরসুমে যদি মোট জলাশয়ের অর্ধেক জলাশয়েও চাষ হয়-তাহলে ছোট-বড় সব রকম মাছ চাষিরই এই সময় একটা লাভ পাবে। পরে ফের শীত কেটে গেলে ওই মাছ তুলে বাজারে বিক্রি করে রুই, কাতলা-সহ অনান্য মাছ চাষও করতে পারবেন। শীতকালে যে সব মাছ চাষ করলে চাষিরা লাভবান হবেন-তার জন্য প্রচার করে চাষিদের সম্যক ধারণা দেওয়ায় উদ্যোগী মত্‌স্য দফতর।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১২, ২০২২ ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করবেন যেভাবে
মৎস্য

মাছ হচ্ছে প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং পুষ্টি সরবরাহে মৎস্য সম্পদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মাছ চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, যেমন- একই পুকুরে নানা জাতের মাছ চাষ করা যায়, খাল ও ডোবায় মাছ চাষ করা যায়, আবার চৌবাচ্চায়ও মাছের চাষ করা যায়। সাধারণত মাছের জন্য পুকুরে খাবার উৎপাদনই হচ্ছে মাছ চাষ। এটি কৃষির মতোই একটি চাষাবাদ পদ্ধতি। আবার কোনো নির্দিষ্ট জলাশয়ে/জলসীমায় পরিকল্পিত উপায়ে স্বল্প পুঁজি, অল্প সময় ও লাগসই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছের উৎপাদনকে মাছ চাষ বলে। মূলত বিভিন্ন নিয়ম মেনে প্রাকৃতিক উৎপাদনের চেয়ে অধিক মাছ উৎপাদনই মাছ চাষ।

চাষ উপযোগী মাছের গুণাগুণ ও উপকারিতা:
আমাদের দেশের স্বাদু পানিতে ২৬০টিরও বেশি প্রজাতির মাছ আছে। এছাড়া খাড়ি অঞ্চলে ও লোনা পানিতে কয়েক শত প্রজাতির মাছ আছে। তবে চাষযোগ্য মাছগুলো হলো- রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, সিলভারকার্প, মিররকার্প, গ্রাসকার্প, কমনকার্প, বিগহেড, রাজপুঁটি, নাইলোটিকা, বিদেশি মাগুর, থাই পাঙ্গাশ প্রভৃতি। এসব মাছের কিছু গুণাগুণ আছে-

এসব মাছ খুব দ্রুত বাড়ে; খাদ্য ও জায়গার জন্য একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে না; পুকুরে বেশি সংখ্যায় চাষ করা যায়; পানির সব স্তর থেকে খাবার গ্রহণ করে, তাই পুকুরের পরিবেশ ভালো থাকে; এসব মাছ খেতে খুব সুস্বাদু; বাজারে এসব মাছের প্রচুর চাহিদা আছে; সহজে রোগাক্রান্ত হয় না।

বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের জন্য পুকুরকে প্রস্তুত করে নেয়াই ভালো। কারণ একটি পুকুর মাছ চাষের উপযুক্ত না হলে এবং পুকুর প্রস্তুত না করে চাষ শুরু করে দিলে বিনিয়োগ ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। ঝুঁকি এড়াতে এবং লভ্যাংশ নিশ্চিত করতেই বৈজ্ঞানিক কৌশল অনুসরণ করে পুকুর প্রস্তুত করতে হবে।

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতি:
১. পুকুরের পাড় ও তলা মেরামত করা; ২. পাড়ের ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার করা; ৩. জলজ আগাছা পরিষ্কার করা; ৪. রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ দূর করা; ১. পুকুর শুকানো; ২. বার বার জাল টানা; ৩. ওষুধ প্রয়োগ- রোটেনন। পরিমাণ ২৫-৩০ গ্রাম/শতাংশ/ফুট। এর বিষক্রিয়ার মেয়াদ ৭-১০ দিন। প্রয়োগের সময় রোদ্রজ্জ্বল দিনে। ২. ফসটক্সিন/কুইফস/সেলফস ৩ গ্রাম/শতাংশ/ ফুট। মেয়াদ এবং সময় পূর্বের মতো; ৫. চুন প্রয়োগ: কারণ/কাজ/উপকারিতা সাধারণত ১ কেজি চুন/শতাংশ প্রয়োগ করতে যদি ঢ়ঐ এর মান ৭ এর আশেপাশে থাকে। বছরে সাধারণত ২ বার চুন প্রয়োগ করতে হয়। একবার পুকুর তৈরির সময়, দ্বিতীয় বার শীতের শুরুতে কার্র্তিক অগ্রহায়ণ মাসে।

চুন প্রয়োগের উপকারিতা ও সাবধানতা:
1.পানি পরিষ্কার করা/ঘোলাটে ভাব দূর করা;

2.pH নিয়ন্ত্রণ করে;

3.রোগ জীবাণু ধ্বংস করে;

4.মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়;

5.বিষাক্ত গ্যাস দূর করে;

6.শ্যাওলা নিয়ন্ত্রণ করে। চুন কখনও প্লাস্টিকের কিছুতে গোলানো যাবে না;

7.পুকুরে মাছ থাকা অবস্থায় চুন গোলানোর ২ দিন পর পুকুরে দিতে হয়;

8.গোলানোর সময় এবং দেয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন নাকে মুখে ঢুকে না যায়;

9.পানি নাড়া চাড়া করে দিতে হবে;

সার প্রয়োগ:

1.সার প্রয়োগ প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক;

2.জৈব সার/প্রাকৃতিক যা কিনা প্রাণীকণা তৈরি করে।

3.গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, কম্পোস্ট;

4.অজৈব বা রাসায়নিক বা কৃত্রিম সার ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি যা উদ্ভিদ কণা তৈরি করে।

নতুন পুকুরের ক্ষেত্রে সার প্রয়োগ মাত্রা:
১. প্রতি শতাংশে গোবর ৫-৭ কেজি অথবা ২. হাঁস মুরগির বিষ্ঠা ৫-৬ কেজি অথবা ৩. কম্পোস্ট ১০-১২ কেজি এবং ইউরিয়া ১০০-১৫০ গ্রাম টিএসপি ৫০-৭৫ গ্রাম।

পুকুর প্রস্তুতির আনুমানিক মোট সময়:

1.পাড় ও তলা+ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার = ২ দিন;
2.রাক্ষুসে মাছ পরিষ্কার = ৩ দিন (৭-১০ দিন পর্যন্ত বিষক্রিয়া থাকে)।
3.চুন প্রয়োগ = ৩-৫ দিন;
4.সার প্রয়োগ = ৭ দিন;
5.এরপর পোনা ছাড়া হবে। গড়ে মোট ১৭ দিন (২+৩+৫+৭)।
6.পুকুরে চাষযোগ্য মাছের বৈশিষ্ট্য- দ্রুতবর্ধনশীল;
7.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি; বাজার চাহিদা বেশি।

পুকুর নির্বাচন:
১. পুকুরটি খোলামেলা জায়গায় এবং বাড়ির আশপাশে হতে হবে।
২. মাটির গুণাগুণ পুকুরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দো-আঁশ, এঁটেল দো-আঁশ ও এঁটেল মাটি পুকুরের জন্য ভালো।
৩. পুকুরের আয়তন কমপক্ষে ১০ শতাংশ হতে হবে। ৩০ শতাংশ থেকে ১ একর আকারের পুকুর মাছ চাষের জন্য বেশি উপযোগী।
৪. পুকুরের গভীরতা ২-৩ মিটার রাখতে হবে।
৫. পুকুর পাড়ে বড় গাছ বা ঝোপ-ঝাড় থাকা যাবে না।

পুকুর প্রস্তুত:
পোনা মাছ ছাড়ার আগে পুকুর তৈরি করে নিতে হবে। সাধারণত পুরনো পুকুরই তৈরি করে নেয়া হয়। পুকুর প্রস্তুতির কাজটি পর্যায়ক্রমে করতে হবে:

১ম ধাপ: জলজ আগাছা-কচুরিপানা, কলমিলতা, হেলেঞ্চা শেকড়সহ তুলে ফেলতে হবে;

২য় ধাপ: শোল, গজার, বোয়াল, টাকি রাক্ষুসে মাছ এবং অবাঞ্ছিত মাছ মলা, ঢেলা, চান্দা, পুঁটি সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে;

৩য় ধাপ: এরপর প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। পুকুরে পানি থাকলে ড্রামে বা বালতিতে গুলে ঠা-া করে পুরো পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে;

৪র্থ ধাপ: মাটি ও পানির গুণাগুণ বিবেচনায় রেখে চুন দেয়ার এক সপ্তাহ পর জৈবসার দিতে হবে;

৫ম ধাপ: পুকুর শুকনা হলে পুকুরে সার, চুন, গোবর সব ছিটিয়ে দিয়ে লাঙল দিয়ে চাষ করে পানি ঢুকাতে হবে;

৬ষ্ঠ ধাপ: পোনা মজুদের আগে পুকুরে ক্ষতিকর পোকামাকড় থাকলে তা মেরে ফেলতে হবে;

৭ম ধাপ: পুকুরে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মালে পোনা মজুদ করতে হবে। মৃত্যুর হার যেন কম থাকে সেজন্য পোনার আকার ৮-১২ সেন্টিমিটার হতে হবে।

৮ম ধাপ: এর পর নিয়মমতো পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যেমন:
১. পোনা হাড়িতে বা পলিথিন ব্যাগে আনা হলে, পলিথিন ব্যাগটির মুখ খোলার আগে পুকুরের পানিতে ২০-৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে;

২. তারপর ব্যাগের মুখ খুলে অল্প করে ব্যাগের পানি পুকুরে এবং পুকুরের পানি ব্যাগে ভরতে হবে।

৩. ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা যখন সমান হবে তখন পাত্র বা ব্যাগের মুখ আধা পানিতে ডুবিয়ে কাত করে সব পোনা পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। সকাল ও বিকালই পোনা ছাড়ার ভালো সময়।

৯ম ধাপ: দিনে দুইবার অর্থাৎ সকাল ১০টায় এবং বিকাল ৩টায় খৈল, কুঁড়া, ভুসি ইত্যাদি সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।

সতর্কতা :
১. রোগ প্রতিরোধী মাছের চাষ করতে হবে।
২. সঠিক সংখ্যায় পোনা মজুদ করতে হবে।
৩. পোনা ছাড়ার আগে পোনা রোগে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং পুকুরে যাতে আগাছা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৫. প্রতি ৩-৪ বছর পরপর পুকুর শুকিয়ে ফেলতে হবে।

বাণিজ্যিকভাবে চাষযোগ্য মাছ:
দেশি কার্প- রুই, কাতলা, মৃগেল, কালি বাউশ; বিদেশি কার্প- গ্রাস কার্প, সিল্ভার কার্প, কার্পিও, মিরর কার্প, বিগহেড কার্প ছাড়াও পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, সরপুঁটি/রাজপুঁটি, কৈ, চিংড়ি এসব।

বিভিন্ন স্তরের মাছ একসাথে চাষের আনুপাতিক হার:
উপরের স্তর ৪০%; মধ্য স্তর ২৫%; নিম্ন স্তর ২৫%; সর্বস্তর ১০% মোট ১০০%। সাধারণত শতাংশ প্রতি ১৫০টি পোনা ছাড়া যায়। এ হিসাবে ৩০ শতাংশের একটি পুকুরে মোট ৪৫০০টি পোনা ছাড়া যাবে। এবং উপরের স্তরের মাছ থাকবে {(৪০ঢ৪৫০০)/১০০}=১৮০০টি পোনা

পুকুরে মাছ চাষ:
১. সনাতন পদ্ধতির মাছ চাষ : এ পদ্ধতিতে পুকুরের কোনো ব্যবস্থাপনা ছাড়াই মাটি ও পানির উর্বরতায় পানিতে যে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয় মাছ তাই খেয়ে জীবন ধারণ করে। এক্ষেত্রে আলাদা কোনো পরিচর্যা নিতে হয় না।

২. আধা-নিবিড় পদ্ধতির মাছ চাষ : এ পদ্ধতিতে নিয়মমতো পুকুর প্রস্তুত করে আংশিক সার ও খাদ্য সরবরাহ করে মাছের খাদ্য উৎপন্ন করতে হয়। পুকুরের বিভিন্ন স্তরে উৎপাদিত খাদ্যের সঠিক ব্যবহারের দিকে লক্ষ্য রেখে মাছের পোনা ছাড়তে হয়।

৩. নিবিড় পদ্ধতির মাছ চাষ : অল্প জায়গায়, অল্প সময়ে বেশি উৎপাদনের জন্য সার ব্যবহার করে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হয়।

৪. কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ : পুকুরের বিভিন্ন স্তরে উৎপন্ন খাবার সম্পূর্ণ ব্যবহার করার জন্য রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, বিগহেড, সিলভারকার্প, কমনকার্পসহ প্রজাতির মাছ একত্রে চাষ করা যায়।

মাছের প্রক্রিয়াজাতকরণ:
১. মাছ প্রক্রিয়াজাতের সময় হাত দিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করা যাবে না;

2.মাছ ধরার পর মাছের আকৃতি অনুযায়ী আলাদা করে ফেলতে হবে;

3.বাক্সে বা পাত্রে বরফ দিয়ে স্তরে স্তরে মাছ সাজাতে হবে।

পরিচর্যা:
১. বর্ষার শেষে পুকুরের পানিতে লাল বা সবুজ সর পরলে তা তুলে ফেলতে হবে; পানির সবুজভাব কমে গেলে অবশ্যই পরিমাণমতো সার দিতে হবে; মাঝে মাঝে জাল টেনে মাছের অবস্থা দেখতে হবে; পুকুরে জাল টেনে মাছের ব্যায়াম করাতে হবে।

 

কৃষিবিদ হাসান রিয়াদুল আলম

পান্থনীড়, ফেনী

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১১, ২০২২ ৯:৪০ পূর্বাহ্ন
মাছ চাষে স্বাবলম্বী হাওরপারের যুবকরা!
মৎস্য

কর্মসংস্থানের অভাবে হাওরপারের যুবকরা ঢাকামুখী বা বিদেশে পাড়ি জমায়। তবুও হাওর এলাকার অর্থনৈতিক দূরাবস্থা কাটতো না। তাই এখন হাওর অঞ্চলের যুবকরা মাছ উৎপাদনে ঝুঁকছেন। এখন ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে হাওরপারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। মাছ চাষ শুরু করায় এলাকার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরপারের এলাকার যুবকরা বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এখন যুবকরা ঢাকামুখী ও বিদেশে পাড়ি না জমিয়ে মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে মাছ উৎপাদন, আহরণ, পরিবহন এবং বাজারজাতকরণ কাজে শত শত বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি নিজেদের আমিষের অভাবও পূরণ করছেন তারা।

উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের যুবক সোহেল আহমদ বলেন, আমি অর্থ উপার্জনের জন্য মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলাম। সেখানে প্রায় ১ দশক থাকার পর ২০১৬ সালে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি ফিরে অন্যান্য কাজ করলেও তাতে কোনো লাভ হয়নি। তারপর ৩০০ শতাংশ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ শুরু করি। ১টি বিশাল পুকুরসহ ছোট্ট বড় আরও ৪-৫টি পুকুর রয়েছে। মাছ চাষ করে বছরে প্রায় কয়েক লাখ টাকা আয় করতে পারছি।

সোহেল আহমদ বলেন, বিদেশ থেকে ফেরত এসে মাছ চাষ করছি। মাছ চাষে ভালো আয় হচ্ছে। মাছ চাষে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। পরিবার নিয়ে সুখে আছি। সরকারি চাকরি আর বিদেশগামী না হয়ে দেশের প্রতিটি এলাকার যুবকদের প্রত্যেকের নিজ এলাকায় আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করা উচিত।’

শুধু বিদেশফেরত যুবক সোহেল আহমদ একাই নয়, তার মতো আলীপুর গ্রামের সিরাজ মিয়া, হাবীবুর রহমান, আব্দুস শহীদ, সজীব মিয়াসহ আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা এখন মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। মাছ চাষ ও ব্যবসায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই গ্রাম থেকে কয়েকজন মৎস্যখামারি ইতোমধ্যে একাধিকবার জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ মৎস্যচাষির স্বীকৃতি ও সম্মাননা পেয়েছেন। সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর ছাড়াও নূরপুর, টেংরাটিলা, বৈঠাখাই, সোনাপুর ও নন্দীগ্রামে কনছখাই এবং কানলার হাওরপাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে শত শত বাণিজ্যিক মাছ চাষের পুকুর। এসব পুকুরে চাষ হচ্ছে পাঙাশ, তেলাপিয়া, কাতলাসহ সকল প্রকার বিদেশি জাতের কার্প জাতীয় মাছ। গ্রামের প্রধান সড়ক ও হাওরের পাশে একের পর এক পুকুর দেখে মনে হয় প্রতিটি গ্রাম যেন পুকুরে ঘেরা।

দোয়ারাবাজার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মন বলেন, এই উপজেলায় ৪ হাজার ৬৬৬টি মাছ চাষে পুকুর রয়েছে। আমরা মাছ চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা করছি। আশা করছি এই জেলার বেকারত্ব মাছ চাষের মাধ্যমে দূর হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১০, ২০২২ ৬:৫৯ অপরাহ্ন
মানিকগঞ্জে বাড়ছে দেশীয় মাছ,কমছে দাম!
মৎস্য

শীত উপেক্ষা করে সরগরম হয়ে উঠেছে মানিকগঞ্জের তরাঘাটের দেশীয় মৎস্য আড়ত। নদী, খাল-বিলের পানি কমতে শুরু করায় প্রচুর পরিমানে দেশি মাছ ধরা পড়ছে। আর আড়তে দেশি মাছের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে।

জানা যায়, মানিকগঞ্জের তরাঘাটের এই দেশীয় মৎস্য আড়ত প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। নদী, খাল-বিলের পানি কমে যাওয়া জেলেরা প্রচুর পরিমানে দেশি মাছ ধরতে পারছেন। কনকনে শীতের মধ্যেই ভোর বেলায় পাইকার ও জেলেদের বেচাকেনায় বাজার জমে উঠে। আড়তে দেশি মাছের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা কমেছে দেশি মাছের দাম। আড়তে মাছের দাম কম থাকায় জেলেরা হতাশ। তবে পাইকারি দাম কমলেও এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েনি। খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

জানা যায়, আড়তে দেশিও কই, বোয়াল, শোল, শিং, আইড়, টেংরা, বাইম মাছে ভরে উঠেছে। মাছের সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে কেজি প্রতি মাছের দাম ১০-২০ টাকা কমেছে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে মাছ কিনতে আসছেন।

ব্যবসায়ীরা জানা, টাটকা ও সুস্বাদু দেশীয় মাছ কিনে দূর-দূরান্তে বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছি।

তরাঘাটের মৎস্য আড়তে কই ৫০০-৫৫০ টাকা, শোল ৩৭০-৪০০ টাকা, পুঁটি ৮০-১২০ টাকা, মলা ৯০-১১০ টাকা, কাতল ১৮০-১৯০ টাকা, পাবদা ২৪০-২৫০ টাকা, ইলিশ ছোট ৩০০-৪০০ টাকা, ১ কেজির ইলিশ ৮৫০-৯০০ টাকা, আইড় ৮০০-১১০০ টাকা, গোলশা ৫৮০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৭০০ টাকা, রয়না ৩৫০-৪০০ টাকা, টেংরা ৩২০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আড়তের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন-অর-রশিদ জানান, জেলার ২০০ বছরের পুরোনো কালীগঙ্গা নদীপাড়ের তরা মৎস্য আড়তে সহস্রাধিক পাইকার ও অর্ধশতাধিক আড়তদারের মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি টাকার দেশীয় মাছ বেচাকেনা হয় বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৯, ২০২২ ৫:১৬ অপরাহ্ন
পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ করার উপায়
মৎস্য

পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ করার উপায় আমাদের দেশের অনেক মৎস্য চাষিরাই জানেন না। নদী-নালায় মাছ কমে যাওয়ায় এখন অনেকেই তাদের পুকুরে মাছ চাষ করছেন। পুকুরে চাষ হওয়া মাছগুলোর মধ্যে তেলাপিয়া মাছ অন্যতম। আজকে জেনে নিব পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ সম্পর্কে-

পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ:
আমাদের দেশে মাছ চাষ নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। তেমনই হচ্ছে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া চাষ পদ্ধতি। এই চাষ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে দারুণ সফল হচ্ছেন চাষিরা। এ ধরনের মাছ চাষের জন্য প্রথমে পুকুরে মলা মাছ ছাড়তে হবে তারপর তেলাপিয়া। মাছ বড় হলে আগে মলা মাছ ধরতে হবে। কারণ বাজারে এর চাহিদা অনেক। মলা মাছ বড় হতে কম সময় লাগে। মলা মাছে লাভের পরিমাণও অনেক বেশি।

প্রথমেই পুকুরে বিষ দিয়ে অবাঞ্ছিত মাছ দূর করে তার পরদিন পুকুরের তলদেশের অবস্থা বুঝে শতাংশপ্রতি আধা কেজি থেকে এক কেজি চুন দিয়ে এর ছয়-সাতদিন পর শতাংশপ্রতি শূন্য দশমিক ৩ মিলি পিপিএম হারে সুমিথিয়ন প্রয়োগ করতে হবে।

একদিন পর পুকুরে মলা মাছের রেণু ছাড়তে হবে। আমাদের বর্তমান চাষ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি ৫০ শতাংশের পুকুরে এক হাপা মলা মাছের রেণু দিতে হবে। তারপর এ মলা মাছের ওপর তেলাপিয়ার মনোসেক্স পোনা ছাড়তে হবে।

মাছের বয়স যখন ৯০ দিন পূর্ণ হবে সেদিন মলা মাছ বাজারজাত করার পরিকল্পনা করতে হবে। তেলাপিয়া বাজারজাত হবে আরও পরে। সঠিকভাবে মাছের যত্ন নিলে ৯০ দিন পর মলা মাছ ২০০ থেকে ৩০০ পিসে কেজি হবে।

এভাবে মাছের বয়স ৯০ দিন হলে আনুমানিক ৯০ শতাংশ মলা মাছ বিক্রি করে ১০ শতাংশ মলা মাছ তেলাপিয়ার সাথে রেখে দিতে হবে। তারপর তেলাপিয়া সাইজ হওয়ার আগ পর্যন্ত চাষে রেখে দিতে হবে ৫০ কেজি উৎপাদন হওয়ার আগ পর্যন্ত।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৮, ২০২২ ৯:০১ অপরাহ্ন
মাছ, মাংস, দুধ, ডিম উৎপাদন না হলে দেশে খাদ্য ও পুষ্টি সংকটে পড়তো মানুষ: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম খাবারের বড় একটি অংশ। এগুলো উৎপাদন না হলে দেশে খাদ্য সংকট হতো। পুষ্টি ও আমিষের যোগানে সংকট তৈরি হতো।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সাভারে বিসিএস লাইভস্টক একাডেমি মিলনায়তনে ৪০তম বিসিএস (লাইভস্টক) ও বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডারে নবযোগদানকৃত কর্মকর্তাদের ৫ দিনব্যাপী অবহিতকরণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত বিকশিত না হলে আমাদের বিদেশনির্ভর থাকতে হতো। মাছ আমদানি করতে হতো। কোরবানির চাহিদা মেটাতে ভারত-মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি করতে হতো। এখন আমরা বিদেশমুখী নই। সম্প্রতি যে তিনটি দেশ মৎস্য উৎপাদনে ভালো করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। প্রাণিসম্পদ খাতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখন পৃথিবীর ৫০টির অধিক দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়। কোন কোন দেশে মাংস রপ্তানি শুরু হচ্ছে। এ খাতে দেশে আন্তর্জাতিক মানের মাননিয়ন্ত্রণ পরীক্ষার ও গবেষণাগার তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গ্রামীণ অর্থনীতির সচল রাখছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত। এ খাত বেকারত্ব দূর করছে। উদ্যোক্তা তৈরি করছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করছে।

নবনিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। সে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের নাগরিকদের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে মেধার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে হবে।

প্রধান অতিথি আরও যোগ করেন, দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত অন্যতম অংশীদার। এ খাতকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হচ্ছে। সেই ব্যবস্থার ক্যাপ্টেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার কারিগর।

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরও যোগ করেন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারপরও একটি শ্রেণি আছে যারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চায়, সাম্প্রদায়িকতা ফিরিয়ে আনতে চায়। সেসব মানুষের দ্বারা কখনও বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার দৃপ্ত প্রত্যয় যারা ব্যহত করতে চায়, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও এ টি এম মোস্তফা কামাল, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বিসিএস লাইভস্টক একাডেমির পরিচালক ডা. পীযূষ কান্তি ঘোষ।

৪০তম বিসিএসে নবযোগদানকৃত লাইভস্টক ক্যাডারের ১৫২ জন এবং মৎস্য ক্যাডারের নবযোগদানকৃত ২৩ জন কর্মকর্তা অবহিতকরণ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী নবীন কর্মকর্তাদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৭, ২০২২ ৩:৫১ অপরাহ্ন
পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়ার চাষ করবেন যেভাবে
মৎস্য

পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ করার উপায় আমাদের দেশের অনেক মৎস্য চাষিরাই জানেন না। নদী-নালায় মাছ কমে যাওয়ায় এখন অনেকেই তাদের পুকুরে মাছ চাষ করছেন। পুকুরে চাষ হওয়া মাছগুলোর মধ্যে তেলাপিয়া মাছ অন্যতম। আজকে জেনে নিব পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ সম্পর্কে-

পুকুরে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া মাছের চাষ:
আমাদের দেশে মাছ চাষ নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। তেমনই হচ্ছে মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া চাষ পদ্ধতি। এই চাষ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে দারুণ সফল হচ্ছেন চাষিরা। এ ধরনের মাছ চাষের জন্য প্রথমে পুকুরে মলা মাছ ছাড়তে হবে তারপর তেলাপিয়া। মাছ বড় হলে আগে মলা মাছ ধরতে হবে। কারণ বাজারে এর চাহিদা অনেক। মলা মাছ বড় হতে কম সময় লাগে। মলা মাছে লাভের পরিমাণও অনেক বেশি।

প্রথমেই পুকুরে বিষ দিয়ে অবাঞ্ছিত মাছ দূর করে তার পরদিন পুকুরের তলদেশের অবস্থা বুঝে শতাংশপ্রতি আধা কেজি থেকে এক কেজি চুন দিয়ে এর ছয়-সাতদিন পর শতাংশপ্রতি শূন্য দশমিক ৩ মিলি পিপিএম হারে সুমিথিয়ন প্রয়োগ করতে হবে।

একদিন পর পুকুরে মলা মাছের রেণু ছাড়তে হবে। আমাদের বর্তমান চাষ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি ৫০ শতাংশের পুকুরে এক হাপা মলা মাছের রেণু দিতে হবে। তারপর এ মলা মাছের ওপর তেলাপিয়ার মনোসেক্স পোনা ছাড়তে হবে।

মাছের বয়স যখন ৯০ দিন পূর্ণ হবে সেদিন মলা মাছ বাজারজাত করার পরিকল্পনা করতে হবে। তেলাপিয়া বাজারজাত হবে আরও পরে। সঠিকভাবে মাছের যত্ন নিলে ৯০ দিন পর মলা মাছ ২০০ থেকে ৩০০ পিসে কেজি হবে।

এভাবে মাছের বয়স ৯০ দিন হলে আনুমানিক ৯০ শতাংশ মলা মাছ বিক্রি করে ১০ শতাংশ মলা মাছ তেলাপিয়ার সাথে রেখে দিতে হবে। তারপর তেলাপিয়া সাইজ হওয়ার আগ পর্যন্ত চাষে রেখে দিতে হবে ৫০ কেজি উৎপাদন হওয়ার আগ পর্যন্ত।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ৭:১৬ অপরাহ্ন
কেন্দুয়ায় মাছের সঙ্গে শত্রুতা
মৎস্য

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় শত্রুতার জেরে এক মাছচাষির ফিশারি পুকুরে বিষ (কীটনাশক) প্রয়োগ করে অন্তত ১৫ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ভোরবেলা ওই ফিশারী পুকুরের মালিক আলাল মিয়া পুকুর পাড়ে গেলে সব মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার সাধারণ মানুষ ঘটনাটি দেখতে পুকুরে গিয়ে ভিড় করেন। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষি আলাল মিয়া কেন্দুয়া পৌরশহরের তুরুকপাড়া গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, আলাল মিয়া পাশের কুন্ডুলী গ্রামে ৪টি পুকুর লিজ নিয়ে পাঙ্গাস, রুই, কাতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছিলেন। কিছুদিনের মধ্যে মাছগুলো বিক্রির প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন আলাল। সম্প্রতি কুন্ডুলী গ্রামের ইউপি সদস্য সুহেল মিয়া, তার ভাই মস্তু মিয়া ও মান্নান মিয়া গংদের সঙ্গে আলাল মিয়ার বিরোধ দেখা দিলে পুকুরের মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। পরে এ ঘটনায় কেন্দুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করেন আলাল।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে আলাল মিয়া প্রতিদিনের মতো তার ফিশারী পুকুরে গেলে সব মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখেন। পরে বিষয়টি কেন্দুয়া থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

ফিশারী মালিক আলাল মিয়া জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রায় দেড় মাস আগে কুন্ডুলী গ্রামের সুহেল মেম্বার, তার ভাই মস্তু মিয়া ও মান্নান মিয়া গংরা আমার পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় তখন আমি কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তারই জেরে আমার ফিশারিতে বিষ দিয়ে মাছ নিধন করা হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সুহেল মিয়া বলেন, মাছের সঙ্গে এমন কাজ কোনো মানুষ করতে পারে না। কেউ যদি করে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনা হোক। এছাড়া গ্রামের একটি মারামারি মামলায় আমরা সবাই বাড়ি ছাড়া। এই কাজ আমাদের কেউ করেনি।

কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মৎস্য অফিসারকে বলেছি, তারা পুকুরের পানি সংগ্রহ করেছেন। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop