পশুপুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন পণ্য আমাদানিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এলসি খোলার দাবি বাফিটা‘র
পোলট্রি
বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র (এলসি) অনেকটা বন্ধ রয়েছে। যার ফলে প্রাণীজ ও কৃষিজ পণ্য আমদানি নিয়ে শঙ্কায় আছেন দেশের আমদানিকারকরা। যার ফলে, বাড়তে পারে ডিম, দুধ ও মাংসের দাম। তাই বাস্তবতা বিবেচনায়, এই সমস্যা সমাধানে পশুপুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন পণ্য আমদানীর ক্ষেত্রে এল/সি খোলার দাবি জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগিডিয়েন্টস ইম্পোটার্স এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন (বাফিটা)।
সংগঠনটি গেল ১১ অক্টোবর বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্ণরের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বাফিটা সভাপতি সুধীর চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, দেশের কৃষি শিল্প খাতের প্রাণিজ (পোল্ট্রি, ডেইরী ও মৎস্য) খাদ্য তৈরীর ট্রেডার্স এসোসিয়েশন (বাফিটা)”। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বানিজ্য সংগঠন, যৌথ মূলধন কোম্পানী ও ফার্মসমূহ পরিদপ্তর ও এফবিসিসিআই কর্তৃক অনুমোদিত এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর বাংলাদেশ গেজেটে এস. আর. ও তে অন্তর্ভূক্ত এসোসিয়েশন এর সদস্যবৃন্দ।
এই এসোসিয়েশনের সদস্যরা প্রাণিজ খাদ্য তৈরী শিল্পের সূচনালগ্ন থেকে অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক কাঁচামাল আমদানি ও বিভিন্ন প্রাণিজ (পোল্ট্রি, ডেইরী ও মৎস্য) খাদ্য তৈরী শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করে আসছে।
চিঠিতে বলা হয়, আমাদের দেশে প্রাণীজ (পোল্ট্রি, ডেইরী ও মৎস্য) খাদ্য তৈরির অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক কাঁচামালগুলির উৎপাদন হলেও চাহিদার সিংহভাগ বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। বৈশ্বিক মহামারী (কভিড-১৯) ভাইরাসের কারনে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব এবং বহিঃবিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারনে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিশ্বে প্রাণীজ খাদ্য তৈরির অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক কাঁচামালগুলির উৎপাদন বিঘ্ন ঘটে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান ডলারের মূল্য, বন্দর ও শিপিং চার্জ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি নির্ভর প্রাণীজ খাদ্য তৈরির অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক কাঁচামালগুলির আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রাণীজ খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
সামগ্রীক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সরকার কর্তৃক আরোপিত নির্দেশনা মোতাবেক অত্যাবশ্যকীয় পন্য ব্যতীত অনান্য সকল আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে। যার ফলে বিভিন্ন তফশীলি ব্যাংক সমূহ পশুপুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন্যাল প্রোডাক্টস সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে L/C খোলার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করছেন, যা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়।
আরও উল্লেখ্য করা হয়,আমদানি ক্ষেত্রে L/C খোলার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হলে প্রাণীজ (ডিম, দুধ, মাছ ও মাংস) প্রোটিনের সংকট সৃষ্টি হবে। জনস্বার্থে ও প্রাণীসম্পদের সার্বিক কল্যানে প্রাণীজ প্রোটিনের চাহিদা পুরনে আমদানি ক্ষেত্রে L/C খোলার চলমান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা অতীব প্রয়োজন।
তাই দেশের কৃষিখাত সংশ্লিষ্ট খাতসমূহের টেকসই উন্নয়নে পশুপুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন্যাল প্রোডাক্টস সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে L/C খোলার বিষয়ে অগ্রাধিকার প্রদান জরুরীভাবে সমন্বয় করার আবেদন করেন তারা। এ বিষয়ে অগ্রাধিকার প্রদান বাস্তবতার নিরীখে উপর্যুক্ত বিষয়ে দেশের কৃষিখাত সংশ্লিষ্ট প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত প্রাণীজ খাদ্য তৈরীর অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক কাঁচামাল, পশুপুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন্যাল প্রোডাক্ট সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে L/C খোলার বিষয়ে অগ্রাধিকার প্রদান করতে অনুরোধ জানান বাফিটা।
এদিকে গেল সোমবার (৭ নভেম্বর) প্রাণীজ ও কৃষিজ পণ্য আমাদানিতে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে এলসি খোলার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্ণরের কাছে চিঠি দিয়েছে এ্যানিমেল হেল্থ কোম্পানীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আহকাব)। তাদেরও দাবি খুব শিঘ্রই প্রাণীজ খাদ্য তৈরীর অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক কাঁচামাল, পশুপুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন্যাল প্রোডাক্ট সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে L/C খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।