বরগুনায় আউশ ধানের দামে হতাশ চাষিরা
কৃষি বিভাগ
বরগুনার হাটগুলোতে বেড়েছে ধানের সরবরাহ। তবে সে অনুযায়ী বাজারে ব্যাপারী না আসায় কমতে শুরু করেছে দাম। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ এলাকার কৃষকরা।
এ বছর আউশ ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এক মণ ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না তাদের।
জেলায় আউশ মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই শেষপর্যায়ে। ব্যস্ততা দেখে মনে হবে ধানচাষিদের সুদিন ফিরে এসেছে। কিন্তু চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায় ধানের দাম নিয়ে হতাশ তারা। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭২০ থেকে ৭৪০ টাকায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মণপ্রতি ৮০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় আউশ ধান আবাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমি ৫২ হাজার ৮১১ হেক্টর। কর্তনকৃত জমি পরিমাণ ১২ হাজার ৫২৮ হেক্টর। হেক্টর প্রতি ফলন ২.৩০ টন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বরগুনা উপপরিচালক আবু সৈয়দ জোবায়দুল আলম।
সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নে গিলাতলি গ্রামের মোতালেব বলেন, আমরা লাভের আশায় ধানচাষ করি। কিন্তু সারা বছর পরিশ্রম করেও কোনো লাভ নেই। বাজারে পাইকাররা যে দামে ধান কিনছেন তাতে আমাদের উৎপাদন খরচই উঠছে না। সারের দাম বেশি, দুনিয়ার সবকিছুর দাম বাড়ে কিন্তু সেই হিসেবে ধানের দাম বাড়ে না।
কুমড়াখালী গ্রামের রশিদ ফরাজী বলেন, সার, পানি, কীটনাশকসহ সব খরচ শেষে যখন ধান ঘরে তুলতে হবে ঠিক সেই সময় দেখা দেয় শ্রমিক সঙ্কট। বেশি টাকায় শ্রমিক নিয়ে ধান কাটার পরে দেখা যায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় পাইকাররা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছে।
বরগুনা পৌর বাজারের মেসার্স মুন্সি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী কবির মুন্সি জানান, আউশের ভরা মৌসুমে বরগুনায় কিছুদিন ধরে ধানের দাম কমেছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি মণের দাম কমেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বাজারে ভেজা ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা, আর শুকনা বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৪০ টাকায়। অথচ প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৭০০ টাকার বেশি।
আউশের ভরা মৌসুমেও বরগুনায় বেড়েছে চালের দাম। বাজারে ধানের দাম কমলেও খুচরা পর্যায়ে তার প্রভাব পড়েনি একটুও। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষসহ সব ধরনের ভোক্তারা।”