৬:৩৪ অপরাহ্ন

সোমবার, ২০ মে , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২২ ১১:১২ পূর্বাহ্ন
শেখ রাসেলকে হত্যার ঘটনা কারবালার নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছিল- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

শেখ রাসেলকে হত্যার ঘটনা কারবালার নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, পৃথিবীতে যত রাষ্ট্র ক্ষমতার পরিবর্তন, অভ্যুত্থান ও অন্যান্য ঘটনা ঘটেছে কোথাও এত বড় নিষ্ঠুরতা দেখা যায়নি। যেটা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেলকে বর্বরোচিতভাবে হত্যার মাধ্যমে ঘটেছিল।

শ ম রেজাউল করিম এ সময় আরো বলেন, শেখ রাসেল আমাদের প্রেরণার জায়গা। শেখ রাসেল ছিল অমিত সম্ভাবনাময় এক প্রতিভা। বঙ্গবন্ধুর ও তার পরিবারের সবচেয়ে ভালোবাসা ও স্নেহের ছিল শিশু শেখ রাসেল।

মন্ত্রী আরো বলেন, শেখ রাসেলের স্বপ্ন তিমিরেই নস্যাৎ করে দিয়েছিল এদেশের বর্বর, খুনি, কুলাঙ্গাররা। যার নেপথ্যে ছিল জিয়াউর রহমান। যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিরা। ১৫ আগস্টের নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটাতে জিয়াউর রহমান খুনিদের এগিয়ে যেতে বলেছিল। পরে খুনিদের বিভিন্ন দেশে পুনর্বাসিত করেছিল জিয়া। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলের খুনের বিচার করা যাবে না, এ অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিল জিয়াউর রহমান।

এ সময় মন্ত্রী আরো যোগ করেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে না থাকলে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক পূর্ব পাকিস্তানের মতো থাকতো। আজ দেশের উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এসব কিছু শেখ রাসেলের বড় বোন শেখ হাসিনার হাত ধরে সম্ভব হয়েছে।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সম্পৃক্ত শিশু-কিশোররা যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হয়, মাদকাসক্ত না হয়, ভুল পথে না যায় এবং শেখ রাসেলের মতো নিষ্পাপ জীবন গড়ে তুলতে পারে সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতনসহ পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ : এপ্রিল ২০, ২০২২ ৩:২৭ অপরাহ্ন
সরকারের পদক্ষেপ ও প্রান্তিক কৃষকের পরিশ্রমে দেশে খাদ্য সংকট নেই – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও প্রান্তিক কৃষকের পরিশ্রমে দেশে এখন খাদ্য সংকট নেই বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার (২০ এপ্রিল) পিরোজপুরের সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ২০২১-২২ অর্থবছরে ও ২০২২-২৩ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে আউশ ধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর সচিবালয়ের নিজ দপ্তর কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পিরোজপুর সদর এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন সরকার এতো কাজ করেনি, যেটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার করছে। তাঁর সরকার বিদেশ থেকে কৃষি উপকরণ, সার-কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করে অর্ধেকের বেশি ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন কৃষিনির্ভর বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে কৃষককে বাঁচাতে হবে। আর কৃষককে বাঁচাতে হলে, কৃষকের পরিশ্রমের মূল্য দিতে হলে কৃষি উপকরণ ও অন্যান্য সহযোগিতা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কৃষক এখন ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারছে। বিনা জামানতে কৃষি ঋণ গ্রহণ করছে। তাদের বিনামূল্যে বীজ, কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বছর ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষককে সার বিতরণ করা হচ্ছে।

শ ম রেজাউল করিম এ সময় আরো বলেন, বিএনপি সরকারের সময়ে বিদ্যুতের দাবির কারণে কানসাটে ও ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষককে নির্মমভাবে বুলেটবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে কৃষকদের ভেতরে কোথাও অসন্তোষ নেই। তিনি কৃষককে ভালোবাসেন, কৃষিকে ভালোবাসেন। কৃষকের কাছে তিনি বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছেন, কৃষি উপকরণ পৌঁছে দিচ্ছেন। সার-বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি, প্রণোদনা পৌঁছে দিচ্ছেন। এ রকম কৃষকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অতীতে কখনও আসেনি।

মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষককে সবল করতে না পারলে, খাদ্যে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে সে জায়গা থেকে আমরা পেছনে পড়ে যাব। প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার বক্তব্য খাদ্যে কোনভাবেই সংকটের মুখোমুখি হওয়া যাবে না। পরনির্ভরশীল থাকা যাবেনা। সে জন্য এক ইঞ্চি জায়গাও পতিত রাখার সুযোগ নেই। একই জমিতে তিন ফসল উৎপাদনে সরকার কাজ করছে। লবণাক্ত এলাকায় লবণসহিষ্ণু ধান ও অন্যান্য শস্য উৎপাদন করা হচ্ছে। বিদেশী মূল্যবান ফল এখন দেশে উৎপাদন করা হচ্ছে।

কৃষকদের উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী যোগ করেন , কৃষিনির্ভর সমাজ ব্যবস্থায় বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনশক্তি আপনারা। আপনাদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে উৎপাদিত শস্য খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ভূমিকা রাখছে। শুধু ধান, গম, ভুট্টার উপর নির্ভর না করে অন্যান্য যে সব ফসল ফলানো সম্ভব, সে বিষয়েও আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরো যোগ করেন, করোনার প্রাথমিক অবস্থায় অনেক দেশ বলেছিল বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন খাবারের কোন হাহাকার নেই, সংকট নেই। তবে কৃষি উৎপাদন প্রক্রিয়ার দুর্বার গতি রক্ষা করতে না পারলে এ সংকট যে কোন সময় দেখা দিতে পারে।

পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পিরোজপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিপন চন্দ্র ঘোষ, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিকসহ উপজেলায় কর্মরত অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে পিরোজপুর সদর উপজেলার ১৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে আউশ ধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়।

প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২২ ৬:৫৬ অপরাহ্ন
যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মার উত্তরসূরি- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মার উত্তরসূরি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

রবিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানী থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস বাঙালি জাতিসত্তার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সূতিকাগার। যেখান থেকে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনা শুরু হয়। অথচ এখনও বাংলাদেশে একটি মহল আছে যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না। মুজিবনগর দিবস তারা পালন করে না। বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানায় না। তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের উত্তরসূরি। যারা বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন সরকারকে গ্রহণ করে না, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানায় না, মুজিবনগর দিবস পালন করেনা তারা বাংলাদেশ বিশ্বাস করে কিনা সে প্রশ্ন থেকে যায়। তারা পাকিস্তানি চিন্তা-চেতনা ও ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস করে।

বাঙালি জাতির ইতিহাসে মুজিবনগর দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্যের অভ্যুদয় হয়েছিল মুজিবনগর সরকার গঠনের মধ্য থেকে। মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের কথা আসবে। স্বাধীন বাংলা সরকার প্রথমে দেশের অভ্যন্তরে, পরবর্তীতে প্রবাসে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কাজ করে।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন বাংলা সরকারই ছিল আমাদের প্রথম সোপান। এই স্বাধীন বাংলা সরকারকে নস্যাৎ করার জন্য কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে তখন পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। স্বাধীনতার পর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর দেশে ফিরে আসার পর আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশ ছিল অসম্পূর্ণ। বঙ্গবন্ধুহীন বিজয় ছিল আমাদের অসম্পূর্ণ বিজয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা ভেবেছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে হত্যা করতে পারবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু অবিনাশী সত্তা। বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শ, একটি বিশ্বাস।

স্বাধীন বাংলাদেশে বসে রাজনীতি করবেন, স্বাধীন বাংলাদেশের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান করবেন না, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার যারা প্রতিষ্ঠা করেছিল সে নেতৃত্বকে স্মরণ করবেন না, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শপথ গ্রহণের দিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করবেন না। তাহলে আপনারা কি পাকিস্তানের পক্ষে?- এ সময় প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরে এ সময় শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, সারা বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা যখনই পথ হারাবো তখনই আমাদের অস্তিত্বের কাছে, আমাদের শেকড়ের কাছে ফিরে যেতে হবে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন-সার্বভৌম। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছিল বলেই এ বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল। আমাদের সে শেকড়কে সন্ধান করতে হবে, শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খান, সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খালেক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ, নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী ও ফজলুল হক, জেলা পূজা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, স্থানীয় অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ : এপ্রিল ১৩, ২০২২ ৪:৫৬ অপরাহ্ন
কৃষির উৎপাদন এমন পর্যায়ে নিতে হবে যাতে বিদেশ নির্ভর হতে না হয়- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, কৃষির উৎপাদন এমন পর্যায়ে নিতে হবে যাতে বিদেশ নির্ভর হতে না হয়। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক জায়গায় খাদ্যাভাব দেখা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশে কোনভাবেই খাদ্যাভাব হতে দেব না। এ জন্য দেশের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। উৎপাদিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে প্রয়োজনে বিদেশে রপ্তানির বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) পিরোজপুরের নাজিরপুরে ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচি এবং বোরো মৌসুমে উন্নয়ন সহায়তার আওতায় বীজ, রাসায়নিক সার এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর সচিবালয়ের নিজ দপ্তর কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। নাজিরপুর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নাজিরপুর এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কৃষকবান্ধব সরকার। ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের মাঝে সার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ধরনের সিদ্ধান্ত অতীতে বাংলাদেশের কোনো সরকার গ্রহণ করেনি। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন কৃষিনির্ভর বাংলাদেশ বাঁচাতে হলে কৃষককে বাঁচাতে হবে। কৃষককে বাঁচাতে হলে সব কৃষি উপকরণ তার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কৃষিজীবী, কৃষক ও খামারিরা যাতে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সরকার সার আমদানি পূর্বের মতো অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কৃষকদের স্বার্থে যেখানে যে প্রণোদনা দরকার, কৃষি উপকরণ দরকার সরকার সেটা সরবরাহ করবে।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ। সে বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষি অন্যতম প্রধান খাত। কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ ও যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষকের উৎপাদিত সামগ্রী যাতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যায় সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার। নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিগবিজয় হাজরা, পিরোজপুর জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ খান, নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ফেরদৌস রুনা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শেখ আব্দুল লতিফ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান তুহিন, উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২২ ৪:৪০ অপরাহ্ন
জাটকা সংরক্ষণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য

জাটকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে অতিরিক্ত ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সোমবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে সহনশীল আহরণ ও জাটকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক কর্মশালায় বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

কর্মশালায় মন্ত্রী আরো বলেন, “ইলিশ আন্তর্জাতিক পরিসরে জিআই সনদপ্রাপ্ত আমাদের অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ। বিশ্বের সর্বোচ্চ ইলিশ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। শুধু জাটকা সংরক্ষণ করা হলে আরও ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের সুযোগ আমরা দিতে পারবো। এ জন্য জাটকা রক্ষায় আমাদের সবাইকে যত্নশীল হতে হবে”।

মন্ত্রী আরো জানান, “২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন। সরকার গৃহীত ব্যবস্থাপনা কৌশল সঠিকভাবে বাস্তবায়নের ফলে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে জাটকা ও প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণ এবং অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে ইলিশের আকার অনেক সুষম হয়েছে। বাজারে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ প্রায় সব সময়ই পাওয়া যাচ্ছে। অতীতে পাওয়া না গেলেও এখন শীতকালেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বিপুল পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন এমনকি শীত মৌসুমেও ইলিশ প্রাপ্তির সুযোগ আমাদের হয়েছে”।

দেশের মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, “দেশের প্রায় ৬ লক্ষ লোক ইলিশ আহরণ সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রায় ২০-২৫ লক্ষ মৎস্যজীবি ও তাদের পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা ইলিশ আহরণ ও বিপণনের ওপর নির্ভরশীল। দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য যতপ্রকার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হয়, সরকার সেটা করছে। এতে একদিকে মৎস্যজীবীদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে, অপরদিকে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্যও নানাভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার জেলেকে চাহিদা অনুযায়ী নানা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা না হলে জাটকা আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটাও সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রেখেছে।”

কিছু দুষ্টু প্রকৃতির লোক কোন না কোনভাবে জাটকা নিধনে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে উল্লেখ করে মন্ত্রী এসময় বলেন, “জাটকা আহরণে বিরত থাকতে তাদের উদ্বুদ্ধ করা, সামাজিকভাবে তাদের বোঝানো এবং অসহায় ও দরিদ্র জেলেদের যাতে তারা ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’-এ মন্ত্রে আমরা সাধারণ মানুষকে বোঝানো ও উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি”।

শ ম রেজাউল করিম আরো যোগ করেন, “ইলিশের ৬টি অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম ও এর যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চতের বিষয়গুলো সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে সরকার নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। ইলিশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা এবং ইলিশ গবেষণার বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে । জাটকা সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, ইলিশের সহনীয় আহরণসহ অপরাপর কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা হবে”।

বিএআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নিয়ামুল নাসের ও মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহা. আতাউর রহমান খাঁন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসেনসহ মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ : এপ্রিল ৩, ২০২২ ৪:৩৫ অপরাহ্ন
রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমান বিক্রয় কার্যক্রম শুরু
প্রাণিসম্পদ

রমজান মাসে বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

রবিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে রমজান মাসে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি আরো বলেন, “১ রমজান আজ থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার ১০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ এ বিপণন কার্যক্রম চালু থাকবে। প্রাথমিকভাবে সচিবালয় সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি গোল চত্বর, জাপান গার্ডন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, কালশী এবং যাত্রাবাড়ি ভ্রাম্যমাণ বিপণন ব্যবস্থা চালু করা হবে। মাংস, দুধ এবং ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও সাপ্লাই চেইন সচল রেখে রমজান মাসে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখা আমাদের লক্ষ্য। চাহিদা ও দ্রব্যের সরবরাহ বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিসর বৃদ্ধির পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে”।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, “প্রতিটি ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে পাস্তুরিত তরল দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা এবং ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে। ভ্রাম্যমাণ বিপণনে ব্যবহৃত পরিবহনগুলোতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কারণ মানুষকে নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেয়া সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনভাবেই যাতে খাবারে ভেজাল না আসে, খাবার যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর বা জীবাণুযুক্ত না হয় এই বিষয়টিতে খামারিদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। খাবার যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্রি না হয় সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে”।

মন্ত্রী আরো জানান, “গত বছর রমজান মাসে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং ডেইরি ও পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থায় ৩৪ কোটি ৮৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৭ টাকার পণ্য বিক্রয় হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৭ লক্ষ ৩১ হাজার ৩১০ জন ভোক্তা এবং ৮১ হাজার ৩৭৭ জন খামারি সরাসরি উপকৃত হয়েছেন”।

মন্ত্রণালয় থেকে এ ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের সব কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করা হবে বলে এ সময় জানান মন্ত্রী। কম মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রির পদক্ষেপ এর আগে কেউ নেয়নি বলেও জানান মন্ত্রী। রমজান মাসে একজন লোকও যাতে কোনভাবে কষ্ট না পায় সেটা সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে এ সময় অধিক মুনাফা লাভ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান মন্ত্রী।

করোনায় প্রাণিসম্পদ খাতের খামারি ও উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “কোন কোন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভ্যাট-ট্র্যাক্স মওকুফের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে সরকার কোটি কোটি ছাড় দিলেও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জড়িতরা লাভবান হয়েছেন। প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন, পরিবহন, বিপণন সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে আমরা সক্ষম হয়েছি। করোনায় দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার গতি কোনভাবেই যাতে স্থবির না হয়ে পড়ে সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন”।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। এছাড়া বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি মশিউর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলমসহ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প ভ্রাম্যমাণ এ বিক্রয় কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে।

প্রকাশ : মার্চ ৩১, ২০২২ ৫:৪৪ অপরাহ্ন
জাটকা আহরণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

জাটকা আহরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে অনুষ্ঠিত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, “আইন লঙ্ঘনের এখতিয়ার কাউকে দেওয়া হবে না। মাঝেমধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত দরিদ্র মৎস্যজীবীদের ব্যবহার করে নিষিদ্ধ সময়ে তাদের জাটকা আহরণে সম্পৃক্ত করে। জাটকা আহরণের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তি যারা অবৈধ জাল তৈরি ও ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে বরফ কল বন্ধ রাখতে হবে, যাতে দুষ্টু লোকরা জাটকা আহরণ করে সেটা সংরক্ষণ করতে না পারে। বাজারসমূহে মোবাইল কোর্ট অব্যাহত রাখা হবে। যেখানে যে জাটকা নিয়ে আসবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ইলিশ সম্পদ নষ্ট করার সুযোগ কোনভাবেই কোন দুর্বৃত্তকে দেওয়া যাবে না”।

এ বিষয়ে তিনি আরো যোগ করেন, “ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষা শুধু দাপ্তরিক দায়িত্ব নয়, নৈতিক কর্তব্যও বটে। এ সম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বিশ্বের ৮০ ভাগ ইলিশ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে না পারলে আমাদের ইলিশ উৎপাদনের শীর্ষস্থান নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জাটকা সংরক্ষণে সম্মিলিত সহযোগিতা থাকতে হবে। একজন মানবিক ও কর্মতৎপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আমলে আমরা ব্যর্থ হতে চাই না। কোন প্রলোভন বা দুষ্টু লোকের প্ররোচনায় কেউ যেন ভুল পথে না যায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে”।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “জাটকা নিধন বন্ধ করতে না পারলে একসময় ইলিশ আর থাকবে না। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বলতে হবে এই আকৃতির, এই রঙের, এই স্বাদের একটা মাছ ছিল, যে মাছের নাম ইলিশ। আমরা নিশ্চয়ই সেটা হতে দিতে পারি না। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের মূল উদ্দেশ্য কেউ যেন নির্ধারিত আকারের চেয়ে ছোট ইলিশ মাছ আহরণ না করে, বিপণন না করে। আমাদের লক্ষ্য মৎস্যজীবীরাই ইলিশ মাছ ধরুক, মানুষ মাছ খাওয়ার সুযোগ পাক। কিন্তু সেটা যেন ইলিশ মাছ পরিপক্ক অবস্থায় আসার পর হয়”।

তিনি আরো বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অভয়াশ্রম করা, বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ করে দেয়াসহ নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছেন। মা ইলিশ আহরণ ও জাটকা নিধন বন্ধ থাকাকালে মৎস্য আহরণে সম্পৃক্তরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেজন্য তাদের ভিজিএফ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান, ইলিশের সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানের কারণে যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। মৎস্যজীবীদের সহায়তা দেওয়া অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে”।

মন্ত্রী বলেন, “সারা বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ ভাগ আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়। ইলিশের জিআই সনদ বাংলাদেশ পেয়েছে। বিশ্বে ইলিশে বাংলাদেশের যে শীর্ষ অবস্থান এট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে হয়েছে”।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের ভাতে-মাছে বাঙালির ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। এ ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আমাদের মৎস্যসম্পদ সমৃদ্ধ করতে হবে। জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী এবং মৎস্য খাতে যারা বিভিন্নভাবে কাজ করেন তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এক্ষেত্রে অনিবার্য। শুধুমাত্র সরকারি কর্মকর্তাদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্নভাবে জাটকা রক্ষায় সম্পৃক্ত থাকবেন। আমাদের প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিরা সহায়তা করবেন, মৎস্য আহরণে সম্পৃক্তরা সহায়তা করবেন, যারা মৎস্য বিপণনে জড়িত তারা সহায়তা করবেন”।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি ও বাংলাদেশ নৌ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শীলু রায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আউয়াল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ শিকদারসহ মন্ত্রণালয়‌ ও মৎস্য অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ, নৌপুলিশ ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যগণ, মৎস্যজীবী ও জেলে প্রতিনিধি, মৎস্যজীবী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংস্থ পদ্মা নদীতে বর্ণাঢ্য নৌর‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রকাশ : মার্চ ৩০, ২০২২ ৪:০১ অপরাহ্ন
উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইলিশ মানুষের সাধ্যের মধ্যে আনা সরকারের লক্ষ্য- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইলিশ দেশের সব মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার (৩০ মার্চ) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, “মৎস্যজীবী, ইলিশ ব্যবসায়ী, আড়তদার, ভোক্তাসহ সকল শ্রেণির জনগণের মাঝে জাটকা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বছরও ৩১ মার্চ হতে ০৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২২ উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। এবছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’। এবছর দেশের ইলিশ সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২২ এর কাযর্ক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে”।

তিনি আরো বলেন, “বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর পরই বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার যে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তারঅন্যতম হিসেবে তিনি মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ ও বিকশিত করতে চেয়েছিলেন। এ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছিলেন মাছ হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান গুরুত্বপূর্ণ খাত। এজন্য সমুদ্র সীমা আইন প্রণয়ন, বিদেশ থেকে মাছ আহরণে ট্রলার আনাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা তিনি করেছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় দেশের মৎস্য খাত একটি বিকশিত স্থানে পৌঁছেছে”।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হাফছা বেগমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, “জনসাধারণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখা এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইলিশ মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশী আহরিত হয় এদেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। এ কারণে বাংলাদেশের ইলিশ দেশের জি আই পণ্যের মর্যাদা পেয়েছে। দেশের প্রায় ৬ লক্ষ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লক্ষ লোক ইলিশ পরিবহণ, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরী, বরফ উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজে জড়িত। ইলিশের সাথে দেশের বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ত”।

ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করা, জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন, বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের সময় ২২ দিন করা, ইলিশ সম্পৃক্ত নদ-নদী, অববাহিকায় ৬টি অভয়াশ্রম স্থাপন ও নির্ধারিত সময়ে অভয়াশ্রম মাছ আহরণ বন্ধ রাখা, মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে মৎস্যজীবীদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদান ও তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ, জেলে ও মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প বাস্তবায়ন, ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময় নভেম্বর হতে জুন পর্যন্ত ৮ মাস করা, জাটকার দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা, মৎস্যজীবীদের সহায়তা এবং সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে”।

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম প্রতিকূলতা কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল দিয়ে নির্বিচারে জাটকা নিধন উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, “মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল নির্মূলে ২০২২ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ১৭টি জেলায় বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সহায়তায় ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন-২০২২’ পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ৩০ দিনে মোট ৮৮৪ টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৫৪৬ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে”।

তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সরকার জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত ৩ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৯৬ টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ৫৬ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ বিতরণ করা হয়েছে যা বিগত বছর হতে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি। এবছর ১ম ধাপে মার্চ-এপ্রিল মাসের জন্য ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৭০০টি জেলে পরিবারের জন্য ৪০ কেজি হারে মোট ৩১ হাজার ২৫৬ মে.টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে যা বিগত বছরের চেয়ে বেশি”।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “ইলিশের পর্যাপ্ত উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের সবাই যখন ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে, তারপর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইলিশ রপ্তানির চিন্তা-ভাবনা আমাদের রয়েছে। দেশের ইলিশ সম্পদ তথা মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে”।

উল্লেখ্য, দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে ইলিশ তথা মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে অবৈধ জাল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক ও জাটকা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন হয়ে আসছে।

প্রকাশ : মার্চ ২৭, ২০২২ ২:২১ অপরাহ্ন
স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে শুধু উচ্চারণে নয়, মনেপ্রাণে ধারণ করতে হবে – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শুধু উচ্চারণে নয়, মনেপ্রাণে ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (২৬ মার্চ) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাংলাদেশ হাউজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করা হয়।

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাগণ এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, “স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করতে হবে মনেপ্রাণে, শুধু উচ্চারণে নয়। মনেপ্রাণে তাঁকে স্মরণ করতে হবে এভাবে, তিনি কী চেয়েছিলেন, তাঁর মধ্যে কতটা সততা ছিল, তিনি কতটা আত্মপ্রত্যয়ী ছিলেন, কতটা দেশপ্রেমিক ছিলেন, কতটা দূরদর্শী ছিলেন। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তিনি কতটা মেধার ব্যপ্তি ব্যবহার করেছিলেন”।

তিনি আরো যোগ করেন, “মুক্তির সংগ্রামের প্রেক্ষাপট আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। অনেকেই মনে করে মুক্তিযুদ্ধ মানে নয় মাসের একটি যুদ্ধ মাত্র। মনে করে সহজেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। এর জন্য ১৯৪৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে একটি জাতিকে সুসংঘটিত করে তাদের মুক্তির চেতনায়, স্বাধিকার আন্দোলনে ও স্বপ্নের স্বাধীনতা অর্জনে কীভাবে প্রস্তুত করতে হয়েছিল, সে কথা মানুষকে জানাতে হবে। স্বাধীনতা সংগ্রামে কত প্রতিকূলতা গেছে, সে প্রতিকূলতার কথা মানুষকে জানাতে হবে”।

বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল দিক তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কীভাবে একটি জাতিকে স্বাধীকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন, সে ইতিহাস এ সময় তুলে ধরেন মন্ত্রী।

শ ম রেজাউল করিম এ সময় আরো যোগ করেন, “বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য সত্তা। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু পরিপূরক শব্দ। বাংলাদেশকে ভাবতে গেলে লাল-সবুজের পতাকায় আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। বঙ্গবন্ধুকে ভাবলে তাঁর আজন্ম সাধনা লক্ষ্য করে দেখা যায়, তিনি বাংলাদেশ নামক এ ভূখণ্ডে ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে সর্বত্র বিচরণ করছেন, তিনি অমর হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু কীর্তিমান এক অবিনাশী সত্তা। বঙ্গবন্ধু একটি বিশ্বাস, একটি আদর্শ, একটি দর্শন, একটি প্রত্যয়। তিনি অভীষ্টে পৌঁছানোর একটি প্রেরণা। চূড়ান্তভাবে তিনি আমাদের সমস্ত গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার পাথেয়। এমন একজন বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি”।

তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশে ও দেশের বাইরে নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং অন্যান্যদের সহায়তায় ষড়যন্ত্র করছে। দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে”।

অনুষ্ঠানের শেষে স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের স্মরণে, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্মরণে এবং বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ও কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার শান্তি ও নিরাপত্তা কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

প্রকাশ : মার্চ ২৫, ২০২২ ৩:৩৪ অপরাহ্ন
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- শ ম রেজাউল করিম
প্রাণিসম্পদ

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

স্থানীয় সময় গতকাল (২৪ মার্চ) রাতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে প্রবাসী বাঙালিদের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

শোষন বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কিভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছিল তা এ সময় উল্লেখ করেন মন্ত্রী। স্বাধীনতার সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রুরা নিঃশেষ হয়ে যায়নি। তারা এখনো সক্রিয় রয়েছে। কিছু চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হলেও তাদের প্রেতাত্মারা দেশ ও বিদেশে সক্রিয় রয়েছে। তারা চায়না স্বাধীন বাংলাদেশ টিকে থাকুক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন হোক। সে কারণে তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে”।

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাই একমাত্র সাহসী রাষ্ট্রনায়ক যিনি দেশি-বিদেশি প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করেছেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও জেল হত্যায় জড়িতদের বিচার করেছেন। নিজের জীবনে অন্তত ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কোনোভাবেই অপরাধীদের সঙ্গে আপস করেন নি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের শেষ আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পরাজিত শত্রু ও সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত। তাদের যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের এগিয়ে আসতে হবে”।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে এ সময় শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছরে এতো উন্নয়ন বাংলাদেশের অন্য কোন সরকার করতে পারেনি। সমকালীন ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, দেশপ্রেমী ও উন্নয়নের জাদুঘর রাষ্ট্রনায়ক দ্বিতীয় জন নেই। বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে প্রবাসী বাঙালিদের এগিয়ে আসতে হবে”।

আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লন্ডন প্রবাসী বাঙালি সুজন কুমার রায়, লুৎফর রহমান, ইমরানুল ইসলাম প্রমূখ।

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop