১:৪০ পূর্বাহ্ন

সোমবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২৩ ১০:২৩ অপরাহ্ন
ফেনীতে সরিষা মাঠে কৃষি আড্ডা
কৃষি বিভাগ

সরিষার ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ। মাঝে খালি মাঠে সমবেত হয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কৃষক, শিক্ষার্থী এবং উৎসুক জনতা। সকলেই কৃষি আড্ডায় মেতেছেন।
আজ সোমবার বিকালে ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর কাশিমপুর এলাকার খাল পাড়ে।

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল-এর সঞ্চালনায় আড্ডায় অংশ নেন ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একরাম উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান একে শহীদ উল্ল্যাহ খোন্দকার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোৎস্না আরা জুসি, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন প্রমুখ।

আড্ডায় বক্তারা কৃষকদের সরিষা আবাদে উৎসাহিত করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরাম উদ্দিন জানান, এবছর ফেনীতে তিনহাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দিগুন বেশী উৎপাদিত হয়েছে । পাঁচগাছিয়া ব্লকে গতবছর আবাদ ছিল ২৫ হেক্টর, বর্তমানে ৭৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, তেলবীজ চাষ বাড়ানোর জন্য ফেনী সদরে সাড়ে ১৪ হাজার কৃষককে সরিষা চাষে সরকার প্রণোদনা দিয়েছে। যাতে করে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি ডাল ও তৈল বীজ উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করা যায়।

উল্লেখ্য, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার চলতি বছর সরিষা চাষ হয়েছে তিনহাজার ৪৯৪ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে আবাদের পরিমাণ বেড়েছে একহাজার ১৪৭ হেক্টর। চাষাবাদ অনুযায়ী ৪৬৭০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২৩ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
কুড়িগ্রামে মরিচের বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা
কৃষি বিভাগ

জেলায় এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। দামেও খুশি এ অঞ্চলের মরিচ চাষিরা। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ভরা মৌসুমে মরিচের ভালো দাম পেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন মরিচ চাষিরা। প্রতি বছর চাষিরা মরিচের চাষাবাদ করে বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা। ক্ষেতের মধ্যেই স্থানীয় পাইকারদের কাছে মরিচ বিক্রি করতে পেরে স্বস্তিও পেয়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। মরিচের ব্যাপক চাহিদা থাকায় স্থানীয় শত শত পাইকার ওই সব প্রান্তিক কৃষকদের কাজ থেকে মরিচ ক্রয় করে কুড়িগ্রাম জেলা শহরসহ পার্শ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাট, বড়বাড়ী ও মোস্তফি মরিচের হাটে ক্রয়কৃত মরিচ বিক্রি করে তারাও লাভবান হচ্ছেন।

ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা, গোরকমন্ডপ, চর-গোরকমন্ডপ, বালাটারী, কুরুষাফেরুষা, গজেরকুটিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলনসহ মরিচের ভালো দাম থাকায় চাষিরা মরিচ ক্ষেতে পরিচর্যা কাজ ব্যস্ত সময় পার করছেন, আবার কেউ ক্ষেতের মরিচ তুলছেন, অনেকেই আবার মরিচ বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। শত শত বিঘা জমিতে প্রচুর পরিমানে মরিচের চাষবাদ করেছেন চাষিরা। যে সকল চাষির নিজস্ব কোন জমি নেই, তারাও অন্যের জমি লিজ (কন্ট্রাক) নিয়ে মরিচসহ নানা ধরনের সবজির চাষ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। স্থানীয় পাইকাররা (ব্যবসায়ী) ক্ষেতের ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা দরে মরিচ ক্রয় করে ট্রাক-অটোরিকশা ও ভ্যান যোগে কুড়িগ্রাম জেলা শহর, উলিপুর ও লালমনিরহাট শহর, বড়বাড়ী এবং মোস্তফি বাজারে গিয়ে দেশের দূর -দূরা ন্তের পাইকার (ব্যবসায়ীদের কাছে ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে মরিচের মণ বিক্রি করছেন।

উপজেলার পূর্বফুলমতি এলাকার মরিচ চাষি তৈয়ব আলী জানান, তিনি গত ২০ দিন আগেই এক বিঘা জমির মরিচ ক্ষেতই ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। তিনি আগাম মরিচ বিক্রি করায় এক বিঘা জমিতে খরচ মিটিয়ে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেছেন। তিনি আরো জানান, গত বছর ভরা মৌসুমে ১ মণমরিচ বিক্রি করেছি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এবছর মরিচের ভরা মৌসুমেও চাষিরা ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা মরিচের মণ বিক্রি করছেন।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চলতি মৌসুমে জেলার নয়টি উপজেলায় ১ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে কৃষকরা মরিচের চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিচের ভালো দাম পেয়েও খুশি হয়েছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগ মরিচ চাষিদের বিভিন্ন ধরণে পরামর্শ প্রদানসহ সহায়তা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২৩ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
১৫ লাখ টাকার কুল বিক্রির আশা শরীফের!
কৃষি বিভাগ

এক একর জমিতে আপেল কুলের ১২০০ চারা রোপন করে বাগান করেন লক্ষ্মীপুরের মোহাম্মদ শরীফ। চারা লাগানোর ৬-৭ মাসের ব্যবধানেই ফলন পেয়েছেন। তার প্রায় প্রতিটি গাছেই ফল এসেছে। ইতোমধ্যে ৬ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন তিনি।

জানা যায়, মোহাম্মদ শরীফ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতারগোপ্তা বাজার সংলগ্ন পশ্চিম চর মনসা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ফজর আলী এগ্রো ফার্ম নামের একটি কৃষি প্রকল্পের পরিচালক। সেই প্রকল্পের পাশেই ১ একর জমিতে তিনি ১২০০ কুল গাছের চারা রোপন করেছেন। রোপনের ৬-৭ মাসের মধ্যেই ফলন পান তিনি। তার সফলতার কথা ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে বাগানটি দেখতে আসেন এবং কুল চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন।

কুল চাষি শরীফ জানান, আমি ৭-৮ মাস আগে ঝিনাইদহ থেকে ভারত সুন্দরী জাতের আপেল কুলের ১২০০ চারা নিয়ে আসি। তারপর ১ একর জমিতে সেই চারা রোপন করি। জমি তৈরী, সার ঔষধ ও পরিচর্যায় প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়। চারা রোপনরে ৬-৭ মাস পরেই ফলন পাই। বাগনের প্রায় প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় বরই ধরেছে। গত একমাস ধরে গাছের বরই বিক্রি করছি। ইতোমধ্যে ৬ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। আরো দেড় মাস বরই বিক্রি করতে পারবো। আশা করছি এবছর অন্তত ১৫ লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারবো।

শরীফ আরো জানান, শুরুতে প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। স্থানীয় পাইকাররা বাগানে এসে বরই নিয়ে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে দাম কমতে শুরু করেছে। এখন প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২২, ২০২৩ ৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
কর্মকর্তা সঙ্কটে ভুগছে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ
কৃষি বিভাগ

দেশের আশি ভাগ মানুষ কৃষির উপর এখনো নির্ভরশীল। তাই বাংলাদেশকে কৃষি প্রধান দেশ বলা হয়ে থাকে। দেশের অর্থনৈতিক চাকার মূল চালিকা শক্তি হলো কৃষি। কৃষির যত উন্নতি হবে ততই দেশের অর্থনীতি দৃঢ় ও সমৃদ্ধিশালী হবে।

মানুষের মৌলিক চাহিদার প্রধান হলো খাদ্য। দেশের মানুষের খাদ্যর যোগান দিতে সরকার রাজস্ব খাত থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ভর্তুকী দিচ্ছে। নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। দেশের কৃষিকে দিনদিন আধুনিকায়ন করছে।

তবে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হলে দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হয়। যারা কৃষকদের জন্য পথের সারথী হয়ে কাজ করবে। দক্ষ জনবল না থাকলে কৃষিকে এগিয়ে নেওয়া কোনোদিন সম্ভব নয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটি জেলা কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কর্মকর্তা সঙ্কটে ভুগছে। দেশের এত বড় বৃহৎ জেলায় কৃষি কর্মকর্তা না থাকায় কৃষি কাজকে এগিয়ে নেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশের বড় জেলাটির কৃষি কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে কয়েকজন কর্মকর্তার পক্ষে অত্যন্ত দুরুহ হয়ে পড়ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটি জেলা কার্যালয় সৃত্রে জানা গেছে, রাজস্থলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নেই। দুর্গম এই এলাকাটিতে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দিয়ে এ উপজেলার কৃষি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অর্থাৎ উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা সঙ্কট রয়েছে।

বিলাইছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঙ্কট রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষি কর্মকর্তার হয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে।
জেলার আরেক দুর্গম উপজেলা জুরছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নেই। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাই কৃষি কর্মকতার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে।

বরকল উপজেলায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নেই। জেলা থেকে একজন কৃষি কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে এ গুরুত্বপূর্ণ কৃষি প্রধান উপজেলার কৃষি খাতকে পরিচালিত করা হচ্ছে।

জেলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা লংগদু উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা নেই। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে দিয়ে এ উপজেলার কৃষি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এছাড়াও জেলা কৃষি সম্প্রসারণের গুরুত্বপূর্ণ পদ অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য)-১, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ)-১ এবং অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান)-১ খালি রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে ২০জন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ৮ জন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে দিয়ে দেশের বৃহৎ জেলার কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যে কারণে জেলার কৃষি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের নির্দেশিত কৃষি উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগকে চরম ভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটি জেলার উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, কৃষির উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার দেশের কৃষির উন্নয়নে আমাদের যে নির্দেশ দিচ্ছে তা আমরা বাস্তবায়নে সর্বাত্বক চেষ্টা করছি।

বলেন, এখানে কৃষির উন্নয়ন করতে হলে অনেক জনবলের দরকার। আমাদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী সঙ্কট রয়েছে। অনেক কর্মকর্তাকে কৃষির উন্নয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। যে কারণে আমাদের গতির কাজ কিছুটা ধীর হচ্ছে। কাজের গতি বাড়াতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে যাতে শূন্যপদগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২২, ২০২৩ ৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
বান্দরবানে কৃষি উপকরণ বিতরণ করলেন পার্বত্যমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে বান্দরবানে কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কৃষি যন্ত্রপাতি ও উপকরণ বিতরণ করেন মন্ত্রী।

এসব উপকরণের মধ্যে রয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টিং মেশিন, ট্রান্সপ্ল্যান্টার ও পাওয়ার টিলার। আধুনিক এই যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কৃষকরা এখন খুব কম সময়ে এবং সহজেই ধান রোপন ও কর্তন করতে পারবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগের সহায়তায় এসব আধুনিক কৃষিযন্ত্র বিভিন্ন সমিতির মধ্যে দেওয়া হয়।

পরে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজবিলা ইউনিয়নে বিভিন্নস্থানে নির্মিত ব্রীজ, বৌদ্ধ বিহার ,সেচ ড্রেইন,সড়ক,বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

এসময় রাজবিলা ইউনিয়ন পরিষদে মাঠে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পাহাড়ের উন্নয়ন এখন সবার মুখে মুখে। এখন পাহাড়ের কৃষিজ ফলমুল থেকে সমতলের বাসিন্দারা আগ্রহী হয়ে বসে থাকে। একসময় পার্বত্য অঞ্চল অনেক দুর্গম এবং কষ্টসাধ্য এলাকা হলে ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ তরান্বিত হয়েছে যার সুফল পাচ্ছে সাধারণ জনগণ। এসময় পার্বত্যমন্ত্রী উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সকল জাতিগোষ্টিকে একসঙ্গে বসবাস করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের থেকে সাধারণ জনগণকে দুরত্ব বজায় রেখে জীবনধারণের আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ের উন্নয়নে অনেক সময় অনেক কুচক্রী মহল কার্যক্রম পরিচালনা করে উন্নয়ন বাঁধা করতে চায় আর এই দুষ্ট প্রকৃতির ব্যক্তি থেকে সবাইকে সচেতন ও সাবধান থাকতে হবে।

কৃষকদের আধুনিক যন্ত্রপাতি বিতরণের ফলে পাহাড়ের উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, আগামীতে দেশের রাজস্ব খাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাম সবার উপরে উঠবে। আর পার্বত্য জেলাগুলোর কৃষকরা অর্থনৌতিকভাবে আরও স্বাবলম্বী হবে।

অনুষ্ঠানে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহ্ আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরোজ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্যসাপ্রু মারমা, কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক এম এম শাহনেয়াজ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো. ইয়াছির আরাফাত, পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদারসহ জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং এলাকার চাষিরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২১, ২০২৩ ৭:৪৬ অপরাহ্ন
গম চাষে ঝুঁকছেন মাদারীপুরের কৃষকরা!
কৃষি বিভাগ

মাদারীপুরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে গম চাষ। পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে বেষ্টিত জেলার শিবচর এলাকার কৃষকরা গম চাষ করছেন। এখানকার আবহাওয়া অনুকূলে থাকে বলে ফলন বেশি হয়। পাশাপাশি গমের বর্তমান বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা গম চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

জানা যায়, সাধারনত শীতের মৌসুমে কৃষকরা সরিষা, কালাই চাষ করলেও শিবচরের সন্যাসীরচর, বন্দোরখোলা, কুতুপুবপুর, বহেরাতলা, নিলখীসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকরা গম চাষ করছেন। বর্তমানে গমের বেশ চাহিদা রয়েছেন। পাশাপাশি গমের বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা গম চাষে বেশি ঝুঁকছেন। কৃষকরা আশা করছেন গম চাষে লাভবান হতে পারবেন।

শিবচর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে। গম চাষে খরচ কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হবেন বলে জানা যায়।

অন্যান্য কৃষকরা জানায়, আগের তুলনায় এখন বোরো ধান চাষে খরচ বেড়েছে। তাই এবছর অনেক কৃষক আর ধান চাষ করেননি। কৃষকদের জমিতে গমের ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া গমের বর্তমান বাজারদর ভালো থাকায় গম চাষে ঝুঁকেছেন। অনেকে আগামীতে আরো বেশি জমিতে গমের চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর গমের আবাদ বেড়েছে। গম চাষের লক্ষ্যমাত্র যা ধরা হয়েছিল তা ছাড়িয়ে গেছে। দিন দিন কৃষকরা গম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছেন। আশা করছি কৃষকরা গমের বাম্পার ফলন পাবেন ও বাজারে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৯, ২০২৩ ৮:০৩ অপরাহ্ন
টাঙ্গাইলে হাইব্রিড জাতের ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
কৃষি বিভাগ

জেলায় চলতি রবি মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভুট্টার আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে। কৃষকদের দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে ভুট্টার বীজ ও সার।

জেলার ১২টি উপজেলায় বিশেষ করে চরাঞ্চল জুড়ে এখন শুধু ভুট্টার উঠতি চারা শোভা পাচ্ছে। ঝিলমিল করে বাতাসে দুলছে ভুট্টার সবুজপাতা। ভালো ফলনের আশায় কৃষকরা অধীর আগ্রহে মনের খুশিতে জমিতে কাজ করছেন।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার নদী বেষ্টিত বিভিন্ন উপজেলার চরাঞ্চলের অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষকরা রবি মৌসুমে গত কয়েক বছর যাবৎ আগাম জাতের হাইব্রিড ভুট্টার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। চরাঞ্চলে অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশি হয়। কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা চাষ দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গমের পাশাপাশি ভুট্টার ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভুট্টা গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়। তাছাড়া পোল্ট্রি শিল্পের জন্যও ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক বিঘা জমিতে ভ্ট্টুা হয় ৪০ থেকে ৪৫ মন। বিঘা প্রতি আট থেকে দশ হাজার টাকা খরচ করে চাষিরা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ভ্ট্টুা বিক্রি করতে পারে। চলতি রবি মৌসুমে জমিতে ফলনের আকৃতি ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা এখন ব্যস্ত জমি পরিচর্যায়। অনেক কৃষক ভ্ট্টুার জমিতে সাথী ফসল হিসেবে শীতকালীন শাক-সবজিরও আবাদ করেছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। গতবছরের তুলনায় ১ হাজার ৭৭৬ হেক্টর বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৬ হাজার ৭৫০ কৃষককে ২ কেজি করে মোট ১৩ হাজার ৫০০ কেজি ভুট্টার বীজ দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। এছাড়াও ২০ কেজি করে ডি.এ.পি সার এবং ১০ কেজি করে এম.ও.পি সার দেয়া হয় বিনামূল্যে। অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বৃহৎ পরিমাণের কৃষক ভ্ট্টুার প্রণোদনা পান এ মৌসুমে। গত বছর বাজারে ভুট্টার দাম বেশি থাকায় অধিক লাভবান হন কৃষকরা। একারণে প্রণোদনা কর্মসূচির বাইরেও অধিক পারিমাণের কৃষক তাদের জমিতে এ মৌসুমে ভুট্টার আবাদ করেছেন। ভ্ট্টুার আবাদ বৃদ্ধি ও ফলন ভালো করতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।

ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টা চাষি মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এ বছর বন্যায় আমাদের বীজতলা, সবজি ক্ষেতসহ সকল ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে আমরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই। আর এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বন্যা পরবর্তী সময়ে যমুনার বুকে জেগে উঠা চরে আমরা ভুট্টা চাষ করেছি। ভুট্টা চাষে খরচ অনেক কম ও লাভ অনেক বেশি। আশাকরি ভুট্টা চাষ করে বন্যার ক্ষতি অনেকটাই আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।

ভুট্টা চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার মাটি ভুট্টা চাষের উপযোগী হওয়ার আমাদের চরাঞ্চলের ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়। এ বছর আমি পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। আশা করছি, বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ ফলন পাবো। গত বছর চরাঞ্চলে ভুট্টার ফলন ভালো হওয়ায় এবছর আরও অধিক জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আমার দেখা-দেখি যারা অন্য ফসল আবাদ করতো তারাও এবছর ভুট্টা চাষ করেছে। দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের আগ দেউলী গ্রামের কৃষক সোহেল রানা বলেন, এবারই প্রথম আমি ভুট্টার আবাদ করেছি। আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় ভুট্টার প্রচুর আবাদ হয়। ভুট্টার ফলনও অনেক হয়, দামও ভালো পাওয়া যায়। আমি ৪০ শতাংশ জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।

দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানুল কবির বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগতভাবে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন ফসল হিসেবে কৃষক যেন চাষাবাদের ক্ষেত্রে সমস্যায় না পরে সেজন্য আমরা মাঠে সরসরি কৃষককে সঠিকভাবে ভুট্টা চাষ করার প্রদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছি। ভুট্টায় বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণ করলে সেগুলো দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছিল ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। গতবছরের তুলনায় ১ হাজার ৭৭৬ হেক্টর বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব সময় ভ্ট্টুার রোগ-পোকমাকড় দমনে ও অধিক ফলনের জন্য কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৮, ২০২৩ ১২:০৩ অপরাহ্ন
ফুলকপি চাষে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন জয়পুরহাটের কৃষক এনামুল
কৃষি বিভাগ

শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপি চাষ করে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন জেলার কালাই উপজেলার বহুতি দরগাপাড়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক।

জয়পুরহাটের কালাইয়ে শীতকালীন সবজি বিশেষ করে ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর শীত মৌসুমে ফুলকপির চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উপজেলার বহুতি-দরগাপাড়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বায়ারের হাইব্রিড জাতের ফুলকপি চাষে তিনি কোন ক্ষতিকর কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ব্যবহার করেনি। জৈব্যবালাই নাশক ও কেঁচো সার ব্যবহার করে ফুলকপি চাষ করেছেন। কম সময়ে, অল্প পরিশ্রমে ও স্বল্প খরচে অধিক মুনাফার আশা নিয়ে এ কপি চাষ করে তিনি এখন সফলতার স্বপ্ন বুনছেন। এজাতের ফুলকপি বাজারে কদর বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান বাজারে চাহিদা অনেকটা ভালো এবং দামও অনেক বেশি পাচ্ছেন।

এনামুলের ফুলকপি চাষে সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক কৃষকরাই আগামীতে ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ধান, আলুর চেয়ে ফুলকপি চাষে সময়, খরচ ও শ্রম কম লাগে। তাই অন্যান্য ফসলের বদলে ফুলকপি চাষ করবেন বলে জানান প্রতিবেশী কৃষকরা। সফল চাষি এনামুল হকের ৬০ শতক জমিতে যেন বর্তমানে ফুলকপির রাজ্য। একেকটি ফুলকপির ওজন ১ থেকে ২ কেজি। নিজের ফুলকপি ক্ষেতে মনোযোগ দিয়ে পরিচর্যা করছেন এনামুল। তিনি জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বাবার অভাবের সংসার, তাই লেখাপড়া করা হয়নি। তিনি স্থানীয় আলুর কোল্ড স্টোর লেবারি কাজ করতেন। কাজ পেলে খাবার জুটত, না পেলে অনাহারে থাকতে হতো। তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত নেন কিছু করবেন। তার এলাকাতে অনেক ভালো সবজি চাষ হচ্ছে। এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি সবজি চাষ শুরু করেন করেন। তাই ২০১২ সালে তার কাছে কিছু জমানো টাকা ও ধার-দেনায় প্রথমে ৯ শতক জমি বর্গা নিয়ে চিচিংগা চাষ করেন। সেই সময় তিনি সবকিছু খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৭০ হাজার টাকা লাভ করেন। এরপর থেকে তিনি জমি বর্গা নিয়ে সারা বছর নানা সবজি চাষ শুরু করেন। আর এভাবে একপর্যায়ে চাষের জমি বাড়ে, আয় বাড়ে। দিনমজুর থেকে এনামুল হক এলাকায় হয়ে ওঠেন সফল সবজি চাষি। ৩০ শতক জমি কিনে তৈরি করেছেন টিনের একটি বাড়ি। ঘোয়ালে আছে তিনটি বিদেশী গরু। আছে একটি পুকুর। তাঁর দুই ছেলে, বড় ছেলে খোকন ও ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ। বড় ছেরে স্কুলে পড়ছে। স্ত্রী আনজুয়ারা বেগম আর এনামুল হক লেগে থাকেন সবজি চাষে।

এবার তিনি ৬০শতক জমি বর্গা নিয়ে বায়ারের হাইব্রিড ৫৩ ও ৪০ জাতের ফুলকপির চারা রোপণ করেন। এই ফুলকপি চাষে তিনি কোন ক্ষতিকর কীটনাশক বা রাসায়নিক সার না দিয়ে জৈব্যবালাই নাশক এবং কেঁচো সার ব্যবহার করে ফুলকপি চাষ করেছেন। অল্প পরিশ্রমে ও স্বল্প খরচে রোপোনের ৭০ থেকে ৭৫ দিনের মধ্যেই এ ফুলকপি বাজারে বিক্রি করার উপযুক্ত হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই । তার জমিতে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কপি রয়েছে। পাইকারি দরে এই পর্যন্ত ৯৫ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। আরো ৩ হাজার পিস ফুলকপি বিক্রি করা যাবে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে এগুলো সব বিক্রি হয়ে যাবে। তার এ ফুলকপির উৎপাদন খরচ পড়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকা।

তিনি আশা করছেন সকল খরচ বাদ দিয়ে মুনাফা হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা। উপজেলার বহুতি-দরগাপাড়া গ্রামের কৃষক হাফিজার ও জালাল মিয়া জানান, ধান, আলু ও ভুট্টার চেয়ে ফুলকপি চাষে খরচ ও শ্রম দুটোই কম । এসব ফসল চাষে খরচের পাশাপাশি রোগ বালাইয়ের আক্রমণের আশঙ্কাও কম। তাই অন্যান্য ফসলের বদলে আগামীতে ফুলকপি চাষে করবেন বলে জানান তারা। এনামুল হক ফুলকপি চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেরেছেন। তাই অন্য ফসলের তুলনায় ফুলকপি চাষে অধিক লাভের স্বপ্ন বুনছেন তিনি। কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, এ অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ উপজেলায় এবার শীতকালীন ১০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে।

কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ অঞ্চলের মানুষ আধুনিক সবজি চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। চাষিরা শীতকালীন ফুলকপি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তারা ফুলকপি চাষ করে দাম ও ফলন দুটোই ভালো পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৭, ২০২৩ ৭:৪৭ পূর্বাহ্ন
শৈত্যপ্রবাহে বোরো ধানের বীজতলার যত্ন নিতে যা করবেন
কৃষি বিভাগ

দেশে বইছে পৌষের শীত। তবে, এ মাসের শুরুর দিকে শীতের তীব্রতা তেমন অনুভব না হলেও শেষদিকে এসে কাঁপছে গোটা দেশ, বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এ সময়ে অনেকে বোরো ধানের জন্য তৈরি করছেন বীজতলা। আর এ বীজতলার যত্ন কীভাবে নেবেন বা কোন প্রযুক্তি সুবিধাজনক হবে চাষিদের সেই পরামর্শ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস)।

এআইএস বলছে, শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের চারা চারা হলুদাভ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া শীতের প্রকোপে চারা পোড়া বা চারা ঝলসানো রোগের জন্য চারা মারা যেতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে কৃষক ভাইদের বোরো ধান চাষাবাদে বাড়তি কিছু যত্ন নেওয়া জরুরি।

বোরো ধানের বীজতলা তৈরিতে করণীয়
* শৈত্যপ্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দিতে হবে। তবে, দীর্ঘসময় ধরে শৈত্যপ্রবাহ চলতে থাকলে সেখানে দিনে এবং রাতে সবসময় পলিথিন দিয়ে চারা ঢেকে রাখতে হবে এবং বীজতলার উভয়পার্শ্বে পলিথিন আংশিক খোলা রাখতে হবে।

* বীজতলায় ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে নলকূপের পানি ব্যবহার করা ভালো। বীজতলায় পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে জমা করা শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে। ধান-চাষ কৃষি-সংবাদ

* চারা পোড়া বা কলসানো রোগ দমনের জন্য রোগের প্রাথমিক অবস্থায় প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলিলিটার অ্যাজোস্কিস্ট্রোবিন বা পাইরাক্লোস্টবিন জাতীয় ছত্রাকনাশক মিশিয়ে বীজতলায় বিকেলে স্প্রে করতে হবে।

* বীজতলায় চারা হলুদ হয়ে গেলে প্রতি শতক জমিতে ২৮০ গ্রাম হারে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া প্রয়োগের পরও চারা সবুজ না হলে প্রতি শতক জমিতে ৪০০ গ্রাম হারে জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে।

* জমিতে রোপণের জন্য কমপক্ষে ৩৫ থেকে ৪৫ দিনের চারা ব্যবহার করতে হবে। এ বয়সের চারা রোপণ করলে শীতে ভারার মৃত্যুর হার কমে।

* চারা রোপণকালে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে কয়েকদিন দেরি করে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে চারা রোপণ করতে হবে।

* রোপণের পর শৈত্যপ্রবাহ হলে জমিতে ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। শীতের তীব্রতা ও বয়স বিবেচনা করে চারা রোপণ করলে চারা সতেজ থাকবে এবং অধিক ফলন পাওয়া যাবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৬, ২০২৩ ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
জয়পুরহাটে ’পলিনেট হাউসে’ চাষ হচ্ছে বিষমুক্ত সবজি
কৃষি বিভাগ

আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে কীটনাশক ছাড়াই বিষমুক্ত ভাবে ’পলিনেট হাউসে’ সবজি চাষ করছেন জেলার পাঁচবিবি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা। এ পদ্ধতি কৃষি উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি বিজ্ঞানের নতুন উদ্ভাবন এ ’পলিনেট হাউস’। পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের পশ্চিম ধুরইল গ্রামের কৃষক রবিউল আলম ও আব্দুর রহমান ’পলিনেট হাউস’ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে সফলতার স্বপ্ন বনছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পলিনেট হাউসে শীতকালের সবজি যেমন গ্রীষ্মকালেও উৎপাদন করা যাবে, তেমনি গ্রীষ্মকালীন সবজিও শীতকালে উৎপাদন করা যাবে। যে কোন আবহাওয়া এতে কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না। আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি করা পলিনেট হাউসে ভারি বৃষ্টিপাত, তাপদাহ, পোকামাকড়, ভাইরাস জনিত রোগের মতো প্রতিকূল পরিবেশেও নিরাপদ থাকবে সবজি। কোন কীটনাশক দিতে হবে না। পশ্চিম ধুরইল গ্রামের কৃষক রবিউল আলম জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে পলিনেট হাউস নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, পলিনেট হাউসে চাষ হচ্ছে মিন্টো সুপার ও বাহুবলী জাতের টমেটো, সানড্রপ জাতের কাঁচা মরিচ, বিটি জাতের বেগুন, কুইন অ্যানি জাতের আলু, ব্রকলি, ফুলকপি, হার্টবিট, গাজর, লেটুসসহ অন্যান্য সবজি। কৃষক আব্দুর রহমানের জমির পরিমান ১৫ শতক। লোহার এ্যাঙ্গেল ব্যবহার করে পলিনেট হাউস নেট দিয়ে ঘেরার জন্য পোকামাকড় ঢুকতে পারেনা। সেখানে রয়েছে সেচ দেওয়ার আধুনিক প্রযুক্তি। পলিনেট তৈরি করতে পুরো খরচ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এ টাকা পরিশোধ করতে হবেনা। আব্দুর রহমান ও রবিউল আলমের পলিনেট হাউসে তিন জন শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন।

আব্দুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগ থেকে গত অক্টোবর মাসে পলিনেট হাউস নির্মাণ করে দেওয়া হয়। বাজারে তুলনামূলক ভাবে পলিনেট হাউসে উৎপাদিত সবজির চাহিদা অনেক বেশি। সে কারণে উন্নত মানের সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন বলে জানান, আব্দুর রহমান। রবিউল জানান, পলিনেট হাউসে সবজি চাষ ছাড়াও বাইরে ৮ শতাংশ জমিতে লেটুস ও ব্রকলি চাষ করেছেন। বাইরের জমিতে থাকা সবজিতে পোকামাকড় দেখা গেলেও পলিনেট হাউসে বিষমুক্ত ভাবে চাষ করা সবজি বেশ সতেজও রয়েছে। পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান জানান, পলিনেট হাউসে সবজি চাষ ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে। এ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে প্রতিদিনই আশপাশের কৃষকরা আসছেন এবং উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। উচ্চ মুল্যের সবজি চাষে ’পলিনেট হাউস’ কৃষি ক্ষেত্রে একটা রোল মডেল উল্লেখ করে পলিনেট হাউস থেকে সারা বছর নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি পাওয়া সম্ভব বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop