৯:৩২ অপরাহ্ন

বুধবার, ২০ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২০, ২০২২ ২:৩৬ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে বোরো ধান কাটা শুরু
কৃষি বিভাগ

মৌলভীবাজারে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি দিয়ে জেলার বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় বোরো ধানের আশাতীত আবাদ হয়েছে। ভেঙে গেছে বোরো আবাদের অতীতের সব রেকর্ড। বাজারে ধানের চড়া দামই কৃষকদের উৎসাহ জুগিয়েছে বোরো আবাদে।

জেলা কৃষি বিভাগ বলছ, প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে, এবছর বোরোর উৎপাদন ২ কোটি ৩০ লাখ ২শ’ ৮০ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। কৃষকদের দাবি, ধানের নায্যমূল্য নির্ধারণ করে বিক্রির ব্যবস্থা করে দেবার।

শ্রীমঙ্গল  উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বরুণা গ্রামের মো. ইউনুছ মিয়া নামে এক কৃষকের পাকা বোরো ধান কাটার মধ্য দিয়ে জেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি দিয়ে ধান কাটার এই উৎসবে যোগ দেন জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও শিক্ষকরা।

এবছর জেলায় বোরোর বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধান কাটা না গেলে পাহাড়ী ঢলে কাউয়াদীঘি, হাইল ও হাকালুকি হাওরের ফসল তলিয়ে যাবার আশঙ্কা তাদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলায় ২০২১-২২ মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ২০০ হেক্টরে। ৭৫ হেক্টর বেশি আবাদ হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ হাজার ৩০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ২৪ হেক্টরে। বাকিটা স্থানীয় জাত। তবে স্থানীয় জাত কমেছে প্রায় ৫০ হেক্টর। চাল আকারে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার ২৮০ টন। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ধরা হয়েছে ৪.৩০ টন। জেলায় আবাদ করা হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭৭০ হেক্টর বেশি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, সঠিক সময়ে সার ও বীজ পাওয়ায় জেলায় বোরোর ফলন ভালো হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর আহসান জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। কৃষকদের ধান কাটতে সব ধরণের সার্বিক সহায়তা করা হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২২ ১১:৫৪ অপরাহ্ন
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে লবণাক্ত জমিতে বিনা সয়াবিন-২ চাষে লাভবান হবে কৃষক,কমবে ভোজ্যতেল আমদানি
কৃষি গবেষনা

বাংলাদেশের উপকূলবর্তী দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে সয়াবিনের উপযুক্ত জাত নির্বাচনের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেলের অর্থায়নে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে দক্ষিণপশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ততা প্রবণ পতিত জমির জন্য অন্যান্য জাতের তুলনায় বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনাসয়াবিন জাতটিই সবচেয়ে আদর্শ জাত।

গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর . মতিউল ইসলাম একই ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী বর্ণালী সাহা। এছাড়াও একই ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক জয়ন্তী রায় গবেষণায় সহযোগিতা করেন। উক্ত গবেষণায় বারি বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত সয়াবিনের ১০টি জাত নিয়ে কাজ করা হয়।

. মো. মতিউল ইসলাম জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ডুমুরিয়া উপজেলায় পরিচালিত মাঠ গবেষণায় দেখা যায় বিনাসয়াবিন জাতটি অধিক ফলনশীল, লবণাক্ততা সহনশীল, রোগবালাই প্রতিরোধী স্বল্পমেয়াদী। তাই বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জমির ব্যবহার এবং ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এটি একটি আদর্শ জাত।

তিনি আরও বলেন সকলের সহযোগিতা পেলে কৃষক পর্যায়ে জাতগুলো সম্প্রসারণ করলে কৃষক এর আয় বাড়বে,শুধুমাত্র ধানের উপর নির্ভরতা কমবে ।

তিনি আরও জানান, জাতটি হলুদ মোজাইক ভাইরাস প্রতিরোধী ১২ ডিএস এম মাত্রা পর্যন্ত লবণাক্ততা সহনশীল এবং কম উর্বর লবণাক্ত বেলে দোআঁশ হতে এটেল দোআঁশ মাটিতেও চাষের উপযোগী। রবি মৌসুমে পৌষের প্রথম থেকে মধ্য মাঘ এবং খরিপ মৌসুমে শ্রাবণের প্রথম থেকে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত এটি রোপণের উপযুক্ত সময়।

গবেষণার জন্য চাষ করতে গিয়ে দেখা গেছে, সয়াবিনে মাকড়সার আক্রমণ বেশি থাকে এবং মাটিতে অবস্থানকারী কিছু ছত্রাকের কারণে গোড়াপচা রোগ দেখা যায়। তবে এতে খুব বেশি প্রভাব পড়ে না। সয়াবিনের বিছাপোকা দমনের জন্য আক্রান্ত পাতা দেখে পোকাসহ তুলে মেরে ফেলতে হবে। তবে আক্রমণ বেশি হলে সেভিন ৮৫ এসপি ৩৪ গ্রাম পাউডার প্রতি ১০ লিটার পানিতে অথবা এডভান্টেজ ২০ এসসি ৩০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত জমিতে স্প্রে করতে হবে।

অধ্যাপক মো. মতিউল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের আবহাওয়া সয়াবিন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হলেও কৃষকদের ব্যাপারে জ্ঞানের স্বল্পতা থাকায় অঞ্চলে চাষ হয় না। শুধুমাত্র লক্ষ্মীপুর নোয়াখালীর চরাঞ্চলে স্বল্প পরিমাণে চাষ করা হয়। কিন্তু আমি পিএইডি গবেষণার সময় দেখেছিলাম সয়াবিন স্যালাইনিটি সহ্য করতে পারে। এরা শুধুমাত্র জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না”।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ল্যাব ট্রায়ালে আমরা দেখেছি বিনাসয়াবিন বিনাসয়াবিন লবণাক্ততা সহনশীল চাষের জন্য উপযোগী। কিন্তু মাঠ গবেষণার ভিত্তিতে ফলনের পরিমাণ, গাছের স্থায়ীত্ব সবদিক বিবেচনা করে উপকূলীয় লবণাক্ত জমিতে চাষের জন্য বিনাসয়াবিন২ই সবচেয়ে আদর্শ জাত। এটি চাষ করতে বিশেষ কোনো দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে আমন চাষের পর বোরো মৌসুমে জমি ফেলে না রেখে সয়াবিন চাষ করলে কৃষকরা অত্যন্ত লাভবান হবে। তাছাড়া সয়াবিন থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্যও অত্যন্ত নিরাপদ কার্যকরী।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেলের পরিচালক প্রফেসর . আশীষ কুমার দাস বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে এই গবেষণাটি নিয়ে আগ্রহী। কারণ সয়াবিন আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের অত্যন্ত ভালো একটি উৎস। অঞ্চলে চাষ শুরু হলে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও সুফল বয়ে আনবে”।

মোঃঅামিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২২ ৮:১৮ অপরাহ্ন
মাদারীপুরে তেল ফসল বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): মাদারীপুরে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার ওপর আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সদর উপজেলার হর্টিকালচার সেন্টারে ডিএই বরিশাল ও ফরিদপুরের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অতিরিক্ত পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ।

ডিএই মাদারীপুরের উপপরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএই বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হারুন-অর-রশীদ, বরিশালের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রফি উদ্দিন এবং বরিশালের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলমগীর হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন প্রকল্প পরিচালক মো. জসীম উদ্দীন।

দুমকির উপজেলা কৃষি অফিসার মেহের মালিকার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিএই গোপালগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়, ডিএই ফরিদপুরের উপ-পরিচালক ড. মো. হযরত আলী, বরিশালের কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের যুগ্ম পরিচালক ড. একেএম মিজানুর রহমান, ডিএই পটুয়াখালীর জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. খায়রুল ইসলাম মল্লিক, উপ-প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ আরশেদ আলী চৌধুরী, প্রকল্পের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊধর্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ছয়েমা খাতুন, নাজিরপুরের উপজেলা কৃষি অফিসার দিগবিজয় হাজরা, ভোলা সদরের উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন, তজুমুদ্দিনের উপজেলা কৃষি অফিসার অপূর্ব লাল সরকার, জাজিরার উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জামাল হোসেন, নড়িয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. নাজমুল হুদা প্রমুখ।

প্রধান অতিথি বলেন, তেল ফসল খাদ্যের অন্যতম উপকরণ। এর মধ্যে সরিষা রয়েছে বিশেষ অবস্থানে। অন্যান্য তেল ফসলও গুরুত্বপূর্ণ কম নয়। তাই এগুলোর আবাদ এবং উৎপাদন বাড়াতে হবে। তাহলেই ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে। হবে পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

দিনব্যাপী এ কর্মশালায়কৃ ষিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ১৭৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২২ ৪:৪৯ অপরাহ্ন
পটুয়াখালীতে কম খরচে আলু চাষে সফলতা
কৃষি বিভাগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিনা চাষেই আলুর আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। নরম ও কাদা মাটিতে কোন ধরনের চাষ না দিয়ে মাটির মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে আলু রোপণ করে পরিত্যক্ত খড়কোটা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। কম খরচে, কম সার ও পানি ব্যবহার করে অল্প দিনের মধ্যে আলুর ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। কম খরচে ভালো ফলন পাওয়ায় এই পদ্ধতিতে আলু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন পদ্ধতিতে আলু চাষে কৃষকদের কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

উপকূলীয় অঞ্চলে আমন ধান কাটার পর বিস্তীর্ণ জমি পতিত থাকে। পটুয়াখালীতে প্রথমবারের মতো বিনা চাষে আলুর উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন কৃষকেরা।লবণাক্ত জমিতে কম খরচ, কম সার ও কম সেচ ব্যবহারে বেশি ফসল পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই পদ্ধতি। কৃষকদের এ বিষয়ে সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন গবেষণা বিভাগ।

কৃষকরা জানান, এবার আমন ধান কাটার সাথে সাথে, নরম ও কাদা মাটিতে কোন ধরনের জমি প্রস্তুত না করেই আলুর বীজ বপন করা হয়। পরে, পরিত্যক্ত খড়কুটা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয় আলুর ক্ষেত। এ পদ্ধতিতে কম সার-পানি ব্যবহার করে আড়াই মাসেই আলুর ভালো ফলন পাওয়া যায়।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. তাওফিকুল আলম বলেন, যেহেতু দক্ষিণাঞ্চলে আমন ধান কিছুটা বিলম্বে কাটা হয় এবং পরবর্তী সময় জমি চাষ দেওয়াসহ প্রস্তুত করার সময় থাকে না, সে কারণে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই আলু চাষ বাড়ানো সম্ভব।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি আলু-৭২ এবং ৭৮ জাত দুটি প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করেও ভালো ফলন দিতে পারে। এ কারণে লবণ ও তাপসহনশীল এই আলু চাষে কৃষকদের পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২২ ২:৫৩ অপরাহ্ন
আন্তঃফসল চাষ করে লাভবান জয়পুরহাটের কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

জয়পুরহাট জেলার সীমান্ত অঞ্চলের জমির সর্বত্তোম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তঃফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা।

জেলার সীমান্ত সংলগ্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের ধুলহার গ্রামের চাষিরা জানায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘জাকস ফাউন্ডেশনের’ কারিগরি সহায়তায় সদর উপজেলার ধলাহার ইউনিয়নের ধলাহার গ্রামের আব্দুর রহমান এবার তরমুজের জমিতে আন্ত:ফসল হিসেবে লাল শাক ও জগন্নাথ শাক চাষ করেন। ২৫ শতাংশ জমিতে লালশাক ও জগন্নাথ শাকের বীজ বপন করেন মার্চ মাসে। তরমুজের জমিতে আন্তঃফসল চাষ করার জন্য জমির প্রস্তুতির কোন বাড়তি খরচ নেই।

আব্দুর রহমান আরও জানান, শুধুমাত্র বীজের জন্য সামান্য কিছু খরচ হয়েছে। এক মাসের মধ্যে বাজারে লালশাক ও জগন্নাথ শাক বিক্রি করেছেন ৫ হাজার টাকা। যা সংসারে বাড়তি আয় হয়েছে।

জাকস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: নূরুল আমিন জানান, পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কৃষি ইউনিটের সহযোগিতায় স্থানীয় বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা “জাকস ফাউন্ডেশন” আন্ত :ফসল চাষে কৃষকদের কারিগরি সহায়তা প্রদান করা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম জানান, জমির সর্বত্তোম ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে জয়পুরহাটে ’জাকস ফাউন্ডেশন’ আন্ত:ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে। আন্ত:ফসল চাষ করে কৃষকরা বাড়তি আয় করতে পারে বলেও জানান তিনি।

 

 

সূত্রঃ বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৮, ২০২২ ৩:৫০ অপরাহ্ন
বরিশালে নিরাপদ মুগডাল উৎপাদন বিষয়ক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালে মুগ ফসলের পোকামাকড় সনাক্তকরণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি বিষয়ক কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রহমতপুরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে (আরএআরএস) এই মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষকৃত গুরুপূর্ণ ফল, পান, সুপারি এবং ডাল ফসলের পোকামাকড় সনাক্তকরণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তার কর্মসূচির উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আরএআরএস’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রফি উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আরএআরএস’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এবং কর্মসূচি পরিচালক ড. মো. মাহবুবুর রহমান।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঊধর্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোস্তাক আহমেদ, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রাজি উদ্দিন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক, কৃষক রতন শরীফ প্রমুখ।

প্রধান অতিথি কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মুগ খেতে যেমন সুস্বাদু। তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। আমিষের পাশাপাশি মুগে আছে একাধিক গৌণ উপদান। তাই আমাদের চাহিদা পূরণে দরকার এর নিরাপদ উৎপাদন। আর তা বাস্তবায়ন হলে কৃষকরা লাভবান হবেন। সেই সাথে পরিবেশ থাকবে অনুকূলে।

কর্মসূচি পরিচালক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, অন্যান্য ফসলের ন্যায় মুগের রোগপোকা দমনে কৃষকরা সাধারণত রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। তাছাড়া সময়মত সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তেমন কোনো কাজে আসে না। এজন্য নিরাপদ উপায়ে পোকা দমনে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কর্মসূচির আওতাধীন বরিশালের ৬ জেলার বেশ কিছু সংখ্যক মুগডাল চাষিকে বিনামূল্যে আঠালো ফাঁদসহ বিভিন্ন জৈব বালাইনাশক বিতরণ করা হয়েছে।

মাঠ দিবসে উজিরপুর, বাকেরগঞ্জ ও বানারীপাড়ার ৮০ জন কৃষক অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২২ ১:১৬ অপরাহ্ন
হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে ও টেকসই বাঁধ নির্মাণে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

হাওরে বোরো ধানের ঝুঁকি কমাতে স্বল্পজীবনকালীন আগামজাতের ধান চাষ, টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও সময়মতো সংস্কারে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় বৃদ্ধি এবং ধান পাকার পর তা দ্রুত কাটার জন্য হাওরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত ধান কাটার মেশিন কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার প্রদানে গুরুত্ব দিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

শনিবার সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ ও বোরো ধানখেত পরিদর্শনকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, হাওরে ১২-১৪ লাখ টন ধান হয়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ধান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কোন কোন বছর আগাম বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। এ ঝুঁকি কমাতে ১৫-২০ দিন আগে পাকে এমন জাতের ধানচাষে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা অনেকগুলো জাত উদ্ভাবন করেছে। এসব জাত চাষে কৃষকদের এগিয়ে আসতে হবে।

ব্লাস্ট রোগ হাওয়ায় ব্রি২৮ ও দেরিতে পাকার কারণে ব্রি২৯ ধান হাওরে চাষ না করার জন্য কৃষকদেরকে এসময় আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বছরে মাত্র একটি ফসল বোরো ধান হয়। এ ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে, সেজন্য উচ্চফলনশীল জাতের ধান যেমন ব্রিধান ৮৯, ব্রিধান ৯২ এবং বিনাধান-১৭ চাষ করতে হবে। আমরা আপনাদেরকে এসব উন্নত জাতের ধানের বীজ দেব। আপনার এগুলো চাষে এগিয়ে আসবেন।

বাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী বোরোতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার দেয়া হবে। এছাড়া, সারা বছর ধরে ভিজিএফসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে, যাতে খাদ্যের জন্য কেউ কষ্ট না করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে আছেন।

ফসল রক্ষায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও সময়মতো সংস্কারের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সকলে মিলে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাঁধগুলো অনেকক্ষেত্রে সময়মতো সংস্কার হয় না। এক্ষেত্রে বাঁধ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে বিদ্যমান নীতিমালার প্রয়োজনে পুনমূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া, পানির ধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নদী খননে উদ্যোগ নেয়া হবে।

শ্রমিক সংকটের কথা চিন্তা করে ও দ্রুততার সঙ্গে ধান কাটার জন্য হাওরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকার ৭০% ভর্তুকিতে ধান কাটার যন্ত্রকম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার কৃষকদের দিচ্ছে।

ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে মন্ত্রী আরও বলেন, কৃষিমন্ত্রী হিসেবে আগাম বন্যা বা আকস্মিক ঢলের কারণে হাওরে বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে প্রতিবছরই আতঙ্কে থাকি। বৃষ্টি আর নাহলে এ বছরের অবশিষ্ট ধানগুলো কৃষকের ঘরে তোলার বিষয়ে আমরা আশাবাদী। পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, দেশের অন্য অঞ্চল থেকেও যন্ত্র আনা হচ্ছে। বাঁধ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও রাজনীতিবিদরা কৃষকের পাশে রয়েছে।

পরিদর্শনকালে কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি, সুনামগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিএমডিএর পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সুইট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে কৃষিমন্ত্রী সদর উপজেলার জাওয়ার হাওরে স্বল্পজীবনকালীন আগামজাত বিনাধান-১৭ এবং উচ্চফলনশীল ব্রিধান ৮৯ কর্তন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এসময় তিনি ধান কাটার উদ্বোধন করেন ও ধান কাটার যন্ত্র ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার’ কৃষকের মাঝে বিতরণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৬, ২০২২ ১১:১০ পূর্বাহ্ন
বরগুনার আমতলীতে বারি মুগ-৬’র উৎপাদন বিষয়ক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরগুনার আমতলীতে ডাল ফসলের উন্নত জাত বারি মুগ-৬’র আধুনিক উৎপাদন কৌশল বিষয়ক কৃষক সমাবেশ ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) উপজেলার কেওড়াবুনিয়ায় বিএআরআই পটুয়াখালীর সরেজমিন গবেষণা বিভাগের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে মুগ ডালের রয়েছে যথেষ্ট সম্ভাবনা। তাই এর আবাদ বাড়ানো দরকার। সেই সাথে চাই আধুনিক জাত ব্যবহার। তাহলেই উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কৃষকরা চাষে হবেন উৎসাহিত। তিনি আরো বলেন, কৃষকের ভাগ্যের ওপরই এদেশের ভাগ্যে নির্ভর করে। তাই কৃষিকে লাভজনক করতে হবে। এ জন্য বাণিজ্যিকীকরণ করা দরকার। তাহলে কৃষির মাধ্যমে দেশ হবে উন্নত।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ণ অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি প্রজেক্ট লীডার এম জি নিয়গী এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক মো. হারুন-অর-রশীদ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সরেজমিন গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শহিদুজ্জামান, বৃহত্তর বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের ডাল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. ছালেহ উদ্দিন, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সহিদুল ইসলাম খান, কৃষক মো. নাছির উদ্দিন, মাকসুদা আক্তার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং কৃষক মিলে দু’শতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধান অতিথি পটুয়াখালী সদরের বদরপুরে স্থাপিত জিরো এনার্জি কুল চেম্বার প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। পরে তিনি পটুয়াখালীর দুমকিতে মুগ ডালের পোস্টহারভেস্ট প্রসেসিং ব্যবস্থাপনা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং কৃষি উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৫, ২০২২ ৩:২৬ অপরাহ্ন
কুষ্টিয়ায় ধান চাষে লাগছেনা বাড়তি সেচ
কৃষি বিভাগ

সারাবছর ধানের জমিতে পানি সেচ পাওয়ায় কুষ্টিয়ার গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। এমনকি বোরো মৌসুমেও দিতে হয়নি বাড়তি পানি সেচ। এর ফলে বেঁচে গেছে কৃষকদের সেচ খরচ।

শুষ্ক মৌসুমেও পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করেছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প। এদিকে তিন মৌসুমে পানি সেচ পাওয়ায় বেড়েছে ধানের আবাদ। আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধানের বাম্পার ফলনের আশা কৃষি অধিদপ্তরের। আর কম খরচে এবার বোরো ধান আবাদ করে খুশি কৃষকরা।

কয়েক বছর আগেও আউস ও আমন ধানের ক্ষেতে নাম মাত্র পানি পাওয়া যেত জিকে সেচ খাল থেকে। আর বোরো ধান হতো সম্পূর্ণ কৃষকদের সেচ পাম্প দিয়ে। এতে ধান উৎপাদনে বাড়তি খরচ হতো কৃষকদের। কিন্তু এ বছর তিন মৌসুমেই পানি ছিল জিকে সেচ খালে। ফলে বেড়েছে বোরো ধানচাষির সংখ্যাও।

জিকে সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার ১৩ উপজেলার প্রথমে ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমি সেচের আওতায় এনে ১৯৬৯ সালে শুরু হয় জিকে সেচ প্রকল্পের কাজ। পানির অভাবে প্রতিবছর কোটি-কোটি টাকা ব্যয়ে ইনটেক চ্যানেল ছাড়াও পদ্মার উজান মুখে ড্রেজিং করে সেচ প্রকল্পটি চালু রাখা হয়। এদিকে ২০০৫ সালে স্থাপিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের তিন নম্বর পাম্পটি ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অকেজো হয়ে পড়ে। এরপর চার বছর দু’টি পাম্প দিয়েই চলে সেচ কাজ। যার ফলে কমতে থাকে এর আওতাধীন কৃষি জমি।
পরে ২০২১ সালের নভেম্বরে অকেজো পাম্পটি সচল হয়। যার ফলে বোরো মৌসুমেও পর্যাপ্ত পানি পান কৃষকরা।

গত দুই বছর আগেও জিকে সেচ প্রকল্পের খালে পানি না থাকায় শুকিয়ে যেত বোরো ধানের জমি। কৃষকরা বাড়তি সেচ দিতে গিয়ে হিমশিম খেতেন। উৎপাদন খরচ বাড়তো দ্বিগুণ। কিন্তু এ বছর পাল্টে গেছে কুষ্টিয়ার জিকে সেচের আওতাধীন বোরো চাষিদের অবস্থা। পুরো মৌসুম জুড়ে জমিতে বাড়তি সেচ দিতে হয়নি। পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। বোরো ধান দেখে খুশি কৃষকরা।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের কচুবাড়ীয়া মাঠের ধান চাষি সাইদুল ইসলাম বলেন, ডিজেলের যে দাম, আর বোরো ধানে প্রায় প্রতিদিন পানি সেচ দিতে হতো। কিন্তু এবার সারা বছরই জিকে সেচের পানি পেয়েছি। এক লিটার তেলও কিনতে হয়নি। আর মাঠে ধানের চেহারা দেখলেই মন ভরে যাচ্ছে। এত সুন্দর ধান মাঠে হবে আশাই করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, এখন জমিতে সার ও বীজ আর নিড়ানি খরচ। পানি সেচ দিতে হয়নি। যার কারণে অর্ধেক খরচে এবার ধান হচ্ছে।
ফারুক আলী নামে আরেক চাষি বলেন, আমরা ঠিকমতো পানি সেচ পেতাম না বলে অনেকেই বোরো আবাদ কমিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার সারাবছর জিকে ক্যানেলের পানি পেয়েছি। এতে আমরা খুবই কম খরচে আবাদ করছি। আগামীতে ধানের আবাদ আরও বাড়বে।

এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর কুষ্টিয়ায় বেড়েছে বোরো ধানের আবাদ। যা আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৩৫ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে। এছাড়া উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিলে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৭৮ টন। এ বছর ফলন বেশ ভালো হওয়ার আশা রয়েছে কৃষি বিভাগের। সেই সঙ্গে গত আউস ও আমন ধানেরও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ করেন কৃষকরা। আউসে ২৮ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল কৃষি অফিস। সেখানে কৃষকরা চাষ করেন ২৮ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে। আমনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে ৮৮ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, বোরো ধানের জমিতে সেচ খরচ বেশি হওয়ার কারণে বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ ছিল না। তবে এ বছর আবার কৃষকরা বোরো ধান চাষে ঝুঁকছেন। মিরপুর উপজেলার অধিকাংশ কৃষি জমি জিকে সেচ প্রকল্পের পানি সেচে ধানের আবাদ হয়। যার ফলে কম খরচে ধানের আবাদ করছেন কৃষকরা। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এ বছর বোরো মৌসুমে এক হাজার ৩০০ কৃষককে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) এবং চার হাজার ৮৩০ জন কৃষকের মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ বছর আবহাওয়া ধান চাষের জন্য অনুকূলে ছিল। আর আউস ও আমন ধানের মতো বোরো মৌসুমেও বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশা করি।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, আমরা অল্প জমিতে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক ফলনের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ধানের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। সেই সঙ্গে প্রণোদনা ও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ধান চাষ বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি।

 

 

সূত্র: বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৪, ২০২২ ১:০১ অপরাহ্ন
হাইব্রিড করলা চাষে সফল মৌলভীবাজারের শফিক
কৃষি বিভাগ

নিরাপদ সবজির গ্রাম বনগাঁও। যে গ্রামের অধিকাংশ পরিবার কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই সারা বছর এই গ্রামে উৎপাদিত হয় বিষমুক্ত নানা জাতের সবজি। এবার অধিক ফলনশীল ও আকর্ষণীয় হাইব্রিড করলা ‘টিয়া সুপার’ চাষে চমক সৃষ্টি করেছেন জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সবজির গ্রাম হিসাবে পরিচিত বনগাঁও গ্রামের কৃষক শফিক মিয়া।

তার সফলতা দেখে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন, সুস্বাধু এই সবজি চাষে। তবে পানির অভাবে কাঙ্খিত ফলন হচ্ছে না বলে জানালেন কৃষকরা।

শফিক মিয়া জানালেন, আড়াই বিঘা জমিতে প্রথমে পরীক্ষামূলক ভাবে উচ্চফলনশীল জাতের ‘করলা টিয়া সুপার’ চাষ শুরু করেন। চারা লাগানোর ৪৫ দিনের মাথায় করলা সংগ্রহ শুরু করেন ওই কৃষক। ওজনে একেকটি করলা হয়ে থাকে ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম।

কৃষক শফিক আরও জানান, আড়াই বিঘা জমিতে করলা চাষ করতে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকার মতো। মাঠ থেকেই প্রতি কেজি করলা বিক্রি করেছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ১২ থেকে ১৪ টন।

বাণিজ্যিকভাবে হাইব্রিড করলা টিয়া সুপার চাষ লাভজনক। এখনও আরো ১ লক্ষ টাকার উপরে করলা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

শফিকের সাফল্য দেখে এ জাতের করলা চাষ করছেন গ্রামের অন্য কৃষকরাও। তবে বর্তমানে করলার দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় তারা।

সিন্ধুরখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত রবিন বলেন, পানির সংকটের কারণে অনেক কৃষি জমিতে ফসল চাষ করা যাচ্ছে না। তাই এখানে দ্রুত সেচের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহদত আহমেদ বাবুল জানান, টিয়া সুপার করলা খুব ভালো জাতের বীজ। ফলের ওজন ভালো। এই জাতের বীজ ব্যবহার করলে কৃষক লাভবান হবে বেশি।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop