৯:৩৬ অপরাহ্ন

রবিবার, ১৭ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : নভেম্বর ৩, ২০২২ ৯:০৪ অপরাহ্ন
মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালনের সুবিধা
প্রাণিসম্পদ

আমাদের দেশে ছাগল পালন দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে বেকার যুবকদের অনেকেই ছাগল পালন করে বেকারত্ব দূর করছেন। কেউ কেউ লেখাপড়ার পাশাপাশি এটি পালন করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।

উন্মুক্ত জায়গা বা মাঠ না থাকলেও মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা যায়। এতে লাভবান হওয়া যায় খুব সহজে। মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালনে অনেক সুবিধা রয়েছে।

এ পদ্ধতিতে ছাগল পালন করতে তেমন খরচ নেই। এছাড়া চিকিৎসা ব্যয়ও অনেকাংশ কম।

অন্যদিকে মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন করলে ছাগলের সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া রোগ হবে না। কৃমি, উকুন, চর্মরোগ কম হবে। প্রস্রাব, গোবর সঙ্গে সঙ্গে নিচে পড়ে যায়। ফলে শরীর পরিষ্কার থাকে।

এ ছাড়া মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন করলে শীতকালে ঠান্ডা কম লাগে। মাচার ওপর ও নিচ দিয়ে বাতাস চলাচল করে বিধায় মাচা শুকনো থাকে, যা ছাগলের জন্য আরামদায়ক। অন্যদিকে ছাগলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। ফলে ছাগল পালন করে বেশ লাভবান হওয়া যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ২, ২০২২ ৪:৫১ অপরাহ্ন
বৈশ্বিক সংকটেও প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

চলমান বৈশ্বিক সংকটেও প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন (এলডিডিপি) প্রকল্পের আওতায় প্রডিউসার গ্রুপ সক্রিয়করণ ও প্রাণিসম্পদ কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালনা বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ খাত সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, করোনার ভয়াবহ সংকট এবং তার পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা যেন বাংলাদেশের অদম্য সাহসী অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে না পারে। বৈশ্বিক সংকটে প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন কোনভাবেই ব্যাহত করা যাবে না। উৎপাদনে কোথাও যাতে গাফিলতি না হয় সেটা মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদের সব ধরণের যোগান থাকা সত্ত্বেও যাতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয় সেটা মনে রাখতে হবে। প্রাণিসম্পদ খাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ধরে রেখে এ খাতকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি গুণগত মানেও এ খাতকে উন্নত করতে হবে। এ খাতের টেকসই উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় খাত প্রাণিসম্পদ। এ খাত থেকে দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনের সাথে এলডিডিপি প্রকল্প সম্পৃক্ত। দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনে সমৃদ্ধ হতে না পারলে খাবারের বড় একটি অংশের সংকট হতে পারতো। আমিষের সংকটে আমরা বিপন্ন হয়ে পড়তাম। প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে প্রান্তিক মানুষদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ছে। তারা উদ্যোক্তা হয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। নারী, বিধবা, দরিদ্র, অসহায়, বেকার সবাই মিলে সংযুক্ত হয়ে এলডিডিপি প্রকল্পের প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি হয়েছে। ফলে আর্থিকভাবে গ্রামীণ জীবনের আমূল পরিবর্তন আসছে।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রাণিসম্পদ খাতে বড় সাফল্য এসেছে। তারাই প্রাণিসম্পদ খাতে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও সাফল্যের চাবিকাঠি। প্রকল্পের অর্থ যেন অপব্যবহার না হয় সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এ খাতে সম্পৃক্তদের সার্বক্ষণিকভাবে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আজ বাংলাদেশ মাংস ও ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দুধেও আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতার কাছাকাছি। এ অর্জন করতে না পারলে কোরবানির সময় ভারত-মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু না আসা পর্যন্ত কোরবানির চাহিদা পূরণ করা যেত না। আজ আমরা প্রাণিসম্পদ খাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন বিশ্বকে দেখাতে পারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ খাতের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে সব সময় উৎসাহিত করেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে মাংসের চাহিদা আমাদের দেশে আসছে। এ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে জীবনামুক্ত মাংস সরবরাহের জন্য রোগমুক্ত প্রাণিসম্পদ অঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে। দেশে আন্তর্জাতিক মানের মান নিয়ন্ত্রণ পরিক্ষাগার তৈরি করা হয়েছে। যাতে মাংস রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনরকম ক্ষতিকর অবস্থার মুখোমুখি আমরা না হই।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকালচার ইকনোমিস্ট ও এলডিডিপি প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার আমাদো বা। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এলডিডিপি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। এলডিডিপি প্রকল্প নিয়ে উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান কারিগরি সমন্বয়ক ড. মো. গোলাম রব্বানী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প প্রাণিসম্পদ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সাধন করবে। এ খাতের ইতিবাচক রূপান্তরের জন্যই এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য দেশের ৬১ জেলার ৪৬৬ উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ১, ২০২২ ৭:০১ অপরাহ্ন
কুড়িগ্রামের চাষিদের একমাত্র আয়ের উৎস পশু পালন
প্রাণিসম্পদ

কুড়িগ্রামে চরদ্বীপসহ প্রায় সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। তাদের জীবনযাত্রার মানও নিম্ন। তাছাড়া প্রতি বছর বন্যা, খরা ও নদীভাঙনসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবিলা করে তাদের বেঁচে থাকতে হয়।

এসব চরের বাসিন্দাদের কৃষির পাশাপাশি আয়ের অন্যতম উৎস গবাদিপশু পালন। গরু-ছাগল পালন করে বাড়তি আয় করছেন তারা। দূর হচ্ছে পরিবারের অভাব-অনটন। তারা বলছেন, বালু মাটিতে বিভিন্ন ফসল আবাদ করে মিটছে না তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা। তাই গবাদিপশু পালনই হয়ে উঠছে তাদের ভরসা।

কুড়িগ্রাম প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় ৯ লাখ ৩১ হাজার ৪৫২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে দেশি জাতের গাভি ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৮৬টি, সংকর জাতের গাভি ৫০ হাজার ১২৪টি, দেশি জাতের বকনা ১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৮টি, সংকর জাতের বকনা ৩৯ হাজার ৮৫৭টি, দেশি জাতের ষাঁড় ও বলদ ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩২টি, সংকর জাতের ষাঁড় ও বলদ ৫৫ হাজার ৩৯৬টি, দেশি জাতের বাছুর ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৬টি, সংকর জাতের বাছুর ৩৫ হাজার ৭২৩টি। এছাড়া মহিষ রয়েছে ৯ হাজার ৫২৭টি, ছাগল ৬ লাখ ১২ হাজার ৬২টি এবং ভেড়া রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৩১টি।

জানা গেছে, জেলার ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমার, জিঞ্জিরামসহ ছোট বড় ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকায় রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চল।

এসব চরাঞ্চলে বসবাস করছেন প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ। চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের একমাত্র পেশা কৃষি। কিন্তু প্রতি বছর বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় চরাঞ্চলগুলোতে।

তাছাড়া প্রতি বছর নদ-নদীর ভাঙনে ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয় শত শত পরিবার। এই পরিস্থিতিতে চরাঞ্চলের জমিতে ধান, কাউন, বাদাম, চিনাসহ শুধু মৌসুমি ফসল চাষ করে সংসার চলছে না তাদের। তাই নিজেদের টিকিয়ে রাখতে গবাদিপশু পালনই ভরসা হয়ে উঠেছে এখানকার বাসিন্দাদের।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ৩১, ২০২২ ৮:২৪ অপরাহ্ন
ভেড়া পালনে খামার ব্যবস্থাপনায় যা জরুরী
প্রাণিসম্পদ

ভেড়া পালনে ঝামেলা কম হওয়াতে এখন বেশির ভাগ মানুষ ভেড়া পালনের দিকে ঝুঁকছেন। এমনিতেই ভেড়ার রোগবালাই অহন্যান্য প্রাণীর চেয়ে খুব কম হয়। এছাড়া ভেড়া পালন ছাগলের চেয়ে সহজ। তবে ‍এর জন্য খামারিদের আরও সচেতনতা এবং ভেড়ার পালনে সার্বিক ব্যবস্থা জানা থাকার দরকার।

ভেড়ার বাসস্থান ও ব্যবস্থাপনা:
ভেড়া পালনের প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো স্বাস্থ্যকর বাসস্থান। আমাদের দেশে যেসব কারণে ভেড়া মৃত্যু হয় তার অনন্য তম কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান। ভেড়ার বসবাসের জন্য এমন জায়গা নির্ধারণ করতে হবে যেখানে আলো বাতাসের পরিমাণ ভালো। তাছাড়া ভেড়ার বাসস্থান তৈরির সময় আমাদের আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরি আর তাহলো মেঝে কাঁচা বা পাকা যেমনই হোক না কেন সেখানে ভেড়া না রেখে মাচা বা স্লাট এর উপর ভেড়া পালন করা ভালো।

ভেড়া অন্য সকল গৃহপালিত পশুর মত খাদ্যর উচ্ছুষ্টাংশ খেয়ে থাকে। শুকনো খড়, গাছের পাতা লতা, সবুজ ঘাস ইত্যাদি খেয়ে থাকে। তাছাড়া ভেড়া খোলা মাঠে সবুজ ঘাস খেতে ভালোবাসে। ভেড়া একটি তৃণভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণি। ভেড়া আঁশ জাতীয় খাদ্য, লতা-পাতা প্রভৃতিকে সহজেই সাধারণ শর্করা তে পরিনত করতে পারে। তাই ভেড়া পালনে খাদ্য খরচ কম।

অন্য সব গৃহপালিত পশুর মত ভেড়া রোগবালাই কম হয়। ভেড়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিয়মিত কৃমিনাশক ব্যবহার করা। প্রতি ২/৩ মাস পরপর ভেড়াকে কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে। ভেড়ার চর্ম রোগ রক্ষাতে বছরে অন্ততঃ দু’বার ভেড়ার পশম কাটতে হবে এবং গোসল করাতে হবে। তাছাড়াও এন্টরোটক্সিমিয়া, আমাশায়, ধনুষ্টংকার, ক্ষুরা, একথাইমা, পিপিআর, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগ হতে পারে।

ভেড়ার প্রজনন:
ভেড়া অন্য সকল প্রাণীর মত প্রজননশীল। ভেড়ি সাধারণত ৬-৮ মাসে প্রজননে উপযোগি হয়। পুরুষ ভেড়া ৪-৬ সপ্তাহ বয়সে যৌন পরিপক্কতা লাভ করে। জাত ভেদে ভেড়ি যৌন পরিপক্কতা লাভ করে। ফিনশিপ জাতের ভেড়ি ৩-৪ মাস বয়সে এবং মেরিনো ভেড়ি কোন কোন সময় ১৮-২০ মাস বয়সে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। ভেড়ার ঋতুচক্র ১৭ দিন পর পর আর্বতিত হয়। গর্ভকাল ৫ মাস। ১০-১২টি ভেড়ির জন্য একটি প্রজননক্ষম পাঠাই যতেষ্ঠ। একটি পাঠাকে ১০০-২০০ বারের বেশি প্রজনন করানো ঠিক নয়। এছাড়া অন্তঃপ্রজনন এড়াতে সময়ে সময়ে নিজের পালের পাঠা বাদ দিয়ে অন্য পাল থেকে পাঠা আনতে হবে।

ভেড়ার বাচ্চার যত্ন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা:
আমাদের দেশে ভেড়ার পরিকল্পিত বাণিজ্যিক খামার নেই। পারিবারিক পর্যায়ে ভেড়া পালন করা হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভেড়ার বাচ্চার অধিক মৃত্যুহার। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেছে প্রসবকালীন অব্যবস্থাপনা ও পুষ্টিহীনতা প্রধান। বাচ্চাকে শাল দুধ খাওয়াতে হবে। ভেড়া বাচ্চার আলাদা যত্ন নিতে হবে। প্রসবকালে মা ভেড়িকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।

ভেড়া পালনের উপযোগিতা:
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভেড়া পালন করা হয় প্রধানত মাংস এবং উলের জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে ভেড়া পালন করা হয় কোন কিছু চিন্ত্ ন্ করে। তবে বিক্রি করা হয় মাংসের জন্য।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ৩১, ২০২২ ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
নতুন খামারিদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা জরুরী
প্রাণিসম্পদ

গরুর খামার লাভজনক হওয়াতে বর্তমানে অনেকে খামারে দিকে ঝুঁকছেন। তবে,ত এই খামার করতে হলে ‍জানা থাকা দরকার অনেকগুলো বিষয়। কারণ নতুন খামারিরা খামার শুরু করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার মাঝে পড়েন। যা থেকে উত্তোরণ না হলে খামারে লাভের মুখ দেখা কষ্টকর হয়ে পড়বে তাদের জন্য।

নতুন খামারিদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা জরুরী:
খামার করার আগে ভাবুন সেই কাজটি আপনার জন্য কতটুকু সহনশীল, খামারের প্রতি কতখানি আপনার রুচিবোধ আছে সেই প্রশ্নের উওর খুঁজে বের করুন। উওর “না” আসলে খামার করার দরকার নেই।

খামার করার শুরুতেই নিজে খামারে পরিশ্রম করার চেষ্টা করুন, ৪/৫ টা গরুর জন্য রাখাল রাখার চিন্তা পরিহার করুন। আর রাখাল রেখে খামার করবেন তবে আপনার আয়ের চেয়ে ব্যয় যেনো না হয় সে দিকে নজর দিয়েন। নয়লে ব্যয় বেড়ে যাবে হতাশায় পড়ে যাবেন।

খামার করার আগে নূন্যতম ৩ মাস/ ৬ মাসের ট্রেনিং করুন ও কোন খামারে কিছু দিন সময় দেন অনেক অজানা বিষয় জানা হয়ে যাবে। শুরুতে বেশী দুধের গাভী না নেওয়াই ভালো ১৫–১৬ লিটার দুধের গাভী হলেই ভালো ৩/৬ মাস পালন করলে গাভীর অনেক আনুষাঙ্গিক বিষয় বুঝতে পারবেন তারপর বেশী দুধের গাভী নিয়েন

সততা ও নিষ্ঠার সাথে খামার পরিচালনা করছে এমন কয়েকজন ভালো মনের খামারীর সাথে কথা বলুন তাদের কথা শোনার পর আপনার পরিকল্পনার সাথে মিলান। তখন ঠান্ডা মাথায় আরো একবার ভাবুন তাদের কষ্ট কি আপনি করতে পারবেন কি না।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ৩০, ২০২২ ৩:৩৮ অপরাহ্ন
রাঙ্গুনিয়ায় বেড়েছে গরু চোরের উপদ্রপ
প্রাণিসম্পদ

রাঙ্গুনিয়ায় বেড়েছে গরু চোরের উপদ্রপ। কয়েক মাস ধরে উপজেলায় প্রতিরাতেই কোনো না কোনো এলাকায় হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ গরু চোরের দল। কোথাও কোথাও ঘটছে গরু চুরির ঘটনা। কয়েক মাসে ১৬টি গরু চুরি হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিলকীর জানান, রাঙ্গুনিয়া থানায় গরু চরির একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা রাতে পুলিশ টহল এবং অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখছি। বেশ কয়েক জনকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর রাতে উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের তিন পরিবারে হানা দেয় গরু চোরের দল । এক রাতেই ৩ ব্যক্তির ৬টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে।

উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আফজাল চৌধুরী বাড়ির মো. বেলাল উদ্দিন, ও তার ভাই নাছির উদ্দিনের ২টি গরু চুরি হয়। একই রাতে পশ্চিম বেতাগী পেয়াদা পাড়ার মো. সেকান্দরের ৪টি গরু চুরি হয়।

গরুর মালিক মো. বেলাল উদ্দিন জানান, তার ৩ সদস্যের একটি পরিবার। ছোট্ট একটি চায়ের দোকান করেই কোনোভাবে সংসার চালান। দোকানের আয়ের একটি অংশ জমা রেখে ক্রয় করেন একটি গরু। সেটা লালন পালন করছিলেন। বড় করে বিক্রি করবেন। কিন্তু এক রাতে সব শেষ।

রাঙ্গুনিয়ায় গবাদিপশু চুরির ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় হলে প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়েনি বলে জানান স্থানীয়ারা। তবে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ বলছে গরু চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের টহল আগের চেয়েও জোরদার করা হয়েছে।

বেতাগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফি বলেন, গরু চরির ঘটনা যেন রুটিন করে হচ্ছে। কয়েক মাস ধরে বেতাগী ছাড়া রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এই ভাবে চলতে থাকলে গরু পালন ছেড়ে দেবে গরুর মালিকরা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৯, ২০২২ ৩:৪০ অপরাহ্ন
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের চিংড়ি খাতের রুপান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সহায়তায় উইনরক ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত সেইফ অ্যাকুয়া ফার্মিং ফর ইকনোমিক অ্যান্ড ট্রেড ইমপ্রুভমেন্ট (সেফটি) প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরও জানান, যে সমুদ্র এলাকায় আমরা সার্বভৌমত্ব পেয়েছি সেখানে বিপুলসংখ্যক মাছ রয়েছে। রয়েছে অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ। সে ক্ষেত্রে আমাদের কর্মযজ্ঞ সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একশ বছর মেয়াদী ডেল্টা প্ল্যান করেছে। সে ডেল্টা প্ল্যানের বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে মৎস্য খাত, সমুদ্র ও জলাশয়। সে জায়গায়ও আমাদের কাজ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে এবং তাদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ। সে অভিজ্ঞতা তারা যেন সম্প্রসারণ করে। বাংলাদেশের মৎস্য খাতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাতে চাই। আমরা পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময় করতে চাই। যাতে আমরা একসাথে উন্নয়ন করতে পারি।

তিনি আরও জানান, সেফটি প্রকল্পের কার্যক্রম বাংলাদেশের চিংড়ি খাতে ব্যাপক সহযোগিতা দিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কাজে লাগিয়ে মাঠ পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হচ্ছে। সেফটি প্রকল্পের সহযোগিতার উপর ভর করে আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। কাউকে পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা একের পর এক সম্প্রসারণ হবে বলে প্রত্যাশা থাকবে। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অবশ্যই প্রশংসনীয়। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহযোগিতা সম্প্রসারণ আরও প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। আমাদের মানবসম্পদ অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো। আমাদের মৎস্য খাতের নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের সহযোগিতা সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধান অতিথি আরও যোগ করেন, মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মেটাতে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে এ খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এ খাতে বড় সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ৫০টির অধিক দেশে বাংলাদেশের মাছ এখন রপ্তানি হচ্ছে। এসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত মাছের স্বাদ ও গুণগতমান ভীষণ প্রশংসা অর্জন করছে। মৎস্য খাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও গবেষক, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন সংগঠন একসাথে কাজ করায় এ কৃতিত্ব অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের আন্তরিক ও সচেষ্ট হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অভিষ্ট ও লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। এ জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। পৃথিবীতে নানা দুর্যোগ আসছে। সাম্প্রতিক সময়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের মৎস্য খ্যাত বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনা কালেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় মৎস্য খাদ্য উৎপাদন-পরিবহন ও বিদেশে রপ্তানি নানা প্রতিকূলতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও দেশের মানুষ অফুরান প্রাণশক্তি দিয়ে কাজ করেছে বিধায় এফএও’ র জরিপে করোনাকালে যে তিনটি রাষ্ট্র মৎস্য উৎপাদনে ভালো করতে পেরেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। মৎস্য উৎপাদনের এ ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।

সম্মিলিতভাবে একটি সুন্দর বিশ্ব নির্মাণ করতে হবে। এ পৃথিবী যত সুন্দর হবে, যত আধুনিক হবে, যত উন্নত হবে সে উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বত্র পৌঁছাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন শান্তির বিশ্ব গড়তে হলে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শান্তির বিশ্ব ছাড়া অশান্তির বিশ্বে কখনও সমৃদ্ধি আসতে পারে না। আজকের প্রজন্মকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধির বিশ্ব রেখে যেতে হবে। সে জন্য একসাথে কাজ করতে হবে- যোগ করেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এবং যুক্তরাষ্ট্র কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)-এর আন্তর্জাতিক কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ ভিক্টোরিয়া বেকার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মেসবাহুল আলম। সেফটি প্রকল্প নিয়ে উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান এস এম শাহীন আনোয়ার।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ইউএসডিএ এর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে নিযুক্ত কর্মকর্তাগণ, সেফটি প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষক, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং চিংড়ি খাতের অংশীজনরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৯, ২০২২ ২:৫৯ অপরাহ্ন
গাভীর একাধিক ভ্রুণ উৎপাদন ও প্রতিস্থাপনে সফলতা পেয়েছে বাকৃবির গবেষক দল 
ক্যাম্পাস

সাধারণত মাংস, দুধ উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য উন্নয়নের লক্ষ্যে গবাদি পশুর জাত উন্নয়ন করা হয়। বাংলাদেশে গাভীর কৃত্রিম প্রজননে সাধারণত উন্নত গাভীর শুক্রানু ডিম্বানুর সঙ্গে নিষিক্ত করে জাত উন্নয়ন করা হয়।

কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় একটি সমস্যা হলো শুক্রাণু দিয়ে গাভীর গর্ভে শুধু একটি বাচ্চা জন্ম দেয়া সম্ভব। এ সমস্যা সমাধানে গাভীর গর্ভে একাধিক ভ্রুণ উৎপাদন এবং তা সংরক্ষণ করে একাধিক গাভীর গর্ভে প্রতিস্থাপনে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।

গবেষণাটির গবেষক দলের প্রধান হিসেবে ছিলেন বাকৃবির সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছরীন সুলতানা জুয়েনা। এছাড়াও গবেষণা প্রকল্পটির সহকারী গবেষক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মারজিয়া রহমান এবং সদস্য হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. মাহমুদুল আলম। এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমীন বারি, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ উদ্দীন ভূঁইয়া, ড. জয়ন্ত ভট্টাচার্য, ডা. জান্নাতুল মাওয়া, ডা. সংগীতা সাহা, ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন গবেষণা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত রয়েছেন।

দ্য অর্গানাইজেশন ফর উইমেন ইন সায়েন্স ফর দ্যা ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড (ওডব্লিউএসডি) এবং ইউনেস্কোর অর্থায়নে ‘বাংলাদেশের দেশি গাভীতে ভ্রুণ স্থানান্তরের পরে প্রাপকের গ্রহণযোগ্যতা এবং গর্ভধারণকে অনুকূল করা’ শীর্ষক সাব-প্রকল্পের অধীনে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়।

গবেষণার প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. নাছরীন সুলতানা জুয়েনা বলেন, স্বল্পতম সময়ে উচ্চ গুণসম্পন্ন অধিক সংখ্যক গবাদি পশুর বাচ্চা উৎপাদন এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে জাত উন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুত দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ গবেষণা করা হয়। সাধারণত গাভী বছরে ১টির মতো বাচ্চা প্রসব করতে পারে।

কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় একটি নির্বাচিত উন্নত জাতের গাভী থেকে প্রজননের মাধ্যমে বছরে ২৫ থেকে ৩০টি উচ্চগুণসম্পন্ন ভ্রুণ উৎপাদন করা সম্ভব এবং যার মাধ্যমে প্রথমবারেই ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করে সাধারণ গাভী থেকে উন্নত জাতের বাছুর উৎপাদন করা যেতে পারে। এতে করে একজন খামারি অতি অল্প সময়ে গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন করতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, শুক্রানুর তুলনায় ভ্রুণ দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এই পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি হলেও বাড়তি উৎপাদনে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে। প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিদের কাছে এই প্রযুক্তিটি পৌঁছে দিলে অধিক মাংস ও দুধ উৎপাদন করে লাভবান হবেন তারা। এছাড়া জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, পশুর জাত উন্নয়ন ও প্রজননে অক্ষম গাভীর জন্য এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তবে প্রতিস্থাপন পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই পদ্ধতিতে যে সকল গবেষণা যন্ত্রাংশ প্রয়োজন তা দেশে অপ্রতুল। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবও রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতা পূরণ করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতা চান তিনি।

গবেষণা কার্যক্রমটি নিয়ে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে ঢাকায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশে গবাদি পশুর ভ্রুণ উৎপাদন ও স্থানান্তরের সম্ভাবনা’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে এসব কথা বলেন বাকৃবির সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছরীন সুলতানা জুয়েনা।

সেমিনারে বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশনের (বিভিএ) মহাসচিব ডা. মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) সভাপতি মশিউর রহমান, দ্যা অর্গানাইজেশন ফর উইমেন ইন সায়েন্স ফর দ্যা ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড (ওডব্লিউএসডি) এর বাংলাদেশ জাতীয় পর্যায়ের সভাপতি ডা. মোছা. মাহবুবা বেগম, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের (বিভিসি) সভাপতি ডা. মো. মনজুর কাদির এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) মহাপরিচালক ডা. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, ভ্রুণ স্থানান্তর নিয়ে গবেষণাটি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও যুগোপযোগী গবেষণা। এ প্রযুক্তি যেন দ্রুতই মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া যায় এ বিষয়ে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর সবসময় সহযোগিতা করবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৯, ২০২২ ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
গরুর খামারে চাঙা বিদেশ ফেরত জাকারিয়া!
প্রাণিসম্পদ

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ধোয়াইল গ্রামের মো. জাকারিয়া হাসান চুন্নু,তিনি  দীর্ঘদিন সৌদি আরবে কাটানোর পর বাড়িতে ফিরে দেন গরুর খামার। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাঁকে। তিন বছরে প্রায় আড়াই শ গরু বিক্রি করেছেন। এ সময় লাভ হয়েছে ১০ লাখ টাকার মতো।

বর্তমানে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন চুন্নু। তিনি জানান, ২০১৯ সালে ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে গরুর খামার দেন তিনি। খামারে এখন তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ টাকা।

জানা গেছে, ভাগ্য ফেরাতে ২০০৫ সালে সৌদি যান চুন্নু। ২০১৯ সালে দেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে বসে না থেকে শুরু করেন গরুর খামার। বর্তমানে তাঁর খামারে ১২টি এঁড়ে গরু ও দুটি গাভি রয়েছে। এর মধ্যে দুটি এঁড়ে গরু আগামী ঈদে বিক্রি হবে, যার দাম এখনই ৫ লাখ টাকা হয়েছে বলে জানান চুন্নু।

জানা যায়, খামারি চুন্নু গরুকে খাবার দিচ্ছেন। গরুর পাশাপাশি খামারে মুরগি ও ছাগল পালন শুরু করেছেন তিনি। ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন শাকসবজি ও ফলমূলের গাছ লাগিয়েছেন।

চুন্নু জানান, স্বপ্নের এই খামারবাড়ি থেকে আর্থিকভাবে বছরে বেশ আয় হয় তাঁর। তাঁকে দেখে এলাকার তরুণ প্রজন্ম গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতিতে গরু পালনে ঝুঁকছেন।

মহম্মদপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপুল কুমার চক্রবর্তী জানান, জাকারিয়া যুব সমাজের জন্যও আদর্শ হতে পারেন। তিনি খামারে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে ব্যবসার উন্নতি করছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৮, ২০২২ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঠাকুরগাঁওয়ের খামারিরা
প্রাণিসম্পদ

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় দুই শতাধিক খামারে গরু পালন করেন বিভিন্ন পর্যায়ের খামারিরা। সম্প্রতি জেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে গরু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা।

জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন, সালান্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় গরুর শরীরে ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীর হঠাৎ গরম হয়ে যায়। প্রথমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছোট আঁচিলের মতো ফুলে ওঠে। একপর্যায়ে চামড়া উঠে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ রোগে আক্রান্ত গরু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। আক্রান্ত পশুর চামড়ায় প্রথমে ফোসকা পড়ে। একপর্যায়ে সেই স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। চিকিৎসা করেও তেমন প্রতিকার পাচ্ছেন না খামারিরা। অনেক সময় মৃত্যু ঘটছে আক্রান্ত গরুর। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, জেলায় ২০৩টি খামারে ২১০০টি গরু লালন-পালন করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় গরুর খামার রয়েছে ৩৭টি, বালিয়াডাঙ্গীতে ১১টি, পীরগঞ্জে ৪৫টি, রাণীশংকৈলে ৯০টি ও হরিপুর উপজেলায় ২০টি গরুর খামার রয়েছে।

সদরের আঁকচা ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের খামারি প্রফুল্ল বর্মন জানান, আমার একটা গরু এ রোগে মারা গেছে। আমি আগে জানতাম না এটা কী রোগ। গ্রামের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রথমে চিকিৎসা দেই। পরে রোগ সম্পর্কে জানার পর পশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার একটা গরু এখন সুস্থতার পথে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, লাম্পি স্কিন একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি মারাত্মক কোনো রোগ নয়। মশা-মাছিবাহিত এই রোগটি নিয়মিত ওষুধ খাওয়ালে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। এ বিষয়ে খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop