৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

সোমবার, ২০ মে , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুন ৩০, ২০২২ ১১:২১ পূর্বাহ্ন
মোহনপুরে প্রাকৃতিকভাবে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে ব্যস্ত কৃষকরা
প্রাণিসম্পদ

রাজশাহীর মোহনপুরে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। প্রাকৃতিক উপায়ে হৃষ্টপুষ্টকরণ করায় এই অঞ্চলের গরুর চাহিদাও অনেক বেশি। এবার বাজারে গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় গরুর খাবারের দাম কিছুটা বেশি হলেও ভারত থেকে গরু না আসলে লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন খামারিরা।

উপজেলায় বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা যায়, পরম যত্নে গরুগুলোর প্রতিনিয়ত দেখভাল করছেন খামারিরা। কারণ কোরবানির হাটে যে গরু দেখতে যতো আকর্ষণীয় হবে, তার দামও হবে ততো বেশি। তাই গরু খাদ্য তালিকাটাও বেশ সমৃদ্ধ। গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ করতে ঘাসের পাশাপাশি দেয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক খাবার খৈল, ভূষি, চাউলের খুদ ও খড়।

উপজেলার ময়ার মোড় গ্রামের খামারি সাইদুল ইসলাম জানান, গত ঈদে ১৬টি গরু মোটাতাজা করে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো লাভ করেছিলেন। এ বছর কুরবানি উপলক্ষে গত ৫-৬ মাস থেকে ১২টি গরু ২টি মহিষ মোটাতাজা করছি।

এবার গরুর খাবারের দাম ও ঔষুধের দাম অনেক বেশি। অসাধু পন্থা অবলম্বন না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে কাঁচা ঘাস, খড়, গম, বুট, খুদের ভাত, খৈল-ভুষি খাইয়ে যতটুকু মোটাতাজা করার দরকার নিখুঁত খাদ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত করতে পারছি। যদি ভারতীয় গরু না আসে তাহলে লাভ থাকবে। অন্যথায় লোকসান হওয়া আশঙ্কা করছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈদকে সামনে রেখে এই উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫২৫৭ খামারে গরু ১৮৫২৬, ছাগল ৩৬০৭২, ভেড়া ৩৬৫৬ মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।

মোহনপুর উপজেলা অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: বিল্লাল হোসেন বলেন, উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষি ও পশুপালনে নিয়োজিত রয়েছেন। প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হয়েছে। এ কারণে এবার উপজেলায় কুরবানির চাহিদার থেকে বেশি পশু প্রস্তুত হয়েছে।

ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ রাখতে পারলে কৃষক ও খামারিরা ন্যায্য মূল্যে কুরবানি পশু সরবরাহ করতে পারবেন। খামারিদের প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজাকরণ করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কোনো খামারি যেন স্টেরয়েড বা ক্ষতিকারক ইনজেকশনের মাধ্যমে পশু হৃষ্টপুষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। যদি কোন খামারি ও ঔষধ বিক্রেতা এর সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাদের তথ্য-প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রকাশ : জুন ২৯, ২০২২ ১:২৩ অপরাহ্ন
সাত লাখ কোরবানির পশু নিয়ে প্রস্তুত পাবনার খামারিরা
প্রাণিসম্পদ

সামনের মাসেই পবিত্র কোরবানীর ঈদ। সারাদেশে পশুর হাটগুলোতে চলছে জোর প্রস্তুতি।

সারাদেশে কোরবানীর পশুর জন্য সুনাম রয়েছে পাবনার। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে পাবনার পশু সরবরাহ হয়ে থাকে সারাদেশে।

পবিত্র ঈদ উল-আযহাকে সামনে রেখে এ বছরও বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন জেলার খামারীরা। জেলার ২৪ হাজার খামারে প্রায় ৭ লাখ কোরবানীর পশু প্রস্তুত রয়েছে এবারের ঈদ উপলক্ষে। পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. কৃষ্ণ মোহন হাওলাদার বলেন, জেলায় চলতি বছরে প্রায় ২৪ হাজার খামারে প্রায় ৭ লাখ কোরবানীর পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৭৭ হাজার গরু ও মহিষ আর ৩ লাখ ৭১ হাজার ছাগল-ভেড়া।

জেলাতে সব মিলিয়ে ৩ লাখ কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে। আর সাড়ে ৩ লাখ পশু বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ হবে। বিগত দুই বছর অনলাইনে পশু কেনাবেচা হলে এই বছরে করোনার সংক্রমণ কম থাকায় হাটবাজারে পশু বিক্রি বেশি হবে বলে মনে করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ এই কর্মকর্তা।

কোরবানীর পশুর জন্য ক্রেতাদের অন্যতম ভরসার নাম পাবনা অঞ্চল। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও কোরবানীর ঈদের চমক নিয়ে হাজির হয়েছেন পাবনার তরুণ অনেক পশু খামারী। ‘পাবনার বাদশা’ ‘স্বপ্নরাজ’ বিভিন্ন নামে বিশাল আকৃতির ষাঁড় নিয়ে পাবনা অঞ্চলের মান রেখেছেন খামারীরা। ষাঁড়গুলো দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসছেন।
ঈদের আগেই পছন্দের বেশিরভাগ পশু খামার থেকে কিনে নিয়েছেন দেশের ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ীরা। এক খামারে রয়েছে বিশাল আকৃতির বাদশার ওজন প্রায় সাড়ে ৩২ মণ। গরুটির জন্য চাওয়া হয়েছে ২০ লাখ টাকা। পাবনার খামারে ব্রাহামা, অস্ট্রেলিয়ান ছাড়াও শাহীয়াল, ফিজিয়াম, ভুটান থেকে আনা ছোট ভুট্টি জাতের গরু রয়েছে।

গরুর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের খাসিও রাখা হয়েছে এ তালিকায়। মূলত ঈদের পর সারাদেশ ঘুরে বিভিন্ন জাতের গরু সংগ্রহ করে রাখা হয়। বেপারী বা ক্রেতারা খামারে এসে পছন্দ করে গরু কিনছেন।

প্রকাশ : জুন ২৭, ২০২২ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
খুলনায় খামারগুলোতে কোরবানির গরু বেচা-কেনা শুরু
প্রাণিসম্পদ

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন খুলনার খামারিরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত গরুর পরিচর্যায়। এদিকে এবার খুলনায় আগেই কোরবানির গরু কেনাবেচা শুরু হয়ে গেছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খামারিরা বিভিন্ন সাইজের পশু সংগ্রহ করে এনেছেন। তবে গতবারের তুলনায় এবার গরুর দাম চড়া।

কারণ হিসেবে খামারিরা বলছেন, পরিবহন ও গোখাদ্যের দাম বাড়তি হওয়ায় মূলত পশুর দাম চড়া। নগরীর নিরালা সবুজবাগ এলাকায় রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার। ঐ সব খামারে বর্তমানে গড়ে উঠেছে ছোটখাটো হাট। খামার মালিকরা জেলার গ্রামাঞ্চল ঘুরে সংগ্রহ করছেন বিভিন্ন প্রকারের পশু। ইতিমধ্যে সংগ্রহকৃত অনেক গরু বিক্রিও হয়ে গেছে।

ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে ক্রেতারা এসে খামার থেকে আগেভাহেই গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। নিরালা সবুজবাগের জমজম অ্যাগ্রোর ম্যানেজার মো. ইকরাম হোসেন বলেন, ‘এবার কোরবানিযোগ্য ২২টি গরুর মধ্যে ২০টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকা ও চট্টগামের ক্রেতারা গরুগুলো কিনে নিয়ে গেছেন।’ নগরীর নিরালা সবুজবাগের একটি ফার্মে সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা শামসুল আলমের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বলেন, ‘হাটে ঘোরাঘুরির চেয়ে খামার থেকে গরু কেনা ভালো। তবে খামারিরা গতবারের চেয়ে এবার চড়া দাম চাইছেন। খামারগুলো ঘুরে দেখে পছন্দমতো গরু দেখেই কিনব।’

প্রকাশ : জুন ২৩, ২০২২ ৪:৫১ অপরাহ্ন
কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে পূর্ণ প্রস্তুতি : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও অবাধ পরিবহন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান।

এসময় তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের মত এবারও কোরবানির পশুর চাহিদা নিরুপন করা হয়েছে। কোরবানির চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৮৯টি। ফলে কোরবানির জন্য কোনরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই।

কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। রোগগ্রস্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ হয়রানির শিকার হবেন না, ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োগ করা হবে। আমরা সুন্দরভাবে আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করতে চাই।

মন্ত্রী আরও বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ঈদ-উল-আযহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে এবং পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে উদযাপন করা যায় সে লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও সরকারের অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা কাজ করছে।

কোরবানির পশুর জন্য অতীতে পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমাদের প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা, খামারি ও উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করায় প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ খাতে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মাংসে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কোন খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলে তাকে হাসিল দিতে হবে না। কোন খামারি তার পশু দূরবর্তী হাটে নিতে চাইলে, রাস্তাঘাটে জোর করে নামাতে বাধ্য করা যাবে না। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকারের ইউনিট তথা পৌরসভা, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন এ বিষয়টি নিশ্চিত করবে। হাটে আনার পথে কেউ প্রাণী বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল গ্রহণ করতে পারবে না। এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। নগদ টাকা বহণ না করে বিকল্প উপায়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে খামারিরা যাতে আর্থিক লেনদেন করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, গতবছর অনলাইন প্লাটফর্মে প্রচুর গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল। এ বছরও এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকবে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সুখকর অবস্থা তৈরি করবে। অনলাইনে ক্রয়কৃত গরু পছন্দ না হলে টাকা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থাও এবছর সংযোজন করা হচ্ছে। যাতে ক্রেতারা কোনভাবেই প্রতারিত না হয়।

তিনি আরও বলেন, লাভের আশায় কোরবানির অনুপযুক্ত পশু বা রোগগ্রস্ত পশু যাতে কেউ বিক্রির চেষ্টা না করে। এ বিষয়টি সকলকে তাগিদ দিতে হবে। প্রতিটি নির্ধারিত কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি সার্জন থাকবে। গবাদিপশু কোরবানির উপযোগী কিনা বা তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কিনা তারা সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।

মন্ত্রী আরও যোগ করেন, মহাসড়কে বা যেখানে হাট বসালে যান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু যাতে না হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশু পরিবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, যাতে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয়। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হবে। অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬৩৫৮ চালু থাকবে। পশু পরিবহনে খামারিদের সমস্যা সমাধানে এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কাজ করবে। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে কোন রকম সমস্যা যাতে না হয়, সেজন্য সবধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে গবাদিপশু কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে গবাদিপশুর খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার বিষয়টিও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কোরবানির সময় যাতে ঐই অঞ্চলে দেশের অন্য অঞ্চল থেকে পশু যেতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, বিভাগীয় কমিশনারগণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক মো. শেফাউল করিম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি প্রমুখ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

প্রকাশ : জুন ২১, ২০২২ ৪:৪১ অপরাহ্ন
কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আহ্বান
প্রাণ ও প্রকৃতি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কোরবানি ও কোরবানিকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠুভাবে অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যত্রতত্র পশু জবাই করা হতে বিরত থাকতে এবং সুনির্দিষ্ট স্থানে গর্ত করে গর্তের মধ্যে রক্ত, গোবর ও পরিত্যক্ত অংশ রেখে মাটি চাপা দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কোরবানির বর্জ্য অপসারণ বা কোরবানির গোশত বিতরণে পরিবেশ সম্মত ব্যাগ/পাত্র ব্যবহার এবং জবাইকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ ডাস্টবিন অথবা নির্ধারিত স্থানে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানিকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা ও অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে করণীয় বিষয়ে আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ অনুরোধ জানানো হয়।

মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোঃ মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব(পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডক্টর আবদুল হামিদ সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় কোরবানিকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠুভাবে অপসারণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চার লক্ষ কপি প্রচারপত্র সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগ ও জেলা কার্যালয়, জেলা প্রশাসন এবং জেলা তথ্য অফিস-সহ অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে দেশব্যাপী বিতরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও, পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারা দেশের মসজিদসমূহে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও মসজিদের ইমামদেরকে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে করণীয় সম্পর্কে জুম্মার নামাজে বক্তব্য রাখার আহবান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারি চ্যানেলে ও প্রচার মাধ্যমে কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণ সংক্রান্ত বার্তা প্রচারের অনুরোধ করা হয়।

প্রকাশ : জুন ১৪, ২০২২ ১২:৪০ অপরাহ্ন
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গরু মোটাতাজায় ব্যস্ত খামারীরা
প্রাণিসম্পদ

সামনে ঈদুল আজহা। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও নরসিংদীর খামারিরা কোরবানি উপলক্ষ্যে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। অবৈধ পথে ভারত থেকে গরু আমদানি না হলে, লাভবান হওয়ার আশা খামারিদের। এদিকে পশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার বন্ধে খামারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

কোরবানি ঈদ সামনে তাই গরুর যত্নে ব্যস্ত নরসিংদীর খামারিরা। এসব গরু এক বছর আগে দেশের বিভিন্ন হাট থেকে কিনে লালনপালন শুরু করেন তারা। দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করায় এ অঞ্চলের গরুর চাহিদা বেশি।

খামারিরা জানান, এ বছর পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। ঈদের আগে দেশের বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশে কঠোর নজরদারির দাবি তাদের।

এদিকে পশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার বন্ধে মাঠ পর্যায়ে তদারকির কথা জানালেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান খান।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর আট হাজার খামারি দেশীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৬৫ হাজার পশু মোটাতাজা করছেন। এতে ১৯০ কোটি টাকা ব্যবসার আশা তাদের।

প্রকাশ : জুন ১২, ২০২২ ৩:০০ অপরাহ্ন
কোরবানির আগেই গরুর হাটে অস্বস্তি
প্রাণিসম্পদ

খামারিরা বলেন, গরুর খাবারের দাম বেশি। তাও লাভ তুলতে বেড়েছে গরুর দাম। আগে এক বস্তা ভুসির দাম ছিল ১ হাজার টাকা। এখন দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা।
তবে প্রান্তিক খামারিরা বলছেন, হাটে প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না। তারা বলেন, ‘আমরা যারা ছোট খামারি তারা ন্যায্যমূল্যে গরু বিক্রি করতে পারছি না। গরুর যা দাম বলছে, তাতে লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না।’
ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ হওয়ায় গবাদিপশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের দাবি, অবৈধ গরু আসা ঠেকানো গেলে লাভবান হবেন প্রান্তিক চাষিরা।
 
এ বছর কোরবানির লক্ষ্যে জেলার প্রায় ৪৬ হাজার খামারি আড়াই লাখের বেশি গরু-মহিষ লালন-পালন করেছেন। 

প্রকাশ : জুলাই ২৬, ২০২১ ১:২৯ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে অবিক্রিত কোরবানীর পশু ৪৪ হাজার!
প্রাণিসম্পদ

রাজশাহী জেলায় কোরবানির বাজারকে কেন্দ্র করে খামারি ও সাধারণ কৃষকেরা এবার  ৩ লাখ ৮২ হাজার পশু প্রস্তুত করেছিল। কোরবানি হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৯ হাজারটি। ফলে এবার অবিক্রিত থেকে গেছে প্রায় ৭৩ হাজার কোরবানীর পশু।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে এবার কোরবানীর জন্য গরু পালন হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৬৬৬টি। তার মধ্যে কোরবানি হয়েছে ৬২ হাজার ৮৫৪টি। অবিক্রি থেকে গেছে ৪৩ হাজার ৮১২টি গরু।

ঈদের বাজার সামনে রেখে রাজশাহীদে মহিষ পালন করা হয়েছে ২ হাজার ৯৫৬টি। এর মধ্যে মাত্র ৩১৫টি মহিষ কোরবানি হয়েছে।

তবে ছাগল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্জিত হয়েছে। রাজশাহীতে ছাগল প্রস্তুত ছিল প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার। এর মধ্যে কোরবানি হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার। ভেড়া পালা হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার। কোরবানি হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৬৬৩ টি।

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার সুজন ইসলাম জানান, স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ৩০টি গরু ঢাকায় নিয়ে গেলেও সেখানে বিক্রি হয়েছে ১৯টি। যেগুলোর দাম তিন লাখের নিচে। আর তিন লাখের ওপরে যে ১১টি গরুর দাম, সেগুলো বিক্রি হয়নি। তাই অবিক্রীত গরুগুলো নিয়ে খামারে ফেরত আসেন।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইসমাইল হক জানান, মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে কে কতটা পশু পালন করবে, এটা নির্ধারণ করে দেওয়া যায় না। তাই যে যাঁর মতো করে পশু পালন করেন।আমরা সরকারকে ধারণা দিয়েছি যে স্থানীয়ভাবে পালন করা পশুতেই কোরবানির চাহিদা মেটানো যাবে। কোরবানির জন্য বাইরে থেকে পশু আমদানি করার প্রয়োজন পড়বে না। তাই বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানি করা হয়নি। তারপরও অনেক পশু অবিক্রীত থেকে গেছে বলে জানান তিনি।

প্রকাশ : জুলাই ২৫, ২০২১ ৩:০৮ অপরাহ্ন
২৮ লাখের বেশি গবাদিপশু অবিক্রীত,হতাশ খামারিরা!
প্রাণিসম্পদ

করোনায় ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর বাজার নিয়ে শঙ্কা ছিল সবার। কিন্তু সেটি যে এত ব্যাপক মাত্রায় প্রভাব ফেলবে, তা অনুমান করা যায়নি। সরকারি হিসাবেই ২৮ লাখের বেশি গবাদিপশু অবিক্রীত রয়ে গেছে।

চলতি বছর ঈদুল আজহায় কোরবানি দেয়ার জন্য সারা দেশে প্রস্তুত করা হয়েছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি গবাদিপশু। বিক্রি হয়েছে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু। অনেকে লোকসান দিয়েও গবাদিপশু বিক্রি করেছেন শেষ সময়ে। অনেকে অবিক্রীত পশু ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন।

২০১৯ সালের ঈদুল আজহায় প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ পশু কোরবানি করা হয়েছিল। তার আগের বছর ২০১৮ সালে প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ পশু কোরবানি দেয়া হয়। প্রতি বছর এ সংখ্যা বাড়ে। তবে এবারের পরিস্থিতি ব্যতিক্রম। বিপুলসংখ্যক পশু অবিক্রীত থাকায় লোকসানে পড়েছেন অনেক খামারি, ব্যবসায়ী ও কৃষক।

বছরজুড়ে যারা কোরবানির ঈদের দিকে তাকিয়ে থাকে সেসব পরিবার সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে।

পশু উত্পাদন থেকে শুরু করে মাংস ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত আরো বিপুলসংখ্যক মানুষ যুক্ত। সংকুচিত শ্রমবাজারের বাস্তবতা সত্ত্বেও এ খাতে একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বড় বিষয় হলো, এ কর্মসংস্থান মূলত সমাজের প্রান্তিক ও গ্রামীণ পর্যায়ে হয়। বড় খামারি ছাড়াও গ্রামের অনেক দিনমজুর ও ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ দু-একটি ছাগল বা গরু কিনে বাজার থেকে খইল, ভূসি এনে পশুদের খাইয়ে সারা বছর লালন-পালন করেন কোরবানির হাটে আকর্ষণীয় দামে বিক্রি করে মুনাফা লাভের আশায়।

আর এ উপার্জন দিয়েই তারা সারা বছর সন্তানের পড়াশোনা ও পারিবারিক খরচ চালান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও খামারে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে যারা গরু লালন-পালন করেছেন বা বিনিয়োগ করেছেন, তারা অনেক বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন বলে খবর আসছে। প্রতি বছর কোরবানির আগে পশু নিয়ে মুনাফার আশায় ঢাকার বিভিন্ন হাটে ছুটে যান ব্যবসায়ীরা। অনেক গরিব কৃষক বা চাষী তাদের সব মূলধন জোগান দেন কোরবানিতে একটু বাড়তি লাভের আশায়। এবার তাদের বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

অবিক্রীত গবাদিপশু নিয়ে ক্ষুদ্র খামারিরা সংকটে পড়বেন। তাদের খাবার জোগাড় করা, ঋণের অর্থ পরিশোধ আবার পরিবার চালানো অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

চলতি বছর অনলাইনে রেকর্ডসংখ্যক গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে। তার পরও বিপুলসংখ্যক পশু অবিক্রীত থেকে যাওয়ার কারণ পর্যালোচনা প্রয়োজন। করোনার কারণে মানুষের আয় কমায় গবাদিপশু বিক্রি কমেছে নাকি আর্থিক সচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও করোনার জন্য অনেকে কোরবানি দেননি, সেটি বিশ্লেষণের দাবি রাখে। এতে পরবর্তী বছরের পরিকল্পনা প্রণয়ন সহজ হবে। গবাদিপশু বিক্রির হার কমতে থাকলে সরকারের নীতি কী হবে বা অবিক্রীত পশু বিক্রির জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রয়োজন।

অনলাইনে পশু বিক্রি আরো জনপ্রিয় করতে একে আরো সহজবোধ্য করে গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাতে প্রান্তিক কৃষকও এটি ব্যবহার করতে পারেন। পার্শ্ববর্তী দেশ গরু রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় গবাদিপশু উত্পাদনে বাংলাদেশে ব্যাপক সাফল্য আসে। অনেকেই এ খাতকে আয়ের উত্স হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে গবাদিপশু বিক্রি কমে এলে খামারি ও দরিদ্র পরিবারগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের হালাল লাল মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণেই সীমিত আকারে হালাল লাল মাংস রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। মধ্যপ্রাচ্যের সব কয়টি দেশের পাশাপাশি ব্রুনাইয়েও রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের এ লাল মাংস। বিপুলসংখ্যক পশু অবিক্রীত থাকার পরিপ্রেক্ষিতে মাংস রফতানি বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।

এতে খামারি ও কৃষক উভয়ই লাভবান হবেন। এ কথা সত্য, সরকার গবাদিপশু বিক্রির জন্য অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি ছাড়াও বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করেছিল। এতে পশু আনা সুবিধাজনক হলেও চাহিদা না থাকায় অনেক পশু অবিক্রীত থেকে গেছে। এসব পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষ চাইলে এ উদ্যোগ নিতে পারে। এক্ষেত্রে দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে।

অনেক খামারি ঋণ নিয়ে গরু লালন-পালন করেছেন। কোরবানিতে বিক্রি করে অর্থ পরিশোধ করবেন। তারাও গরু বিক্রি করতে না পেরে ঋণের অর্থ পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। খামার পরিচালনার দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতেই এখন তাদের বেগ পেতে হবে। শুধু খামারিরাই নন, এবার বড় ধরনের চাপে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও। যারা সারা দেশের বিভিন্ন খামার থেকে গরু কিনে ঢাকায় আনেন ব্যবসার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তারাও এবার লাভের মুখ দেখতে পারেননি।

যারা গরু বিক্রি করতে পারেননি, উল্টো ঢাকায় এসে বাড়তি কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে, তাদের এখন গরু পালন করতেই হিমশিম খেতে হবে। কারণ আগের ব্যাংকঋণ পরিশোধ না করলে নতুন ঋণও পাওয়া যাবে না। অবিক্রীত গবাদিপশুর খাবার জোগান দেয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে ব্যাংকঋণের সুদ মওকুফ ও পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে।

কোরবানির পশু অবিক্রীত থাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশেষ কিছু উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক দিন ধরেই গবাদিপশুর বীমা চালুকরণের কথা বলা হচ্ছে। পাইলটভিত্তিক কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি এখনো তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। ঈদুল আজহায় গবাদিপশু বিক্রির উদ্দেশ্যে যারা খামার বা পশুপালন করেন, তাদেরও বীমার আওতায় আনা জরুরি। এতে ক্ষুদ্র এসব উদ্যোক্তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা কমে আসবে।

বিশ্বের অনেক দেশেই কৃষি ও পশু বীমা খুবই জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। বাংলাদেশেও এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা আবশ্যক। অর্থনীতির স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী বাজারে চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি থাকলে দাম কমে যায়। চলতি বছরের অভিজ্ঞতা আমলে নিয়ে তাই বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জোগান নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি বছরই গবাদিপশুর জোগান বাড়ছে। ধারণা করা যায় আগামী বছরও বাড়বে।

কিন্তু চাহিদার পতন যদি বজায় থাকে, তবে আগামীবারও খামারি ও ক্ষুদ্র কৃষকরা ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। গবাদিপশু পালনে কৃষকদের মধ্যে যে উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, সেটি ধরে রাখতে গবাদিপশুর বিকল্প বাজার তৈরি করতে হবে। নতুবা গবাদিপশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের সাফল্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

একই সঙ্গে যেসব উদ্যোক্তা ও কৃষক বা খামারি বাজারের মন্দা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আর্থিক সহায়তা বা প্রণোদনা প্রদানের পদক্ষেপ নিতে হবে। করোনার কারণে এমনিতেই তারা ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এখন পশু অবিক্রীত থাকায় ক্ষতির শঙ্কা আরো বাড়ছে। গবাদিপশুকে আরো এক বছর খাইয়ে আগামী বছর বিক্রির জন্য রাখাও লাভজনক হবে না বলে প্রতীয়মান হয়। এক্ষেত্রে অবিক্রীত পশু বিক্রি বা ব্যবহারে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ প্রত্যাশিত। সূত্র:বণিক বার্তা

প্রকাশ : জুলাই ২৪, ২০২১ ৮:৩৭ অপরাহ্ন
২০১৬ সালের পর সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে এবার
প্রাণিসম্পদ

করোনা সংক্রমণের মাঝেও অনলাইন আর অফলাইনে বিক্রি হয়েছে গরু-ছাগল। এ বছর ঈদুল আজাহায় সারাদেশে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। যার মধ্যে ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষ, ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৭১৫টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। তবে এ বছর যেন রেকর্ড হয়ে থাকবে। কারণ ২০১৬ সালের পর এ বছর সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে মানুষের কাছে অর্থের সংকট থাকায় অনেকেই এবার কোরবানি দেননি। আবার যারা আগে একাই কোরবানি দিতেন, এবার তারা ভাগে দিয়েছেন। এ জন্য গরুর চাহিদা কম ছিল। শুরুর দিকে যেসব ব্যবসায়ী অল্প দামে গরু ছেড়ে দিয়েছেন, তারা লোকসান করেননি। যারা বেশি দামের আশায় গরু রেখে দিয়েছিলেন, তাদেরই লোকসান গুণতে হয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা।

জানা যায়, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কারণে ২০১৬ সালেই কোরবানির পশুর সংখ্যা প্রথমবারের মতো ১ কোটি ছাড়িয়ে যায়। ওই বছর ১ কোটি ৫ লাখ পশু কোরবানি হয়। ২০১৭ সালে ১ কোটি ৪ লাখ গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার সঙ্গে হাজারখানেক দুম্বা, উট ও গয়াল কোরবানি হয়। ২০১৮ সালে ১ কোটি ৫ লাখ পশু কোরবানি হয়। ২০১৯ সালে কোরবানি হয় ১ কোটি ৬ লাখ পশু। ২০২০ সালে করোনাকালে কোরবানির সংখ্যা কমে যায়। ওই বছর ৯৪ লাখ ৫০ হাজার পশু কোরবানি হয়। চলতি বছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ১৭ হাজার। আর কোরবানি হয়েছে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু ।

শনিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর হাট এবং অনলাইন মিলিয়ে মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। ফলে অবিক্রীত থেকে গেল ২৮ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৮টি পশু।

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop