বরিশালের আমড়া ইউরোপের বাজারে
কৃষি বিভাগ
বরিশালের আমড়া শুধু দেশে নয় বিদেশেও রয়েছে বেশ পরিচিতি। বরিশালের ঝালকাঠি-পিরোজপুরে সুস্বাদু আমড়ার ফলন হয় সবচেয়ে বেশি। গত কয়েক বছরে আমড়ার বাম্পার ফলনও হয়েছে। সুস্বাদু আর সুখ্যাতির কারণে কৃষকরা দামও পেয়েছেন বেশ ভালো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সারাদেশের আমড়ার চাহিদার ৬০-৭০ ভাগ মেটায় এ অঞ্চলের চাষিরা।
জানা যায়, আমড়া একটি অর্থকরি ফল। বিশ্বজুড়ে পিরোজপুরের আমড়া খ্যাতি লাভ করেছে। দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও পানির জন্য এর ফলন ও গুণগতমান অনেক ভালো। আমড়ার চাষ করে এই জেলা ও আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলার চাষিরা স্বাবলম্বী ও আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে সরবরাহের পর ইউরোপেও যাচ্ছে বরিশালের আমড়া। ঝালকাঠি, বরিশাল, ভোলা এবং বরগুনায়ও আমড়ার ভালো ফলন হয়। এছাড়া দিন দিন আমড়ার উৎপাদন বৃদ্ধি ও উচ্চমূল্য পাওয়ায় এ অঞ্চলের অনেক মানুষই আমড়া চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
ঝালকাঠি জেলার আমড়া মোকামের ব্যবসায়ী কবির হোসেন জানান, শ্রাবণ থেকে কার্তিক এই চারমাসে মোকাম থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোটি কোটি টাকার আমড়া সরবরাহ করা হয়।
পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হেনা মো. জাফর জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া আমড়া চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আমড়া গাছ রোপণের দুই বছর পরই তা ফল দেয় এবং কমপক্ষে ১০/১২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। চলতি মৌসুমে গত ২/৩ বছরের তুলনায় আমড়ার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। কৃষকরা তাদের চাহিদা মতো দামও পাচ্ছেন। এই জেলার প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় আমড়া গাছ রয়েছে। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে তা পাঠানো হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যেও যাচ্ছে নিয়মিত।
নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দ্বিগ বিজয় হালদার জানান, নাজিরপুরে প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ হয়। চাষিরা গত ২-৩ বছরের তুলনায় এবার আমড়ার দাম ভালো পেয়েছেন। চাষিরা তাদের পতিত জমিতে কান্দি কেটে মাটি উঁচু করে আমড়ার চাষ করেছেন। গৃহস্থরা ব্যাপারিদের কাছে, ব্যাপারিরা মোকামে পাইকারদের কাছে আমড়া বিক্রি করেন। গৃহস্থদের কাছ থেকে এক বস্তা আমড়া ৮০০-৯০০ টাকায় কিনে তা জেলার বাজারে প্রায় ১৪০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যাপারীরা।