৮:২২ অপরাহ্ন

শনিবার, ১৭ মে , ২০২৫
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:২১ অপরাহ্ন
জামালপুরে মরিচের বাম্পার ফলন, দামে হতাশ চাষিরা!
কৃষি বিভাগ

মরিচের বাম্পার ফলনেও খুশি হতে পারছেন না জামালপুরের চরাঞ্চলের কৃষকরা। প্রায় প্রত্যেক কৃষকের জমিতে মরিচের ব্যাপক ফলন হলেও বাজারদর কম থাকায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। অপর দিকে মরিচ চাষের জন্য সার ও কীটনাশকের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়ে যাওয়ায় মরিচ উৎপাদনে কৃষকের খরচও বেড়েছে।

জানা যায়, জামালপুর চরাঞ্চল গুলোর মধ্যে আদ্রা, জামিরা, ছাতারিয়া, মানিকপটল, আদারভিটা, কুলকান্দি, হাজিপুরসহ প্রায় ২ শতাধিক গ্রামে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা বিঘা প্রতি ৪০ মণ করে মরিচের ফলন পেয়েছেন। কৃষকরা তাদের জমিতে মরিচ গাছের পরিচর্যা করছেন। কেউ কেউ আবার মারিচ তুলে তা বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

মেলান্দহের চাষি সুরুজ মিয়া বলেন, আমি এবছর ২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করেছি। মরিচ চাষে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি ৪০ মণ মরিচ পেয়েছি। আর এই মরিচ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি।

কালিবাড়ি, হাজরাবাড়ী, আরামনগর, আদ্রা, বাউশি, শ্যামনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা সেখানে প্রতিমণ মরিচ ১২০০-১৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের কৃষক মঈনুল উদ্দিন বলেন, এবছর আমার ৬ বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি। মরিচ চাষে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই মরিচ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। লাভ তো হয়ইনি বরং আসল চলে গিয়ে আরো লোকসানে পড়েছি।

মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের ৫টি চরে প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করা হয়েছে। আমরা চাষিদের মরিচ চাষে সব ধরনের সহযোগীতা করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:১৭ অপরাহ্ন
কচুর ব্যাপক ফলনে কৃষকের মুখে হাসি!
কৃষি বিভাগ

কৃষি নির্ভর মেহেরপুর জেলার কচুর লতির দেশ জুড়ে সুনাম রয়েছে। এখানকার প্রান্তিক চাষিরা কচুর লতি চাষে নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন। এই জেলায় এবারই প্রথম কন্দাল জাতের লতি কচুর বাণিজ্যিক চাষাবাদে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে লতি কচুর চাষ হচ্ছে। লতিকচু ও কন্দাল জাতের লতিকচু একই হলেও কন্দাল জাতে ফলন বেশি হয়। তাই কৃষকরা এই জাতের কচু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

দিঘিরপাড়া গ্রামের বাবু মিয়া বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে কচুর লতি চাষ করেছি। কচু চাষ করেই ছেলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ সহ সংসার চালাই। জমি স্যাতস্যাতে হওয়ায় এখানে ধান চাষ করলে ফলন হয় না। তাই কচু চাষ করি। এবছর জমিতে কচুর ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কচু বিক্রি করেছি। এছাড়াও ৫ হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছি।

কচুর লতি চাষি গোলাম হোসেন জানান, কচু চাষ করলে এর থেকে বের হওয়া লতি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায়। বাজারে কচু, কচুর লতি ও এর ফুলের চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর কচু চাষির সংখ্যা বাড়ছে।

সদর উপজেলার কৃষি অফিসার নাসরিন পারভীন জানান, বাংলাদেশে দেশে বেশ কয়েক প্রকার কচুর লতির জাত রয়েছে। এর মধ্যে পানি কচু -১ এবং বারি পানি কচু -২ উল্লেখযোগ্য। স্বাদের কারণে বাজারে চাহিদাও বেশ। চাষিরা বসতবাড়ির আশেপাশে স্যাতস্যাতে জমিতে সহজেই লতিকচু চাষ করে থাকে। এতে করে একদিকে যেমন পুষ্টিচাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের লতিকচু ভবিষ্যৎতে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:০৭ অপরাহ্ন
বিষমুক্ত সবজি চাষ করছেন গদখালীর ৫০০ কৃষক
কৃষি বিভাগ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের ৫০০ কৃষক বিষমুক্ত সবজি নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করছেন। এতে দারুণ সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। তাদের চাষাবাদ ঘিরে গদখালীকে বিষমুক্ত সবজি চাষের ‘মডেল’ বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা। নিজের বাঁধাকপি ক্ষেতে সেচের পানি যাতে ঠিকঠাক যায় সেদিকে নজর দিয়ে নালা কাটছিলেন মনিরুল ইসলাম। অপরপাশে তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম ক্ষেতের মাটি আলগা আর ঘাস নিংড়ে দিচ্ছিলেন। এ দৃশ্য গদখালী ইউনিয়নের বারবাকপুর গ্রামের ফসলি মাঠের। মনিরুল-মর্জিনা দম্পতি ১২ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি, ১২ শতাংশ জমিতে পটল চাষ করেছেন। এই সবজি ক্ষেতের বিশেষত্ব হলো এখানে রাসায়নিক সার ও রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে না। সম্পূর্ণ জৈবসার ও জৈব বালাইনাশক এবং ক্ষতিকর পোকা দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে হলুদ ফাঁদ পদ্ধতি।

ঝিকরগাছা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ‌‘পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের’ আওতায় সারা দেশের ২০ ইউনিয়নে কাজ চলছে। এর মধ্যে গদখালী ইউনিয়নও রয়েছে। গদখালী ইউনিয়নে ২০টি গ্রুপের কাজ চলছে। প্রতি গ্রুপে ২৫ জন কৃষক রয়েছেন। সবমিলে কৃষকের সংখ্যা ৫০০ জন।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, হলুদ ফাঁদ বা সেক্স ফেরোমন পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকের পেস্টিসাইডের খরচ বেঁচে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমছে। মাটির গুণাগুণ ভালো থাকছে, উৎপাদিত হচ্ছে বিষমুক্ত সবজি।

বারবাকপুর গ্রামের মাঠে বেগুন ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে পলি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখা গেছে কৃষকদের। পলি মালচিং পদ্ধতি—লম্বা একটা পলিথিনের মাঝে গর্ত করে তার ভেতরে সবজি ইত্যাদি রোপণ করা। এর ফলে জমিতে অতিরিক্ত সেচ লাগে না, গাছ প্রয়োজনীয় রস মাটি থেকে সংগ্রহ করে। এতে আগাছা তেমন একটা হয় না।

বারবারপুর এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘পলি মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো ও বেগুন চাষ করা হচ্ছে। কৃষিতে আধুনিকায়নের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে এসব ব্লকে। বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় এসব মাঠে ৯ গ্রুপে ২২৫ কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসল প্রদর্শনী করা হয়েছে। রবি মৌসুমে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, বেগুন, লাউ, টমেটো, করলা, ব্রকলি ইত্যাদি ফসল কীভাবে নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ করা যায়, তা এখানে হাতে-কলমে দেখানো হয়েছে।’

এসব ফসল সম্পূর্ণ নিরাপদ, কেননা এখানে কোনও রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘জৈবসার বিশেষ করে কেঁচো কম্পোস্ট আবাদের জন্য খুবই উপকারী। এই ব্লকে কৃষকরা চার হাজার ৪০০ রিংয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১৮৫ মেট্রিক টন কেঁচো সার তৈরি করছেন। এখানকার প্রায় প্রতি বাড়িতে নারীরা কেঁচো সার তৈরি করেন এবং তারা সেগুলো ক্ষেতে ব্যবহার করেন।’

বিভিন্ন জৈবসার ও বালাইনাশক তৈরির পদ্ধতি কৃষকদের শেখানো হয়েছে জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রামের গাছগাছালি থেকে ছত্রাক ও বালাইনাশক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। যেমন দুই কেজি নিমের পাতা বেটে এক লিটার পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর চার লিটার পানি মিশিয়ে তা ছাঁকতে হবে। এরপর সেটি আগুনে জ্বালিতে এক লিটার পরিমাণ করে ফেলতে হবে। এই এক লিটার নিমের রসের সঙ্গে ৯ লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করলে শোষক পোকা, ছিদ্রকারী পোকা সহজেই দমন করা সম্ভব। তেমনি, ২০ মি.লি পেঁয়াজের রসে দুই লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করলে গাছের যেকোনও পচারোগ দমন হয়ে যাবে। এমন করে প্রায় ১৭-১৮টি পদ্ধতিতে পোকা ও ছত্রাক দমন সম্ভব।’

গদখালীকে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মডেল বানাচ্ছি জানিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো—নিরাপদ উপায়ে বা জৈবিক উপায়ে ফসল উৎপাদন। দেশে বর্তমানে প্রধান আলোচিত বিষয় হলো—ফুড সিকিউরিটি ও ফুড সেফটি। ইতোমধ্যে আমরা ফুড সিকিউরিটি অর্জন করেছি, এখন ফুড সেফটির বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছি।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৬, ২০২২ ৯:০৭ অপরাহ্ন
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমলো কাঁচা মরিচের দাম
কৃষি বিভাগ

কাঁচা মরিচের দাম কমেছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। গত সপ্তাহের ৭০ টাকা কেজি দরের কাঁচা মরিচ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। কমেছে ডিমের দামও। প্রতি হালি ডিমের দাম ৪০ টাকা থেকে এখন ৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে অন্য সব পণ্যের দাম আগের মতোই রয়েছে। বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে তিন টাকার মতো। গত সপ্তাহে মোটা চাল ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা করে।

রমজান মাস ঘনিয়ে আসায় চাহিদা বাড়ছে ছোলার। গত সপ্তাহে ৮৫ টাকা কেজি দরে ছোলা বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে কিছুটা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। একইভাবে দেশি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর কলিজাও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। তবে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি। শুক্রবার ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা, তবে অন্যান্য দিনে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়া লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে। আর পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকা কেজি, যা অন্যান্য দিনে বিক্রি হয় ২৭০ টাকা কেজি দরে।

মাছের বাজারে চিংড়ি  বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত। এরপরও কিছু কিছু সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে। শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।

ফুলকপি ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা ২০ টাকা, পাকা টমেটো ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৩, ২০২২ ২:২১ অপরাহ্ন
এক যুগ গবেষণা শেষে ৬ জাতের নতুন প্রজাতির ধান উদ্ভাবন
কৃষি গবেষনা

দীর্ঘ ১২ বছরের চেষ্টায় সংকরায়ণ বা ইম্যাসকিউলেশন ও পলিনেশন করে ৬ ধরনের নতুন ধান উদ্ভাবনের দাবি করেছেন খুলনার বটিয়াঘাটার গঙ্গারামপুর গ্রামের কৃষক আরুনি সরকার।

স্থানীয় কৃষকরা নতুন জাতের ধানগুলো চাষ করছেন। নতুন এ ধানের স্বীকৃতির জন্য তিনি সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।

আরুনির স্বপ্ন ছিল বিলুপ্তপ্রায় স্থানীয় আমন ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করবেন। যার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকদের দরিদ্রতা রোধ হবে এবং অধিক ফলন হবে। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

আরুনি সরকারের উদ্ভাবিত ধানগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের স্থানীয় আমন ধানের থেকে আরও বেশি লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা সহিষ্ণু, ফলনও ভালো। তুলনামূলক কম কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করতে হয় এ জাতের ধান চাষে।

আরুনি সরকার জানান, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন ধরনের ৬টি ধানের ফলন তাদের মাদার ও ফাদার ধানের তুলনায় বেশি। ওই ৬ ধরনের ধান স্থানীয় ও উচ্চফলনশীল ধানের চেয়েও ভালো ফলন দিচ্ছে।’

নতুন ধানগুলোর গাঁথুনি ঘন, শীষ লম্বা ও দুর্যোগসহিষ্ণু হয়েছে বলে জানান তিনি।

খুলনা মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের জৈষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ‘আরনি দাবি করেছেন, তার উদ্ভাবিত ধান আরও বেশি লবণসহিষ্ণু যা আড়াই থেকে ৩ ডিএস পর্যন্ত লবণ সহিষ্ণু। তাছাড়া এসব ধান ১০-১৫ দিন পর্যন্ত জলাবদ্ধতায় টিকে থাকতে পারে। সাধারণত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চাষ হওয়া হাইব্রিড কিংবা উচ্চফলনশীন আমন মৌসুমের ধান ৫-৬ দিন পানির নিচে থাকলে পচে যায়।’

খুলনার বটিয়াঘাটার কাতিয়ানাংলা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে তিনি জমিতে কাটারিভোগ ও চাপশাইল ধান চাষ করেন। সে সময়ে তিনি ৫০ শতকের প্রতি বিঘায় পেতেন প্রায় ১৬ মণ ধান। গত বছর আরুনি উদ্ভাবিত ‘আলো ধান’ চাষ করে প্রতি বিঘায় প্রায় ২৪ মণের মতো ফলন পেয়েছেন।

খুলনা অঞ্চলের স্থানীয় আমন ধানের জীবনকাল সর্বোচ্চ ১৭০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেমন, বিআর ২৩-এর জীবনকাল ১৫৪ দিন আবার ‘জটাই বালাম’-এর জীবনকাল ১৪৫ দিন। কিন্তু আরনি উদ্ভাবিত এই দুই ধানের সমন্বয়ে উদ্ভাবিত ‘আলো ধান’-এর জীবনকাল দেখা গেছে ১৩৫ দিন। তেমনিভাবে দেখা গেছে ‘মৈত্রী ধান’ বা ‘গঙ্গাধান’-এর জীবনকাল ফাদার- মাদার-এর চেয়ে ১০ থেকে ১২ দিন কম।

এ ছাড়া নতুন উদ্ভাবিত ধানগাছগুলো তুলনামূলক মোটা হওয়ায় বাতাসে পড়ে যাওয়ার ভয় নেই বলে জানান আরুনি সরকার।

খুলনা অঞ্চলে গত ২ বছর আগে যখন ‘কারেন্ট’ পোকার আক্রমণে অধিকাংশ খেতের ধান নষ্ট হয়ে যায়, তখন আরুনির ধানে কোনো পোকা লাগেনি। যা দেখে আশপাশের কৃষকদের আগ্রহ আরও রেড়ে যায়।

তার উদ্ভাবিত নতুন এই ধানগুলো হলো—’আলো ধান’, ‘লোকজ ধান’, ‘আরুনি ধান’, ‘গঙ্গা ধান’, ‘মৈত্রী ধান’ ও ‘লক্ষ্মীভোগ’ ধান। স্থানীয় কৃষকরা এই ধানগুলোর নামকরণ করেছেন।

স্থানীয় জাতের জটাই বালাম (মাদার) ও বিআর তেইশ (ফাদার) জাতের ইম্যাসকুলেশন ও পলিনেশন বা মিশ্রণে যে ধান তৈরি হয়েছে, সেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলো ধান’। এটি প্রতি বিঘায় ২৪ মণ পর্যন্ত উৎপাদিত হতে পারে। সাহেবকচি ও কাঁচড়া জাতের মিশ্রণে তৈরি ধানের নাম ‘লোকজ ধান’। এটি প্রতি বিঘায় ২৩ দশমিক ৮৬ মণ পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।

এ ছাড়া চাপশাইল ও কুমড়াগইর জাতের সংকরায়ণে তৈরি ধানের নাম রাখা হয়েছে ‘আরুনি ধান’। এই ধানের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ২৪ দশমিক ১৫ মন প্রতি বিঘায়।

এ ছাড়া বেনাপোল ও ডাকশাইল ধানের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে ‘গঙ্গা ধান’। এর ফলন হয়েছে প্রতি বিঘায় ২১ দশমিক ২৫ মণ। বিআর–২৩ (মাদার) ও জটাই বালাম (ফাদার) জাতের ধানের মিশ্রণে তৈরি ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মৈত্রী ধান’। এর উৎপাদন ২২ দশমিক ৭৫ মণ। বজ্রমুড়ি ও কুমড়াগইর ধানের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে ‘লক্ষ্মীভোগ ধান’। এর উৎপাদন প্রতি বিঘায় ২২ মণ পর্যন্ত হতে পারে।

আরুনি সরকার ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লোকজ-এর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার গুলিসাখালি রিসোর্স সেন্টারে আমন ধানের সংকরায়ণ বিষয়ে ৬ দিনের প্রশিক্ষণে অংশ নেন। ফিলিপাইনের কৃষিবিজ্ঞানী ও গবেষক বংকায়া বান তাদের প্রশিক্ষণ দেন।

প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরে আরুনি বিলুপ্তপ্রায় স্থানীয় আমন ধানের জাতগুলোর মধ্যে ১০টিকে মাদার এবং ১০টি জাতকে ফাদার হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রথম বছরই কৃত্রিম সংকরায়ণের মাধ্যমে ১০ ধরনের ধানের বীজ (এফ-১) তৈরি করেন। পরের বছর থেকে ওই বীজগুলো খেতে রোপন করে নির্ধারণের কাজ করেন তিনি। দীর্ঘ ১০ বছর গবেষণা শেষে ৬ ধরনকে উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য চাষাবাদ উপযোগী হিসেবে স্থানীয় কৃষকরা স্বীকৃতি দেন এই ৬ প্রকার ধানকে। ইতোমধ্য এই ধান চাষ করা শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম জানান, ‘আরনি সঠিক পথেই এগুচ্ছেন। আরুণি যে কাজটি করেছেন, আমরা তাকে সংকরায়ণ পদ্ধতি বলে থাকি।’

অধ্যাপক মনিরুল আরও বলেন, ‘তাকে এখন জাতীয় বীজ প্রত্যয়ন বোর্ডের নিকট আবেদন করতে হবে এর স্বীকৃতি পাবার জন্য। আরুনি তার কাজটুকু করে দেখিয়েছেন এখন সরকারের বিরিকে এগিয়ে আসতে হবে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) পরিচালক ডক্টর মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর জানান, ‘নিশ্চয়ই সে সঠিক পদ্ধতি মেনে গবেষণা করেছেন। দেখার বিষয়, অধিক ফলনের বৈশিষ্ট্য ধারাবাহিকভাবে থাকে কি না। কখনো কখনো আমরা দেখি দুবছর পর বৈশিষ্ট্য চেঞ্জ হয়ে যায়। আমি বিরির সাতক্ষীরার গবেষকদের বলবো তার উদ্ভাবিত ধান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কৃষকের উদ্ভাবিত ধানকে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায় তা ভেবে দেখব। আসলে কৃষকরাই আমাদের পথ দেখান।’

ইতোমধ্যেই দাকোপ-বটিয়াঘাটা অঞ্চলের কৃষকরা আরুনি উদ্ভাবিত ৬টি জাতের ধান চাষাবাদ শুরু করেছেন। ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ হচ্ছে এই জাতগুলো। চলতিবছর এ অঞ্চলের ৫৮ জন কৃষক ২ শতাধিক বিঘা জমিতে আরুনি উদ্ভাবিত ধানগুলো চাষ করেছেন। যে ধানের ফলন ভালো, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা সইতে পারে, তুলনামূলক কম কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করতে হয়। ফলে কৃষকরা এই ধান চাষে ঝুঁকছেন।

সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১২, ২০২২ ৬:৫৮ অপরাহ্ন
লক্ষ্মীপুরে সুপারির ব্যাপক ফলন, দামে খুশি চাষিরা!
কৃষি বিভাগ

লক্ষ্মীপুরে দিন দিন সুপারির চাষ বাড়ছে। গত বছরে এই জেলায় প্রায় ৬শত কোটি টাকার সুপারি বিক্রি হয়। এখানকার উৎপাদিত সুপারি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি বছরে এই জেলার উৎপাদিত সুপারি বিক্রি প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, সারি সারি গাছে ঝুঁলছে সুপারি। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার সুপারির হাটগুলো জমজমাট থাকে। কৃষকরা গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করে বিক্রি ও সংরক্ষনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সুপারি চাষে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এই অঞ্চলে নতুন নতুন সুপারির বাগান তৈরী হচ্ছে। কৃষকরা সুপারি চাষে ঝুঁকছেন।

চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুপারির আকার ছোট হয়েছে। ফলন গত বছরের তুলনায় কম হলেও সুপারির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, ৬৪ কুড়ি সুপারি ২৫০০-৩২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সুপারি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হয়।

লক্ষ্মীপুরের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন জানান, সুপারি থেকে কোনো কিছু করা যায় কিনা সেই গবেষনা করা দরকার। সুপারি চাষ লাভজনক হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকভাবে সুপারির চাষ করেন। জেলায় এ বছর ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১০, ২০২২ ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
হাসপাতালের পতিত জমিতে সবজি চাষ
কৃষি বিভাগ

্গো্পালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পাঁচ একর পতিত জমিতে সবজি, ফল ও ফুলের আবাদ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি ও ফল উৎপাদন করে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা হবে।
হাসপাতালের সামনের ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফুল ও পরিবেশবান্ধব ঔষধি গাছের চারা রোপণ করেছে।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে মোট ১৫ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে স্থাপনা ও রাস্তা প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে। পতিত ছিল পাঁচ একর। এ জমির আগাছা পরিস্কার করা হয়েছে। এখানে কলাবাগান, লাউ, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, শিম ও সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এখন কপিসহ শীতের সবজির আবাদ চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আমার ক্যাম্পাস সবজি, ফল ও ফুলে সুশোভিত হয়ে উঠবে।

ডা. নাহিদ বলেন, ‘সবজি ও ফল উৎপাদনে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করব না। জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহূত হবে। মানবদেহের জন্য নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে আমরা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। আমাদের দেখাদেখি আরও অনেকে এমন চাষাবাদে উৎসাহী হবেন।’
কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, ‘বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালের উদ্যোগটি চমৎকার। এটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। চক্ষু হাসপাতাল দেখিয়ে পতিত জমিতে এভাবে চাষাবাদ করতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে উদ্বুদ্ধ করব।’

হাসপাতালসংলগ্ন ঘোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা চৌধুরী আবেদ হোসেন বলেন, ‘তাঁরা সফল হলে আমরাও পতিত জমিতে সবজি ও ফল উৎপাদন করব।’
বদর উদ্দিন অহমেদ বলেন, হাসপাতালের পরিচালকসহ সবাই শ্রম দিচ্ছেন। পরিচর্যা করছেন। হাসপাতাল-ক্যাম্পাসজুড়ে কৃষিকাজের উৎসব সৃষ্টি হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৯, ২০২২ ৮:০৪ অপরাহ্ন
বরিশালে কচুফসলের আবাদ বিষয়ক এসএএও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালে কচু ফসলের উন্নত জাত ও উৎপাদন বিষয়ক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রহমতপুরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের হলরুমে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। কন্দালফসল গবেষণা কেন্দ্র এবং আরএআরএসর যৌথ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) ড. মহা. বশিরুল আলম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের (আরএআরএস) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল চন্দ্র কুন্ডু এবং কন্দালফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোশাররফ হোসেন মোল্লা।

আরএআরএসর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে রাখেন ভাসমান কৃষি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া, পিএসও ড. মো. আলিমুর রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কচু একসময়ে অবহেলিত হলেও এখন অনেকের পছন্দের সবজি। এর বেশ কয়েকটি উন্নত জাত রয়েছে। এগুলোর ফলন আশানুরূপ। তাই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এসব জাত এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি কৃষকের দ্বারে সময়মত পৌঁছাতে হবে। তবেই হবে জনকল্যাণকর। হবে উৎপাদন বৃদ্ধি।
দিনব্যাপি এই প্রশিক্ষণে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা, উধর্বতন বৈজ্ঞানিক সহকারি এবং বৈজ্ঞানিক সহকারি মিলে ৩০ জন অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৯, ২০২২ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
ভাসমান সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন মাদারিপুরের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কৃষকরা জলাবদ্ধ পতিত জমিতে ভাসমান ধাপ পদ্ধতিতে ফসলের চারা উৎপাদন ও চাষাবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। কৃষকরা সফলতা পাওয়ায় দিন দিন এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাসমান পদ্ধতিতে কৃষকরা রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়া শুধু জৈব সার ব্যবহার করে চারা উৎপাদন ও সবজি চাষ করছেন। এপদ্ধতিতে অধিক ফলন ও সবজির বাজারদর ভালো থাকায় অল্প খরচেরই কৃষকরা লাভবান হতে পারছেন। তাই এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ কৃষককের মাঝে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

জানা যায়, জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা এবং পর্যায়ক্রমে শ্যাওলা, দুলালীলতা, টোপাপানা, কুটিপানা, কলমিলতা, জলজ লতা স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই থেকে তিন ফুট পুরু করে ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়। তারপর সামান্য ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি বাঁশ, নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া, তুষ, নৌকা প্রভৃতি প্রয়োজন হয়। প্রায় ১০ দিনের মধ্যেই ধাপ চাষের উপযোগী হয়।

জানা যায়, কৃষকরা ভাসমান পদ্ধতিতে লাউ, শসা, করলা, মিষ্টিকুমড়াসহ আরো বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। তাদের ভাসমান বেডে সারি সারি ভাবে ঝুলছে সবজি। অনেকে আবার বেডের নিচে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক চাষ করছেন। চাষিদের সফলতায় দিন দিন এই পদ্ধতিতে চাষ বাড়ছে।

রমজানপুর ইউনিয়নের চরপালরদি গ্রামের কৃষক শাহীন রাড়ী বলেন, আমি এই পদ্ধতিতে গত ৫ বছর যাবত বিভিন্ন সবজি চাষ করছি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহায়তা নিয়ে ৩৪ শতাংশ জমিতে ৩০টি বেডে এবং ১৭টি মাদা আকারে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছি। সবজি চাষে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫-৬ হাজার টাকার শসা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, করলা, লাল শাক বিক্রি করছি। ইতোমধ্যে ৯০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি। আশা করছি আরো প্রায় ২ লাক টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবো।

পাশের এলাকার কায়কোবাদ শামীম বলেন, ভাসমান পদ্ধতিতে জৈব সার দিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে। অন্যান্য চাষিদের মাচায় দেখলাম সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তাই আমিও আমার বাড়িরে পাশের পতিত জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষ করার পরিকল্পনা শুরু করেছি।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার তানভীর হাসান বলেন, আমরা কৃষককের মাঝে প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করছি। ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে কোনো প্রকার রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করা হয়না। ভাসমান ধাপ পদ্ধতিতে সবজি চাষ কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় এলাকার প্রায় ৪০টি পরিবার এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে। এই পদ্ধতিতে সবজির উৎপাদন বেশি হয়। আর সবজির বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের নিয়মিত সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অল্প খরচে লাভ বেশি হয় বলে কৃষকরা এই পদ্ধতিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৭, ২০২২ ৭:০২ অপরাহ্ন
ভালো লাভ হওয়ায় কচু চাষের দিকে ঝুকছেন মিরসরাইয়ের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

কচু চাষে ব্যাপক সফলতার পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন চট্টগ্রাম মিরসরাই পৌরসভার প্রান্তিক চাষিরা। স্থানীয় বাজারসহ সারাদেশে কচুর চাহিদা থাকায় কচু চাষে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চাষি যুক্ত হচ্ছেন। কৃষক হারুন বলেন, এবছর তিনি ১০০ শতক জমিতে কচু চাষ করেছেন। অন্যের চাষকৃত আরো ৭০ শতক জমি কিনেছেন তিনি। ইতোমধ্যে ১২০ শতক জমির কচু বিক্রি শুরু করেছেন। ১২০ শতক থেকে কচু বিক্রি করেছেন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকার।

হারুনের পাশাপাশি উপজেলার আরো অনেক কৃষক এই কচু চাষের সাথে জড়িত আছেন। উপজেলায় কচু চাষ করে অধিকাংশ কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।

চাষি আবুল হোসেন বলেন, মিরসরাই উপজেলার ‍অন্যান্য গ্রামের থেকে আমাদের গ্রামে কচুর চাষ বেশি হয়। এবছর ২৫ শতক জমিতে কচুর চাষ করেছি। ২২ হাজার টাকার কচুর ফুল ও লতিই বিক্রি করেছি। আর বাকি জমি ৬৫ হাজার টাকায় অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ জমি চাষে খরচ ৪০ হাজার টাকা হয়েছিল।

মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, উপজেলায় এবার ১৫০ একর জমিতে কচু চাষ করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষ হলেও সর্বোচ্চ চাষ হয় মিরসরাই পৌরসভা ও মঘাদিয়া ইউনিয়নে। এসব এলাকার কৃষকরা কচু চাষে ভালো করেছেন।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop