৪:২৩ অপরাহ্ন

সোমবার, ২০ মে , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : অক্টোবর ১৩, ২০২১ ৫:৫৬ অপরাহ্ন
সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে পোল্ট্রি ও ডেইরী খামারিদের মাঝে স্বস্তি
পোলট্রি

পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরি ফিড তৈরির অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ সয়াবিন মিলের রপ্তানি ১৪ অক্টোবর থেকে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্তে খামারি, উদ্যোক্তা ও ফিড প্রস্তুতকারকদের মাঝে স্বস্তি নেমে এসেছে।

রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রসঙ্গে গত ১২ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দু’টি পত্রের উল্লেখ করে বলা হয়েছে – “সয়াবিন মিল রপ্তানি অব্যাহত থাকলে, এর প্রভাবে ডেইরী ও পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে যার ফলশ্রæতিতে ডেইরী ও পোল্ট্রি খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরে বিরূপ প্রভাব পড়বে।” মূলত: সে কারনেই ডেইরী ও পোল্ট্রি সেক্টরের স্বার্থ রক্ষার্থে ১৪ অক্টোবর ২০২১ থেকে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। তবে, ১৩ অক্টোবর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত যেসব এলসি/টিটি সম্পন্ন হবে উক্ত পণ্যসমূহ ২০ অক্টোবর ২০২১ তারিখের মধ্যে রপ্তানি করা যাবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করে ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এফআইএবি) এর সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কে আমরা ধন্যবাদ জানাই, দেরিতে হলেও এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য।

এফআইএবি সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহসানুজ্জামান বলেন, সয়াবিন মিল রপ্তানির সিদ্ধান্তে দেশীয় পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরী খাতের অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধ হওয়া ও ভারতে সয়াবিন মিলের সংকট কমে যাওয়ায় সয়াবিন মিলের স্থানীয় মূল্য অবশ্যই কমবে বলে আমি আশা করি।

সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধে আপাত এক ধরনের স্বস্তি নেমে এলেও পোল্ট্রি ও ডেইরী খামারিরা অবশ্য বলছেন, রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তই যথেষ্ঠ নয় বরং সয়াবিন মিলের দাম পূর্বের অবস্থায় আনাও অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে ফিডের দাম কমবে না; ফলে ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবেনা। তাই সয়াবিন মিলের মূল্য মূল্য কমানোর জন্য তৈল উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর চাপ প্রয়োগের আবেদন জানিয়েছেন পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরী খামারিরা।

প্রকাশ : অক্টোবর ৯, ২০২১ ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
খামারিদের মাঝে খাদ্যসহ হাঁস-মুরগি বিতরণ
প্রাণিসম্পদ

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় সিআইজি খামারিদের মাঝে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিনামূল্যে হাঁস-মুরগি বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগলের খাবারও বিতরণ করা হয়।

বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি কর্মসূচির আওতায় মোট ১৮ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত (সিআইজি) খামারিকে ১০টি করে হাঁস, ১০টি করে মুরগি, ২৪০ কেজি গরুর খাবার, ১১৫ কেজি করে হাঁস-মুরগির খাবার, বেলচা, বালতিসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা রাণী ধর এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার বিশ্বাস, ভেটেরিনারি সার্জন সোমা সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১ ৪:২৭ অপরাহ্ন
খাদ্যের দামে দিশেহারা হয়ে খামার ছাড়ছেন চাটমোহরের পোল্ট্রি খামারীরা
পোলট্রি

ছয় মাস পূর্বে বিভিন্ন কোম্পানীর ৫০ কেজি লেয়ার খাদ্যের দাম ছিল ১ হাজার ৬শ টাকা। ছয় মাসের ব্যবধানে এখন ৫০ কেজি লেয়ার খাদ্য বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১শ টাকায়। এতে করে লেয়ার খাদ্যের দাম বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। অন্যদিকে হাঁস, মুরগি ও ডিমের দাম না বাড়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারীদের। এমতবস্থায় দিশেহারা হয়ে খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন খামারীরা।

চাটমোহরের খামারীরা ইতোপূর্বে নিজ জেলাল প্রয়োজন মিটিয়ে উদ্বৃত্ত মুরগি ও ডিম সরবরাহ করেছেন দেশের বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্যের দাম দফায় দফায় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়ছেন সেখানকার খামারীরা।

জানা গেছে, গত দুই দশকে চাটমোহর পৌরসদরসহ চাটমোহরের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার হাঁস, মুরগির খামার গড়ে উঠে। এসব খামারে উৎপাদিত হাঁস, মুরগি ও ডিম ঢাকা, চট্রগ্রাম, চাপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুড়া, টাঙ্গাইল, সাতক্ষীরাসহ দেশের অন্তত ষোলটি জেলায় পাঠানো হতো।

এখন থেকে কয়েক মাস পূর্বেও চাটমোহরে প্রতিদিন দশ লাখ ডিম উৎপাদন হতো। চাটমোহরে উৎপাদিত ডিম দেশের সার্বিক ডিমের চাহিদার অনেকটাই পূরণ করতো। কিন্তু খাদ্যের দাম বাড়ায় অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ায় হাঁস, মুরগি ও ডিম উৎপাদন ক্রমশই হ্রাস পাচ্ছে। আফতাব, নারিশ, সগুনা, প্যরাডাইস, প্যারাগন, আগাতা, এসিআই, সিপি, ফ্রেশ, কোয়ালিটি, ইনডেক্স, নিউহোপসহ প্রায় সকল কোম্পানীই মুরগির খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে।

বিলচলন ইউনিয়নের দোলং গ্রামের একজন খামারী জানান, ৭ টি লেয়ার মুরগির খামার গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এসব খামারে ১৩ হাজার মুরগী পালন করতেন। মুরগির খাদ্যের দাম বাড়ায় বড় তিনটি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। এখন ছোট ৪ টি খামারে সাড়ে ৫ হাজার মুরগি পালন করছেন। ছয় মাস পূর্বে ইনডেক্স কোম্পানীর ৫০ কেজি খাদ্যের দাম ছিল ১ হাজার ৬শ টাকা। এখন সে খাদ্য বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১শ টাকায়। যে তুলনায় খাদ্যের দাম বেড়েছে সে তুলনায় মুরগি ও ডিমের দাম না বাড়ায় ব্যবসার পরিধি কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি। মূলগ্রাম ইউনিয়নের কুবিরদিয়ার গ্রামের জাকির হোসেন ৬ হাজার মুরগি পালন করতেন। এখন তিনি মুরগি পালন করেন না।

এর কারণ হিসেবে জানান, ছয় মাস পূর্বে ৫০ কেজি খাদ্যের দাম ছিল ১ হাজার ৬শ টাকা। এখন সে খাদ্য বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১শ টাকায়। লোকসান হওয়ায় ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। দোলং মহল্লার মুরগি ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম জানান, বর্তমান প্রতি কেজি লেয়ার মুরগি ১৭৫ টাকায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১শ ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিম ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমান পাইকারী বাজারে ১০০ টি ডিম ৭৫০ টাকা থেকে ৭৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাটমোহরে কর্মরত ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ রোকনুজ্জামান জানান, চাটমোহর পোল্ট্রি খাতে দেশের অন্যান্য অনেক এলাকা থেকে এগিয়ে রয়েছে। চাটমোহরে উৎপাদিত উদ্বৃত্ত ডিম বাহিরে পাঠাচ্ছেন আড়তদাররা। তবে গত কয়েক মাসে মুরগির খাদ্যের দাম বাড়ায় এ ব্যবসায় ভাটা পরেছে। খামারীরা জৈব নিরাপত্তার উপর গুরত্ব দিলে রোগ বালাই কম হবে। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতি পোষাতে পারবে তারা বলে জানান এই কর্মরত ভেটেরিনারি সার্জন।

প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১ ১:৩৫ অপরাহ্ন
ব্রয়লারের ওজন বাড়াতে খামারিদের করণীয়
পোলট্রি

দেশে মাংসের চাহিদা পূরণে ব্রয়লারের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি একদিকে যেমন মাংসের চাহিদা পূরণ করছে অন্যদিকে কমাচ্ছে বেকারত্ব।অনেকেই এখন খামার করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। তবে এই মুরগির ওজন যত বেশি হয় তত তার চাহিদা থাকে বেশি। তাই ব্রয়লারের ওজন বাড়াতে খামারিদের জানতে হবে কিছু কৌশল।

ব্রয়লার মুরগির ওজন বাড়ানোর কিছু কৌশল:
খামার পরিষ্কার রাখা ব্রয়লারের ওজন বাড়ানোর প্রথম কৌশল।এতে খামারে রোগের প্রকোপ কমে যাবে এবং মুরগির দৈহিক বৃদ্ধি দ্রুত হবে। মুরগির খামারে বাচ্চা আসার ৪৫ মিনিট পূর্বে চিকগার্ডের ভেতরে প্রবা‌য়োটিক স্প্রে করে দিতে হবে। বাচ্চা ব্রুডারে ছাড়ার ৩০ মিনিট আগে পানির ড্রিকার দিয়ে দিতে হবে।

খামারে ব্রয়লার পালনের জন্য ১ দিনের বাচ্চার বয়স ৩৬ গ্রাম হতে হবে। বাচ্চা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।ব্রয়লার খামারে যাতে সবসময়ই আলো প্রবেশ ও বায়ু চলাচল করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

১৫ দিন বয়সের মধ্যে মুরগি গ্রাডিং শেষ করতে হবে। ১৮ দিন বয়সে গ্রথ আসার জন্য গুরের পানি খাওয়াতে হবে। ২০ দিন অতিবাহিত হলে মুরগি ফ্লাসিং করতে হবে। ২৫ দিন পর হইতে মাদি এবং ছোট মুরগি বিক্রি করতে হবে।ব্রুডিং এ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে এবং দুই ব্যাচের মধ্যে ১৫ দিন বিরতি দিতে হবে। খামারের মুরগিগুলোকে যথাসময়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। যে কোনো ঔষধ ব্যবহারকালে সেই ওষুধের মেয়াদ আছে কিনা তা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।

খামারে ব্রয়লার মুরগির লিটার সবসময় শুকনো রাখতে হবে। খামারের লিটার ভালো হলে মুরগি ভালো থাকবে। এজন্য নিয়মিত মুরগির লিটার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আর প্রয়োজন হলে লিটার পরিবর্তন করে দিতে হবে।

প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১ ৫:৩৬ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম পোল্ট্রি খামারি অ্যাসোসিয়েশন’র আত্মপ্রকাশ
পোলট্রি

পোল্ট্রি খামারিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, এখাতে অন্যান্য অংশীজনের মাঝে সমন্বয়সাধন ও পোল্ট্রি খামারিদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের পোল্ট্রি মালিকদের নিয়ে চট্টগ্রাম পোল্ট্রি খামারি অ্যসোসিয়েশন’র আত্মপ্রকাশ হয়েছে সম্প্রতি।

ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পাচঁলাইশ থানা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাকিয়া খাতুন, ক্যাব পাচলাইশ থানা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর। ক্যাব যুব
গ্রুপের সমন্বয়কারী ও প্রজন্ম চট্টগ্রামের প্রধান নির্বাহী চৌধুরী সজসিমুল হকের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশনেন ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলাম, ক্যাব ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর তাজমুন্নাহার হামিদ, ক্যাব মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ আরিফ আহমেদ, খামারিদের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ হাছান, মোঃ রেজাউল করিম, মোঃ আলাউদ্দীন, মোঃ আলী হাছান প্রমুখ।

পরে উপস্থিত সকলের সাথে মুক্ত আলোচনায় সর্বসম্মতিক্রমে মোহাম্মদ হাছানকে আহবায়ক, মোঃ আলাউদ্দীনকে যুগ্ন আহবায়ক, ফারুখ আহমদকে সদস্য সচিব, মোরশেদা বেগম, মোঃ আলী হাসান, মোঃ লিয়াকত আলী ও মোঃ সফিকুল হাসানকে সদস্য করে ৭ সদস্য বিশিষ্ঠ চট্টগ্রাম পোল্ট্রি খামারি অ্যাসোসিয়েশন এর আহবায়ককমিটি গঠন করা হয়। আহবায়ক কমিটি আগামী ০৩ মাসের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ, নীতিমালাপ্রণয়ন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন।

আগ্রহী খামারিদের এ বিষয়ে আহ্বায়ক কমিটি অথবা ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে যোগযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১ ৯:০৮ পূর্বাহ্ন
বাচ্চা পরিবহণে খামারিদের সতর্কতা
পোলট্রি

ব্রয়লার খামার করে লাভবান হয়েছেন যেমন অনেক খামারী তেমনি মাংসের চাহিদাও পূরণ হয়েছে সবার। তবে এতে লাভ পেতে হলে শুরু থেকেই করতে হবে যত্ন। আর এই যত্নে শুরুটা হতে হবে ব্রয়লার খামার বাচ্চা পরিবহণ থেকে। কারণ ব্রয়লারের বাচ্চা পরিবহণের সময় কোন সমস্যা হলে মুরগির জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

ব্রয়লার খামারে বাচ্চা পরিবহণ করার সময় সতর্কতা:
ব্রয়লারের বাচ্চা পরিবহণ করার সময় এমনভাবে বাচ্চাগুলো পরিবহণ করতে হবে যাতে সূর্যের আলো সরাসরি বাচ্চার শরীরে এসে না পড়ে। এছাড়াও বৃষ্টির পানিতে বাচ্চাগুলো যাতে না ভিজে যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। গরমকালে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা পরিবহণ করতে হলে সকালের দিকে বাচ্চা পরিবহণ করতে হবে। এ সময় কোনভাবেই দুপুর কিংবা প্রচন্ড রোদে বাচ্চা পরিবহণ করা যাবে না। এতে বাচ্চা ক্ষতি হতে পারে। আর শীতের দিনে বাচ্চা দুপুর বা রোদের সময় পরিবহণ করা ভালো।

ব্রয়লার খামারের জন্য বাচ্চা পরিবহণ করার সময় লক্ষ্য করতে হবে পরিবহণ বাক্স জীবাণুমুক্ত আছে কিনা। যদি না থাকে তাহলে বাক্সগুলো ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে তার পর বাচ্চা পরিবহণ করতে হবে। সম্ভব হলে বাচ্চা পরিবহণের যানবাহন জীবাণুনাশক নিয়ে স্প্রে করে দিতে হবে। বাচ্চা পরিবহণের সময় যদি বেশি তাপ কিংবা বেশি ঠাণ্ডা থাকে তাহলে তাপ ও ঠাণ্ডা থেকে বাচ্চাগুলোকে রক্ষা করেই তারপর বাচ্চাগুলো পরিবহণ করতে হবে।

ব্রয়লারের বাচ্চা পরিবহণ করার সময় সকল প্রকার ধকল থেকে বাচ্চাগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এগ্রিভিউ/এসএমএ

প্রকাশ : অগাস্ট ২২, ২০২১ ১১:৫৯ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম পোল্ট্রি খামারিদের সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ
পোলট্রি

নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার নিয়ে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সার্বিক সহযোগিতায় নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদন ও পোল্ট্রি মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষনে চট্টগ্রামে পোল্ট্রি খামারীদের সংগঠন গঠন কল্পে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার (২০ আগস্ট নগরীর বহদ্দারহাটস্থ কাশবন রেস্টুরেন্ট কনফারেন্স হলে প্রজন্ম চট্টগ্রামের প্রধান নির্বাহী ও ক্যাব সংগঠক চৌধুরী জসিমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় পোল্ট্রি খামারীদের পক্ষে মোহাম্মদ হাসান, ফারুখ আহমদ, মোঃ আলী হাসান, মোঃ ফয়সল খান, মোহাম্মদ পারভেজ, মোঃ আবদুর নুর, মোঃ লিয়াকত আলী, মোঃ শাকিব আল হাসান ও ক্যাব যুব গ্রুপেরসদস্য ইফতিহার উদ্দীন রাফি প্রমুখ।

সভায় বিভিন্ন বক্তাগন বলেন দেশের ক্ষুদ্র পোলট্রি খামারিদের সংগঠন না থাকায় প্রতিটি পদে পদে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খামারীরা অধিকার বঞ্চিত, বড় খামারির একদিকে ফিড ও বাচ্চা উৎপাদন করে সিন্ডিকেট করে দাম ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের চক্রান্তে পড়ে অনেক ক্ষুদ্র খামারি এখন নিঃস্ব^ হওয়ার পথে। সরকারি প্রণোদনাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধাগুলি গুটিকয়েক বড় খামারীরা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই ক্ষুদ্র খামারিদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে জোটবদ্ধ হয়ে তাদেরসংগঠিত হবার সময় এসেছে।

তারই আলোকে আগামী ২৮ আগস্ট ২০২১ সকাল ১০ টায় নতুন সংগঠনের আত্ম প্রকাশ, সংগঠনের খসড়া নীতিমালা প্রকাশ উপলক্ষে এক সভা চান্দগাঁও আ/এস্থ ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন সভায় প্রধান অতিথি ও ক্যাব বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। আগ্রহী পোল্ট্রি খামারী ও সংশ্লিষ্ঠ সকলকে যথাসময়ে সভায় যোগদানের জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে

প্রকাশ : অগাস্ট ২২, ২০২১ ২:৪১ অপরাহ্ন
সিংড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে খামারির মৃত্যু
পোলট্রি

নাটোরের সিংড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে আব্দুর রাজ্জাক (৪৫) নামে এক মুরগি খামারির মৃত্যু হয়েছে। নিহত আব্দুর রাজ্জাক ঐ গ্রামের মৃত তমেজ উদ্দিনের ছেলে।

শনিবার সকাল ছয়টায় উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের পিপুলশন দাঁড়ি পাড়া গ্রামে এই দূর্ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে খামারি আব্দুর রাজ্জাক তার মুরগির খামারে ফ্যানের লাইন দিতে যায়। এসময় অসাবধানতাবশত তার হাত খোলা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

সিংড়া থানার ওসি নূর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

প্রকাশ : অগাস্ট ১৮, ২০২১ ১:৩৪ অপরাহ্ন
অধিক লাভে সোনালি মুরগিকে যা খাওয়াবেন
পোলট্রি

অধিক লাভের আশায় এখন অনেকেই খামারে দিকে ঝুঁকছেন। গ্রামের প্রায় প্রতিটি এলাকায় খামাদের দেখা মিলে। পোল্ট্রির পাশাপাশি এখন অধিক লাভের আশায় সোনালি মুরগির খামারের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। সোনালি মুরগি পালনের পাশাপাশি যদি তার যত্ন কিভাবে করতে হয় তা জানা থাকে তাহলে আরো লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে।

সোনালি মুরগির খাদ্য প্রদানে যা রাখবেন:
সোনালি মুরগিকে ব্রয়লার মুরগির মত সব সময় খাবার দেয়া দরকার বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু এটা একটা ভুল ধারণা। মনে রাখা দরকার ব্রয়লার মুরগি খাদ্য রূপান্তরের হার এবং সোনালি মুরগির খাদ্য রূপান্তরের হার এক নয়।

সাধারণত সোনালি মুরগি ক্ষেত্রে প্রতি ১০০০ মুরগিতে ৪০ ব্যাগ হিসেবে সোনালি খাদ্য হিসাব করে ৮০০ গ্রাম গড় ওজন হিসাব করা হয়। কিন্তু সোনালি খাদ্যে কখনো কখনও ২ ব্যাগ বা ৩ ব্যাগ বেশি লাগতে পারে। আবার খুব ভাল হলে ২ ব্যাগ বা ৩ ব্যাগ কম লাগতে পারে।

যদি সোনালি মুরগিকে ব্রয়লার খাদ্য খাওয়ানো হয় তবে ১০০০ মুরগিতে সর্বোচ্চ ৩৪-৩৫ ব্যাগ খাদ্যে ৮০০ গ্রাম গড় ওজন হিসাব করা হয়। এক্ষেত্রেও আগের মতই ২ থেকে ৩ ব্যাগের যোগ বা বিয়োগ ধরে নেওয়া যেতে পারে।

সারাদিনে খাদ্য দেয়ার নিয়ম:
দিনে ৩ বার খাবার দিতে হবে। বিশেষ করে মনে রাখতে হবে যেন সকালে সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টার মধ্যে খাদ্য খাওয়া শেষ হয়ে যায়, দুপুরে যেন সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে খাদ্য শেষ হয় ও রাতে সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা যেন খাদ্য খায়।

প্রয়োজনে মুরগি ক্রপ(খাদ্য থলি) পরীক্ষা করে খাদ্য দিতে হবে। যদি খাদ্য থলি ভর্তি থাকে তবে খাদ্য দেয়া কোন দরকার নাই। কারণ মনে রাখবেন, সোনালি মুরগিকে আপনি যতই খেতে দিবেন তারা ততই খাবে। কিন্তু এতে খাদ্য অপচয় হবে আপনাদের। খেয়াল করে দেখবেন ঘরে নিমপাতা বা যেকোন পাতা ঝুলিয়ে রাখলে তারা সেগুলোও খেয়ে শেষ করে। সেজন্য খাবার দেয়ার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

৩য় সপ্তাহ বয়সে পরে মুরগিকে ২০-২২ গ্রাম/ মুরগি হিসেবে খাদ্য পরবর্তী প্রতি সপ্তাহে ৪-৬ গ্রাম/মুরগি হারে খাদ্য বৃদ্ধি করে চলতে হবে। দিনের মোট খাদ্যের পরিমাণকে তিন ভাগে ভাগ করে ৪০%(সকাল)+২০%(দুপুর)+৪০%(রাত) খাদ্য প্রদান করতে হবে সোনালি মুরগিকে।

প্রকাশ : অগাস্ট ১৪, ২০২১ ১০:৫৮ অপরাহ্ন
লোকসান টানতে ব্যর্থ হয়ে পেশা বদল করছেন পোল্ট্রি খামারিরা
পোলট্রি

কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে টানা লোকসানে ব্যবসা টানতে ব্যর্থ হয়ে ৪০ শতাংশেরও বেশি খামারি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে সস্তায় মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত পোলট্রি খাতটি করোনাকালীন সময়ে গভীর সংকটে পড়েছে। উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে মুরগি বিক্রি করে টিকে থাকতে না পেরে- হাজার হাজার খামারি লোকসান গুণে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ব্রয়লার মুরগীর ৫০ শতাংশ বাড়িতে খাওয়া হয়। বাকি অর্ধেক নানা রকম সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন, বিয়েশাদি বা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিসের অনুষ্ঠান এবং রেস্তোরাঁ ও পর্যটন স্পটে খেয়ে থাকেন ভোক্তারা। তবে লকডাউন এবং স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত কড়াকড়িতে সামাজিক অনুষ্ঠানেও ভাটা পড়েছে, যেকারণে বিপুল চাহিদা সংকট লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।

এদিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর তথ্য বলছে, প্রতি মাসে পোলট্রি সেক্টর থেকে মাংসের যোগান আসতো প্রায় ৯০ হাজার টন। বর্তমানে চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংস ১০৫ টাকা ব্যয়ে উৎপাদন করে ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি করছেন খামারিরা।

বিপিআইসিসির পরিসংখ্যান বলছে, গত দেড় বছরে ৪০-৪৫ শতাংশ মাংসের উৎপাদন কমে গেছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে নিবন্ধিত খামারির সংখ্যা ৯০ হাজার। তবে সারাদেশে এক লাখেরও বেশি হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

বিপিআইসিসি বলছে, লোকসানে ব্যবসা টানতে ব্যর্থ হয়ে ৪০ শতাংশেরও বেশি খামারি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।

সংকটের ব্যাখ্যা করে বিপিআইসিসি’র সভাপতি মশিউর রহমান জানান, “করোনার দেড় বছরে পোল্ট্রি সেক্টর একটি বড়সড় ধাক্কা খেল। এখান থেকে উঠে আসতে বেগ পেতে হবে। হাজার হাজার খামারি তাদের পুঁজি হারিয়ে পথে বসে গেছে। চাহিদা বৃদ্ধি না পেলে আসলে উৎপাদন বৃদ্ধিরও কোন সুযোগ নেই। উৎপাদন না বাড়লে সেক্টর ঘুরে দাড়াতে পারবে না। এর জন্য্ খামারিদের পুঁজির জোগান জরুরি হয়ে পড়েছে।”

খাত সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, করোনার আগে এই খাত ১২-১৫ শতাংশ হারে বাড়ছিল। করোনার দেড় বছরে হয়েছে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। অথচ চার দশকে পোলট্রির বাচ্চা উৎপাদন, খাদ্য উৎপাদন, মেশিনারিজ এবং ঔষধ মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার একটি খাত হিসেবে গড়ে উঠেছে। এটি স্থানীয়ভাবে ৪০ শতাংশের বেশি মাংসের চাহিদার যোগান দিচ্ছিল।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ২৩ বছর ধরে পোলট্রি ব্যবসায় জড়িত। ২০ হাজার ব্রয়লার এবং ৬ হাজার সোনালী জাতের মুরগি ছিল তাঁর খামারে। প্রায় দেড় কোটি টাকা লোকসান দিয়ে ৪ মাস আগে বন্ধ হয়ে যায় খামারটি। পুনরায় এই ব্যবসা শুরু করার নিশ্চয়তা নেই বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের এই সভাপতির।

মহামারিকালে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর মতো চট্টগ্রাম জেলায় অন্তত ২ হাজার ছোট বড় পোলট্রি খামারি পুঁজি হারিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আরো কয়েক হাজার পোল্ট্রি খামার বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক রকিবুর রহমান টুটুল বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৭ হাজার পোলট্রি খামারি রয়েছে। এর মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ২ হাজার খামার। এসব খামারির কোন আয়-রোজগার নেই।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে চট্টগ্রাম, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলায় মাসে ২০ লাখ পিস মুরগি উৎপাদন হতো। বর্তমানে এই সংখ্যা নেমে এসেছে ৮ লাখে। চাহিদা কমে গেছে ৬০ শতাংশ।

এ সংগঠনের মহাসচিব রিটন প্রসাদ চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ পড়ছে প্রায় ১১০ টাকার বেশি। পাইকারিতে অঞ্চল ভেদে কেজিপ্রতি ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে খামারিরা। সোনালী মুরগি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৫৫ টাকায়। অথচ উৎপাদন খরচ এর চেয়ে বেশি।”

চট্টগ্রামের মতন অবস্থা সারাদেশেই তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে গত ৬ মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি খাদ্যের দাম ৬ টাকা বেড়েছে, ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর ফলে বিক্রয় উপযোগী প্রতিটি ব্রয়লার মুরগিতে খরচ বেড়েছে প্রায় ২৫ টাকা।

ক্ষতিগ্রস্ত পোলট্রি ব্যবসায়ীরা জানান, তারা এখন উভয় সংকটে আছেন। পুঁজির অভাবে নতুন করে ব্যবসা শুরু করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

মিরসরাই পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন বলেন, “স্বাভাবিক সময়ে আমার খামারে ১ লাখ পিস ব্রয়লার এবং লেয়ার মুরগি থাকতো। ক্রমাগত লোকসানের কবলে পড়ে ব্যবসার পরিধি কমিয়ে আনতে হয়েছে। এখন খামারে আছে প্রায় ৪০ হাজার মুরগি। এই ব্যবসায় লোকসান দিয়ে কতদিন আর ধরে রাখতে পারবো?”

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, কিছুদিন আগেই ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে, তবে লোকসানের কারণে তাদের দুর্ভোগ কমছে না।

কমেছে ডিম উৎপাদন: শুধু মুরগিই নয়, ডিমের উৎপাদনও কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১,৭৩৬ কোটি পিস ডিম উৎপাদন হয়েছিল। করোনাকালে ডিমের উৎপাদন ৩৫-৪০ শতাংশ কমেছে বলে জানা গেছে। তবে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৯৫-১০৫ টাকায়।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ বলছে, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগি ৮ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. শেখ আজিজুর রহমান জানান, পোলট্রি খাতে মাংস উৎপাদন কমে যাওয়ার ঘটনাটি সত্য, তবে উদ্যোক্তারা যেভাবে কমার দাবি করছেন তেমনটি হয়েছে কিনা- তা এখনও নিশ্চিত নয়।

তিনি বলেন, খামারিরা সাময়িক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন এবং সেকারণে ফার্ম বন্ধ রেখেছেন; তবে তাদের অবকাঠামো ঠিকই আছে, একবার চাহিদা বাড়তে থাকলে আবারো তারা উৎপাদন শুরু করতে পারবেন।

সরকারি কার্যক্রম ও বেসরকারকারি বিনিয়োগ:
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশির দশকে বাংলাদেশে পোলট্রি খাতের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। প্রথমে বেসরকারি উদ্যোগে এগস অ্যান্ড হেনস লিমিটেড ও পরবর্তীতে সরকারি উদ্যোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পোলট্রি উৎপাদন শুরু করে।

১৯৮৩ সালে স্থানীয় এনজিও ব্র্যাক এর রুরাল পোল্ট্রি মডেল দরিদ্র কৃষকদের পোল্ট্রি খামাড় তৈরীতে উৎসাহিত করে। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া, মুরগির বাচ্চা এনে দেয়া, ঋণ দেয়া, সচেতন করা থেকে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশব্যাপী।

এসময় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো প্রণোদনামূলক কার্যক্রম, ঋণ সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং পুঁজি হিসেবে মুরগির বাচ্চা দেওয়ার মাধ্যমে মানুষকে খামার গড়ে তোলার উৎসাহ যোগায়। ফলশ্রুতিতে; সহজে আয়ের উৎস হিসেবে পোলট্রি পালনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন গ্রামীণ নারীরা।

১৯৯০-২০০৭ সাল এ সময়ের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের মোট উৎপাদিত মাংসের ৩৭ শতাংশ যোগান দেয় পোলট্রি খাত। পোল্ট্রি শিল্প কম পুঁজিনির্ভর ও শ্রমঘন হওয়ায় দেশে এ শিল্পটি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ দারিদ্র বিমোচনের অন্যতম মাধ্যমে হিসেবে বিবেচনা করা হয় গবেষণাপত্রে।

সে সময় বয়লার ফার্মের বাৎসারিক মুনাফার পরিমাণ মোট বিনিয়োগের ১৫৪ শতাংশ এবং লেয়ার ফার্মে এর পরিমাণ ছিল ১০৭ শতাংশ। ভালো লাভ পাওয়া যায় বলেই মানুষ ব্যাপকভাবে মুরগির খামার করতে শুরু করে।

খাতটির একটি শিল্পে পরিণত হওয়ার পেছনে সরকারি সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সরকার থেকে বাণিজ্যিক খামার করতে উৎসাহ দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে সরকার জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করে; যার আওতায় প্রশিক্ষিত খামারিদের বিনা বন্ধকীতে ঋণ প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

দেশীয় বাণিজ্যিক খামারের পাশাপাশি ভারত ও থাইল্যান্ড ভিত্তিক বিদেশি কিছু ফার্মও বাংলাদেশে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। বিনিয়োগ আসে পোলট্রি ফিড প্রক্রিয়াকরণ, প্যারেন্ট স্টক, প্রজনন ও বাজারজাতকরণে।

বেসরকারি বিনিয়োগ আসা শুরু হওয়ার পর থেকে প্যারাগন, কাজী, রাফিত, আগা, আফতাব, নারিশ নামে ৬টি বড় ফার্মে নিজস্ব গ্র্যান্ড প্যারেন্ট স্টক থেকে একদিনের মুরগির বাচ্চা উৎপাদন শুরু হয়।

এছাড়া, অনেক কোম্পানি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করে পোলট্রির বিষ্ঠা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে নিজস্ব চাহিদা মেটানো শুরু করে।

হাঁস-মুরগির খাদ্য উৎপাদনকে পোলট্রি শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ হিসেবে ধরা হয়। প্রতিবছর দেশের ফিড মিলগুলোতে ৬৫ লাখ টনের বেশি উৎপাদন হয়; যা স্থানীয় পোলট্রি শিল্পের ৬৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে বলে জানিয়েছে ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন সূত্র।

অন্যদিকে, প্রাণিসম্পদ খাতের ওপর ভর করে বেড়েছে দেশের ভেটেরনারি মেডিসিন শিল্প। এই শিল্পের বাজার এখন তিন হাজার কোটি টাকা। পোলট্রিসহ, গরু, ছাগল, ভেড়া এবং অন্যান্য প্রাণির চিকিৎসায় ওষুধ উৎপাদন করা হয়। তবে এখনও দেশের চাহিদার অন্তত ৩০ শতাংশ ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় বলে জানিয়েছে এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সূত্র:tbsnews

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop