টানা বৃষ্টিতে জমিতে গম পঁচে চারাগাছ, বিপাকে কৃষক
কৃষি বিভাগ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে টানা ২ সপ্তাহের বৃষ্টির কারনে জমিতেই গম পচে আবার সেই গম থেকে চারাগাছ বের হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। গম চাষে করে লাভতো দুরের কথা খরচের টাকা তুলতে না পারায় দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৯৫ হেক্টর বেশি জমিতে অর্থাৎ ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। গমের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছিল স্বপ্ন পূরণের হাসি।
কিন্তু ২ সপ্তাহ ধরে লাগাতার বৃষ্টির কারনে কৃষকরা গম কাটতে নাপারায় ক্ষেতেই গম থেকে চারাগাছ উৎপন্ন হওয়ায় চাষিরা বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সন্মুক্ষিন হয়েছেন।
উপজেলার চরভ‚রুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, তিনি প্রায় সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। এরমধ্যে ২বিঘা জমির গম কেটেছেন। ২ বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে প্রায় ৩৬ মণ গম। লাগাতার বৃষ্টির কারণে অবশিষ্ট জমির গম কাটতে নাপারায় জমিতেই গমের চারা গজিয়েছে এবং যে সমস্ত গমের চারা গজায়নি সেগুলো পচে গেছে।
তিনি বলেন, সার, পানি ও বীজ বাকীতে নেয়া হয়েছে। গম বিক্রি করে বাকী পরিশোধ করার কথা থাকলেও এখন তিনি দেনা পরিশোধ নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছেন। একই গ্রামের জাহেদুল আলম জানান, তিনি গম কেটে ক্ষেতে শুকানোর জন্য আটি বেধে রেখে ছিলেন। অতিবৃষ্টির কারনে গমের আটি থেকে চারাগাছ বের হওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েছেন। ইসলামপুর গ্রামের মিজান শিকদার, বাবুল হোসেন, দক্ষিন তিলাই গ্রামের আব্দুর রহমান, আকবর আলী সহ অনেক কৃষকের একই অবস্থা। তারা জানান, এইউনিয়নে প্রায় শতাধিক কৃষকের জমির গম নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা দুঃচিন্তায় পড়েছেন।
গমের পাইকারি ব্যবসায়ী আজম আলী ও আব্দুর রহমান জানান, প্রতিমণ গম ৮৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা দরে প্রায় দেড় হাজার মণ কাচা গম কিনে গোডাউনে রাখা আছে। গত ২ সপ্তাহের লাগাতার বৃষ্টিতে গম গুলো রোদে শুকাতে না পারায় গম জমাট বেধে পোকা ধরেছে। কিছু গম পচে গেছে। এতে লাভ তো দ‚রের কথা আসল তুলতে পারবো কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, উপজেলার বেশিরভাগ গম কাটা হয়েছে। কিছু গম কাটতে বিলম্ব হওয়ায় বৃষ্টির কারণে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সূত্রঃ মানবকণ্ঠ