১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

সোমবার, ২০ মে , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুলাই ১৭, ২০২২ ৭:৪২ পূর্বাহ্ন
মনোহরদীতে বিষ ঢেলে মাছ নিধন
মৎস্য

নরসিংদীর মনোহরদীতে বিষ ঢেলে পুকুরের মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ছয় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন মৎস্য চাষি মোক্তার হোসেন।

শুক্রবার রাতে কাচিকাটা ইউনিয়নের উত্তর কাচিকাটা গ্রামে পুকুরে বিষ ঢালার এ ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষি মোক্তার হোসেন জানান, বাড়ির পাশে দেড় বিঘা জমির একটি পুকুর লিজ নিয়ে তিনি মাছ চাষ করে আসছেন। পুকুরে আট মাস আগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়েন।

এ বিষয়ে মনোহরদী থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকাশ : জুলাই ১৪, ২০২২ ৮:৫৪ অপরাহ্ন
বিষমুক্ত সবজি চাষ এগিয়ে ব্রহ্মপুত্রের চরে
কৃষি বিভাগ

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদীর বুকে ২০টি চরাঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার পরিবার বিষমুক্ত সবজি চাষ করছে। সেই সবজি দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বিক্রি করে আশানুরূপ আয় করছেন চরের মানুষ। এসব পরিবারের অধিকাংশই ভূমিহীন। চরাঞ্চলের এসব মানুষ বসতভিটার উঠানে স্বল্প পরিসরে লাউ, সিম, বরবটি, করল্লা, মরিচসহ নানা রকমের শাক উৎপাদন করছেন।

চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চর শাখা হাতি এলাকার গৃহবধূ আমিনা বেগম জানান, ‘তিন-চার বছর আগেও আমরা আমাদের বসতভিটার উঠান অব্যবহৃত রাখতাম। একটি বেসরকারি সংস্থার উৎসাহ ও সহযোগিতায় বসতভিটার উঠানকে কাজে লাগানো শুরু করেছি। জৈবসার ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছি। এতে পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারছি।’

‘অনেক সময় উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি বিক্রি করে টাকা রোজগারও করতে পারছি। আমি ৫ শতাংশ বসতভিটার উঠানে সারা বছরই লাউ, মরিচ, করল্লা, লাল শাকসহ বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করছি।

চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস জানান, ‘আপাতত জৈব সার ব্যবহার করে উৎপাদিত সবজি দিয়ে পরিবারগুলোর চাহিদা মিটলেও এর বাণিজ্যিক উৎপাদন সেভাবে শুরু হয়নি। এই কাজে বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি কৃষি বিভাগও কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তবে বসতভিটার উঠান অব্যবহৃত ফেলে না রেখে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করায় চরের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

প্রকাশ : জুলাই ১৩, ২০২২ ৫:২৭ অপরাহ্ন
সিদ্ধিরগঞ্জে বিষ প্রয়োগে ৭’শ মুরগি হত্যা!
পোলট্রি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় একটি খামারে বিষ প্রয়োগ করে ৭০০ মুরগি হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১০ জুলাই) রাত ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের আটি ওয়াবদা কলোনির মুরগির ডিলার মো. সেলিমের খামারে এ ঘটনা ঘটে।

সোমবার (১১ জুলাই) রাতে এ ঘটনায় মুরগির ফার্মে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভুক্তভোগী মো. সেলিম ৫ জনের নামোল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সেলিম একজন পোল্ট্রি মুরগির ডিলার।

দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই মুরগির ব্যবসা করে আসছেন। তার মুরগির ফার্মে সব সময় দুই থেকে তিন হাজার মুরগি থাকে।

প্রতিদিনের মতো রোববার রাতে খামারের মুরগির পরিচর্যা করে বাসায় ঘুমাতে যান তিনি। পরদিন সোমবার সকাল সাতটার সময় ঘুম থেকে উঠে ফার্মে গিয়ে দেখেন প্রায় ৭০০ মুরগি মারা গেছে এবং অন্যান্য মুরগি অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে পড়ে আছে। হঠাৎ এতগুলো মুরগি মারা যাওয়ার কারণে তিনি দ্রুত ফার্মের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ চেক করেন। ভিডিও ফুটেজ চেক করে দেখতে পান রোববার রাত ১১টায় অভিযুক্ত ফরিদের ছেলে রিপন (৩০), শুকুরের ছেলে নাজমুল (১৭) ও ইয়াসিন (১৬) ফার্মে কোন রাসায়নিক কিছু দিয়ে যায়।

পরে অভিযুক্ত ইয়াসিনকে ডেকে এনে আমার ফার্মে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান অভিযুক্ত ইদ্রিস আলীর ছেলে মকবুল (৩৫) ও সোহরাব (৪৫) মুরগির ফার্মে রাসায়নিক (বিষ) দিয়ে আসতে বলেন। অভিযুক্ত মকবুল ও সোহরাবের কথামত তারা ভুক্তভোগীর খামারে রাসায়নিক (বিষ) ঢেলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এদিকে ভুক্তভোগী সেলিম বলেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। অভিযুক্ত সোহরাব তার খামারে দীর্ঘদিন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিছু দিন আগে সোহরাব তার খামারের ম্যানেজারের দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান। তারা আমার ক্ষতি সাধনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পাঁয়তারা করে আসছেন। এ ঘটনায় আমার প্রায় তিন লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোকলেছুর রহমান বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশ : জুলাই ১২, ২০২২ ৬:১৮ অপরাহ্ন
নান্দাইল ফিশারিতে বিষ, পাঁচ লাখ টাকার মাছ নিধন!
মৎস্য

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় চর বেতাগৈর ইউনিয়নের চরশ্রীরামপুর গিয়াস উদ্দিনের ছেলে বাচ্চু মিয়ার ফিশারিতে বিষ প্রয়োগে পাঁচ লাখ টাকার মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা।

সোমবার ভোরে বাচ্চু মিয়া তার ফিশারিতে ভাসমান অবস্থায় অসংখ্য মাছ দেখতে পান। এ ঘটনায় নান্দাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেছেন তিনি।

নান্দাইল মডেল থানায় দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাচ্চু মিয়া তার বাড়ির পূর্বপাশে ৫০ শতাংশ ফিশারি ও ২০ শতাংশ বেগুন ক্ষেত করেছেন। রোববার (১০ জুলাই) দিবাগত রাত ১০টার দিকে ফিশারি ও বেগুন ক্ষেত দেখাশোনা করে বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যান। সোমবার (১১ জুলাই) সকালে গিয়ে বাচ্চু মিয়া দেখেন অজ্ঞানামা কে বা কারা ৫০ শতাংশ জমিতে থাকা মাছে বিষ প্রয়োগ করেছে। এর ফলে ওই ফিশারিতে থাকা প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মাঝ মারা গিয়েছে।

এছাড়া ওই জামিরে ২০ শতাংশ জমিতে রোপন করা বেগুন ফসলও উঠিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে আরো ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী বাচ্চু মিয়া। সোমবার (১১ জুলাই) সকালে তিনি স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে নান্দাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

প্রকাশ : জুন ১৪, ২০২২ ১২:৪৮ অপরাহ্ন
বিষ দিয়ে ১৪ লাখ টাকার মাছ নিধন
মৎস্য

সাতক্ষীরায় শত্রুতার জেরে ৬০ বিঘা জমির মৎস্য ঘেরে বিষ দিয়ে প্রায় ১৪ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন মাছ চাষি আলী হোসেন।

এই ঘটনায় সোমবার (১৩ জুন) সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রবিবার (১২ জুন) গভীর রাতে সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামের শুল্কীর বিলে ওই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দা আলিম, রশিদ, জাহিদ, মোস্তাফিজুরসহ আরও অনেকে বলেন, সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামের শুল্কীর এলাকার ঘের মালিক আলি হোসেনের ৬০ বিঘা জমির মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগের ফলে মাছ মরে গেছে। ঘের মালিক আলী হোসেনের সঙ্গে একই এলাকার আমজাদ হোসেন, ইমান হোসেন, আনারুল ইসলামের সাথে জমি-জায়গা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ কারণে তারা রাতের আঁধারে মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করতে পারে বলে আমাদের ধারণা।

লাবসা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও ঘের মালিক আলী হোসেনের স্ত্রী নাছিমা খাতুন বলেন, আমার ছেলে জুলফিকার আলী আত্মীয়ের বাড়ি থাকার কারণে ঘের পাহারা দেয়ার জন্য একই গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মুক্তাদির হোসেন রাতে ঘেরের ঘরে অবস্থান করেন। রাত আনুমানিক ২টার দিকে মুক্তাদির আমাকে কল করে বলেন , ঘেরের মাছ পুকুরে লাফালাফি করছে।

সংবাদ পেয়েই আমি ও আমার বউমা মুক্তি সুলতানা বাড়ি থেকে ঘেরের দিকে রওনা হই। ঘেরের বেড়িতে পৌঁছালে আমজাদ হোসেন, ইমান হোসেন, আনারুল ইসলামসহ ২/৩ জনকে ঘেরের বেড়ি থেকে দ্রুত নেমে যেতে দেখি। আমার ধারণা, তারাই আমাদের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাতক্ষীরা থানার এএসআই রওশন আলী সরকার বলেন, মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষ প্রয়োগের ফলে কয়েক লাখ টাকার মাছ মারা গেছে। যে বা যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তদন্ত করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সাতক্ষীরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিৎ কুমার বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

প্রকাশ : মার্চ ২৮, ২০২২ ১১:৪১ পূর্বাহ্ন
বিষ ছাড়া শাকসবজির পোকা দমনের টিপস
কৃষি বিভাগ

শাকসবজি ও ফসলে বহু রকমের পোকামাকড় আক্রমণ করে। আবার এক এক সবজিতে এক এক পোকার আক্রমণ দেখা যায়। যেমন বেগুনের ডগা ও ফলছিদ্রকারী পোকা শুধু বেগুনই আক্রমণ করে। আবার একই পোকা একই সাথে অনেক সবজিতে আক্রমণ করে। যেমন জাব পোকা, জ্যাসিড, মাকড়, লেদা পোকা ইত্যাদি। তাই শাক সবজির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে কৌশলী না হলে সেসব শত্রু পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না।

সাধারণত এ দেশের সবজি চাষিরা শাক সবজির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে বিষাক্ত কীটনাশকের উপর বেশি নির্ভর করেন। এখনো এ দেশে বিভিন্ন ফসলের মধ্যে সবজিতে সবথেকে বেশি কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। সবচেয়ে বেশি কীটনাশক দেয়া হয় বেগুন, শিম, বরবটি ইত্যাদি ফসলে। তাতে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ হয় বটে, কিন্তু তার ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ ও মানুষের উপর। যত্রতত্র কীটনাশক ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন পোকামাকড়ও সেসব কীটনাশকের প্রতি ধীরে ধীরে প্রতিরোধী হয়ে ওঠে অন্যদিকে তেমনই চাষি ও সবজি ভোক্তারা কীটনাশকের বিষাক্ততায় আক্রান্ত হয়ে নানারকম অসুখ-বিসুখে ভোগে। এ অবস্থা কাম্য নয়। তাই বিষের হাত থেকে ফসল, পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে বসতবাড়িতে এখন প্রাকৃতিক উপায়ে শাক সব্জির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া উচিত।

প্রকৃতিতেই এসব শত্রু পোকাদের শায়েস্তা করার নিদান লুকিয়ে আছে। আছে বিভিন্ন বন্ধু পোকা ও মাকড়সা, উপকারী রোগজীবাণু। ক্ষেতে কোনও বিষ না দিলে এরা বেঁচে থাকে এবং প্রাকৃতিক নিয়মেই শত্রু পোকাদের মেরে ফেলে। এছাড়া আছে বিভিন্ন কীটবিনাশী গাছপালা। এসব গাছপালা থেকে উদ্ভিদজাত কীটনাশক তৈরি করে আক্রান্ত ক্ষেতে প্রয়োগ করলে তাতে শত্রু পোকা নিয়ন্ত্রণ হয় অথচ সেসব প্রাকৃতিক কীটনাশক বন্ধু পোকাদের কোনও ক্ষতি করে না। বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষার ফলাফলে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিচে শাক সবজির ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পোকামাকড়ের প্রাকৃতিক উপায়ে নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি বর্ণনা করা হল। আশা করি ক্ষেত জরিপ করে পোকামাকড়ের অবস্থা বুঝে এসব পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিনা বিষে সবজির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

সবজির জাব পোকা:
জাব পোকা সবজি ফসলের একটি মহা শত্রু পোকা । শিম, বরবটি, মটরশুটি, মরিচ, টমেটো, ঢেঁড়শ, বেগুন, কুমড়া, কপিসহ প্রায় সব সবজিতেই এ পোকা আক্রমণ করে থাকে । এমনকি লেবু ও পেয়ারা গাছেরও জাব পোকা ক্ষতি করে । জাব পোকারা দলবদ্ধভাবে সাধারণতঃ পাতার নিচের পিঠে থাকে । পোকাগুলো দেখতে খুব ছোট ছোট, রঙ সবুজ থেকে কালচে সবুজ । জাব পোকা যেখানে থাকে সেখানে পিঁপড়াও ঘুরে বেড়ায় । তবে শুধু পাতা নয়, এরা কচি ফল ও ফুলেও আক্রমণ করে। সেখান থেকে রস চুষে খায় । ফলে পাতা, ফুল, ফল বিকৃত হয়ে যায়, বৃদ্ধি থেমে যায় । পূর্ণাঙ্গ ও বাচ্চা দু অবস্থাতেই এরা ক্ষতি করে । এ ছাড়া জাব পোকা সবজির ভাইরাস রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে । বিনা বিষে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি নেয়া যেতে পারে-

শুকনো গোবর গুঁড়ো করে সবজি গাছের জাব পোকা আক্রান্ত অংশে ছিটিয়ে দিতে হবে। একইভাবে কাঠের ছাই ছিটিয়েও উপকার পাওয়া যায় ।

একটি মাটির পাত্রে গো মূত্র রেখে ১৪ থেকে ১৫ দিন পচাতে হবে । পরে তার সাথে ১০ গুণ বেশি পানি মিশিয়ে ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে ।

সমপরিমাণ রসুন ও কাঁচা মরিচ বেটে তা ২০০ গুণ পানির সাথে মিশিয়ে জাব পোকা আক্রান্ত ক্ষেতে ছিটালে ভাল উপকার পাওয়া যায় ।
সেচ দেয়ার সময় সেচের পানির সাথে সেচ নালায় সামান্য পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায় ।

আতা, শরিফা, রসুন, নিম, তামাক ইত্যাদি গাছ গাছড়া থেকে বালাইনাশক তৈরি করে জাব পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা যায় ।এসব গাছের কাঁচা পাতা বেটে রস করে পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করা যায় । শুকনো তামাকপাতা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি ছেঁকে তার সাথে দশগুণ পানি মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করা যায় । ১০০ থেকে ২৫০ গ্রাম রসুনের কোয়া বেটে রস করে তা ১০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করা যায়।

হলদে রঙের আঠা ফাঁদ পেতেও পাখাযুক্ত জাব পোকাদের আকৃষ্ট করা যায়। একটা ছোট স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বয়মের ভেতরে হলুদ রঙ করে সেটা একটি কাঠির মাথায় উপর করে আক্রান্ত ক্ষেতে টাঙ্গিয়ে দেয়া যায়। এর ভেতরে গ্রীজ বা আঠালো পদার্থ লেপে দিলে পাখাওয়ালা জাব পোকারা হলুদ রঙে আকৃষ্ট হয়ে বয়ামের ভেতরে ঢুকে আঠায় আটকে মারা পড়বে । এতে ক্ষেতে জাব পোকার সংখ্যা ও বিস্তার কমে যাবে ।

সবজির জ্যাসিড পোকা:
জ্যাসিড পোকা দেখতে খুব ছোট এবং হালকা সবুজ রঙের। পূর্ণাঙ্গ পোকা প্রায় ২.৫ মিলি মিটার লম্বা। পোকা সাধারণত পাতার নিচে লুকিয়ে থাকে গাছ ধরে ঝাঁকালে জ্যাসিড চারদিকে লাফিয়ে উড়ে যায়। এরা বেশ স্পর্শকাতর। ছোঁয়া লাগলেই দ্রুত অন্যত্র সরে যায়। জ্যাসিড বাংলাদেশে ঢেঁড়স ও বেগুন এর একটি অন্যতম প্রধান ক্ষতিকর পোকা। এ ছাড়া জ্যাসিড আলু, মরিচ, কুমড়াজাতীয় সবজি, টমেটো, তুলা, বরবটি ইত্যাদি ফসলেরও ক্ষতি করে থাকে। এ দেশে প্রায় ১০ প্রকার ফসলে জ্যাসিড ক্ষতি করে। শুষ্ক আবহাওয়ায়, বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ক্ষেতে জ্যাসিডের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। কোনো কোনো ক্ষেতে এ সময়ে জ্যাসিডের ব্যাপক আক্রমণে প্রায় সব বেগুন গাছই নষ্ট হয়ে যায়। বছরের অন্য সময় এদের দেখা গেলেও মূলত বসন্তকালে এদের আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। পর্যায়ক্রমে এসব গাছে উপর্যুপরি বংশবিস্তার করে, ফলে সারা বছরই এদের দেখা যায়। প্রবল বর্ষায় এদের আক্রমণ কমে যায়। একটি প্রজাতির জ্যাসিড বেগুনে ক্ষুদে পাতা রোগের জীবাণু ছাড়ায় বলে জানা গেছে।

পূর্ণাঙ্গ ও অপূর্ণাঙ্গ, দুই অবস্থাতেই জ্যাসিড সবজি গাছে আক্রমণ করে। চারা রোপনের পর পাতায় থাকে ও পাতা থেকে রস চুষে খায়। এর ফলে আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং কচি পাতা কুঁচকে যায়। আক্রমণ বেশি হলে পাতা শুকিয়ে ঝরে পড়ে । পাতা থেকে রস চুষে খাওয়ার সময় জ্যাসিড পাতায় এক রকম বিষাক্ত পদার্থ গাছের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়। এতে আক্রান্ত পাতা প্রথমে নিচের দিকে কুঁকড়ে যায়। পরে পাতার কিনারা হলুদ হয়ে যায় এবং শেষে পাতায় মরিচা রঙ হয়। একটি গাছের সমস্ত পাতা এমনকি আক্রমণ অত্যধিক হলে সম্পূর্ণ ক্ষেত ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে করনীয় হচ্ছে-

বর্ষাকালে চারা রোপণ করতে হবে ।

বিএআরআই-এর কীটতত্ত্ব বিভাগ এক গবেষণা করে দেখেছে যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলিলিটার নিমতেল অথবা নিমবিসিডিন মিশিয়ে তিন বার ক্ষেতে স্প্রে করতে পারলে জ্যাসিড দমনে সুফল পাওয়া যায় । নিম তেল ব্যবহার করলে নিম তেল ও পানির সাথে ১ মিলিলিটার তরল সাবান যেমন ট্রিক্স মেশাতে হবে ।

নিমতেল ছাড়া ১লিটার পানিতে ৫০টি নিম বীজের শাঁস ছেঁচে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে তারপর সে পানি ছেঁকে স্প্রে করলেও উপকার পাওয়া যায়।

প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম ডিটারজেন্ট বা গুড়া সাবান গুলে ছেঁকে সে পানি পাতার নিচের দিকে স্প্রে করেও জ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

চারা অবস্থায় আক্রান্ত গাছে ছাই ছিটানো যেতে পারে । চারা অবস্থায় জ্যাসিড দেখা গেলে মসলিন বা মসৃণ কাপড়ের তৈরি হাতজাল দ্বারা জ্যাসিড ধরে সংখ্যা কমাতে হবে ।

তামাক পাতা ১কেজি পরিমাণ নিয়ে ১৫ লিটার পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এর সাথে সামান্য সাবান যোগ দিতে হবে। ছেঁকে সেই দ্রবণ স্প্রে করতে হবে ।

থ্রিপস:
থ্রিপস সবজির একটি প্রধান ক্ষতিকর পোকা। শিম, বরবটি, টমেটো, বেগুন ইত্যাদি সবজিতে এরা আক্রমণ করে থাকে। এমনকি ধান ফসলেও চারা অবস্থায় থ্রিপস ক্ষতি করে । ধানের থ্রিপস দেখতে কালচে রঙের, সবজির থ্রিপস বাদামি বা কালচে বাদামি। তবে শিমের থ্রিপস আবার কালো। থ্রিপস খুব ছোট, কাল পিঁপড়ার মত, পাখাযুক্ত । পাখাগুলো নারিকেল পাতার মত সূক্ষ্ম পশমে চেরা। পূর্ণবয়স্ক থ্রিপস কচি পাতা ও ফুলের রস চুষে খেয়ে ক্ষতি করে। এতে কচি পাতা কুঁকড়ে যায় এবং আক্রমণ অধিক হলে পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় ও ফুল ঝরে পড়ে। এজন্য ফলন কমে যায়। প্রত্যক্ষ ক্ষতির পাশাপাশি থ্রিপস পরোক্ষ ক্ষতিও করে। যেমন এরা টমেটোর দাগযুক্ত নেতিয়ে পড়া রোগের ভাইরাস ছড়ায়।

বিনা বিষে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি নেয়া যেতে পারে।
রসুন কোয়া ১০০ গ্রাম বেটে আধা লিটার পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভেজাতে হবে। এর সাথে ১০ গ্রাম গুড়া সাবান মেসাতে হবে। এর পর ছাঁকতে হবে। এর সাথে ২০ গুণ অর্থাৎ ১০ লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

সাবান পানি স্প্রে করলেও থ্রিপস পোকা দমন করা যায়। পরিমাণ হল প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৪০ গ্রাম গুড়া সাবান।

তামাক পাতা ১ কেজি পরিমাণ নিয়ে ১৫ লিটার পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এর সাথে সামান্য সাবান যোগ করতে হবে । ছেঁকে সেই দ্রবণ স্প্রে করতে হবে।

গুড়া সাবান ৩০ গ্রাম বা শ্যাম্পু ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ ৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। একটি মাটির পাত্রে গো মূত্র রেখে ১৪-১৫ দিন পচাতে হবে। পরে তার সাথে ১০ গুণ পানি মিশিয়ে ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে।

সবজির মাকড়:
সবজি ফসলে সাধারণত লাল মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। লাল মাকড় একটি বহুভোজী শত্রু। বেগুন, কুমড়া, ঢেড়শসহ প্রায় ১৮৩টি ফসলে এদের আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। মাকড় অত্যন্ত ক্ষুদ্র। ভাল করে লক্ষ্য না করলে চোখে পড়েনা । এদের নিম্ফ বা বাচ্চা দেখতে হলে শক্তিশালী মাগনিফায়িং কাঁচ বা অণুবীক্ষণ যন্ত্র লাগে। দৈর্ঘ্যে একটি মাকড় মাত্র ০.৩৫ মিলিমিটার। রং হালকা বাদামী থেকে লাল। তবে স্ত্রী মাকড় বাদামী লাল অথবা সবুজ ও হলুদ বা গাঢ় বাদামী সবুজ।

পূর্ণবয়স্ক মাকড় ও নিম্ফ বা বাচ্চা উভয়ই সবজির ক্ষতি করে। এরা দলবদ্ধভাবে পাতার তলার পাশে থেকে পাতা থেকে রস চুষে খেতে থাকে। ফলে পাতার নিচের পিঠে লোহার মরিচা পরার মত রং দেখা যায়। মাকড়ের সূক্ষ্ম জাল, গোলাকৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিম এবং মাকড়ও সেখানে দেখা যায়। অধিক রস চুষে খেলে পাতা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এদের বোনা জালে গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয় ও ফলন কমে যায়। সেক্ষেত্রে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা যেতে পারে-

প্রতি ৩ দিন পর পর সবজির জমিতে জরিপ করে মাকড়ের উপস্থিতি নিরুপন করতে হবে। এ সময় মাকড় আক্রান্ত পাতা তুলে পলিব্যাগে নিয়ে তা মাঠের বাইরে এনে ধ্বংস করতে হবে।

রসুন ১০০ গ্রাম পরিমাণ বেটে, পানি ১ লিটার, ১০ গ্রাম সাবান ও ২ চা চামুচ কেরসিন তেল একত্রে মিশিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে।

পাটায় পিষে নেয়া নিম বীজ ৫০০ গ্রাম পরিমাণ ৪০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে এক রাত রেখে দিতে হবে। তারপর তা ছেঁকে এক একর জমিতে স্প্রে করতে হবে। একবার স্প্রে করলে তা ২ সপ্তাহ পর্যন্ত মাকড়ের আক্রমণ মুক্ত থাকতে পারে।

গুড়া সাবান ৩০ গ্রাম বা শ্যাম্পু ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ ৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

সবজি পাতার ম্যাপ পোকা:
শিম, বরবটি, কুমড়ো, টমেটোর ছোট গাছ বা চারা পাতায় অনেক সময় হালকা বা সাদা রঙের আঁকাবাঁকা সুরঙ্গের মত অনেক দাগ দেখা যায়। পাতা সুরঙ্গকারী এক ধরনের মাছির বাচ্চারা এ ধরনের দাগ সৃষ্টি করে থাকে। দাগগুলো দেখতে ম্যাপের মত বলে এ পোকাকে ম্যাপপোকা ও বলে। এসব সজীব দাগ বা আক্রান্ত স্থানে পাতার উপর ও নিচের পর্দার মধ্যে দাগ ফাটালে এ পোকার হলদেটে ম্যাগোট বা কীড়া দেখা যায়। অধিক আক্রমণে পুরো পাতাই শুকিয়ে যায়। এর ফলে চারা গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি আক্রান্ত চারা মারাও যায়। আক্রান্ত গাছে ফলন কম আসে ও ফল হয় ছোট। বিনা বিষে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি নেয়া যেতে পারে-

আক্রান্ত পাতা তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে ।

তামাক পাতা ১ কেজি পরিমাণ নিয়ে ১৫ লিটার পানিতে ১ রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এর সাথে সামান্য সাবান যোগ করতে হবে । ছেঁকে সেই দ্রবন স্প্রে করতে হবে ।

প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলিলিটার নিমতেল মিশিয়ে তিনবার ক্ষেতে স্প্রে করতে পারলে সুফল পাওয়া যায়। নিম তেল ব্যাবহার করলে নিম তেল ও পানির সাথে ১ মিলিলিটার তরল সাবান যেমন ট্রিক্স মেশাতে হবে ।

সূত্রঃ কৃষি বাংলা

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২২ ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন
চাঁদপুরের হাইমচরে বিষ প্রয়োগে শতাধিক ঘুঘু হত্যা
প্রাণ ও প্রকৃতি

চাঁদপুরের হাইমচরে বিষ প্রয়োগ করে শতাধিক ঘুঘু পাখি হত্যা করা হয়েছে। ঘুঘু পাখি সয়াবিনের বীজ খেয়ে ফেলে, তাই জমির মালিক বিষ করে প্রয়োগে পাখিগুলোকে মেরে ফেলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী গ্রামের ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় কৃষক স্বপন দেওয়ানের জমিতে এ ঘটনা ঘটে। একসঙ্গে এতগুলো ঘুঘু পাখির মৃত্যুর দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা হতবাক হয়েছে।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, বিষ প্রয়োগ করে ঘুঘু পাখি হত্যার ঘটনাটি দুঃখজনক। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল থেকে ৩২টি মৃত পাখি উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় শতাধিক পাখির মৃত্যু হয়েছে। ওই খেতে ফুরাডন নামে একটি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিষ প্রয়োগ করে ঘুঘু পাখিসহ যেকোনো পাখি হত্যা করা কেবল মারাত্মক অপরাধই নয়, এটি পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কৃষক স্বপন দেওয়ানকে পাওয়া যায়নি। তবে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২২ ২:২৩ অপরাহ্ন
বিষ ছাড়া শাকসবজির পোকা দমনের টিপস
কৃষি বিভাগ

শাকসবজি ও ফসলে বহু রকমের পোকামাকড় আক্রমণ করে। আবার এক এক সবজিতে এক এক পোকার আক্রমণ দেখা যায়। যেমন বেগুনের ডগা ও ফলছিদ্রকারী পোকা শুধু বেগুনই আক্রমণ করে। আবার একই পোকা একই সাথে অনেক সবজিতে আক্রমণ করে। যেমন জাব পোকা, জ্যাসিড, মাকড়, লেদা পোকা ইত্যাদি। তাই শাক সবজির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে কৌশলী না হলে সেসব শত্রু পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না।

সাধারণত এ দেশের সবজি চাষিরা শাক সবজির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে বিষাক্ত কীটনাশকের উপর বেশি নির্ভর করেন। এখনো এ দেশে বিভিন্ন ফসলের মধ্যে সবজিতে সবথেকে বেশি কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। সবচেয়ে বেশি কীটনাশক দেয়া হয় বেগুন, শিম, বরবটি ইত্যাদি ফসলে। তাতে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ হয় বটে, কিন্তু তার ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ ও মানুষের উপর। যত্রতত্র কীটনাশক ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন পোকামাকড়ও সেসব কীটনাশকের প্রতি ধীরে ধীরে প্রতিরোধী হয়ে ওঠে অন্যদিকে তেমনই চাষি ও সবজি ভোক্তারা কীটনাশকের বিষাক্ততায় আক্রান্ত হয়ে নানারকম অসুখ-বিসুখে ভোগে। এ অবস্থা কাম্য নয়। তাই বিষের হাত থেকে ফসল, পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে বসতবাড়িতে এখন প্রাকৃতিক উপায়ে শাক সব্জির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া উচিত।

প্রকৃতিতেই এসব শত্রু পোকাদের শায়েস্তা করার নিদান লুকিয়ে আছে। আছে বিভিন্ন বন্ধু পোকা ও মাকড়সা, উপকারী রোগজীবাণু। ক্ষেতে কোনও বিষ না দিলে এরা বেঁচে থাকে এবং প্রাকৃতিক নিয়মেই শত্রু পোকাদের মেরে ফেলে। এছাড়া আছে বিভিন্ন কীটবিনাশী গাছপালা। এসব গাছপালা থেকে উদ্ভিদজাত কীটনাশক তৈরি করে আক্রান্ত ক্ষেতে প্রয়োগ করলে তাতে শত্রু পোকা নিয়ন্ত্রণ হয় অথচ সেসব প্রাকৃতিক কীটনাশক বন্ধু পোকাদের কোনও ক্ষতি করে না। বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষার ফলাফলে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিচে শাক সবজির ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পোকামাকড়ের প্রাকৃতিক উপায়ে নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি বর্ণনা করা হল। আশা করি ক্ষেত জরিপ করে পোকামাকড়ের অবস্থা বুঝে এসব পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিনা বিষে সবজির পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

সবজির জাব পোকা:
জাব পোকা সবজি ফসলের একটি মহা শত্রু পোকা । শিম, বরবটি, মটরশুটি, মরিচ, টমেটো, ঢেঁড়শ, বেগুন, কুমড়া, কপিসহ প্রায় সব সবজিতেই এ পোকা আক্রমণ করে থাকে । এমনকি লেবু ও পেয়ারা গাছেরও জাব পোকা ক্ষতি করে । জাব পোকারা দলবদ্ধভাবে সাধারণতঃ পাতার নিচের পিঠে থাকে । পোকাগুলো দেখতে খুব ছোট ছোট, রঙ সবুজ থেকে কালচে সবুজ । জাব পোকা যেখানে থাকে সেখানে পিঁপড়াও ঘুরে বেড়ায় । তবে শুধু পাতা নয়, এরা কচি ফল ও ফুলেও আক্রমণ করে। সেখান থেকে রস চুষে খায় । ফলে পাতা, ফুল, ফল বিকৃত হয়ে যায়, বৃদ্ধি থেমে যায় । পূর্ণাঙ্গ ও বাচ্চা দু অবস্থাতেই এরা ক্ষতি করে । এ ছাড়া জাব পোকা সবজির ভাইরাস রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে । বিনা বিষে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি নেয়া যেতে পারে-

শুকনো গোবর গুঁড়ো করে সবজি গাছের জাব পোকা আক্রান্ত অংশে ছিটিয়ে দিতে হবে। একইভাবে কাঠের ছাই ছিটিয়েও উপকার পাওয়া যায় ।

একটি মাটির পাত্রে গো মূত্র রেখে ১৪ থেকে ১৫ দিন পচাতে হবে । পরে তার সাথে ১০ গুণ বেশি পানি মিশিয়ে ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে ।

সমপরিমাণ রসুন ও কাঁচা মরিচ বেটে তা ২০০ গুণ পানির সাথে মিশিয়ে জাব পোকা আক্রান্ত ক্ষেতে ছিটালে ভাল উপকার পাওয়া যায় ।
সেচ দেয়ার সময় সেচের পানির সাথে সেচ নালায় সামান্য পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায় ।

আতা, শরিফা, রসুন, নিম, তামাক ইত্যাদি গাছ গাছড়া থেকে বালাইনাশক তৈরি করে জাব পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা যায় ।এসব গাছের কাঁচা পাতা বেটে রস করে পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করা যায় । শুকনো তামাকপাতা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি ছেঁকে তার সাথে দশগুণ পানি মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করা যায় । ১০০ থেকে ২৫০ গ্রাম রসুনের কোয়া বেটে রস করে তা ১০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করা যায়।

হলদে রঙের আঠা ফাঁদ পেতেও পাখাযুক্ত জাব পোকাদের আকৃষ্ট করা যায়। একটা ছোট স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বয়মের ভেতরে হলুদ রঙ করে সেটা একটি কাঠির মাথায় উপর করে আক্রান্ত ক্ষেতে টাঙ্গিয়ে দেয়া যায়। এর ভেতরে গ্রীজ বা আঠালো পদার্থ লেপে দিলে পাখাওয়ালা জাব পোকারা হলুদ রঙে আকৃষ্ট হয়ে বয়ামের ভেতরে ঢুকে আঠায় আটকে মারা পড়বে । এতে ক্ষেতে জাব পোকার সংখ্যা ও বিস্তার কমে যাবে ।

সবজির জ্যাসিড পোকা:
জ্যাসিড পোকা দেখতে খুব ছোট এবং হালকা সবুজ রঙের। পূর্ণাঙ্গ পোকা প্রায় ২.৫ মিলি মিটার লম্বা। পোকা সাধারণত পাতার নিচে লুকিয়ে থাকে গাছ ধরে ঝাঁকালে জ্যাসিড চারদিকে লাফিয়ে উড়ে যায়। এরা বেশ স্পর্শকাতর। ছোঁয়া লাগলেই দ্রুত অন্যত্র সরে যায়। জ্যাসিড বাংলাদেশে ঢেঁড়স ও বেগুন এর একটি অন্যতম প্রধান ক্ষতিকর পোকা। এ ছাড়া জ্যাসিড আলু, মরিচ, কুমড়াজাতীয় সবজি, টমেটো, তুলা, বরবটি ইত্যাদি ফসলেরও ক্ষতি করে থাকে। এ দেশে প্রায় ১০ প্রকার ফসলে জ্যাসিড ক্ষতি করে। শুষ্ক আবহাওয়ায়, বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ক্ষেতে জ্যাসিডের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। কোনো কোনো ক্ষেতে এ সময়ে জ্যাসিডের ব্যাপক আক্রমণে প্রায় সব বেগুন গাছই নষ্ট হয়ে যায়। বছরের অন্য সময় এদের দেখা গেলেও মূলত বসন্তকালে এদের আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। পর্যায়ক্রমে এসব গাছে উপর্যুপরি বংশবিস্তার করে, ফলে সারা বছরই এদের দেখা যায়। প্রবল বর্ষায় এদের আক্রমণ কমে যায়। একটি প্রজাতির জ্যাসিড বেগুনে ক্ষুদে পাতা রোগের জীবাণু ছাড়ায় বলে জানা গেছে।

পূর্ণাঙ্গ ও অপূর্ণাঙ্গ, দুই অবস্থাতেই জ্যাসিড সবজি গাছে আক্রমণ করে। চারা রোপনের পর পাতায় থাকে ও পাতা থেকে রস চুষে খায়। এর ফলে আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং কচি পাতা কুঁচকে যায়। আক্রমণ বেশি হলে পাতা শুকিয়ে ঝরে পড়ে । পাতা থেকে রস চুষে খাওয়ার সময় জ্যাসিড পাতায় এক রকম বিষাক্ত পদার্থ গাছের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়। এতে আক্রান্ত পাতা প্রথমে নিচের দিকে কুঁকড়ে যায়। পরে পাতার কিনারা হলুদ হয়ে যায় এবং শেষে পাতায় মরিচা রঙ হয়। একটি গাছের সমস্ত পাতা এমনকি আক্রমণ অত্যধিক হলে সম্পূর্ণ ক্ষেত ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে করনীয় হচ্ছে-

বর্ষাকালে চারা রোপণ করতে হবে ।

বিএআরআই-এর কীটতত্ত্ব বিভাগ এক গবেষণা করে দেখেছে যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলিলিটার নিমতেল অথবা নিমবিসিডিন মিশিয়ে তিন বার ক্ষেতে স্প্রে করতে পারলে জ্যাসিড দমনে সুফল পাওয়া যায় । নিম তেল ব্যবহার করলে নিম তেল ও পানির সাথে ১ মিলিলিটার তরল সাবান যেমন ট্রিক্স মেশাতে হবে ।

নিমতেল ছাড়া ১লিটার পানিতে ৫০টি নিম বীজের শাঁস ছেঁচে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে তারপর সে পানি ছেঁকে স্প্রে করলেও উপকার পাওয়া যায়।

প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম ডিটারজেন্ট বা গুড়া সাবান গুলে ছেঁকে সে পানি পাতার নিচের দিকে স্প্রে করেও জ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

চারা অবস্থায় আক্রান্ত গাছে ছাই ছিটানো যেতে পারে । চারা অবস্থায় জ্যাসিড দেখা গেলে মসলিন বা মসৃণ কাপড়ের তৈরি হাতজাল দ্বারা জ্যাসিড ধরে সংখ্যা কমাতে হবে ।

তামাক পাতা ১কেজি পরিমাণ নিয়ে ১৫ লিটার পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এর সাথে সামান্য সাবান যোগ দিতে হবে। ছেঁকে সেই দ্রবণ স্প্রে করতে হবে ।

থ্রিপস:
থ্রিপস সবজির একটি প্রধান ক্ষতিকর পোকা। শিম, বরবটি, টমেটো, বেগুন ইত্যাদি সবজিতে এরা আক্রমণ করে থাকে। এমনকি ধান ফসলেও চারা অবস্থায় থ্রিপস ক্ষতি করে । ধানের থ্রিপস দেখতে কালচে রঙের, সবজির থ্রিপস বাদামি বা কালচে বাদামি। তবে শিমের থ্রিপস আবার কালো। থ্রিপস খুব ছোট, কাল পিঁপড়ার মত, পাখাযুক্ত । পাখাগুলো নারিকেল পাতার মত সূক্ষ্ম পশমে চেরা। পূর্ণবয়স্ক থ্রিপস কচি পাতা ও ফুলের রস চুষে খেয়ে ক্ষতি করে। এতে কচি পাতা কুঁকড়ে যায় এবং আক্রমণ অধিক হলে পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় ও ফুল ঝরে পড়ে। এজন্য ফলন কমে যায়। প্রত্যক্ষ ক্ষতির পাশাপাশি থ্রিপস পরোক্ষ ক্ষতিও করে। যেমন এরা টমেটোর দাগযুক্ত নেতিয়ে পড়া রোগের ভাইরাস ছড়ায়।

বিনা বিষে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি নেয়া যেতে পারে।
রসুন কোয়া ১০০ গ্রাম বেটে আধা লিটার পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভেজাতে হবে। এর সাথে ১০ গ্রাম গুড়া সাবান মেসাতে হবে। এর পর ছাঁকতে হবে। এর সাথে ২০ গুণ অর্থাৎ ১০ লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

সাবান পানি স্প্রে করলেও থ্রিপস পোকা দমন করা যায়। পরিমাণ হল প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৪০ গ্রাম গুড়া সাবান।

তামাক পাতা ১ কেজি পরিমাণ নিয়ে ১৫ লিটার পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এর সাথে সামান্য সাবান যোগ করতে হবে । ছেঁকে সেই দ্রবণ স্প্রে করতে হবে।

গুড়া সাবান ৩০ গ্রাম বা শ্যাম্পু ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ ৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। একটি মাটির পাত্রে গো মূত্র রেখে ১৪-১৫ দিন পচাতে হবে। পরে তার সাথে ১০ গুণ পানি মিশিয়ে ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে।

সবজির মাকড়:
সবজি ফসলে সাধারণত লাল মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। লাল মাকড় একটি বহুভোজী শত্রু। বেগুন, কুমড়া, ঢেড়শসহ প্রায় ১৮৩টি ফসলে এদের আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। মাকড় অত্যন্ত ক্ষুদ্র। ভাল করে লক্ষ্য না করলে চোখে পড়েনা । এদের নিম্ফ বা বাচ্চা দেখতে হলে শক্তিশালী মাগনিফায়িং কাঁচ বা অণুবীক্ষণ যন্ত্র লাগে। দৈর্ঘ্যে একটি মাকড় মাত্র ০.৩৫ মিলিমিটার। রং হালকা বাদামী থেকে লাল। তবে স্ত্রী মাকড় বাদামী লাল অথবা সবুজ ও হলুদ বা গাঢ় বাদামী সবুজ।

পূর্ণবয়স্ক মাকড় ও নিম্ফ বা বাচ্চা উভয়ই সবজির ক্ষতি করে। এরা দলবদ্ধভাবে পাতার তলার পাশে থেকে পাতা থেকে রস চুষে খেতে থাকে। ফলে পাতার নিচের পিঠে লোহার মরিচা পরার মত রং দেখা যায়। মাকড়ের সূক্ষ্ম জাল, গোলাকৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিম এবং মাকড়ও সেখানে দেখা যায়। অধিক রস চুষে খেলে পাতা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এদের বোনা জালে গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয় ও ফলন কমে যায়। সেক্ষেত্রে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা যেতে পারে-

প্রতি ৩ দিন পর পর সবজির জমিতে জরিপ করে মাকড়ের উপস্থিতি নিরুপন করতে হবে। এ সময় মাকড় আক্রান্ত পাতা তুলে পলিব্যাগে নিয়ে তা মাঠের বাইরে এনে ধ্বংস করতে হবে।

রসুন ১০০ গ্রাম পরিমাণ বেটে, পানি ১ লিটার, ১০ গ্রাম সাবান ও ২ চা চামুচ কেরসিন তেল একত্রে মিশিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে।

পাটায় পিষে নেয়া নিম বীজ ৫০০ গ্রাম পরিমাণ ৪০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে এক রাত রেখে দিতে হবে। তারপর তা ছেঁকে এক একর জমিতে স্প্রে করতে হবে। একবার স্প্রে করলে তা ২ সপ্তাহ পর্যন্ত মাকড়ের আক্রমণ মুক্ত থাকতে পারে।

গুড়া সাবান ৩০ গ্রাম বা শ্যাম্পু ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ ৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

সবজি পাতার ম্যাপ পোকা:
শিম, বরবটি, কুমড়ো, টমেটোর ছোট গাছ বা চারা পাতায় অনেক সময় হালকা বা সাদা রঙের আঁকাবাঁকা সুরঙ্গের মত অনেক দাগ দেখা যায়। পাতা সুরঙ্গকারী এক ধরনের মাছির বাচ্চারা এ ধরনের দাগ সৃষ্টি করে থাকে। দাগগুলো দেখতে ম্যাপের মত বলে এ পোকাকে ম্যাপপোকা ও বলে। এসব সজীব দাগ বা আক্রান্ত স্থানে পাতার উপর ও নিচের পর্দার মধ্যে দাগ ফাটালে এ পোকার হলদেটে ম্যাগোট বা কীড়া দেখা যায়। অধিক আক্রমণে পুরো পাতাই শুকিয়ে যায়। এর ফলে চারা গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি আক্রান্ত চারা মারাও যায়। আক্রান্ত গাছে ফলন কম আসে ও ফল হয় ছোট। বিনা বিষে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি নেয়া যেতে পারে-

আক্রান্ত পাতা তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে ।

তামাক পাতা ১ কেজি পরিমাণ নিয়ে ১৫ লিটার পানিতে ১ রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এর সাথে সামান্য সাবান যোগ করতে হবে । ছেঁকে সেই দ্রবন স্প্রে করতে হবে ।

প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলিলিটার নিমতেল মিশিয়ে তিনবার ক্ষেতে স্প্রে করতে পারলে সুফল পাওয়া যায়। নিম তেল ব্যাবহার করলে নিম তেল ও পানির সাথে ১ মিলিলিটার তরল সাবান যেমন ট্রিক্স মেশাতে হবে ।

সূত্রঃ কৃষি বাংলা

প্রকাশ : নভেম্বর ২৯, ২০২১ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন
বিষ প্রয়োগে দুই লক্ষ টাকার মাছ নিধন
মৎস্য

নওগাঁর রাণীনগরে দুইটি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় দুই লক্ষ টাকার দেশীয় প্রজাতীর মাছ নিধন করা হয়েছে। উপজেলার একডালা ইউনিয়নের স্থল এলাকার বেড়াকোল নামক বিলের মধ্যে পুকুরে শনিবার রাতে কে বা কাহার এই বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করে।

পুকুর মালিক স্থল গ্রামের জাফের আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম বলেন, গ্রামের মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে পুকুর দু’টি তিন বছরের জন্য সাড়ে ৯লক্ষ টাকায় লিজ নিয়ে চাষ করে আসছেন। শনিবার রাতে কে বা কাহার ওই পুকুর দু’টিতে বিষ প্রয়োগ করে। এতে পুকুরে থাকা শৈল, বোয়াল, টেংরা, সিং, মাগুড়সহ নানান ধরনের দেশীয় প্রজাতির প্রায় দুই লক্ষ টাকার মাছ মারা যায়।

রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন আকন্দ বলেন, এঘটনায় এখনো কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকাশ : নভেম্বর ২৬, ২০২১ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরার সময় আটক ১
মৎস্য

বাগেরহাটে শরণখোলায় পূর্ব সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরার সময় বনরক্ষীরা বাবুল হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করেছে। এসময় বিষ দিয়ে ধরা মাছসহ একটি ডিঙ্গি নৌকা জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আটক বাবুল দীর্ঘদিন হাজতবাস করে সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আ. মান্নানের নেতৃত্বে বনরক্ষীরা সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের ভোলা ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির রায়বাঘিনী খালে অভিযান চালায়। এসময় বনরক্ষীরা বিষ দিয়ে খালে মাছ ধরারত অবস্থায় উপজেলার সোনাতলা গ্রামের মতিউর রহমান হাওলাদারের পুত্র বাবুল হাওলাদারকে (৫০) আটক করে। এসময় তার কাছ থেকে একটি ডিঙ্গি নৌকা ও বিষ দিয়ে ধরা বিপুল পরিমাণ মাছ জব্দ করা হয়।

শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা জানান, বাবুলের বিরুদ্ধে সুন্দরবনে হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি বাবুল দীর্ঘ হাজতবাস করে জামিনে বেরিয়ে এসেছেন।

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop