১১:৩২ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • প্লেনারি অ্যাকুয়া : খুবি শিক্ষার্থীদের এক সাফল্যগাঁথা উদ্যোগ
ads
প্রকাশ : এপ্রিল ২২, ২০২২ ১২:৩১ অপরাহ্ন
প্লেনারি অ্যাকুয়া : খুবি শিক্ষার্থীদের এক সাফল্যগাঁথা উদ্যোগ
এগ্রিবিজনেস

শৈশব থেকে পড়ে এসেছি, আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেক কিছু বদলালেও বদলায়নি বাঙালির মাছ প্রীতি। এখনো মাছের বাজার সরগরম দেখা যায়। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই মাছ খেতে ভালোবাসেন। মাছের এই চাহিদা মেটাতে দেশের নানান প্রান্তে অনেকেই মাছের চাষাবাদ শুরু করেছেন। নদী-সমুদ্র থেকে এখন মাছ আহরণ অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

২০২০ সালে করোনায় যখন লকডাউন শুরু হয়, সদ্য অনার্স শেষ করা যুবকের মাথায় চলে আসে সময়টাকে কাজে লাগাবার। ফিশারিজ গ্রাজুয়েট হবার দরুন বাঙালির মাছ প্রীতি বুঝতে একদমই কষ্ট হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন প্রকল্পে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেন। সেখান থেকে মৎস্য খাতের গুরুত্ব ব্যাপকভাবে অনুধাবন করেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, এই খাতে নিজস্ব উদ্যোগে কিছু করার। একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীদের সাথে আইডিয়া শেয়ার করতেই তারা তা বাস্তবায়নে রাজি হয়ে যায়। যাত্রা শুরু করে এক চমকপ্রদ উদ্যোগ। বলছিলাম অনুপ কুমার (ফাউন্ডার), প্রেমা হাজরা (কো-ফাউন্ডার) ও তাদের উদ্যোগ প্লেনারি অ্যাকুয়া শুরুর কাহিনী। অনুপ কুমার ও প্রেমা হাজরা উভয়েই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সাবেক শিক্ষার্থী। তারা মূলত প্রোসেসড ফিশ উন্নত মানের প্যাকেজিং এর মাধ্যমে বাজারজাত করছেন। পাশাপাশি নানান জাতের মাছ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তুলনামূলক নতুন এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে তাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, করতে হয়েছে কঠোর পরিশ্রম।

লকডাউনে যখন চারিদিকে স্থবিরতা, তখন ফুড ডেলিভারির মতো সার্ভিসগুলো থেমে ছিলো না। করোনার সংক্রমণ এড়াতে সবাই তখন অনলাইনে কেনাকাটায় জোর দেন। অনুপ কুমার এই সুযোগটাই কাজে লাগান। মানসম্মত ও সুস্বাদু মাছ ক্রেতার দোরগোড়ায় পৌঁছানোর মাধ্যমে আত্নপ্রকাশ করতে থাকে প্লেনারি অ্যাকুয়া। বর্তমানে প্লেনারি অ্যাকুয়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জনে সমর্থ হয়েছে। গত এক বছরে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করতে সফল হয়েছে তারা। লাভের অংকটা বেশ স্বস্তিদায়ক হলেও পেছনের গল্পটাও বেশ কঠিন। উদ্যোগের শুরুতে কর্মীদের বেতন, অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাতে খরচ সামাল দিতে চোখে সর্ষের ভূত দেখার উপক্রমও হয়েছে! তাদের এই সম্ভাবনাময় উদ্যোগকে আরও সুষ্ঠু ভাবে বাস্তবায়ন করার সংকল্পে বর্তমানে ওয়ার্ল্ড ফিশের সাথে একটা প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে প্লেনারি একুয়া। ওয়ার্ল্ড ফিশ বিভিন্ন ভাবে এই সম্ভাবনাময় উদ্যোগে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে আসছে।

প্লেনারি অ্যাকুয়া নিয়ে অনুপের স্বপ্নটা অনেক বড়। রাখতে চান মাছ রপ্তানিতে অবদান। ফ্রোজেন ফিশ, ফিশ নাগেট, কাটলেট এর মতো নানান মুখরোচক খাবার প্রস্তুতির মতো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি আশাবাদী। তার কথায় দেশের মৎস্য শিল্পে দক্ষ জনবলের অভাবের কথা ফুটে আসে। প্রোডাক্ট কোয়ালিটি ডেভেলপমেন্ট নিয়ে ফিশারিজ গ্রাজুয়েটদের কাজের বেশ সুযোগ আছে। তবে যথাযথ সুযোগ না থাকার কারণে ফিশারিজ গ্রাজুয়েটরা অন্য খাতে ঝুঁকে পড়ছেন, হারিয়ে যাচ্ছে ফিশারিজ খাতে অবারিত সম্ভাবনা। সরকার ই-কমার্স থেকে শুরু করে দেশের মৎস্য শিল্পে আরো সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তা অনুপ কুমার বলেন, নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সরকারি থেকে শুরু করে বেসরকারি খাতে টিকে থাকতে দক্ষতার বিকল্প নেই। শুধু পাঠ্যপুস্তকের ওপর জোর দিয়ে বসে থাকলে চাকরি থেকে শুরু করে ব্যবসা খাতে টিকে থাকা কঠিন। তিনি বিশ্বাস করেন, দেশের যুবসমাজই পারে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে। সামনের দিনগুলোতে তাই যুবসমাজই হবে দেশের গেম চেঞ্জার।

নূর-ই-কুতুবুল আলম
সাবেক শিক্ষার্থী
এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop