৬:৫১ অপরাহ্ন

বুধবার, ৮ মে , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ১৪, ২০২৩ ৮:০৬ অপরাহ্ন
মাদারীপুরে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফল কৃষকরা!
কৃষি বিভাগ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কৃষকরা জলাবদ্ধ পতিত জমিতে ভাসমান ধাপ পদ্ধতিতে ফসলের চারা উৎপাদন ও চাষাবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। কৃষকরা সফলতা পাওয়ায় দিন দিন এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাসমান পদ্ধতিতে কৃষকরা রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়া শুধু জৈব সার ব্যবহার করে চারা উৎপাদন ও সবজি চাষ করছেন। এপদ্ধতিতে অধিক ফলন ও সবজির বাজারদর ভালো থাকায় অল্প খরচেরই কৃষকরা লাভবান হতে পারছেন। তাই এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ কৃষককের মাঝে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

জানা যায়, জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা এবং পর্যায়ক্রমে শ্যাওলা, দুলালীলতা, টোপাপানা, কুটিপানা, কলমিলতা, জলজ লতা স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই থেকে তিন ফুট পুরু করে ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়। তারপর সামান্য ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি বাঁশ, নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া, তুষ, নৌকা প্রভৃতি প্রয়োজন হয়। প্রায় ১০ দিনের মধ্যেই ধাপ চাষের উপযোগী হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকরা ভাসমান পদ্ধতিতে লাউ, শসা, করলা, মিষ্টিকুমড়াসহ আরো বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। তাদের ভাসমান বেডে সারি সারি ভাবে ঝুলছে সবজি। অনেকে আবার বেডের নিচে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক চাষ করছেন। চাষিদের সফলতায় দিন দিন এই পদ্ধতিতে চাষ বাড়ছে।

রমজানপুর ইউনিয়নের চরপালরদি গ্রামের কৃষক শাহীন রাড়ী বলেন, আমি এই পদ্ধতিতে গত ৫ বছর যাবত বিভিন্ন সবজি চাষ করছি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহায়তা নিয়ে ৩৪ শতাংশ জমিতে ৩০টি বেডে এবং ১৭টি মাদা আকারে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছি। সবজি চাষে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫-৬ হাজার টাকার শসা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, করলা, লাল শাক বিক্রি করছি। ইতোমধ্যে ৯০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি। আশা করছি আরো প্রায় ২ লাক টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবো।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার তানভীর হাসান জানান, আমরা কৃষককের মাঝে প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করছি। ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে কোনো প্রকার রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করা হয়না। ভাসমান ধাপ পদ্ধতিতে সবজি চাষ কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় এলাকার প্রায় ৪০টি পরিবার এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে। এই পদ্ধতিতে সবজির উৎপাদন বেশি হয়। আর সবজির বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

প্রকাশ : জানুয়ারী ৯, ২০২৩ ৯:২৩ পূর্বাহ্ন
শীতকালীন সবজিতে বাম্পার ফলন কেরানীগঞ্জের চাষিদের
কৃষি বিভাগ

ঢাকার কেরানীগঞ্জে শীতকালীন সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। সারি সারি শীতকালীন সবজির ক্ষেতে সবজির বাম্পার ফলনই বলে দেয় কৃষকের মুখে হাসি। মাচায় মাচায় ঝুলছে লাউ, শিম, পটল, শসা ও করলা। কোথাও আবার ওলকপি, বাধাকপি,ফুলকপি, বেগুন, লাল শাকসহ নানা রকমের নতুন নতুন শীতের সবজি ক্ষেত।

হযরতপুর ইউনিয়নের কৃষক আমান উল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে ২৯ বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। তিনি এবার গাঁজর,ওলকপি, ফুলকপি,বাঁধাকপি, লাউ, টমেটো ও কাচামরিচের চাষ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। গতবছর তিনি সবজি উৎপাদন করে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করেন। এ আয় দিয়েই তার সারা বছর সংসার খরচ হয়ে যায়। এ মৌসুমে তার সবজি উৎপাদন আরো বেশি হবে বলে আশা করছেন।

তবে এ বছর বীজের দাম বেশী হওয়ায় ও আন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভ কম হবে বলে ধারনা করছেন। তার উৎপাদিত সবজি জমিতেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারী সবজি ব্যবসায়ীরা ক্ষেতে এসে উৎপাদিত সবজি দেখে দামদর করে এখান থেকেই নিয়ে যাচ্ছেন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিদুল আমীন জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে কেরানীগঞ্জে এবার শীতকালীন সবজি চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশা করছি কৃষকরা এ মৌসুমে শীতকালীন সবজি চাষ করে ভালো লাভবান হবেন। শীতকালীন সবজি চাষ সফল করার লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং কোন ধরনের সবজিতে কি সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে লাভবান হবে সে বিষয় সবসময় সঠিক পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও আমারা কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এ জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষি কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা কাজ করে যাচ্ছেন।

প্রকাশ : জানুয়ারী ৩, ২০২৩ ৩:৪৩ অপরাহ্ন
বিষমুক্ত সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন ভোলার কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

ভোলায় এবার প্রথমবারের মতো বিষমুক্ত সবজি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষকরা। রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না থাকায় কম খরচে বেশি ফসল পাচ্ছেন তারা। বিষমুক্ত সবজির ভালো চাহিদা থাকায় বেশি দামও পাওয়া যাচ্ছে।

জানা যায়, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো ১০০ একর জমিতে ৫ শতাধিক কৃষক পরিবেশবান্ধব নিরাপদ সবজি উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় বিষমুক্ত ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, করলা, টমেটো, বেগুনসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। বর্তমানে কৃষকরা ক্ষেতের ফলন কেটে বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন।

কৃষক মো. ইউসুফ ও বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের এ সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে চাহিদা অনেক বেশি। বাজারে অন্য সবজির চেয়ে এর দামও ভালো পেয়ে থাকি। এতে আমরা অনেক লাভবান। এ ছাড়াও এ সবজি কিনতে পাইকাররা সরাসরি ক্ষেতে চলে আসেন। ভালো দাম দিয়ে কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিকাশ দাস জানান, তিনি প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চর মাদ্রাজের সব এলাকার মাঠ পরিদর্শন করেন। এ ছাড়াও কৃষককে ভালো ফলনের জন্য সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, তারা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চর মাদ্রাজ ইউনিয়নকে আইপিএম মডেল ইউনিয়ন করার জন্য ৫ শতাধিক কৃষককে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছেন। ফলে কৃষকরা বিষমুক্ত সবজি চাষ করেছেন।

প্রকাশ : জানুয়ারী ২, ২০২৩ ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
সিরাজগঞ্জে বাড়ির আঙিনায় বাড়ছে সবজি চাষ
কৃষি বিভাগ

সিরাজগঞ্জে বাড়ির আঙিনায় সবজি বাগান করে সাবলম্বী হচ্ছেন ১ হাজার ১৫৮ জন নারী-পুরুষ। বাড়ির আঙিনায় সরকারি প্রকল্পের আওতায় এসব পতিত জমিতে মাটি ফেলে সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা।

এসব বাগান স্বামীর পাশাপাশি শখের বসে নিয়মিত দেখাশোনা করেন স্ত্রী-সন্তানরা। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদেরও সবজি জোগান দিয়ে থাকেন। প্রায় ২০ প্রকারের সবজি চাষ করছেন এসব উদ্যোগী কৃষক।

এ বছর কামারখন্দ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় অনাবাদি পতিত জমি ও বসত বাড়ির আঙিনায় ৫৪টি প্রদর্শনী স্থাপন করেছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রকল্প। গত ২৫ ডিসেম্বর দিনভর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী এসব পরিদর্শন করেন।

জেলার কামারখন্দ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাহসীন তাবাসসুম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহযোগিতা করছি বাড়ির উঠানে বিষমুক্ত সবজি চাষ করতে।’

জানা যায়, কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট মুগবেলাই গ্রামের সোনাউল্লাহ সেখের ছেলে আসাদুল্লাহ বাড়ির আঙিনায় বিষমুক্ত সবজি বাগান গড়ে তুলেছেন। সবজির পাশাপাশি আছে বিভিন্ন ফল ও মসলা জাতীয় ফসল। সবজির মধ্যে আছে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমোটো, পেঁপে, লালশাক, পুইশাক, বেগুন, পালংশাক, বরবটি, ঢেঁড়শ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে পুরো জেলায় এ বছর ১ হাজার ১৫৮ জনের বাড়ির আঙিনায় সবজি বাগান করে দেওয়া হবে। যা গত বছর ছিল মাত্র ৩৩৬ জনের বাড়ির আঙিনায়।

এতে বাঁশ, খুঁটি সবই বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে বিভিন্ন সবজির বীজ, সার দেওয়া হয়। নিয়মিত কৃষি অফিসার এবং উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা তদারকি করে থাকেন।

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২১, ২০২২ ৯:৪০ পূর্বাহ্ন
শীতকালীন সবজি চাষে লাভের মুখ দেখছেন টাঙ্গাইলের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

টাঙ্গাইলে শীতকালীন সবজির ব্যাপক ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির কোনো ক্ষতি হয়নি। বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজারদর ভালো থাকায় লাভবান কৃষক। আধুনিক পদ্ধতিতে একই জমিতে একাধিক ও বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে কৃষক অধিক লাভবান হচ্ছেন। আর উৎপাদিত সবজির বাজারদর ভালো পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে সবজি চাষ।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের লোকেরপাড়া ইউনিয়নের পাঁচটিকড়ি, বীরসিংহ, বকশিয়া, আতাইলশিমুলসহ প্রায় গ্রামেই চাষ হচ্ছে শীতকালীন সবজি। কৃষকরা একই জমিতে টমেটো, পাতা কপি, ধনিয়া পাতার পাশাপাশি চারা বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন।

কৃষি অফিস সূত্র মতে, এবছর , টাঙ্গাইলে ১২ উপজেলায় ১০ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ঘাটাইল উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর সবজির দাম বেশি। ভালো দাম পাওয়ায় সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।

পাঁচটিকড়ি গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, এবছর আমি ২৮ শতাংশ জমিতে ফুলকপির পাশাপাশি মরিচ ও টমেটোর চারা রোপন করেছি। সবজির পাশাপাশি লাখ টাকার ফুলকপি ও টমেটো, মরিচ এবং ফুলকপির চারা বিক্রি করেছি।

তিনি আরো বলেন, এবছর জমিতে সবজির ব্যাপক ফলন হয়েছে। পাশাপাশি সবজির বাজারদরও ভালো। ইতোমধ্যে চারা ও সবজি বিক্রি করে লাখ টাকার মতো আয় হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ করবো।

ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, আমদের উপ-সহকারিরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন জানান, শীতকালীন সবজির বাজার মূল্য ভালো। চাষিরা বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। ব্যাপক ফলনও পেয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি সবজি উৎপাদন হবে। বাজারদর ভালো থাকায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ফলে দিন দিন শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা।

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৯, ২০২২ ৯:২৯ পূর্বাহ্ন
বছরে প্রায় ৭ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেন কৃষক রুবেল
এগ্রিবিজনেস

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ কৃষক রুবেল। ফুলকপি ছাড়াও শীতকালীন বিভিন্ন সবজিরও বাম্পার ফলন হয়েছে। তার সফলতা দেখে অনেকেই বিভিন্ন সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অনেক কৃষকই তার পরামর্শ নিয়ে ক্ষেতে-খামারে সবজির আবাদ করেছেন। রুবেল আহমেদ শায়েস্তাগঞ্জের বাগুনীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। তার বাবাও কৃষক ছিলেন। বাবার কাছ থেকেই কৃষি কাজে হাতেখড়ি রুবেলের। তিনি প্রতি বছর ৫-৭ লাখ টাকার বিভিন্ন সবজি বিক্রি করেন।

কৃষক রুবেল আহমেদ জানান, ৫০ শতাংশ জমিতে তিনি ৬ হাজার ফুলকপি চারা রোপণ করেন। আবহাওয়া ভালো হওয়ায় প্রতিটি গাছেই ভালো ফলন এসেছে। একেকটি ফুলকপি এক থেকে দেড় কেজি হয়ে থাকে। তিনি জানান, ফুলকপি চাষে তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এরইমধ্যে ৭০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। আশা করছেন, বাকি ফুলকপি বিক্রি করে আরও ১ লাখ টাকা পাবেন।

এ ছাড়াও তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে টমেটো, বেগুন, শিমসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এসব ফসলের পরিচর্যায় নিয়মিত ৪-৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন তিনি।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর জানান, ‘রুবেল আহমেদ এখন অনেকেরই অনুপ্রেরণা। তার সফলতা দেখে অনেকেই বিভিন্ন সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ বছর রবি মৌসুমে উপজেলায় ৭৭৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজি চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১৫০ হেক্টর বেশি।’

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:০৭ অপরাহ্ন
বিষমুক্ত সবজি চাষ করছেন গদখালীর ৫০০ কৃষক
কৃষি বিভাগ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের ৫০০ কৃষক বিষমুক্ত সবজি নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করছেন। এতে দারুণ সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। তাদের চাষাবাদ ঘিরে গদখালীকে বিষমুক্ত সবজি চাষের ‘মডেল’ বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা। নিজের বাঁধাকপি ক্ষেতে সেচের পানি যাতে ঠিকঠাক যায় সেদিকে নজর দিয়ে নালা কাটছিলেন মনিরুল ইসলাম। অপরপাশে তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম ক্ষেতের মাটি আলগা আর ঘাস নিংড়ে দিচ্ছিলেন। এ দৃশ্য গদখালী ইউনিয়নের বারবাকপুর গ্রামের ফসলি মাঠের। মনিরুল-মর্জিনা দম্পতি ১২ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি, ১২ শতাংশ জমিতে পটল চাষ করেছেন। এই সবজি ক্ষেতের বিশেষত্ব হলো এখানে রাসায়নিক সার ও রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে না। সম্পূর্ণ জৈবসার ও জৈব বালাইনাশক এবং ক্ষতিকর পোকা দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে হলুদ ফাঁদ পদ্ধতি।

ঝিকরগাছা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ‌‘পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের’ আওতায় সারা দেশের ২০ ইউনিয়নে কাজ চলছে। এর মধ্যে গদখালী ইউনিয়নও রয়েছে। গদখালী ইউনিয়নে ২০টি গ্রুপের কাজ চলছে। প্রতি গ্রুপে ২৫ জন কৃষক রয়েছেন। সবমিলে কৃষকের সংখ্যা ৫০০ জন।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, হলুদ ফাঁদ বা সেক্স ফেরোমন পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকের পেস্টিসাইডের খরচ বেঁচে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমছে। মাটির গুণাগুণ ভালো থাকছে, উৎপাদিত হচ্ছে বিষমুক্ত সবজি।

বারবাকপুর গ্রামের মাঠে বেগুন ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে পলি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখা গেছে কৃষকদের। পলি মালচিং পদ্ধতি—লম্বা একটা পলিথিনের মাঝে গর্ত করে তার ভেতরে সবজি ইত্যাদি রোপণ করা। এর ফলে জমিতে অতিরিক্ত সেচ লাগে না, গাছ প্রয়োজনীয় রস মাটি থেকে সংগ্রহ করে। এতে আগাছা তেমন একটা হয় না।

বারবারপুর এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘পলি মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো ও বেগুন চাষ করা হচ্ছে। কৃষিতে আধুনিকায়নের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে এসব ব্লকে। বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় এসব মাঠে ৯ গ্রুপে ২২৫ কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসল প্রদর্শনী করা হয়েছে। রবি মৌসুমে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, বেগুন, লাউ, টমেটো, করলা, ব্রকলি ইত্যাদি ফসল কীভাবে নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ করা যায়, তা এখানে হাতে-কলমে দেখানো হয়েছে।’

এসব ফসল সম্পূর্ণ নিরাপদ, কেননা এখানে কোনও রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘জৈবসার বিশেষ করে কেঁচো কম্পোস্ট আবাদের জন্য খুবই উপকারী। এই ব্লকে কৃষকরা চার হাজার ৪০০ রিংয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১৮৫ মেট্রিক টন কেঁচো সার তৈরি করছেন। এখানকার প্রায় প্রতি বাড়িতে নারীরা কেঁচো সার তৈরি করেন এবং তারা সেগুলো ক্ষেতে ব্যবহার করেন।’

বিভিন্ন জৈবসার ও বালাইনাশক তৈরির পদ্ধতি কৃষকদের শেখানো হয়েছে জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রামের গাছগাছালি থেকে ছত্রাক ও বালাইনাশক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। যেমন দুই কেজি নিমের পাতা বেটে এক লিটার পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর চার লিটার পানি মিশিয়ে তা ছাঁকতে হবে। এরপর সেটি আগুনে জ্বালিতে এক লিটার পরিমাণ করে ফেলতে হবে। এই এক লিটার নিমের রসের সঙ্গে ৯ লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করলে শোষক পোকা, ছিদ্রকারী পোকা সহজেই দমন করা সম্ভব। তেমনি, ২০ মি.লি পেঁয়াজের রসে দুই লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করলে গাছের যেকোনও পচারোগ দমন হয়ে যাবে। এমন করে প্রায় ১৭-১৮টি পদ্ধতিতে পোকা ও ছত্রাক দমন সম্ভব।’

গদখালীকে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মডেল বানাচ্ছি জানিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো—নিরাপদ উপায়ে বা জৈবিক উপায়ে ফসল উৎপাদন। দেশে বর্তমানে প্রধান আলোচিত বিষয় হলো—ফুড সিকিউরিটি ও ফুড সেফটি। ইতোমধ্যে আমরা ফুড সিকিউরিটি অর্জন করেছি, এখন ফুড সেফটির বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছি।’

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১০, ২০২২ ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
হাসপাতালের পতিত জমিতে সবজি চাষ
কৃষি বিভাগ

্গো্পালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পাঁচ একর পতিত জমিতে সবজি, ফল ও ফুলের আবাদ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি ও ফল উৎপাদন করে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা হবে।
হাসপাতালের সামনের ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফুল ও পরিবেশবান্ধব ঔষধি গাছের চারা রোপণ করেছে।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে মোট ১৫ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে স্থাপনা ও রাস্তা প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে। পতিত ছিল পাঁচ একর। এ জমির আগাছা পরিস্কার করা হয়েছে। এখানে কলাবাগান, লাউ, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, শিম ও সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এখন কপিসহ শীতের সবজির আবাদ চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আমার ক্যাম্পাস সবজি, ফল ও ফুলে সুশোভিত হয়ে উঠবে।

ডা. নাহিদ বলেন, ‘সবজি ও ফল উৎপাদনে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করব না। জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহূত হবে। মানবদেহের জন্য নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে আমরা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। আমাদের দেখাদেখি আরও অনেকে এমন চাষাবাদে উৎসাহী হবেন।’
কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, ‘বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালের উদ্যোগটি চমৎকার। এটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। চক্ষু হাসপাতাল দেখিয়ে পতিত জমিতে এভাবে চাষাবাদ করতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে উদ্বুদ্ধ করব।’

হাসপাতালসংলগ্ন ঘোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা চৌধুরী আবেদ হোসেন বলেন, ‘তাঁরা সফল হলে আমরাও পতিত জমিতে সবজি ও ফল উৎপাদন করব।’
বদর উদ্দিন অহমেদ বলেন, হাসপাতালের পরিচালকসহ সবাই শ্রম দিচ্ছেন। পরিচর্যা করছেন। হাসপাতাল-ক্যাম্পাসজুড়ে কৃষিকাজের উৎসব সৃষ্টি হয়েছে।

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ৫:৫৯ অপরাহ্ন
শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত ঝালকাঠির চাষিরা
কৃষি বিভাগ

ঝালকাঠিতে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকেরা জমিতে চারা পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার করা ও পানি দেয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। ভালো দাম পেতে আগাম শাক-সবজির চাষে ঝুকছে কৃষকরা। ঝালকাঠিসহ পাশের জেলাগুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাচ্ছেন এ জেলার কৃষকেরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষি কাজে তৎপরতার সাথে অংশগ্রহণ করছেন। ঝালকাঠি জেলার ৪ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এখনও পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন শাক-সবজির চারা।

জানা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিমগাছ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লালশাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। তাই মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল অবধি মাঠে থেকে চারার গোড়ায় পানি ঢেলে সবাই বাড়ি ফিরছেন। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন নিড়ানি। কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। কেউ আবার নেতিয়ে পড়া চারার স্থলে সতেজ চারা প্রতিস্থাপন করছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। বেড়েই চলছে কৃষকদের কাজের চাপ।

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ৩৬ গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে প্রতিবছরই শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়। পুরুষের পাশাপাশি এ সবজি চাষে বিপ্লবে অবদান রেখেছেন নারীরা। এর মধ্যে সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে ১২ মাসই সবজির চাষ হয়।

এখানে সম্মিলিতভাবে নারী-পুরুষ মাঠে চাষবাস করেন। পুরুষরা তাদের সঙ্গে সহায়তা করেন এবং বাজারজাতের কাজ করেন। এসব এলাকার পাঁচ হাজার পরিবার এখন সবজি চাষ করে তাদের জীবিকা চালায়। কৃষিবিভাগ এই সবজি চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সদর উপজেলায় রবি মৌসুমে তিন হাজার একশ হেক্টর জমিতে এবং গ্রীষ্মকালীন সময় এক হাজার দুইশ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়ে থাকে। রবি মৌসুমে ৪৩ হাজার চারশ মেট্রিক টন এবং গ্রীষ্মকালীন সময় ১৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয় হয়। যা দিয়ে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, গ্রামগুলোর উৎপাদিত শাক-সবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে ঢাকা ও বরিশালে চালান হচ্ছে। পদ্মা সেতুর সুবাদে এখন গ্রাম ঘুরে ঘুরে পাইকারেরা ক্ষেত থেকে সবজি সংগ্রহ করে চালান করেন বড় বাজারে। অনেক সময় পরিমাণে অল্প হলেও হাটে সবজি বিক্রি করতে নিয়ে যান নারীরাই।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, এবার শীতকালীন শাকসবজিসহ সব রকমের ফসলের ভালো ফলন হচ্ছে। প্রান্তিক চাষিদের মাঝে শীতের শাকসবজির মানসম্পন্ন বীজ এবং সার দেওয়া হয়েছে। আশা করি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ এবং উৎপাদন হবে। তিনি আরো বলেন, গ্রামগুলোতে কৃষক-কৃষাণিদের প্রণোদনা ও পরামর্শ দেওয়াসহ নানাভাবে কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করে আসছে। কৃষিক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা আরো মজবুত করছে।

প্রকাশ : নভেম্বর ২১, ২০২২ ৬:৩৮ অপরাহ্ন
১৫ লক্ষাধিক টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনে চাষিরা
কৃষি বিভাগ

প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেই বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলার কৃষি যোদ্ধাগণ এবারো সবজির উৎপাদন বিশেষ অবদান রাখছে। দেশে উৎপাদিত প্রায় ২ কোটি টন শীত ও গ্রীস্মকালীন সবজির প্রায় ২০ লাখ টনই আসছে দক্ষিণাঞ্চল থেকে। গত মাসের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ ভরকরে নজিরবিহীন প্রবল বর্ষণের পরেও এবার দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৭০ হাজার হেক্টরে ১৫ লাখ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষে মাঠে মাঠে কাজ করছেন দক্ষিণাঞ্চরের কৃষিযোদ্ধাগণ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল লক্ষ্য অর্জনে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। চলতি মাসে যদি বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয়, তবে সারা দেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলেও সবজি উৎপাদন লক্ষ্য অর্জন নিয়ে কোনো সংশয় নেই বলে মনে করছেন ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। গত দেড় দশকে দক্ষিণাঞ্চলে সবজির আবাদ ও উৎপাদন বেড়েছে তিনগুনেরও বেশি।

কৃষিবীদদের মতে, ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারি’ উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও উন্নত মানের সবজি বীজসহ আবাদ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছে পৌঁছলে উৎপাদন প্রায় দ্বিগুনে পৌঁছান সম্ভব হবে। এমনকি খোলা মাঠে ও বাড়ির আঙিনার পাশাপাশি সাম্প্রতিককালে পতিত জমিতেও সবজির আবাদ বাড়ছে। আর দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের অনেক এলাকায় আবাদকৃত সবজির বীজ ও চারার যোগান হচ্ছে বরিশাল ও পিরোজপুরের ‘ভাসমান বেড’ থেকে। যুগের পর যুগ ধরে বরিশালের বানরীপাড়া, উজিরপুর এবং পিরোজপুরের নাজিরপুর ও সদর উপজেলার কিছু অংশে কচুরিপানার ঢিপ তৈরি করে তার ওপর শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চারা তৈরি হচ্ছে। এ অঞ্চলের কৃষকদের উদ্ভাবিত সনাতন ও লাগসই প্রযুক্তির ‘সারজন পদ্ধতি’তে বিভিন্ন সবজির চারা তৈরি করে জলাবদ্ধ বিশাল এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ কৃষি-অর্থনীতিও অনেকটাই সচল রয়েছে।

চলতি রবি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলায় প্রায় ৭০ হাজার হেক্টরে শীতকালীন সবজির আবাদ হচ্ছে। উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টন। এবার ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’এ ভর করে কার্তিকের নজিরবিহীন প্রবল বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তির্ণ এলাকার আগাম শীতকালীন সবজিসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পরেও কৃষি যোদ্ধাগণ পুনরায় রবি ফসল আবাদে মাঠে নেমেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন বাড়ি-ঘরের আঙিনায়ও বিপুল পরিমাণ সবজির আবাদ হচ্ছে।

ইতোমধ্যে লালশাক, পালং শাক, সিম, ফুলকপি, বাধা কপি, শালগম, গাজর ও মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে এসেছে। তবে এর বাইরে সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণের ধকল কাটিয়েও লাউ সহ বেশ কিছু বারমাসি সবজিও বাজারে রয়েছে। তবে এবার অগ্রহায়ণের অকাল বর্ষণের রেশ ধরে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম গত কয়েক বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। কৃষকরা এবার কিছুটা বেশি দাম পেলেও অগ্রহায়ণের বর্ষণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।
ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, ‘দেশে গত বছর প্রায় ১ কোটি ৯৮ লাখ টনের মত শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়েছে। দেশে উৎপাদিত সবজি ‘অভ্যন্তরীণ পূর্ণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে’ বলে আশা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র। ডিএই’র মতে বর্তমানে ‘বিশ্বের প্রায় ১১৪টি দেশে বাংলাদেশের কৃষি পণ্য রফতানি হচ্ছে। এর মধ্যে শীতকালীন সবজিই অন্যতম’। এ বাজার আরো সম্প্রসারণে সরকার দেশে সবজি আবাদ বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

এদিকে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটÑবারী’ মাঠ পর্যায়ে গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে অন্যসব ফসলের মতো বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজিরও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। এমনকি বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় যে ভাসমান ঢিবিতে সবজি বীজসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ হচ্ছে, বারি’র বিজ্ঞানীগণ সে ক্ষেত্রেও আধুনিক ও টেকসই প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটাচ্ছেন। ফলে কৃষকগণ আরো আস্থা এবং নির্ভরতা সাথেই ভাসমান বেড পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মনযোগী হচ্ছেন। এরফলে প্লাবন ভ‚মিতে অধিক ফসল উৎপাদনও সম্ভব হচ্ছে। এতে করে কৃষকগণ লাভবান হচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop